প্রায় ১৩ থেকে ১৪ বৎসর পূর্বে আমার সাথে কিছু ভৌতিক ঘটনা ঘটেছিলো।আমি তখন ৬ কিংবা ৭ বছরের বাচ্চা মাত্র। আমরা শহরে থাকলেও আমাদের বাসাটি ছিলো শ্মশান এর উপর তৈরি।মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে সেই এলাকা এবং আশপাশ শ্মশান ই ছিলো।আমার নানুর বাড়ি এবং আমাদের বাড়ির দূরত্ব ত্রিশ সেকেন্ডের মাত্র।নানুরবাড়ির এক পাশে একটি বড় লিচু গাছ ছিলো।লিচু গাছের সাথেই বাড়ির দেয়াল।গাছটিতে উঠা খুবই সহজ ছিলো।গাছে উঠলে দেয়ালে উঠা যেতো তাই নানু বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়ার বাচ্চা আর আমি মিলে অনেক খেলতাম সেই গাছে উঠে। তখন আমার মা আমার মাঝে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করে। আমি আমার মায়ের সাথে হাঁটলে আমি রাস্তাঘাটে পরে যেতাম।আমার মা অনুভব করতো আমাকে কোনো কিছু ধাক্কা দেয়ার ফলে হাত ছিটকে নিচে পরে যেতাম। মা এই কথা আমার বাবাকে জানায় যে,তোমার মেয়েকে নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় কোনোকিছু বারকয়েক ধাক্কা দিয়েছে। আমার বাবা তখন বিশ্বাস করে নি। একদিন আমাকে আমার বাবা নানু বাসা থেকে বাসায় নিয়ে আসছিলো এবং আমি বাবার হাত ছিটকে নিচে পড়ে যাই।বাবা এতে ভয় পায় এবং আমার স্পষ্ট খেয়াল আছে বাবা আমার কনিষ্ঠ অঙ্গুলি খুব শক্তভাবে চাপ দিয়ে সূরা পড়ছিলো কোনো।সেদিন ই বাবার এক পরিচিত হুজুর কে ডাকায়। তিনি বলে ঐ লেচু গাছ থেকে সাতটি জ্বীন আমার উপর নজর দিয়েছে এবং তারা আমার ক্ষতি করতে চায়। তিনি কিছু জিনিস আনতে বলে বাবাকে। পরদিন তিনি সাতটি সাদা কাপড়ে লাল রঙের কলম দিয়ে "ওম" শব্দটি দিয়ে সাতটি ভয়ানক চেহারা আঁকেন।আঁকা শেষে আমাকে সাতটি চেহারা অঙ্কিত কাপড়ের উপর দাঁড়া করিয়ে চারদিকে সাতটি মোম ধরিয়ে দেয়। আমার হাতে একটি ছুড়ি দেয় এবং কাপড়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমি কাপড়ের মাঝে দাঁড়িয়ে ছিলাম কিন্তু বিষ্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে চারদিকে জ্বলন্ত আগুনের মাঝে আমার বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয় নি কিংবা আমার পায়ের পশম ও পুড়ে যায় নি। আমি সেই ছুড়ি দিয়ে কাপড়গুলোকে আরো ভালোভাবে গুটিয়ে দিচ্ছিলাম যাতে সম্পূর্ণভাবে কাপড় পুরে যায়।সেদিনের এই ঘটনার পর আমার আর তেমন কোনো সমস্যা হয় নি। তবে এখন আমি অনেক কিছু নিয়ে ভয় পাই। বাজে স্বপ্ন দেখি রাতে ঘুমাতে পারি না ভয়ে।একা থাকি, যেহেতু বড় হয়েছি মা বাবার সাথে ঘুমোই না। এই ছিলো আমার নিজস্ব কাহিনী।এর থেকে সম্পূর্ণ ভাবে পরিত্রাণের উপায় আমার জানা নেই।

বাংলা উইকিপিডিয়ায় আপনাকে স্বাগতম সম্পাদনা