ব্রুনাই–মালয়েশিয়া সম্পর্ক
ব্রুনাই–মালয়েশিয়া সম্পর্ক (মালয়: Hubungan Brunei–Malaysia), ব্রুনাই এবং মালয়েশিয়ার মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে।
ব্রুনাই |
মালয়েশিয়া |
---|
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর-এ ব্রুনাই এর একটি হাই কমিশন রয়েছে। এর পাশাপাশি, মালয়েশিয়াতে ব্রুনাই এর দুটি কনস্যুলেট-জেনারেল রয়েছে। কনস্যুলেট-জেনারেল দুটি মালয়েশিয়ার কোতা কিনাবালু এবং কুচিং অঞ্চলে অবস্থিত।[১][২] অপরদিকে, ব্রুনাই এর রাজধানী বন্দর সেরি বেগাওয়ান-এ মালয়েশিয়ার একটি হাই কমিশন রয়েছে।[৩]
মালয়েশিয়া এবং ব্রুনাই, উভয় দেশই আসিয়ান, কমনওয়েলথ অব নেশনস, জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) এর মত আন্তর্জাতিক ও বহুমাত্রিক সংস্থার সদস্য। বোর্নিও দ্বীপে দুই দেশের মধ্যে একটি অভিন্ন স্থল সীমান্ত রয়েছে
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৮৪ সালের জানুয়ারি এই দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[৪]
সাংস্কৃতিক সম্পর্ক
সম্পাদনাব্রুনাই এবং মালয়েশিয়ার মধ্যে সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে অনেক মিল রয়েছে। বিশেষত পূর্ব মালয়েশিয়া অঞ্চল পূর্বে ব্রুনাই সাম্রাজ্যের অংশ থাকায়, এই অঞ্চলের সাথে ব্রুনাই এর সাংস্কৃতিক মিল সবচেয়ে বেশি। ২০১১ সালে, মালয়েশিয়ার ৬১,৪৭০ জন পর্যটক, ব্রুনাই ভ্রমণে গিয়েছিলেন।[৪] অপরদিকে ২০১৩ সালে, ব্রুনাই এর ১,২৩৮,৮৭১ জন পর্যটক মালয়েশিয়াতে ভ্রমণে গিয়েছিলেন। [৫]
যোগাযোগ সম্পর্ক
সম্পাদনামালয়েশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সারাওয়াক এবং সাবাহ অঞ্চলের সাথে ব্রুনাই এর সড়ক পথে সংযোগ রয়েছে। প্যান বোর্নিও মহাসড়ক ও ব্রুনাই-মালয়েশিয়া মৈত্রী সেতুর মাধ্যমে ব্রুনাই এবং মালয়েশিয়ার অঞ্চল দুটি সংযুক্ত রয়েছে।
বিরোধ
সম্পাদনা২০০৯ সালের আগে, লিমবাং অঞ্চলে অবস্থিত স্থল সীমান্ত নিয়ে, ব্রুনাই এবং মালয়েশিয়ার মধ্যে বিরোধ ছিল।[৬]
ব্রুনাই এবং মালয়েশিয়ার এই বিরোধপূর্ণ স্থল অঞ্চলে বেশ কিছু গ্যাস এবং তেল ক্ষেত্র থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। উভয় দেশই এসব ক্ষেত্র অনুসন্ধানের ব্যাপারে আগ্রহী। তবে ২০০৩ সালে এই দুই দেশ, বিরোধের মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত, বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে গ্যাস এবং তেল ক্ষেত্র অনুসন্ধান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এ বিষয়ে একটি চুক্তিও করে। এছাড়াও একই চুক্তির আওতায় সমুদ্রের তলদেশে সন্ধানের ব্যাপারটিও স্থগিত রাখে।[৭]
২০০৯ সালের মার্চ মাসে মালেশীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস রিপোর্টে জানায়, দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনার পর, ব্রুনাই, লিমবাং এর উপর নিজেদের দাবি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ফলশ্রুতিতে লিমবাং মালয়েশিয়ার একটি অঞ্চল হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে। এর ফলে, সীমানা নিয়ে ব্রুনাই এবং মালয়েশিয়ার যে বিরোধ ছিল তার অবসান হবে।[৮] কিন্তু ব্রুনাই তাৎক্ষণিকভাবে, মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যমের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে। ব্রুনাই এর সরকারের মুখপাত্র বলেন, দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনার সময় লিমবাং এর বিষয়ে কোন আলোচনা হয় নি। তাই লিমবাং মালয়েশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না।[৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Consulate General of Brunei Darussalam in Kota Kinabalu, Sabah"। ব্রুনাইয়ের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ১৯ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ "Consulate General of Brunei Darussalam in Kuching, Sarawak"। ব্রুনাইয়ের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ১৯ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ "Official Website of High Commission of Malaysia, Bandar Seri Begawan"। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ১৯ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ ক খ "Brunei-Malaysia Relations"। ব্রুনাইয়ের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "Archived copy" (পিডিএফ)। ২৮ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ আর. হলার-ট্রস্ট (১৯৯৪)। The Brunei-Malaysia Dispute Over Territorial and Maritime Claims in International Law। আইবিআরইউ। পৃষ্ঠা ১৩–। আইএসবিএন 978-1-897643-07-5। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ স্যামুয়েল ব্ল্যাঙ্কসন (ফেব্রুয়ারি ২০০৭)। The Practical Guide to Total Financial Freedom। লুলু প্রেস ইনকরপোরেটেড। পৃষ্ঠা ২৭৪–। আইএসবিএন 978-1-4116-2054-4। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ "Brunei drops all claims to Limbang"। দ্যা ব্রুনাই টাইমস। ১৭ মার্চ ২০০৯। ১২ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৩।
- ↑ আজলান ওথম্যান (১৮ মার্চ ২০০৯)। "Brunei denies Limbang story"। বোর্নিও বুলেটিন। ২১ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০০৯।