ভাকরা বাঁধ উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের বিলাসপুর এলাকায় শতদ্রু নদীর উপর একটি কংক্রিট দ্বারা নির্মিত মাধ্যাকর্ষণ বাঁধ। বাঁধটি গোবিন্দ সাগর জলাধার গঠন করে।

ভাকরা বাঁধ
ভাকরা বাঁধ
আনুষ্ঠানিক নামভাকরা বাঁধ
অবস্থানবিলাসপুর, হিমাচল প্রদেশ, ভারত
স্থানাঙ্ক৩১°২৪′৩৯″ উত্তর ৭৬°২৬′০″ পূর্ব / ৩১.৪১০৮৩° উত্তর ৭৬.৪৩৩৩৩° পূর্ব / 31.41083; 76.43333
নির্মাণ শুরু১৯৪৮
উদ্বোধনের তারিখ১৯৬৩
নির্মাণ ব্যয়₹২৪৫.২৮ কোটি ১৯৬৩ সালে
বাঁধ এবং অতিরিক্ত জলনির্গমপথ
বাঁধের ধরনকংক্রিট মাধ্যাকর্ষণ
আবদ্ধতাশতদ্রু নদী
উচ্চতা৭৪১ ফু (২২৬ মি)
দৈর্ঘ্য১,৭০০ ফু (৫২০ মি)
প্রস্থ (চূড়ায়)৩০ ফু (৯.১ মি)
প্রস্থ (ভিত্তিতে)৬২৫ ফু (১৯১ মি)
অতিরিক্ত জলনির্গমপথের ধরননিয়ন্ত্রণ, অধিপ্রবাহ
জলাধার
তৈরিগোবিন্দসাগর জলাধার
মোট ধারণক্ষমতা9.340 km3
পৃষ্ঠতলের আয়তন168.35 km2
পাওয়ার স্টেশন
সম্পাদনের তারিখ১৯৬০-১৯৬৮
ঘূর্ণযন্ত্র5 x 108 MW, 5 x 157 MW Francis-type
স্থাপিত ক্ষমতা1325 MW
Pt. Jawaharlal Nehru with group of engineers who constructed Bhakra Dam 03

২২৬ মিটার উচু বাঁধটি, হিমাচল প্রদেশের বিলাসপুর জেলার ভাকরা গ্রামের [১] কাছাকাছি অবস্থিত। বাঁধের দৈর্ঘ্য (উপরে রাস্তা থেকে মাপা) ৫১৮.২৫ মিটার এবং প্রস্থ ৯.১ মিটার। "গোবিন্দ সাগর" নামে পরিচিত বকঁধের জলাশয় ৯.৩৪ বিলিয়ন কিউবিক মিটার পর্যন্ত জল সংরক্ষণ করতে পারে। ভাকরা বাঁধ দ্বারা নির্মিত ৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ জলাধার ১৬৮.৩৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। জলের পরিমাণ অনুযায়ী, এটি ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম জলাধার। ১২২২ বিলিয়ন ঘন মিটার আয়োতনের বৃহত্তম জলাধার মধ্যপ্রদেশে অবস্থিত এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাধার হল নাগরজুনা সাগর।

ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু,[২] "পুনরত্থানশীল ভারতে নতুন মন্দির" হিসাবে বর্ণনা করা করেছিলেন বাঁধটিকে। এই বাঁধটি সারা ভারতে পর্যটকদের আকর্ষণ করে। নানগাল শহর থেকে ১৫ কিমি এবং নয়না দেবী শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ভাকরা বাঁধ অবস্থিত।

পাঞ্জাবের নাঙ্গাল বাঁধটি ভাখরা বাঁধের ভাটিতে অবস্থিত। তবে, কখনও কখনও উভয় বাঁধ দুটিকে ভাকরা-নাঙ্গাল বাঁধ নামে অভিহিত হয় যদিও তারা দুটি পৃথক বাঁধ।

ইতিহাস সম্পাদনা

ভাকরা বাঁধ সেতু
স্থানাঙ্ক ৩১°২৪′৩৯″ উত্তর ৭৬°২৬′০০″ পূর্ব / ৩১.৪১০৮° উত্তর ৭৬.৪৩৩৩° পূর্ব / 31.4108; 76.4333
বৈশিষ্ট্য
মোট দৈর্ঘ্য১৭০০ ফুট
প্রস্থ৩০ ফুট
অবস্থান
 

ভারতবর্ষ বিভাজনের পর ভারত সরকার কর্তৃক গৃহীত প্রথম উপত্যকা উন্নয়ন প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল ভাকরা-নাঙ্গাল বহুমুখী বাঁধ, যদিও ভারত একটি মুক্ত জাতি হয়ে উঠার আগেই এই প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৪৪ সালের নভেম্বরে বিলাসপুরের রাজাসহ এই প্রকল্পটির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং ১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি প্রকল্প পরিকল্পনাকে চূড়ান্ত করা হয়। প্রাথমিক কাজ ১৯৪৬ সালে শুরু হয়। ১৯৪৮ সালে বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। জওহরলাল নেহেরু ১৯৫৫ সালের নভেম্বর ১৭ সালে শতদ্রু নদীর বাঁধ নির্মাণের জন্য কংক্রিটের প্রথম বালতিটি ঢেলে দেন, যা কাজের সূচনার একটি প্রতীকী। সেখানে একটি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এবং তিনি বলেন, "ভারতবর্ষের জনগণ এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের যে শ্রমিকরা এই বাঁধটি তৈরি করেছে, তাদের কাছে এটা একটি উপহার"।[৩] ১৯৬৩ সালের শেষ নাগাদ এই বাঁধটি সম্পন্ন হয়েছিল। ১৯৭০-র দশকের প্রথম দিক বাঁধটি সাফল্যতার সঙ্গে সম্পন্ন হয়েছিল।

ভ্রমণব্যবস্থা সম্পাদনা

তেহরি বাঁধের নির্মাণের পর ভাকরা বাঁধ ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম বাঁধে পরিণত হয়েছে। [৪] এটি একটি বিশাল সংখ্যক পর্যটককে আকর্ষণ করে। পর্যটকেরা বাঁধের জলাধার এবং আকর্ষণীয় স্থানটি পরিদর্শন করে। তবে নিরাপত্তার কারণে ভাকরা-নাঙ্গাল বাঁধ পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য ২০০৯ সাল থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[৫] নাঙ্গাল এবং ভাকরা বাঁধের দূরত্ব মধ্যে প্রায় ৩০-৩৫ কিলোমিটার।

মানুষের স্থানচ্যুতি সম্পাদনা

বাঁধ দ্বারা নির্মিত বৃহৎ জলাধার বিলাসপুর জেলার একটি বড় অংশের জনবসতির স্থানান্তর ঘটায়। প্রায় ৩৭১ টি গ্রাম ডুবে যায় জলাধারে। এই জলাধার নির্মাণ সমাপ্তির ৫০ বছর পরও স্থানচ্যুতি মানুষদের পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসনের একটি প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে।[৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Central Water Commission website"। ৩১ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০১৮ 
  2. http://bbmb.gov.in/english/history_nangal_dam.asp accessed on 14 November 2009
  3. "Nehru Opens Work On Bhakra Dam"The Indian Express। ১৮ নভেম্বর ১৯৫৫। পৃষ্ঠা 1। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১৭ 
  4. "Large Dams in India"India WRIS Wiki - Water Resources Information System of India। ৫ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১৬ 
  5. "Visitors to Bhakra Nangal dam banned - The Times of India"। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১৬ 
  6. "50 years on, Bhakra Dam oustees wait for rehabilitation - Times of India"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-০৮ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

  উইকিমিডিয়া কমন্সে ভাকরা বাঁধ সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।