বাংলা উইকিপিডিয়ায় স্বাগতম সম্পাদনা

রাধা নামটিকে নারী চরিত্র বানিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পাশে উপস্থাপনা করা- সম্পাদনা

রাধা নামটিকে নারী চরিত্র বানিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পাশে উপস্থাপনা করা- গীতগোবিন্দ কিংবা ব্রহ্মবৈবর্ত পূরাণের আলোকে শ্রীকৃষ্ণের প্রেয়সী এবং লীলাসঙ্গিনী হিসেবে প্রচার করা- সর্বোপরী ভূল ব্যখ্যার মাধ্যমে সমাজে ভূলভাবে প্রতিষ্টিত করে প্রকৃতপক্ষে আমরা নিজেদেরই ইতিহাস বিকৃত করছি।


আজ প্রকৃত সত্য এবং ইতিহাসই সবার কাছে মিথ্যে প্রতীয়মান হচ্ছে, অথচ ভয়ংকর এবং ধ্বংসাত্বক মিথ্যাকে অবলীলায় যুগের পর যুগ ধরে আমরা মেনে আসছি।


ব্যাখ্যাঃ গৌড়ীয় বৈষ্ণব দার্শনিকরা লীলা প্রকাশের যে তিনটি শক্তির ( স্রুপশক্তি, জীবশক্তি, মায়াশক্তি) কথা বর্ননা করেছেন তার মধ্যে স্বরুপ শক্তির আরও তিনটি উপভাগ রয়েছে-, যথা- সৎ , চিৎ, আনন্দ। আর এই আনন্দের আরেকটি রুপ হচ্ছে আহ্লাদিনী শক্তি। আর এই হ্লাদীনি শক্তি বা রুপকে রাধা নামের নারীশক্তি বা উপমায় উস্থাপনা করেছেন মাত্র। যা তখন প্রচার এবং প্রাঞ্জলতার স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছিল। সেই অর্থে সেখানেও বাস্তবে কোন নারী চরিত্র ছিলই না। এছাড়া অন্য কোন পূরাতন গ্রন্থে রাধা নামের অস্তিত্বও নেই।

রাধা কোন আয়ান ঘোষের পত্নী কিংবা মানব চরিত্র নয়।


বি. দ্র. জানি এই কথাটা সহজে মেনে নেয়া কিংবা হজম করা অনেকের পক্ষেই স্বাভাবিক ব্যাপার হবে না। তাই সমালোচনা কিংবা বিতর্ক গ্রহনযোগ্য রেফরেন্স সহকারেই করবেন। ( ব্রহ্মবৈবর্ত পূরান এবং গীতগোবিন্দ ব্যতিত)

ঈশ্বর শব্দের প্রয়োগ ও ব্যাখ্যা সম্পাদনা

ঈশ্বর হিন্দুধর্মের এমন একটি বিষয়, যার সময়কাল ও শাখাভেদে বহু অর্থ প্রচলিত রয়েছে। হিন্দু ধর্মের গ্রন্থানুসারে, এই ঈশ্বর নানান রূপের হতে পারে। প্রাচীন শাস্ত্রে, বিষয়ভেদে ঈশ্বর শব্দের অর্থ পরমাত্মা, শাসক, প্রভু, রাজা, রাণী বা স্বামী।মধ্যযুগে হিন্দুশাস্ত্রগুলোর শাখাভেদে ঈশ্বর শব্দের অর্থ ভগবান, পরমেশ্বর, ইষ্টদেবতা বা বিশেষ আত্মা,[১][২], যা কালক্রমে ব্যক্তি ঈশ্বরের রূপ নেয়।[২][৩][৪] শৈবধর্মে ঈশ্বর হচ্ছেন মহাদেব, যিনি তার ভক্তদের কাছে কখনো মহেশ্বর বা কখনো পরমেশ্বর বলে পূজনীয়। বৈষ্ণবধর্মে ঈশ্বর বিষ্ণুর সাথে সমার্থক। আবার ভক্তিবাদে ঈশ্বর হিন্দুধর্মের বহু দেব-দেবীর মধ্যে ভক্তের দ্বারা নির্বাচিত, যিনি এক বা একাধিক হতে পারে। আর্য সমাজ বা ব্রাহ্ম সমাজের মতো আধুনিক ধর্মশাখাগুলির ক্ষেত্রে ঈশ্বর নিরাকার অদ্বিতীয়, পরমপিতা। যোগশাখায় ঈশ্বর ইষ্টদেবতা বা আদর্শস্থানীয়, প্রকারান্তরে গুরু হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন। সনাতন ধর্মের যোগ দর্শনে ঈশ্বরকে ব্যক্তি ঈশ্বর বা আধ্যাত্মিক ভাবে তাকে ডাকা হয়, তার সাধনা করা হয়।[৬] অদ্বৈত বেদান্তে ঈশ্বর এক অদ্বৈতবাদী সত্তা, যিনি জড়ের সাথে জীবের সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম।

চুরাশি লক্ষ যোনি ভ্রমণ সম্পর্কে- পুরাণাদি শাস্ত্রে যা আছে তার বিবরণঃ- সম্পাদনা

৩০ লক্ষ বার বৃক্ষ যোনিতে জন্ম হয়। এটাতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়। রুদ্রের তাপ লাগে, ঝড় বৃস্টির ফলে ডালপালা ভাঙ্গে। শীতকালে সব পাতা ঝরে যায়, কুঠার দিয়ে কাটা হয়। আরো অনেক প্রকার কষ্ট পায়। তারপর জলচর রুপে জন্ম হয়। এই রুপে ৯ লক্ষবার জন্ম হয়। হাত নেই,পা নেই শুধু দেহ আর মাথা। খায় পচা মাংস আর যা পায়। একজনের মাংস আরেকজন খেয়ে জীবন রক্ষা করে। তারপর ক্রিমি যোনি। ১০লক্ষ বার জন্মে। ১১লক্ষবার পাখি রূপে। তাদের ঘর বাড়ি নেই। গাছে গাছে থাকে। জোক,পোকা, পচা গলা যা পায় তা খায়। নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাওয়ায়। যখন সন্তান উড়তে পারে তখন আর ফিরেও তাকায় না। যদি কাক আর শকুনি হয়ে জন্মায় তবে অনেকদিন বেচে থাকে। ২০ লক্ষবার পশু যোনি। নানা পশু নানা কষ্ট পায়। কোনো পশু হিংস্র পশু দ্বারা আক্রান্ত। কেউ বা লোকালয়ে লুকিয়ে থাকে। কেউ একে অন্যকে মেরে খায়। কেউবা ঘাস তৃণ খায়। হাল চাষে গাড়ি টানায়। যত রোগশোক হয় দিনরাত মল মুত্রের সাথেই বাস করতে হয়। গো-যোনিতে জন্ম লাভ পশুর মধ্যে শ্রেষ্ঠ গো-র শেষ আর পশু জন্ম নেই। তারপর মানব কুলেতে জন্ম ৪লক্ষ বার। বনের মানুষ বনের মধ্যে তারা পশুসম খাবার খায় তাদের আত্ম-পর জ্ঞান নেই। তারপর পাহাড়িয়া জাতির জন্ম হয়। নাগা, কুকি, সাওতালি। তারপর জন্ম হয় অধম কুলে। তারা দেবধর্ম মানেনা। অপকর্ম করে। মদ্য পান করে। তারপর শুদ্রুকুলে জন্ম। যা কর্ম করে তা নিজেই ভোগ করে। কেউ অন্ধ, কেউ কানে শুনেনা ইত্যাদি হয়। কারো স্বভাব ভাল হয় কর্মগুণে। তারপর জন্মায় বৈশ্য জাতি কুলে। কর্ম অনুযায়ি ফল ভোগ করে ওরা। তারপর ক্ষত্রিয়। কর্ম ফলে ফল ভাগি হয়। অবশেষে ব্রাহ্মণকুলে জন্মায়। এখানে আর একাধিকবার জন্ম হয়না। উত্তম ব্রাহ্মণ জন্ম তার শ্রেষ্ঠ। ব্রহ্মজ্ঞান থাকলেই সে ব্রাহ্মণ। নিজের উদ্ধারে সে আত্মজ্ঞান লাভ করে। শুধু ব্রাহ্মণ কুলে জন্মালেই উদ্ধার হওয়া যায়না। যদি সে জ্ঞান লাভ করতে না পারে তবে পুনরায় সে চুরাশিলক্ষ যোনি পদে ঘুরে। বারবার জন্মলাভে কষ্ট পায়। আর কোনো উপায় নেই যদিনা ভগবানের শরণাগত হয়। বড় দূর্লভ এই মানব জীবন,অনেক রাস্তা পার করে এখানে আসতে হয়ছে,তাই এই দূর্লভ মানব জীবন কে সফল করো,কৃষ্ণ নাম করে মুক্তির পথ প্রশস্ত করো।

তেত্রিশ কোটি দেবতা সম্পাদনা

তেত্রিশ দেবতার নাম এই তেত্রিশ জন হলেন দ্বাদশ আদিত্য: ভাগবত পুরাণ অনুসারে এই দ্বাদশ আদিত্য হলেন: • বিবস্বান্ • অর্যমা • পূষা • ত্বষ্টা • সবিতা • ভগ • ধাতা • বিষ্ণু (দ্বাদশ আদিত্যের অধিপতি) • বরুণ • মিত্র • ইন্দ্র • অংশুমান একাদশ রুদ্র: এই একাদশ রুদ্র হলেন মহাদেব শিবের বিভিন্ন রূপ • মন্যু • মনু • মহিনস • মহান • শিব • ঋতুধ্বজ • উগ্ররেতা • ভব • কাল • বামদেব • ধুতব্রত অনেক গ্রন্থ অনুসারে একাদশ রুদ্র হলেন মানব শরীরের দশ চালিকা শক্তি এবং এক আত্মা। বৃহদারন্যক উপনিষদে একাদশ রুদ্র হলেন • প্রাণ(নিঃশ্বাস) • অপান(প্রশ্বাস) • ব্যন • সমান • উদাম • নাগ • কুর্ম্ম • কৃকল • দেবদত্ত • ধনঞ্জয় • আত্মা অষ্টবসু: মহাভারত অনুসারে অষ্টবসু হলেন • ধরা (পৃথিবী) • অনল (অগ্নি) • অনিল (বায়ু) • অহ (ব্যপ্ত) • প্রত্যুষ • প্রভাষ • সোম • ধ্রুব দুই অশ্বিন

রথযাত্রার ইতিহাস সম্পাদনা

মালবরাজ ইন্দ্রদুম্ন্য ছিলেন পরম বিষ্ণু ভক্ত। একদিন এক তেজস্বী সন্ন্যাসী তাঁর রাজবাড়ীতে পদার্পণ করলেন। দেব দ্বিজে ভক্তিপরায়ন রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য পরম যত্নে সন্ন্যাসীর সেবা যত্ন করলেন। সন্ন্যাসী ভারতবর্ষের সমস্ত তীর্থের কথা বলে পুরুষোত্তম ক্ষেত্রের নীল পর্বতে ভগবান বিষ্ণুর পূজার কথা জানালেন। এখানে ভগবান বিষ্ণু গুপ্তভাবে শবর দের দ্বারা নীলমাধব রূপে পূজিত হচ্ছেন, নীলমাধব সাক্ষাত্ মুক্তিপ্রদায়ক, তিনি মোক্ষ প্রদান করেন।

সন্ন্যাসীর কথা শুনে ভগবান বিষ্ণুর ভক্ত রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য ভগবানের রূপ দর্শনে আকুল হলেন। রাজা তাঁর পুরোহিতের ভাই বিদ্যাপতিকে শবর দের রাজ্যে গিয়ে নীলমাধবের সন্ধান করে আনতে বললেন। এরপর শবর দের দেশে এসে বিদ্যাপতি শবর দের রাজা বিশ্বাবসুর সাথে সাক্ষাত্ করলেন। শবর রাজা বিদ্যাপতিকে স্বাদর অভ্যর্থনা করে অতিথি চর্চার জন্য কন্যা ললিতাকে দায়িত্ব দেন। কিছুদিন থাকার পর বিদ্যাপতি শবর রাজা বিশ্বাবসুর কন্যা ললিতার প্রেমে পড়েন। উভয়ে উভয়কে ভালোবেসে ফেলেন। যার পরিণাম-স্বরূপ ললিতা অন্তঃসত্ত্বা হন। ললিতা এ কথা বিদ্যাপতিকে জানান এবং তাঁকে বিবাহ করতে বলেন। বিদ্যাপতি ললিতাকে এর বিনিময়ে নীলমাধব দর্শনের অভিপ্রায় জানান। ললিতা সে কথা শুনে বিচলিত হয় কিন্তু সে বলে এক সর্তে সে নীলমাধবকে দেখাতে পারে - বিদ্যাপতি যে পথে যাবেন সেই সময় তাঁর দুই চোখ সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে অর্থাত্ কাপড়ের পট্টি বাঁধা হবে যাতে তিনি রাস্তা না দেখতে পারেন কিম্বা চিনতে পারেন। বিদ্যাপতি রাজি হয়ে যান। কিন্তু বিদ্যাপতি একটি বুদ্ধি করেন, উনি সঙ্গে করে সরষে নিয়ে যান। হাতে এক মুঠো এক মুঠো করে সরষে নিয়ে সারা রাস্তা ফেলতে ফেলতে যান। এ' সব কাজ ললিতার অগোচরেই সম্পন্ন হয়। বিদ্যাপতির উদ্দেশ্য ছিল নীলমাধবকে পুরীতে নিয়ে যাওয়া। সেই পথ চেনার জন্য উনি সরসের গাছ দেখতে দেখতে নীলমাধবের মন্দিরে পৌঁছন কিন্তু প্রভু নীলমাধব অন্তর্যামী বিদ্যাপতির হাতের নাগাল থেকে অন্তর্ধান হ'ন। বিশ্ববসু কন্যা ললিতার মারফত্ বিদ্যাপতি নীলমাধব কে দর্শন লাভ করলেন বিশ্ববসুর অগোচরে। তারপর বিদ্যাপতি গিয়ে রাজাকে সব জানালেন। রাজা খবর পেয়ে সৈন্য সামন্ত নিয়ে নীলমাধবের দর্শনে আসলেন। অবতার সম্পর্কে সুস্পষ্ট যথাযথ ধারনা ইন্দ্রদুম্ন্য পুরুষোত্তম ক্ষেত্রে এসে নীলমাধব দর্শন করতে গেলে শুনলেন নীলমাধব অন্তর্ধান হয়েছেন। মতান্তরে শবর রাজ বিশ্বাবসু সেটিকে লুকিয়ে রাখেন। রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য এতে খুব দুঃখ পেয়ে ভাবলেন প্রভুর যখন দর্শন পেলাম না তখন এই জীবন রেখে কি লাভ? অনশনে প্রান ত্যাগ করাই শ্রেয় । এই ভেবে রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য কুশ শয্যায় শয়ন করলেন। সে' সময় দেবর্ষি নারদ মুনি জানালেন - "হে রাজন তোমার প্রাণত্যাগের প্রয়োজন নাই। এই স্থানে তোমার মাধ্যমে ভগবান জগন্নাথ দেব দারুব্রহ্ম রূপে পূজা পাবেন। স্বয়ং পিতা ব্রহ্মা একথা জানিয়েছেন।" রাজা শুনে শান্তি পেলেন। এক রাতের কথা রাজা শয়নে ভগবান বিষ্ণুর স্বপ্ন পেলেন। স্বপ্নে ভগবান শ্রীহরি বললেন - "হে রাজন । তুমি আমার প্রিয় ভক্ত। ভক্তদের থেকে আমি কদাপি দূর হই না। আমি সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে তোমার নিকট আসছি। পুরীর বাঙ্কিমুহান নামক স্থানে তুমি আমাকে দারুব্রহ্ম রূপে পাবে।" রাজা সেই স্থানে গিয়ে দারুব্রহ্মের সন্ধান পেলেন। কিন্তু তাকে একচুল ও নড়াতে পারলেন না । রাজা আদেশ দিলেন হাতী দিয়ে টানতে। সহস্র হাতী টেনেও সেই দারুব্রহ্ম কে এক চুলও নড়াতে পারলো না। রাজা আবার হতাশ হলেন। সেই সময় ভগবান বিষ্ণু স্বপ্নে জানালেন - "হে রাজন। তুমি হতাশ হইও না। শবর রাজ বিশ্বাবসু আমার পরম ভক্ত। তুমি তাকে সসম্মানে এইস্থানে নিয়ে আসো। আর একটি স্বর্ণ রথ আনয়ন করো।" রাজা সেই মতো কাজ করলেন। ভক্ত বিশ্বাবসু আসলেন। বিশ্বাবসু, বিদ্যাপতি আর রাজা তিনজনে মিলে দারুব্রহ্ম তুললেন। সেসময় চতুর্দিকে ভক্তেরা কীর্তন করতে লাগলো। তারপর দারুব্রহ্ম কে রথে বসিয়ে তিনজন নিয়ে এলেন। প্রকাশ থাকে পুরীর দৈতাপতিরা ওই ব্রাহ্মণ বিদ্যাপতি এবং শবর কন্যা ললিতার বংশধর। তাই ওরা কেবল রথের সময় ভগবান জগন্নাথের সেবা করার অধিকার পান। রথে উপবিষ্ট প্রভু জগন্নাথ বলভদ্র মা সুভদ্রা এবং সুদর্শনের। এই বছরও নব-কলেবর যাত্রায় দৈতাপতিরা দারু অন্বেষণ এবং ব্রহ্ম পরিবর্তনের কাজ সমাপন করেছেন। এ ছাড়া ওনারা পুর্ব বিগ্রহদের পাতালিকরন কাজ সমাপন করেন 'কোইলি বৈকুন্ঠে' । গো হত্যা ও বেদ নিয়ে মিথ্যাচারের জবাব রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য সমুদ্রে প্রাপ্ত দারুব্রহ্ম প্রাপ্তির পর গুণ্ডিচা মন্দিরে মহাবেদী নির্মাণ করে যজ্ঞ করলেন। যজ্ঞ সমাপ্তে দেবর্ষি নারদ মুনির পরামর্শে রাজা সেই দারুব্রহ্ম বৃক্ষ কাটিয়ে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা দেবীর বিগ্রহ তৈরীতে মনোনিবেশ করলেন। এর জন্য অনেক ছুতোর কারিগর কে ডেকে পাঠানো হলো। কিন্তু বৃক্ষের গায়ে হাতুড়ী, ছেনি ইত্যাদি ঠেকানো মাত্রই যন্ত্র গুলি চূর্ণ হতে লাগলো। রাজা তো মহা সমস্যায় পড়লেন। সেসময় ছদ্দবেশে বিশ্বকর্মা মতান্তরে ভগবান বিষ্ণু এক ছুতোরের বেশে এসে মূর্তি তৈরীতে সম্মত হলেন। তিনি এসে বললেন- "হে রাজন। আমার নাম অনন্ত মহারাণা। আমি মূর্তি গড়তে পারবো। আমাকে একটি বড় ঘর ও ২১ দিন সময় দিন। আমি তৈরী করবো একটি শর্তে। আমি ২১ দিন দরজা বন্ধ করে কাজ করবো। সেসময় এই ঘরে যেন কেউ না আসে। কেউ যেন দরজা না খোলে।" অপর দিকে মোটা পারিশ্রামিকের লোভে যে ছুতোররা এসেছিলো তাদের নিরাশ করলেন না অনন্ত মহারাণা। তিনি বললেন- "হে রাজন । আপনি ইতিপূর্বে যে সকল কারিগর কে এনেছেন, তাদের বলুন তিনটি রথ তৈরী করতে।" ছদ্মবেশি বিশ্বকর্মা ঘরে ঢুকলে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে সেখানে কড়া প্রহরা বসানো হোলো যাতে কাক-পক্ষীও ভেতরে না যেতে পারে। ভেতরে কাজ চলতে লাগলো। কিন্তু রানী গুণ্ডিচার মন মানে না। স্বভাবে নারীজাতির মন চঞ্চলা হয়। রানী গুন্ডিচা ভাবলেন - "আহা কেমনই বা কারিগর বদ্ধ ঘরে মূর্তি গড়ছেন। কেমন বা নির্মিত হচ্ছে শ্রীবিষ্ণুর বিগ্রহ। একবার দেখেই আসি না। একবার দেখলে বোধ হয় কারিগর অসন্তুষ্ট হবেন না।" এই ভেবে মহারানী ১৪ দিনের মাথায় মতান্তরে ৯ দিনের মাথায় দরজা খুলে দিলেন। কারিগর ক্রুদ্ধ হয়ে অদৃশ্য হোলো। অসম্পূর্ণ জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা দেবীর মূর্তি দেখে রানী ভিরমি খেলেন। একি মূর্তি! নীল নবঘন শ্যামল শ্রীবিষ্ণুর এমন গোলাকৃতি নয়ন, হস্ত পদ হীন, কালো মেঘের মতো গাত্র বর্ণ দেখে মহারানীর মাথা ঘুরতে লাগলো। রাজার কানে খবর গেলো। রাজা এসে রানীকে খুব তিরস্কার করলেন। বদ্ধ ঘরের মধ্য থেকে এক কারিগরের অদৃশ্য হয়ে যাওয়ায় বিচক্ষণ মন্ত্রী জানালেন তিনি সাধারন মানব না কোনো দেবতা হবেন। বিষ্ণু ভক্ত রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য তাঁর আরাধ্য হরির এই রূপ দেখে দুঃখিত হলেন। রাজাকে সেই রাত্রে ভগবান বিষ্ণু আবার স্বপ্ন দিলেন। বললেন - "আমার ইচ্ছায় দেবশিল্পী মূর্তি নির্মাণ করতে এসেছিলেন। কিন্তু শর্ত ভঙ্গ হওয়াতে এই রূপ মূর্তি গঠিত হয়েছে। হে রাজন, তুমি আমার পরম ভক্ত, আমি এই অসম্পূর্ণ মূর্তিতেই তোমার পূজা নেবো। আমি দারুব্রহ্ম রূপে পুরুষোত্তম ক্ষেত্রে নিত্য অবস্থান করবো। আমি প্রাকৃত হস্তপদ রহিত, কিন্তু অপ্রাকৃত হস্তপদাদির দ্বারা ভক্তের সেবাপূজা শ্রদ্ধা গ্রহণ করবো। আমি ত্রিভুবনে সর্বত্র বিচরণ করি। লীলা মাধুর্য প্রকাশের জন্য আমি এখানে এইরূপে অধিষ্ঠান করবো। শোনো নরেশ - ভক্তেরা আমার এই রূপেই মুরলীধর শ্রীকৃষ্ণ রূপের দর্শন পাবেন। যদি তুমি ইচ্ছা করো তবে ঐশ্বর্য দ্বারা সোনা রূপার হস্ত পদাদি নির্মিত করে আমার সেবা করতে পারো। " সেইথেকে উল্টো রথের পর একাদশীর দিন তিন ঠাকুরের সুবর্ণ-বেশ রথের ওপর হয়। সেই বেশ দেখলে সাত জন্মের পাপ ক্ষয় হয় যা দেখতে লক্ষ লক্ষ ভক্ত পুরী আসেন প্রত্যেক বত্সর। পরে দেখা গেল যে ভগবান বিষ্ণু তাঁর পরম ভক্ত রাজা ইন্দ্রদুম্ন্য কে স্বপ্নে সান্ত্বনা দিচ্ছেন এই বলে যে তিনি সেই হস্তপদ রহিত বিকট মূর্তিতেই পূজা নেবেন। সেই স্বপ্ন পর্ব তখনো চলছে। ভক্ত ও ভগবানের মধ্যে যে ভক্তির সম্বন্ধ তা একে একে উঠে আসছে। নিদ্রিত অবস্থায় স্বপ্নে রাজা তখনও সেই ছদ্দবেশী অনন্ত মহারানার জন্য প্রার্থনা জানিয়ে বলছেন - "হে প্রভু জনার্দন, যে বৃদ্ধ কারিগরকে দিয়ে তুমি তোমার এই মূর্তি নির্মিত করিয়াছ - আমার অভিলাষ এই যে সেই কারিগরের বংশধরেরাই যেনো তোমার সেবায় রথ যুগ যুগ ধরে প্রস্তুত করিতে পারে।" ভগবান নারায়ন তাঁর ভক্তদের খুবুই স্নেহ করেন। তাই ভগবান একে একে রাজার ইচ্ছা পূর্ণ করতে লাগলেন। এরপর ভগবান বিষ্ণু বললেন - "হে রাজন। আমার আর এক পরম ভক্ত শবর রাজ বিশ্বাবসু আমাকে নীলমাধব রূপে পূজা করতো- তাঁরই বংশধরেরা আমার সেবক রূপে যুগ যুগ ধরে সেবা করবে । বিদ্যাপতির প্রথম স্ত্রীর সন্তান গন আমার পূজারী হবে। আর বিদ্যাপতির দ্বিতীয়া স্ত্রী তথা বিশ্বাবসুর পুত্রী ললিতার সন্তান এর বংশধরেরা আমার ভোগ রান্নার দায়িত্ব নেবে। আমি তাদের হাতেই সেবা নেবো।" বিদ্যাপতি প্রথম রাজার আদেশে নীলমাধব সন্ধান করতে গেছিলেন শবর দের দেশে, শবর বা সাঁওতাল যাদের আমরা ছোটো জাত বলে দূর দূর করি - শ্রীভগবান বিষ্ণু প্রথম তাঁদের দ্বারাই পূজা নিলেন। অপরদিকে তিনি তাঁদের হাতে সেবার আদেশ দিলেন। ব্রাহ্মণ ও শূদ্র জাতির একত্র মেলবন্ধন ঘটালেন স্বয়ং ভগবান। সেজন্যই বলে পুরীতে জাতি বিচার নেই। জগতের নাথ জগন্নাথ সবার। বিদ্যাপতি শবর দেশে নীলমাধবের সন্ধান করতে গিয়ে বিশ্বাবসুর দুহিতা ললিতার সাথে ভালোবাসা ও বিবাহ করেছিলেন। আর বিদ্যাপতিকে শবর দেশে পৌছানোর জন্য এক রাখাল বালক বারবার পথ প্রদর্শন করেছিলেন। সেই রাখাল বালক আর কেউ নয় স্বয়ং বৃন্দাবনের 'রাখালরাজা নন্দদুলাল'। ইন্দ্রদুম্ন্য স্বপ্নে ভগবান বিষ্ণুর কাছে প্রতিশ্রুতি দিলেন - "হে মধূসুদন, প্রতিদিন মাত্র এক প্রহর অর্থাত্ তিন ঘণ্টার জন্য মন্দিরের দ্বার বন্ধ থাকবে, বাকী সময় মন্দিরের দ্বার অবারিত থাকবে, যাতে তোমার সন্তান ভক্তেরা তোমার দর্শন লাভ করে। সারাদিন আপনার ভোজোন চলবে। আপনার হাত কদাপি শুস্ক থাকবে না।" ভগবান বিষ্ণু রাজাকে তাই বর দিলেন। এবার ভগবান ভক্তের পরীক্ষা নিলেন - তিনি বললেন - "এবার নিজের জন্য কিছু প্রার্থনা করো, তুমি আমার ভক্ত।" প্রকৃত ভক্তেরা নিস্কাম, তাই কোনো প্রকার সুখ ঐশ্বর্য তারা চান না। রাজা একটি ভয়ানক বর চেয়ে বললেন - "প্রভু আমাকে এই বর দিন আমি যেন নির্বংশ হই, যাতে আমার বংশধরের কেউ যেন আপনার দেবালয়কে নিজ সম্পত্তি দাবী না করতে পারে।" ভগবান হরি তাই বর দিলেন। জগন্নাথ মন্দিরে প্রান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রজাপতি ব্রহ্মা। রথ যাত্রার ইতিহাস সম্পর্কে এইটাই গল্প.... জগন্নাথের প্রধান উত্সব হল রথযাত্রা। কিংবদন্তি অনুসারে বলা হয়- আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরাম রথে চড়ে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের পত্নী গুণ্ডিচার বাড়ি যান (সেটাকে বলা হয় জগন্নাথের 'মাসির বাড়ি') এবং সাত দিন পরে সেখান থেকে আবার নিজের মন্দিরে ফিরে আসেন। স্থানীয় ভাবে এটি মাসির বাড়ি যাওয়া নামে পরিচিত! রথে চড়ে ওই গমন ও প্রত্যাগমনকে (সোজা)রথ ও (উল্টো)রথ বলা হয়। 'রথযাত্রা' আবার পতিতপাবনযাত্রা, নবযাত্রা, গুণ্ডিচাযাত্রা, মহাবেদীযাত্রা, নন্দীঘোষযাত্রা নামেও পরিচিত।

হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র সম্পাদনা

"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে", এটা চৈতন্যদেবের আবিষ্কার; চৈতন্যদেব নাম সঙ্কীর্তনের মাধ্যমে সমাজে কৃষ্ণ নাম প্রচার করার জন্য এটা আবিষ্কার করেন এবং ভক্ত পারিষদসহ খোল করতাল সহযোগে এই লিরিককে গানে রূপান্তরিত করে সমাজে কৃষ্ণ নাম প্রচার করেন। আমি চৈতন্যদেবের একজন কট্টর সমালোচক, চৈতন্যদেবের জন্মের পর থেকে ৫০০ বছর পেরিয়ে গেলেও আমার মতো সমালোচনা সম্ভবত চৈতন্যদেবের কেউ করে নি এবং আমি ই প্রথম চৈতন্যদেবের অবতার তত্ত্বকে শুধু অস্বীকারই করি নি, তার ভগবান তত্ত্বকেও খারিজ করেছি এবং যুক্তি প্রমাণসহ সেগুলো তুলে ধরেছি। আমার এই সমালোচনার মূল কারণ সমাজ থেকে মিথ্যাকে উপড়ে ফেলা; কারণ, মিথ্যাই সমাজের জন্য মূল ক্ষতির বিষয়। মানুষ যতদিন সনাতনী থাকবে ততদিন সে আত্মরক্ষা করে শুধু টিকেই থাকবে না বাড়তেও থাকবে; কিন্তু যখনই কেউ চৈতন্যদেবের আদর্শে নিজেকে বৈষ্ণব ভাবতে শুরু করে তথন নপুংসকতা তার উপর ভর করে এবং এটা তাকে আত্মরক্ষার শিক্ষা তো দেয় ই না, বরং আস্তে আস্তে তাকে বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যায়। চৈতন্যদেবের জীবনী গভীরভাবে স্টাডি করবেন, আমার কথার সত্যতার প্রমাণ পাবেন। চৈতন্যদেবের জীবনের কোনো আদর্শ সমাজের জন্য গ্রহনযোগ্য না হলেও বা সেগুলো আমার পছন্দের না হলেও, চৈতন্যদেব যেভাবে সমাজে কৃষ্ণনাম প্রচার করেছেন, সেটা কিন্তু আমার ভীষণ পছন্দের। কারণ, চৈতন্যদেবের আগে সমাজে কেউ এভাবে গান কীর্তনের মাধ্যমে আকর্ষণীয়ভাবে কৃষ্ণনাম প্রচার করে নি। কিন্ত কথায় বলে, এক বালতি দুধের মধ্যে এক ফোঁটা গো-মূত্র পড়লে যেমন পুরো দুধই নষ্ট হয়ে যায়, তেমনি চৈতন্যদেবের কৃষ্ণনাম প্রচার ব্যর্থ হয়ে গেছে চৈতন্যদেব কর্তৃক রাধার অস্তিত্ব স্বীকার করায় এবং শ্রীকৃষ্ণের পাশে রাধাকে দাঁড় করানোয়। কিন্তু একটি পিঁপড়া বা মাছির কারণে যেমন পুরো এক গ্রাস দুধ ফেলে দেওয়া হয় না, পিঁপড়া বা মাছিকে তুলে ফেলে দিয়ে দুধটুকু যেমন পান করা হয়, তেমনি কৃষ্ণের পাশ থেকে রাধাকে তুলে ফেলে দিয়ে সমাজে কৃষ্ণনাম প্রচার করলেই কেবল কৃষ্ণ সবার কাছে গ্রহনযোগ্য হবে এবং রাধার কারণে কৃষ্ণের যে বদনাম তা জনমানস থেকে অপসারিত হবে। বৈষ্ণব সমাজের ব্যাপক মিথ্যা প্রচারের কারণে চৈতন্যদেবকে অনেকেই ভগবান বা কলিযুগের অবতার মনে করে, কিন্তু যখন প্রকৃত সত্য সবার কাছে উন্মোচিত হবে, তখন চৈতন্যদেবের থিয়োরিসহ চৈতন্যদেব মুখ থুবড়ে পড়বে; একই কারণে- র্বতমানে ইসকনের রমরমা চললেও, রাধার মতো মিথ্যাকে অবলম্বন করায়, যুবসমাজকে বিভ্রান্ত করে তাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করায় এবং চৈতন্যদেবকে আদর্শ ধরায়, এই বাংলাতে ইসকনও একদিন মুখ থুবড়ে পড়বে; ইসকনে লোকজন এখনও এই কারণে যাচ্ছে, কারণ লোকজনের কাছে প্রকৃত সত্য এখনও পৌঁছে নি এবং ইসকনের বিকল্প ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন এখনও বাংলায় গড়ে উঠে নি । একসময় ইসকন বিলুপ্ত হলেও এবং চৈতন্যদেবকে কেউ অবতার বা ভগবান না মানলেও থেকে যাবে চৈতন্যদেব কর্তৃক প্রবর্তিত এই কৃষ্ণ নামের ধরণ এবং কালের অন্ত পর্যন্ত উচ্চারিত হবে-"হরে কৃষ্ণ, হরে রাম"; কারণ, এর শাস্ত্রীয় স্বীকৃতি আছে; কেননা, গীতার ৯ম অধ্যায়ের ১৩ নং শ্লোকে পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন- "হে পার্থ, মহাত্মাগণ আমার দৈবী প্রকৃতি আশ্রয় করিয়া, আমাকে সর্বভূতের আদি ও অব্যয় কারণ জানিয়া অনন্যচিত্তে আমার ভজনা করেন।" এই ভজনা করার সিস্টেমটা কী, সেটা শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন ৯/১৪ নং শ্লোকে- "সততং কীর্তয়ন্তো মাং যতন্তশ্চ দৃঢ়ব্রতাঃ। নমস্যন্তশ্চ মাং ভক্ত্যা নিত্যযুক্তা উপাসতে।।" এর অর্থ- তাঁহারা সর্বদায় আমার নামকীর্তন করিয়া, যত্নশীল ও দৃঢ়ব্রত হইয়া ভক্তিসহ আমাকে প্রণাম করিয়া নিত্য যোগ সহকারে আমার উপাসনা করেন। গীতার এই শ্লোকই আসলে নামকীর্তন বা হরে কৃষ্ণ গানের মূল ভিত্তি বা উৎস, যাকে চৈতন্যদেব রূপ দেন ১৬ শব্দের ঐ গানে। ইসকনিরা যে এটাকে বলে মহামন্ত্র, ইসকনিদের এই দাবীও মিথ্যা নয়; কারণ শ্রীকৃষ্ণ পরবর্তী মানুষদের উদ্ধার ও মুক্তির জন্য শ্রীকৃষ্ণই শেষ কথা এবং তাকে কিভাবে ভজনা করতে হবে, সেটা শ্রীকৃষ্ণ নিজেই গীতার এই শ্লোকে বলে গিয়েছেন, সুতরাং "হরে কৃষ্ণ" যে মহামন্ত্র তাতে কোনো সন্দেহ নেই এবং এই মন্ত্র বা গানের ভিত্তি যে স্বয়ং গীতা, সেটাও তো প্রমাণ করেই দিলাম। অনেকেই নয়, প্রায় সবাই বলে থাকে যে "হরে কৃষ্ণ" নামের এই মহামন্ত্র নাকি ১৬ নাম ও ৩২ অক্ষরের। এদের চিন্তার দীনতা দেখলে আমি অবাক হয়ে যাই। এখানে ১৬টি নাম নয়, আছে ১৬টি শব্দ এবং ১৬টি শব্দে মাত্র ৩টি নামই বারবার ব্যবহার হয়েছে, সেই তিনটি নাম হলো- হরে, কৃষ্ণ ও রাম। আর এই ১৬টি শব্দে মোটেই ৩২ অক্ষর নেই, আছে আরো বেশি, সেগুলোর হিসাব নিচে দিচ্ছি। এই প্রসঙ্গে বর্ণ ও অক্ষর সম্বন্ধে কিছু বলা দরকার। যারা কবিতার নাড়ী নক্ষত্র ভালো বোঝেন, তারা জানে ন যে, অক্ষর ও বর্ণ এক জিনিস নয়। বর্ণ কী, সেটা তো সবাই জানেন, কিন্তু বর্ণের সমর্থক শব্দ হিসেবে অক্ষরকে অনেকে মনে করলেও, আসলে অক্ষর হলো কোনো শব্দের যতটুকু অংশকে একবারে উচ্চারণ করা যায়, সেটা। কিন্তু এই ১৬ নাম ৩২ অক্ষর থিয়োরির প্রবক্তাদের এত গভীরে যাওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই, তারা অক্ষর বলতে বর্ণকেই বুঝে থাকে, সেই হিসেবেই দেখুন এই ১৬ শব্দে মোট কতটি বর্ণ আছে- হরে = হ+র+এ= ৩ গুনন ৮ = ২৪টি বর্ণ কৃষ্ণ = ক+র+ষ+ণ = ৪ গুনন ৪ = ১৬ টি বর্ণ রাম = র+আ+ম = ৩ গুনন ৪ = ১২ টি বর্ণ এভাবে ১৬টি শব্দে মোট বর্ণ আছে ৫২ টি। কিন্তু অক্ষর আছে, হরে = হ+ রে= ২ গুনন ৮ = ১৬ টি কৃষ্ণ = কৃষ + ণো = ২ গুনন ৪ = ৮ টি রাম = ১ গুনন ৪ = ৪ টি এভাবে 'হরে কৃষ্ণ' মহামন্ত্রে অক্ষর সংখ্যা ২৮ টি। সুতরাং হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্রে নাম আছে ৩টি, অক্ষর ২৮টি এবং বর্ণ ৫২টি।


হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে

এই ষোল নাম বত্রিশ অক্ষর একত্রে হরিনাম। সুতরাং এই হরিনামের অর্থ দ্বাড়ায়, #হ# তে করয়ে হরণ শোক তাপ আদি। # রি # তে রিপুগণে ত্বরা নাশে নিরবধি। # না # তে করয়ে নাশ কালিমার রাশী। # ম # তে মংগল হয় অমংগল নাশি।

হিন্দুদের অধঃপতনের কারণঃ (সুজিত পাল) সম্পাদনা

আমাদের সংস্কৃতি হচ্ছে সবচেয়ে প্রাচীন এবং সত্য ধর্ম , কিন্তু সেই ধর্ম সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তাও আমরা উপলব্দি করিনা। পাড়া-মহল্লা ভিত্তিক নেই কোন গীতা কিংবা বৈদিক বিদ্যালয়।

 এখন কে কত বড় করে পূজা করতে পারছে, সেই পূজায় কত বড় ডিজে পার্টি হচ্ছে সেটাই মোক্ষ্য বিষয়। কিন্তু বাস্তবে কোন দেবতাকে কোন মন্ত্রে প্রণাম করতে হয় সেটাও শেখানো হয়না।

 মুসলিমরা ওয়াজ-মাহফিলে ধর্ম সম্পর্কে আলোচনা করে , আমাদের ধর্ম নিয়েও আলোচনা করার মত লক্ষ লক্ষ কাহিনী রয়েছে, কিন্তু আমরা তা না করে দূর্গা পূজায় কে কত দামী শাড়ী কিনেছে, কার পূজার বাজেট কত এই নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।

 কীর্তণ হিন্দু ধর্মের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ কিন্তু এই কীর্তণকে এখন ফ্যাশণে পরিণত করা হচ্ছে। সেদিন কালীমন্দীরে গিয়েছিলাম কীর্তণ শুনতে। সেখানে যে অঙ্গভঙ্গীতে ........ সখী সম্প্রদায় নৃত্য করছিল সেটা আর যাই হোক অন্তত ধর্মীয় কোন অনুভুতি জাগাবে না সেটা নিশ্চিত। ইদানিং কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে একই অবস্থা।

 ব্রাহ্মণরা আগের মত সুবিধা করতে পারছে না। আগে তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে গেলেও জুতা হাতে করে নিয়ে যেতে হত। এখনতো হোটেলে, হোস্টেলে, চাকরীতে সব যায়গায় একসাথে খেতে হয় , চলতে হয় তখন শাস্ত্র রসাতলে যায়না, কিন্তু সমাজে খেতে গেলেই আলাদাভাবে কলাপাতায় খাবার দিতে হয়। কর্মের ভিত্তিতে যে বিভাজন করা হয়েছে তারা এই বিভাজনকে জাতের ভিত্তিতে রুপান্তরিত করেছে।

 মহাভারতের সিংহভাগ চরিত্রই কর্মের ভিত্তিতে গুণাম্বিত হয়েছেন, জাতের ভিত্তিতে নয়। হিন্দু জাতির ধ্বংশের প্রথম ও প্রধান কারণ ব্রাহ্মণদের সৃষ্ট জাতীভেদপ্রথা, যার ধর্মগ্রন্থের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। চর্তুবর্ণং ময়া সৃষ্ট গুণকর্মবিভাগষঃ এই উক্তিকে তারা সাধারণ জনগণের অজ্ঞতার সুযোগে ভিন্ন অর্থে কাজে লাগিয়েছে।


 মুসলিম জাতি তাদের রোজা, নামাজ, হজ্ব, সর্বক্ষেত্রে এক কাতারে গ্রহনযোগ্যতা পায়, একটি হিন্দু ব্যক্তি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করতে চাইলে তারা সাদরে গ্রহন করে । পক্ষান্তরে একটি তথাকথিত নিচু জাতের হিন্দু ব্যক্তি সমাজে দলিত, নিগৃহীত হয়ে কোথাও এতটুকু সন্মান না পেয়ে অন্য ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হতে বাধ্য হয়। পরস্পরের প্রতি হিংসা এখানে প্রধান ভূমিকা পালন করে।

 বাস্তবে ব্রাহ্মণদের কোন দোষ নেই, এবং তাদেরও পরিচয় একটাই , হিন্দু । দোষ হচ্ছে তথাকথিত শুদ্র সপ্রদায়ের । একটি হাতিকে বাচ্চা অবস্থায় সামান্য একটি খুঁটিতে কিংবা একটি কলাগাছে বেঁধে রাখা হয়, এভাবে হাতিটি যখন বড় হয় তখনও একইভাবে রাখা হয় কিন্তু হাতি মনে করে এই খুঁটি উপড়ে ফেলা তার পক্ষে সম্ভব নয়। ঠিক তেমনী আমরা মনে করি আমাদের দাদা, তার দাদা, তার দাদার দাদা যা প্রাচীণকাল থেকে মেনে এসেছেন এর বাইরে কিছুই করা যাবেনা । কিছু জানতে গেলেই ধর্ম রসাতলে যাবে।


 মুসলিমরা ভোর হলেই তাদের সন্তানদের মসজিদে পাঠায় ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহন করার জন্য কিন্তু আমরা তা করিনা। বেদ, পূরাণ, ভাগবত, মহাভারত , রামায়ণে যে সকল কাহিনী রয়েছে আমরা যদি নিয়মিত অধ্যয়ন করি এবং বর্তমান প্রজন্মকে অবহিত করি তাহলে একটি সন্তানও তার পিতা-মাতার অবাধ্য হবেনা এবং অসন্মান করবে না , স্ত্রী-স্বামীকে, স্বামী-স্ত্রীকে সন্মান করবে, সন্তান পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে না কিংবা ধর্মান্তরিত হবে না এটা নিশ্চিত। জানি এই লিখাটি পড়ে অনেকেই বলবে হায় হায় নিজের বিরোদ্ধে নিজেই লিখেছে, সেতো ধর্মকে রসাতলে নিয়ে গেলো , আবার অনেকেই আমার সাথে সহমত হবেন। ভূল হলে ক্ষমা করবেন। তবে এভাবে চলতে থাকলে সামনে শুধুই অন্ধকার।

শক্তিপীঠ সম্পাদনা

শক্তিপীঠ হিন্দুধর্মের পবিত্রতম তীর্থগুলির অন্যতম। লোকবিশ্বাস অনুসারে, শক্তিপীঠ নামাঙ্কিত তীর্থগুলিতে দেবী দাক্ষায়ণী সতীর দেহের নানান অঙ্গ প্রস্তরীভূত অবস্থায় রক্ষিত আছে। সাধারণত ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়ে থাকলেও, শাস্ত্রভেদে পীঠের সংখ্যা ও অবস্থান নিয়ে মতভেদ আছে। পীঠনির্ণয় তন্ত্র গ্রন্থে শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১। শিবচরিত গ্রন্থে ৫১টি শক্তিপীঠের পাশাপাশি ২৬টি উপপীঠের কথাও বলা হয়েছে। কুব্জিকাতন্ত্র গ্রন্থে এই সংখ্যা ৪২। আবার জ্ঞানার্ণবতন্ত্র গ্রন্থে পীঠের সংখ্যা ৫০। ভারতীয় উপমহাদেশের[১] নানা স্থানে এই শক্তিপীঠগুলি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কলকাতার কালীঘাট, বীরভূমের বক্রেশ্বর, নলহাটি; বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভবানীপুর ইত্যাদি বাংলার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তিপীঠ। কিংবদন্তি অনুসারে, সত্য যুগের কোনও এক সময়ে মহাদেবের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য দক্ষ রাজা বৃহস্পতি নামে এক যজ্ঞের আয়োজন করেছিলেন। কন্যা সতী দেবী তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে 'যোগী' মহাদেবকে বিবাহ করায় দক্ষ ক্ষুব্ধ ছিলেন। দক্ষ মহাদেব ও সতী দেবী ছাড়া প্রায় সকল দেব-দেবীকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। মহাদেবের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সতী দেবী মহাদেবের অনুসারীদের সাথে নিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। কিন্তু সতী দেবী আমন্ত্রিত অতিথি না হওয়ায় তাঁকে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি। অধিকন্তু দক্ষ মহাদেবকে অপমান করেন। সতী দেবী তাঁর স্বামীর প্রতি পিতার এ অপমান সহ্য করতে না পেরে যোগবলে আত্মাহুতি দেন। শোকাহত মহাদেব রাগান্বিত হয়ে দক্ষর যজ্ঞ ভণ্ডুল করেন এবং সতী দেবীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। অন্যান্য দেবতা অনুরোধ করে এই নৃত্য থামান এবং বিষ্ণুদেব তাঁর সুদর্শন চক্র দ্বারা সতী দেবীর মৃতদেহ ছেদন করেন। এতে সতী মাতার দেহখণ্ডসমূহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে এবং পবিত্র পীঠস্থান (শক্তিপীঠ) হিসেবে পরিচিতি পায়।[২] সকল শক্তিপীঠসমূহে শক্তিদেবী ভৈরবের সাথে অবস্থান করেন। শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১ টি।

চার আদি শক্তিপীঠ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় গ্রন্থাবলী যেমন শিব পুরাণ, দেবী ভাগবত, কলিকা পুরাণ এবং 'অষ্টশক্তি' শনাক্ত করে চারটি প্রধান শক্তিপীঠ (কেন্দ্র), যেমন বিমলা (পদ কাণ্ড) (ওড়িশার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের অভ্যন্তরে), তারা তারিণী (স্থান কাণ্ড, পূর্ণগিরি, স্তন) (ওড়িশার বহরমপুরের নিকটে), কামাক্ষ্যা (যোনি কাণ্ড) (আসামের গৌহাটির নিকটে) এবং দক্ষিণা কালিকা (মুখ কাণ্ড) (কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ) যেগুলি সত্য যুগে সতী মাতার মৃতদেহ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছিল। চার আদি শক্তিপীঠের তালিকা নিম্নের তালিকায়: • "শক্তি" অর্থাৎ প্রত্যেক "স্থানে" পূজিত দেবী, যিনি দাক্ষায়ণী, দুর্গা বা পার্বতীর বিভিন্ন রূপ; • "দেহ খণ্ড বা অলঙ্কার" অর্থাৎ সতী দেবীর শরীরের বিভিন্ন অংশ বা অলঙ্কার যা শ্রী বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র দ্বারা ছেদনের পর সেই "স্থানে" পতিত হয়েছিল এবং মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ক্রমিক নং স্থান দেহ খণ্ড বা অলঙ্কার শক্তি ১ ওড়িশার পুরীতে (জগন্নাথ মন্দির চত্বরের ভিতরে) পদ বিমলা ২ বহরমপুর-ওড়িশার নিকট স্তন খণ্ড তারা তারিণী ৩ গৌহাটি-আসাম যোনি খণ্ড কামাক্ষ্যা ৪ কালীঘাট, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ মুখ খণ্ড দক্ষিণাকালী

এ চারটি ছাড়াও ধর্মীয় গ্রন্থাবলী দ্বারা স্বীকৃত আরো ৫২টি বিখ্যাত শক্তিপীঠ রয়েছে।



৫২ শক্তিপীঠ নিম্নের তালিকায়: • "শক্তি" অর্থাৎ প্রত্যেক "স্থানে" পূজিত দেবী, যিনি দাক্ষায়ণী, দুর্গা বা পার্বতীর বিভিন্ন রূপ; • "ভৈরব" অর্থাৎ ঐ দেবীর স্বামী (সঙ্গী), যারা প্রত্যেকেই শিবের বিভিন্ন অবতার (রূপ); • "দেহ খণ্ড বা অলঙ্কার" অর্থাৎ সতী দেবীর শরীরের বিভিন্ন অংশ বা অলঙ্কার যা শ্রী বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র দ্বারা ছেদনের পর সেই "স্থানে" পতিত হয়েছিল এবং মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । ক্রমিক নং স্থান দেহ খণ্ড বা অলঙ্কার শক্তি ভৈরব ১ বৈদ্যনাথধাম, দেওঘর, ঝাড়খণ্ড, ভারত হৃদয় বা হৃদপিণ্ড জয়দুর্গা বৈদ্যনাথ ২ নাইনাতিভু, জাফনা, শ্রীলঙ্কা নূপুর ইন্দ্রাক্ষী রাক্ষসেশ্বর ৩ সুক্কর স্টেশনের নিকট, করাচী, পাকিস্তান চক্ষু মহিষমর্দিনী ক্রোধীশ ৪ সুগন্ধা, শিকারপুর, গৌরনদী, সন্ধ্যা নদীর তীরে, বরিশাল শহর হতে ২০ কি.মি. দূরে, বাংলাদেশ নাসিকা সুগন্ধা ত্র্যম্বক ৫ অমরনাথ, কাশ্মীর, শ্রীনগর হতে পহলগাম এর মধ্য দিয়ে বাসে ৯৪ কি.মি., ভারত গলা মহামায়া ত্রিসন্ধ্যেশ্বর ৬ জ্বালামুখী, কাঙ্গড়া, হিমাচল প্রদেশ, ভারত জিহ্বা সিদ্ধিদা (অম্বিকা) উন্মত্ত ভৈরব ৭ জলন্ধর, পাঞ্জাব, ভারত বাম বক্ষ ত্রিপুরমালিনী ভীষণ ৮ গুহ্যেশ্বরী মন্দির, পশুপতিনাথ মন্দিরের নিকট, নেপাল উভয় হাঁটু মহাশিরা কাপালী ৯ মানস, মানস সরোবর হ্রদে কৈলাশ পর্বতের পাদদেশে, তিব্বত ডান হাত দাক্ষায়ণী অমর ১০ বর্ধমান, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত নাভি মাতা সর্বমঙ্গলা দেবী ভগবান শিব/মহাদেব ১১ গন্ধকী, মুক্তিনাথ মন্দির, গন্ধকী নদী তীরে, পোখরা, নেপাল মস্তিষ্ক গন্ধকী চণ্ডী চক্রপাণি ১২ বেহুলা, কেতুগ্রাম, অজয় নদের তীরে, কাটোয়া হতে ৮ কি.মি., বর্ধমান জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত বাম হাত বেহুলা দেবী ভীরুক ১৩ উজ্জনি, গুস্করা স্টেশন হতে ১৬ কি.মি., বর্ধমান জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ডান কব্জি মঙ্গলচণ্ডিকা কপিলাম্বর ১৪ উদয়পুর, রাধাকিশোরপুর গ্রামের নিকট পাহাড়চূড়ায়, উদয়পুর, ত্রিপুরা, ভারত ডান পা ত্রিপুরাসুন্দরী ত্রিপুরেশ ১৫ চন্দ্রনাথ মন্দির, চন্দ্রনাথ পর্বত শিখর, সীতাকুণ্ড স্টেশনের নিকট, চট্টগ্রাম জেলা, বাংলাদেশ ডান হাত ভবানী চন্দ্রশেখর ১৬ জল্পেশ মন্দিরের নিকট, জলপাইগুড়ি জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত বাম পা ভ্রামরী অম্বর ১৭ কামগিরি, কামাক্ষ্যা, নীলাচল পর্বত, গৌহাটি, আসাম, ভারত যোনি কামাক্ষ্যা উমানন্দ ১৮ যোগাদ্যা, ক্ষীরগ্রাম, বর্ধমান জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল যোগাদ্যা ক্ষীরখণ্ডক ১৯ কালীপীঠ, কালীঘাট, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ডান পায়ের আঙ্গুল কালিকা নকুলেশ্বর ২০ প্রয়াগ, সঙ্গমের নিকট, এলাহাবাদ, উত্তরপ্রদেশ, ভারত হাতের আঙ্গুল ললিতা/মাধবেশ্বরী ভব ২১ জয়ন্তীয়া, কালাজোড় গ্রাম, জয়ন্তীয়া থানা, সিলেট জেলা, বাংলাদেশ বাম জঙ্ঘা জয়ন্তী ক্রমদীশ্বর ২২ কিরীট, কিরীটকোন গ্রাম, লালবাগ কোর্ট রোড স্টেশন হতে ৩ কি.মি., মুর্শিদাবাদ জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত মুকুট বিমলা সংবর্ত ২৩ বারাণসী, গঙ্গাতীরে মনিকর্ণিকা ঘাট, কাশী, উত্তর প্রদেশ, ভারত কানের দুল বিশালাক্ষী ও মণিকর্ণী কালভৈরব ২৪ কন্যাশ্রম, কন্যাকুমারী, ভদ্রকালী মন্দির, কুমারী মন্দির, তামিলনাড়ু, ভারত পীঠ সর্বাণী নিমিষ ২৫ বর্তমান কুরুক্ষেত্র বা প্রাচীন থানেশ্বর, হরিয়ানা, ভারত গোড়ালির হাড় বা গুল্ফ সাবিত্রী স্থাণু ২৬ মণিবন্ধ, অজমের এর ১১ কি.মি. উত্তর-পশ্চিমে, পুষ্করের নিকট গায়ত্রী পর্বতে, রাজস্থান, ভারত দুই হাতের বালা গায়ত্রী সর্বানন্দ ২৭ শ্রীশৈল, জৈনপুর গ্রাম, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট শহরের ৩ কি.মি. উত্তর-পূর্বে, বাংলাদেশ গলা মহালক্ষ্মী সম্বরানন্দ ২৮ কঙ্কালীতলা, কোপাই নদীর তীরে, বোলপুর স্টেশন হতে ১০ কি.মি. উত্তর-পূর্বে, বীরভূম জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত অস্থি বা হাড় দেবগর্ভা রুরু ২৯ কালমাধব, পাহাড়ের উপরে গুহার ভিতর শোন নদীর তীরে, অমরকণ্টক, মধ্যপ্রদেশ, ভারত বাম নিতম্ব কালী অসিতাঙ্গ ৩০ শোন্দেশ, অমরকণ্টক, নর্মদা নদীর উত্স এর নিকট, মধ্যপ্রদেশ, ভারত ডান নিতম্ব নর্মদা ভদ্রসেন ৩১ রামগিরি, চিত্রকূট, ঝাঁসী-মাণিকপুর রেলওয়ে লাইনে, উত্তরপ্রদেশ, ভারত ডান বক্ষ বা স্তন শিবানী চন্দা ৩২ বৃন্দাবন, ভূতেশ্বর মহাদেব মন্দির, মথুরার নিকট বৃন্দাবন, উত্তর প্রদেশ, ভারত কেশগুচ্ছ/চূড়ামণি উমা ভূতেশ ৩৩ শুচি, শুচিতীর্থম শিব মন্দির, কন্যাকুমারী-ত্রিবান্দ্রম রোড, তামিলনাড়ু, ভারত উপরের দাঁতসমূহ নারায়ণী সংহার ৩৪ পঞ্চসাগর, অজ্ঞাত (হরিদ্বারের নিকট বলে মনে করা হয়) নীচের দাঁতসমূহ বরাহী মহারুদ্র ৩৫ ভবানীপুর, করতোয়া নদীর তীরে, শেরপুর উপজেলা হতে ২৮ কি.মি. দূরে, বগুড়া জেলা, বাংলাদেশ বাম পায়ের নূপুর অপর্ণা বামন ৩৬ শ্রীপর্বত, লাদাখের নিকট, কাশ্মীর, ভারত; মতান্তরে: শ্রীশৈল, কুর্নূল জেলা, অন্ধ্রপ্রদেশ, ভারত ডান পায়ের নূপুর শ্রীসুন্দরী সুন্দরানন্দ ৩৭ বিভাস, তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত বাম পায়ের নূপুর কপালিনী (ভীমরূপ) সর্বানন্দ ৩৮ প্রভাস, বেরাবল স্টেশন হতে ৪ কি.মি. সোমনাথ মন্দিরের নিকট, জুনাগড় জেলা, গুজরাত, ভারত পাকস্থলী চন্দ্রভাগা বক্রতুণ্ড ৩৯ ভৈরব পর্বত, শিপ্রা নদী তীরে ভৈরব পাহাড়ে, উজ্জয়িনী শহর হতে একটু দূরে, মধ্যপ্রদেশ, ভারত উপরের ওষ্ঠ অবন্তী লম্বকর্ণ ৪০ বাণী, নাসিক, মহারাষ্ট্র, ভারত চিবুক/থুতনি ভ্রামরী বিকৃতাক্ষ ৪১ সর্বশৈল বা গোদাবরীতীর, কোটিলিঙ্গেশ্বর মন্দির, গোদাবরী নদীতীর, রাজামুন্দ্রী, অন্ধ্রপ্রদেশ, ভারত গাল রাকিনী বা বিশ্বেশ্বরী বত্সনাভ বা দণ্ডপাণি ৪২ বিরাট, ভরতপুরের নিকট, রাজস্থান, ভারত বাম পায়ের আঙ্গুল অম্বিকা অমৃতেশ্বর ৪৩ রত্নাবলী, রত্নাকর নদীতীর, খানাকুল-কৃষ্ণনগর, হুগলী জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ডান স্কন্ধ বা কাঁধ কুমারী শিব ৪৪ মিথিলা, জনকপুর রেলওয়ে স্টেশনের নিকট, ভারত-নেপাল সীমান্তে বাম স্কন্ধ বা কাঁধ উমা মহোদর ৪৫ নলহাটী, নলহাটী স্টেশনের নিকট, বীরভূম জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত শ্বাসনালীসহ কণ্ঠনালী কালিকা যোগেশ ৪৬ কর্ণাট, কাংরা, হিমাচল প্রদেশ, ভারত উভয় কর্ণ বা কান জয়দুর্গা অভিরুক ৪৭ বক্রেশ্বর, পাপহর নদীতীরে, সিউড়ি শহর হতে ২৪ কি.মি., দুবরাজপুর রেলওয়ে স্টেশন হতে ৭ কি.মি., বীরভূম জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ভ্রূযুগলের মধ্যবর্তী অংশ মহিষমর্দিনী বক্রনাথ ৪৮ যশোরেশ্বরী, ঈশ্বরীপুর, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা জেলা, বাংলাদেশ হাতের তালু ও পায়ের পাতা যশোরেশ্বরী চণ্ড ৪৯ অট্টহাস গ্রাম, দক্ষিণীদিহি, বর্ধমান জেলা, কাটোয়া রেলওয়ে স্টেশনের নিকট, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ওষ্ঠ বা ঠোঁট ফুল্লরা বিশ্বেশ ৫০ নন্দিকেশ্বরী মন্দির, সাঁইথিয়া, বীরভূম জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত গলার হার (অলঙ্কার) নন্দিনী নন্দিকেশ্বর ৫১ হিংলাজ বা হিঙ্গুলা, করাচী হতে প্রায় ১২৫ কি.মি. উত্তর-পূর্বে, পাকিস্তান ব্রহ্মরন্ধ্র (মস্তিষ্কের অংশ) কোট্টরী ভীমলোচন ৫২ তারাপীঠ (বা তারাপুর), দ্বারকা নদীর তীরে, রামপুরহাট শহর হতে ৬ কি.মি দূরে, বীরভূম জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত তৃতীয় নয়ন বা নয়নতারা ১৮ মহাশক্তিপীঠ আদি শঙ্কর লিখিত অষ্টাদশ শক্তিপীঠ স্তোত্রম এ মহাশক্তিপীঠ বলে উল্লেখিত ১৮ শক্তিপীঠের তালিকা নিম্নরূপ: ক্রমিক নং স্থান পতিত দেহ খণ্ড শক্তির নাম ১ ত্রিনকোমালী (শ্রীলঙ্কা) কুঁচকি শঙ্করী দেবী ২ কাঞ্চীপুরম (তামিলনাড়ু) পৃষ্ঠদেশের অংম কামাক্ষী দেবী ৩ প্রদ্যুম্না (পশ্চিমবঙ্গ) উদরের অংম শ্রুখলা দেবী ৪ মহীশূর (কর্ণাটক) চুল চামুণ্ডেশ্বরী দেবী ৫ আলমপুর (অন্ধ্রপ্রদেশ) উপরের দাঁত জগুলম্বা দেবী ৬ শ্রীশৈলম (অন্ধ্রপ্রদেশ) গ্রীবার অংম ব্রমারম্ভা দেবী ৭ কোলহাপুর (মহারাষ্ট্র) চক্ষু মহালক্ষ্মী দেবী[৩]

৮ নান্দেড় (মহারাষ্ট্র) দক্ষিণ হস্ত একাবীরিকা দেবী ৯ উজ্জয়িন (মধ্যপ্রদেশ) উপরের ওষ্ঠ মহাকালী দেবী ১০ পীঠপুরম (অন্ধ্রপ্রদেশ) বাম হস্ত পুরুহুটিকা দেবী ১১ জাজপুর (ওড়িশা) নাভি বীরজা/গিরিজা দেবী ১২ দ্রাক্ষরমন (অন্ধ্রপ্রদেশ) বাম গাল মণিকম্ব দেবী ১৩ গৌহাটি (আসাম) যোনিদ্বার কামরূপা দেবী ১৪ প্রয়াগ (উত্তর প্রদেশ) হাতের অঙ্গুলি মাধবেশ্বরী দেবী ১৫ কাঙ্গরা (হিমাচল প্রদেশ) মাথার অংশ বৈষ্ণবী দেবী ১৬ গয়া (বিহার) স্তনের অংশ সর্বমঙ্গলা দেবী ১৭ বারাণসী (উত্তর প্রদেশ) কব্জি/মণিবন্ধ বিশালাক্ষী দেবী ১৮ কাশ্মীর দক্ষিণ হস্ত সরস্বতী দেবী

ব্যবহারকারী:সুজিত পাল-এর দ্রুত অপসারণ প্রস্তাবনা সম্পাদনা

 

উইকিপিডিয়া থেকে দ্রুত অপসারণের জন্য ব্যবহারকারী:সুজিত পাল পাতায় একটি ট্যাগ লাগানো হয়েছে। এটি দ্রুত অপসারণ বিচারধারার ব্য৫ অনুযায়ী করা হয়েছে, কারণ পাতাটিতে থাকা লেখাগুলি, তথ্য, আলোচনা এবং/অথবা ক্রিয়াকলাপ উইকিপিডিয়া লক্ষ্যগুলির সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত নয়। অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন যে উইকিপিডিয়া কোনও ওয়েব হোস্টিং পরিষেবা নয়দ্রুত অপসারণ মানদণ্ডের অধীনে এ জাতীয় পাতাগুলি যে কোনও সময় মুছে ফেলা হতে পারে।

আপনি যদি মনে করেন যে এই কারণে এই পাতাটি অপসারণ করা উচিত নয়, তবে এই অপসারণে আপত্তি জানাতে নিবন্ধটিতে গিয়ে "দ্রুত অপসারণে আপত্তি জানান" লেখার উপর ক্লিক করুন ও সেখানে কারণ ব্যাখ্যা করুন কেন নিবন্ধটি দ্রুত অপসারণ করা উচিত নয়। মনে রাখবেন, কোন নিবন্ধে দ্রুত অপসারণ ট্যাগ করা হলে এবং যদি নিবন্ধটি দ্রুত অপসারণের বিচারাধারার সাথে মিলে যায় তবে কোনও দেরি না করে নিবন্ধটি অপসারণ করা হয়। অনুগ্রহপূর্বক আপনার নিজের তৈরি করা নিবন্ধ থেকে এই বিজ্ঞপ্তিটি সরিয়ে ফেলবেন না, তবে আমরা আপনাকে নিবন্ধটি সম্প্রসারণ করতে উৎসাহিত করছি। আরও মনে রাখবেন যে, নিবন্ধের বিষয় অবশ্যই উল্লেখযোগ্য হতে হবে এবং নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্যসূত্রগুলো যাচাইযোগ্য হওয়া উচিত। Aishik Rehman (আলাপ) ১৩:২৮, ২৩ মে ২০২৩ (ইউটিসি)উত্তর দিন