ভবানী নদী

ভারতের নদী

ভবানী, একটি ভারতীয় নদী, এটি ভারতের কেরালা এবং তামিলনাড়ু রাজ্যগুলির মধ্যেদিয়ে প্রবাহিত। এটি কাবেরী নদীর একটি প্রধান শাখা নদী। ।

ভবানী নদী
আত্তাপ্পতি সংরক্ষিত বনে ভবানী নদীর প্রধান উৎসসমূহ
অবস্থান
দেশভারত
শহরউধাগামান্দালাম, মেত্তুপালিয়াম, সাথিয়ামঙ্গালাম, গোবিচেত্তিপলিয়াম, ভবানী
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
উৎস 
 • অবস্থানসাইলেন্ট ভ্যালি
মোহনা 
 • অবস্থান
কাবেরী নদী
দৈর্ঘ্য২১৫ কিলোমিটার (১৩৪ মা)

জলভাগ সম্পাদনা

ভবানী নদীটি পশ্চিম ঘাটের নীলগিরি পাহাড় থেকে উদ্ভূত হয়ে কেরলের সাইলেন্ট ভ্যালি জাতীয় উদ্যানে প্রবেশ করে এবং তামিলনাড়ুর দিকে প্রবাহিত হয়েছc। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ভবানী ২১৭-কিলোমিটার (১৩৫ মা) দীর্ঘ বহুবর্ষজীবী নদী বেশিরভাগ দক্ষিণ - পশ্চিম বায়ুপ্রবাহের সময় নদী ভরে এবং উত্তর-পূর্ব বায়ু প্রবাহের সময় নদী শুকায়। এর জলাশয়টি ০.৬২ নিযুত হেক্টর (২,৪০০ মা) অঞ্চলকে প্রবাহিত করে তামিলনাড়ু (৮৭%), কেরল (৯%) এবং কর্ণাটক (৪%) জুড়ে রয়েছে। মূল নদী মূলত তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাতুর জেলা এবং এরোড জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ৯০% নদীর পানি কৃষি কাজে সেচ দিতে ব্যবহৃত হয়।

এ নদী তামিলনাড়ুর ভবানীর কাছাকাছি কদুথুরাইয়ের পবিত্রস্থানে এসে কাবেরী নদীর সঙ্গে মিশেছে। [১]

উপনদী সম্পাদনা

 
ভবানীতে ভবানী ও কাবেরী নদীর সঙ্গম

পশ্চিম ও পূর্ব ভারাগর নদী সহ বারোটি ছড়া নদী ভবানীতে মিশে এবং নীলগিরির দক্ষিণ ঢাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। মুকালিতে, ভবানী উত্তর-পূর্ব দিকে আকস্মিক ১২০ ডিগ্রি বাঁক নিয়ে আরও ২৫ কিলোমিটার (১৬ মা) অবধি প্রবাহিত হয় আত্তাপ্পাদি মালভূমির মধ্য দিয়ে। এটি উত্তর দিক থেকে আগত কুন্দা নদীর দ্বারা আরও জোড়ালো হয়। শিরুবানী নদী, একটি বহুবর্ষজীবী জলপ্রবাহ এবং কদুঙ্গারাপল্লম নদী, যথাক্রমে দক্ষিণ এবং দক্ষিণপূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে কেরল-তামিলনাড়ু সীমান্তে এসে ভবানীর সাথে মিশে। [২] এ নদী তারপর নীলগিরির পাশ বরাবর পূর্ব দিকে বয়ে চলে এবং মেত্তুপালিয়ামের বাতরা কালিয়াম্মান মন্দিরের কাছে সমভূমি প্রবেশ করে। এর আগের এটি উত্তর-পশ্চিম থেকে আগত কুন্নুড় নদীর সাথে মিশে।

প্রায় ৩০ কিলোমিটার (১৯ মা) প্রবাহিত হবার পর, মোয়ার নদী, মুদুমালাই জাতীয় উদ্যান থেকে উত্থিত একটি প্রধান উপনদী উত্তর-পশ্চিম থেকে প্রবাহিত হয়েছে, যেখানে এটি নীলগিরির উত্তর ঢাল এবং বিলগিরি পাহাড়ের দক্ষিণ ঢালের মাঝখানের উপত্যকা দিয়ে প্রবাহিত হয়। মোয়ারের পরে এটি লোয়ার ভবানী বাঁধ দ্বারা আটকানো হয় এবং এরোড জেলার সত্যমঙ্গলমের নিকটে লোয়ার ভবানী প্রকল্প খাল পূর্ণ করা হয়। নদীটি পূর্ব দিকে ১৬০ কিলোমিটার (৯৯ মা) অবধি চলে ইরোদ জেলার মধ্য দিয়ে, গোবিচেত্তিপালিয়ামের কাছের কোদাবেরি বাাঁধ পরিয়ে যা আরাক্কানকোত্তাই এবং থাডাপ্পাল্লি খাল ভরাট করে, যেগুলো কৃষিকাজের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। [৩] 1283 খ্রিস্টাব্দে কলিঙ্গারায়ান নদীর তীরে একটি ছোট বাঁধ নির্মাণ করেছিলেন ৯০-কিলোমিটার (৫৬ মা) কলিঙ্গারায়ণ সেচ খাল ভরার জন্য। [৪]

বাঁধ সম্পাদনা

ভবানীসাগর বাঁধ
কোদিবেরি বাঁধ
ভবানীসাগর

ভবানীসাগর বাঁধটি ভারতের তামিলনাড়ুর ইরোদ জেলায় ভবানী নদীর তীরে অবস্থিত। [৫] বাঁধটি বিশ্বের বৃহত্তম মাটির বাঁধ[৬] বাঁধটি সত্যমঙ্গলম থেকে প্রায় ১৬ কিমি (৯.৯ মা) এবংগোবিচেটেপলিয়াম [৭] থেকে ৩৫ কিমি (২২ মা) পশ্চিমে অবস্থিত। লোয়ার ভবানী প্রকল্প ১৯৪৮ সালে ভারতের স্বাধীনতার পরে প্রথম সেচ প্রকল্প ছিল। এটি ১৯৫৫ সালের মধ্যে শেষ হয়েছিল এবং ১৯৫৬ সালে এটি ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল। বাঁধটি ২১০ মিলিয়ন (US$ ২.৫৭ মিলিয়ন) খরচে নির্মাণ করা হয়েছিল।

বাঁধটি ৮ কিমি (৫.০ মা) দীর্ঘ এবং ৪০ মি (১৩০ ফু) উঁচু। সম্পূর্ণ জলাধার স্তর ১২০ ফু (৩৭ মি) এবং বাঁধটির ধারণক্ষমতা ৩২.৮×১০^ ঘনফুট (৯৩০×১০^ মি)। [৬] বাঁধটিতে দুটি জল বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে, একটি পূর্ব তীরের খালের উপর ও অন্যটি ভবানী নদীর তীরে। প্রতিটির ধারণক্ষমতা ১৬ মেগাওয়াট (২১,০০০ অশ্বশক্তি) মোট ৩২ মেগাওয়াট (৪৩,০০০ অশ্বশক্তি)।

কোদিবেরি

কোদিবেরি বাঁধ পশ্চিম তামিলনাড়ুর গোবিচেত্তিপলিয়ামে ভবানী নদীর উপর স্থাপতি। বাঁধটি স্টেট হাইওয়ে ১৫ বরাবর গোবিচেত্তিপলিয়ামম গবিচেত্তিপলিয়াম থেকে সত্যমঙ্গলম অভিমুখে ১৫ কিমি (৯.৩ মা) দূরে অবস্থিত। এটি ১১২৫ খ্রিস্টাব্দে কোঙ্গলওয়ান নির্মাণ করেছিলেন। [৩]

দূষণ সম্পাদনা

শিল্প, পৌর ও কৃষি দূষণের ফলে নদীর পানির নিম্নমানের হয়ে গেছে এবং এই পানির উপর নির্ভরশীল মানুষ, উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। [৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Performing rituals at Kooduthurai becomes risky"The Hindu। ২৩ অক্টোবর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৯ 
  2. "Human chain formed against Kerala's plan to build dam on River Siruvani"NDTV। ২৬ জুন ২০১২। ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  3. Indian Archaeology, a Review। Archaeological Survey of India। ১৯৯৪। 
  4. "Kalingarayan Canal is 725 years old"The Hindu। ১৯ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৬ 
  5. "Tourist Information for Erode district"। Government of Tamil Nadu। ৬ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  6. "Uniqueness of Bhavanisagar dam" (পিডিএফ)। CSTI। ১১ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  7. "Bhavanisagar dam" (পিডিএফ)। TNAU। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  8. "River Bhavani"। rainwaterharvesting.org। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০০৭