ভাই
ভাই বাংলা ভাষার একটি অতি পরিচিত সম্বোধন।
ভাই শব্দের উৎপত্তি সংস্কৃত ভ্রাতৃ শব্দ থেকে। কথায় আছে, ‘ভাই বড় ধন রক্তের বাঁধন।’
সাধারণ সম্বোধন
সম্পাদনাভাইয়া
সম্পাদনাআদর করে অনেক সময় ভাইকে ভাইয়া ডাকা হয়ে থাকে।
দাদা
সম্পাদনাবাঙালি হিন্দুসমাজে জ্যেষ্ঠভ্রাতাকে (বড়োভাই) দাদা সম্বোধন করা হয়। শব্দটি সংস্কৃত দায়াদ শব্দ থেকে আগত এবং হিন্দি দাউ শব্দের অনুরূপ।[১]
আপন বা সহোদর ভাই
সম্পাদনাআপন বা সহোদর অর্থাৎ একই মা ও বাবার মিলনজাত সন্তান (আপন ভাই/সহোদর ভাই), আবার একই মায়ের গর্ভজাত ভ্রাতা বা বৈপিত্রেয় ভাই সহোদর ভাই। (ইংরেজি uterine brother অর্থাৎ জরায়ু ভাই) সহোদরের সংজ্ঞা - সং. সহ (সমান) + উদর]। একই উদর বা পেট বা গর্ভ হতে যাদের জন্ম হয় তাদেরকে সহোদর বলা হয়।
সৎ ভাই
সম্পাদনাসৎমার (বিমাতা) সন্তান হল বৈমাত্রেয় ভ্রাতা বা সৎ ভাই।
আত্মীয় ভাইয়ের নমুনা
সম্পাদনাকাজিন (cousin) অর্থাৎ মা বা বাবার ভাই বা বোনের ছেলে বোঝাতেও 'ভাই' শব্দটি ব্যবহার করা হয়। নিম্নোক্ত সম্বোধনগুলো প্রচলিত -
মামাতো ভাই
সম্পাদনামায়ের ভাই অর্থাত মামার ছেলেকে মামাতো ভাই বলা হয়।
খালাতো বা মাসতুতো ভাই
সম্পাদনামায়ের বোন অর্থাত খালার ছেলেকে খালাতো ভাই বলা হয়। পশ্চিমবঙ্গে ব্যবহার করা হয় মাসতুতো ভাই বা দাদা।
চাচাতো/খুড়তুতো এবং জাঠতুতো ভাই
সম্পাদনাবাবার ভাই অর্থাৎ চাচা/কাকার ছেলেকে চাচাতো ভাই বলা হয়। 'কাকাতো ভাই' সম্বোধনটি বহুল প্রচলিত নয়। স্থানভেদে (পশ্চিমবঙ্গে) বলা হয় খুড়তুতো ভাই বা দাদা যখন সেই ভাই এর বাবা নিজের বাবার ছোট ভাই (কাকা/খুড়ো বা খুল্লতাত), এবং জাঠতুতো যখন সেই ভাইএর বাবা নিজের বাবার থেকে বড় (জ্যাঠামশাই বা জ্যেষ্ঠতাত)। একজনের দিক থেকে খুড়তুতো সম্পর্ক হলে উল্টো দিকের সম্পর্ক হবে জাঠতুতো।
ফুফাতো বা পিসতুতো ভাই
সম্পাদনাবাবার বোন অর্থাৎ ফুফু/পিসির ছেলেকে ফুফাতো ভাই বলা হয়। স্থানভেদে (পশ্চিমবঙ্গে ) বলা হয় পিসতুতো ভাই বা দাদা। একজন আরেকজনের পিসতুত ভাই (বা বোন) হলে তার উলটো সম্পর্ক হবে মামাতো ভাই (বা বোন)।
অনাত্মীয় ভাই
সম্পাদনাগুরুভাই বা সতীর্থ
সম্পাদনাগুরুভাই বলতে বোঝায় "একই গুরুর শিষ্য সম্পর্কে ভাই।"[২] সতীর্থ শব্দের অর্থ, "সমকালে এক অধ্যাপকের ছাত্র; সহাধ্যায়ী; একপাঠী।"[৩]
একই সঙ্ঘের সদস্য
সম্পাদনাভ্রাতৃত্ব মানব সম্পর্কের নৈকট্যের পরিচায়ক। তাই ঘনিষ্ঠতা প্রকাশের জন্যে ভাই সম্বোধন নানা ভাবে ব্যবহার হয়। ধর্মীয় বা সামাজিক সঙ্ঘবদ্ধতার নজির হিসাবে সঙ্ঘের অন্যান্য পুরুষ সদস্যকে ভাই (ব্রাদার) বলার রীতি পৃথিবীতে সার্বজনীন।
"দাদা" সম্বোধন
সম্পাদনাপশ্চিমবঙ্গে অপরিচিত অথবা পরিচিত প্রায়সমবয়স্ক অনাত্মীয় ব্যক্তিকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য "দাদা" সম্বোধন করা হয়ে থাকে।[৪] সংক্ষেপে, ব্যক্তিনামের পরে সম্মান প্রদর্শনার্থে "দা" শব্দটি যুক্ত করা হয়।