বাংলা উইকিপিডিয়ায় আপনাকে স্বাগতম সম্পাদনা

শাকিল (আলাপ · অবদান) ১০:২২, ২০ মার্চ ২০২২ (ইউটিসি)উত্তর দিন

শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী সম্পাদনা

বাঙ্গালি জাতির আধুনিক কালের শিল্প -সংস্কৃতির ইতিহাসে ঠাকুর পরিবারের পরেই যে পরিবারটি সবচেয়ে স্মরণীয় তা হচ্ছে উপেন্দ্রকিশোর -সুকুমার সাহিত্যের জন্মদাতা রায়চৌধুরী পরিবার। এ পরিবারের প্রথম কৃতী পুরুষ উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী বাঙ্গালির আধুনিক কালের গোড়ার দিককার ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় পুরুষ, যিনি শুধু শিশু সাহিত্যের ক্ষেত্রেই নন- চিত্রকলা, মুদ্রণশিল্প এবং বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও এক অবিস্মরণীয় প্রতিভা। উনিশ শতকে বাঙ্গালি জাতির মধ্যে যে ব্যাপক জাগরণ ঘটেছিল উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ছিলেন সেই জাগরণের অন্যতম প্রতিভূ। রামমোহন, বিদ্যাসাগর, প্যারীচাঁদ ও বঙ্কিমচন্দ্রের হাতে পরিবর্ধমান বাংলা সাহিত্য উপেন্দ্রকিশোরের করস্পর্শে অপেক্ষাকৃত ভিন্ন ভাবে উপকৃত ও উন্নত হল। রামমোহন, প্যারিচাঁদ, বিদ্যাসাগরের পর বঙ্কিমচন্দ্রের মাধ্যমে যেমন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের আলোময় অগ্রযাত্রার সূচনা, তেমনি ভাবে বিদ্যাসাগরের পর উপেন্দ্রকিশোর (জন্ম ১০ মে ১৮৩৩) -এর মাধ্যমে বাংলা শিশু সাহিত্যের অগ্রযাত্রা সূচিত হয়েছিল আধুনিকতার মণিময় পথে। এমন একটা সময়ে উপেন্দ্রকিশোর ছোটদের জন্য লিখতে শুরু করলেন যখন বাংলা ভাষায় শিশুপোযোগী রচনা শুধু অপরিণতই ছিলো না, ছিলো বিরলও। শিশু পাঠ্য রচনার যে দু-একটি দৃষ্টান্ত পাওয়া যেত সেগুলোও প্রধানত ছিলো বিদেশি রচনার অনুকৃতি বা অনুবাদ। বিদ্যাসাগরের রচনার বাইরে বাংলার বা বাঙালির নিজস্বতা নিয়ে লিখিত শিশু পাঠ্য রচনার পরিমাণ তখনও বেশ কম। বঙ্কিমচন্দ্রের পরবর্তী কালের লেখক হলেও বঙ্কিমচন্দ্রের সঙ্গে উপেন্দ্রকিশোরের সাহিত্যে যাত্রার যে মিল খুঁজে পাওয়া যায় তা যথেষ্ট কৌতুহলোদ্দীপক। লিখতে শুরু করে বঙ্কিমচন্দ্র অনুভব করেছিলেন বাংলা ভাষায় উন্নত সাহিত্যে পত্রিকার অভাব। সেই অভাব মোচনের জন্যই তিনি প্রকাশ করেছিলেন " বঙ্গদর্শন " একই ভাবে ছোটদের জন্য লিখতে গিয়ে উপেন্দ্রকিশোরও অনুভব করেছিলেন ছোটদের উপযোগী লেখা প্রকাশের ও ছোটদের আকর্ষণ করতে এবং তাদের মনের জগৎ কে স্পর্শ করতে পারে এমন পত্রিকার অভাব। একই সঙ্গে প্রকট অভাব ছোটদের মনের মত ছাপা বইয়েরও। এই অভাববোধ তাড়িত হয়ে তিনি প্রকাশ করেছিলেন ছোটদের পত্রিকা " সন্দেশ "। নিজ সম্পাদনায় " সন্দেশ " পত্রিকা প্রকাশিত হবার আগেই উপেন্দ্রকিশোর ছোটদের জন্য লিখতে শুরু করেছিলেন। ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে বৃত্তি সহ প্রবেশিকা পাশ করার পর যখন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে তিনি পড়তে যান তখন থেকেই তাঁর সৃষ্টির যাত্রার সূচনা। সে সময় "সখা" নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হত। ১৮৮৩ সালে এই পত্রিকার মাধ্যমেই উপেন্দ্রকিশোর ছোটদের জন্য লিখতে শুরু করলেন। এটা সেই সময় যখন ইংরেজ শাসকদের উদ্যোগে বাঙ্গালিদের মধ্যে শিক্ষার স্ফুরণ ঘটতে শুরু করেছে কিছুটা ব্যাপকভাবে এবং শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গেই তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে স্বজাত্যবোধ। তিনি অনুভব করলেন জাতির উন্নতি ঘটাতে হলে সুন্দর ভাবে গড়ে তোলতে হবে শিশুদের। রামায়ণ, মহাভারত ভারতীয় সংস্কৃতির মূল উৎস। তিনি উপলব্ধি করলেন স্বজাতির সংস্কৃতিকে সুন্দর ভাবে তুলে ধরতে হবে শিশুদের সামনে। এই প্রেরণা থেকেই তিনি রামায়ণের ঘটনাবলি ছোটদের উপযোগী ভাষায় লিখে ফেলেন। ' ছেলেদের রামায়ণ ' প্রকাশিত হবার পর তিনি লিখেন ' ছেলেদের মহাভারত ' ' মহাভারতের কথা ' ও ' পৌরাণিক কাহিনী '। পৌরাণিক উপাখ্যানগুলো ছোটদের উপযোগী করে লিখতে গিয়ে উপেন্দ্রকিশোর যে শক্তির পরিচয় দিয়েছিলেন তা বিস্ময়কর। পৌরাণিক কাহিনির শৈথল্যকে বর্জন করেও বিশালত্বের অনুভূতিকে বজায় রাখতে পারা খুব সহজ ব্যাপার নয়। ' ছেলেদের রামায়ণ ' ' ছেলেদের মহাভারত ', ' মহাভারতের কথা ' বই গুলোতে উপেন্দ্রকিশোর পৌরাণিক কাহিনির শিশুকিশোরপযোগী আধুনিক রূপায়ণে সফল হয়েছেন। বলা চলে তাঁর এই রূপায়ণের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তী কালে বাংলা সাহিত্যে রামায়ণ মহাভারত কাহিনীর আধুনিক রূপায়ণ গুলো অনুপ্রেরিত হয়েছে। তাঁর সৃজন প্রতিভা আরো একটি উল্লেখযোগ্য দিকে প্রবাহিত হয়েছিল যা বিশেষ ভাবে গুরুত্ববহ। বর্তমান গ্রন্থটি উপেন্দ্রকিশোরের প্রতিভার সেই আলোকময় দিকেরি প্রতিনিধি। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন বাংলার ঘরে ঘরে মেয়েদের মুখে যুগ যুগ ধরে তৈরি হয়েছে যে কাহিনী - সেই সব কাহিনিতে রয়েছে কল্পনা - প্রতিভা, স্নিগ্ধতা ও সরলতার বিপুল সম্ভার এবং তা বাঙ্গালির প্রাণের একান্ত গভীর তল থেকে উথিত। এই সম্পদকে চিরকালের সম্পদে পরিণত করার জন্যই তিনি লিখেছিলেন 'টুনটুনির বই'। এই বই ছাড়াও নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে তিনি বাংলার লোকায়ত জীবন থেকে উপকরণ ছেঁকে তুলে লিখে গেছেন প্রচুর সংখ্যক গল্পকথা। এইসব গল্প কথার বর্ণনা ও ঘটনাবৈচিত্র চিরকালের বাঙ্গালি পাঠককে আকর্ষণ করে চলেছে তাঁর অনবদ্য প্রাণস্পর্শী গদ্যশৈলীর কারণে। বলা যায় বাংলা শিশু সাহিত্যের ভাষা প্রাথমিক ভাবে গড়ে উঠেছে উপেন্দ্রকিশোরের হাতেই। এ ভাষা আজও যেমন আধুনিক তেমনি সহজ। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী সম্পাদিত "সন্দেশ " এর প্রকাশ বাংলা শিশুসাহিত্যের ইতিহাসে সবচেয়ে স্মরণযোগ্য ঘটনা। রায় চৌধুরী পরিবারের চার পুরুষ ধরে এই পত্রিকার মাধ্যমে বাংলা শিশুসাহিত্যকে শুধু সমৃদ্ধ করেনি- এই সন্দেশ পত্রিকা এক শতাব্দী কাল ধরে বাংলা শিশু সাহিত্যের ক্ষেত্রে বিপুল সংখ্যক উল্লেখযোগ্য রচনা উপহার দিয়েছে। " সন্দেশ" পত্রিকাই প্রথম আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছিল বাংলা শিশু সাহিত্যের বিচিত্রময়তাকে। এক সময় সর্বাধুনিক ও উন্নত মুদ্রণসৌকর্যের নিদর্শনও ছিল এই পত্রিকা। এক সময় শিশু সাহিত্যের গ্রন্থসমূহের অঙ্গসজ্জা কী ধরনের হবে তার উচ্চতম দৃষ্টান্ত ছিল " সন্দেশ "। মুদ্রণশিল্পের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে নতুন যুগের সূচনাও হয়েছিল উপেন্দ্রকিশোরের হাতেই। বিশেষ করে সুন্দর ও নিখুঁত ছঁবি মুদ্রণের দিকে তিনি গভীর মনোযোগ দিয়েছিলেন। হাফটোন ব্লকের উন্নতিতে তাঁর বৈজ্ঞানিক গবেষণা বিশেষ ফলপ্রদ ভূমিকা পালন করেছিল। তৎকালে বিলেতের বিখ্যাত পত্রিকা পেনরোজ অ্যানুয়েল - এ উপেন্দ্রকিশোর নিজের গবেষণালব্ধ ফলাফল লিখে পাঠাতেন।তাঁর উদ্ভাবিত হাফটোন ব্লক তৈরির নতুন নিয়ম ইউরোপীয়রাও গ্রহণ করেছিল। তাঁর জেষ্ট্য পুত্র সুকুমার রায় ১৯১১ সালে ফটোগ্রাফি ও ছবি ছাপা সম্বন্ধে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করতে প্রবর্তিত রীতির প্রয়োগও দেখে এসেছিলেন। সাম্প্রতিককালে বিশাল মণ্ডলে পরিণত হওয়া বাংলা শিশু সাহিত্যের ভুবনে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী শুধু একজন পথিকৃৎ হিশেবেই স্মরণীয় নন, তিনি সর্বকালের বাঙ্গালির কাছে বারণযোগ্য একজন শিশু সাহিত্যিক। বিশ্বজিত আচার্য্য (আলাপ) ০৯:২৯, ২১ মার্চ ২০২২ (ইউটিসি)উত্তর দিন

ব্যবহারকারী:বিশ্বজিত আচার্য্য-এর দ্রুত অপসারণ প্রস্তাবনা সম্পাদনা

 

উইকিপিডিয়া থেকে দ্রুত অপসারণের জন্য ব্যবহারকারী:বিশ্বজিত আচার্য্য পাতায় একটি ট্যাগ লাগানো হয়েছে। এটি দ্রুত অপসারণ বিচারধারার ব্য৫ অনুযায়ী করা হয়েছে, কারণ পাতাটিতে থাকা লেখাগুলি, তথ্য, আলোচনা এবং/অথবা ক্রিয়াকলাপ উইকিপিডিয়া লক্ষ্যগুলির সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত নয়। অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন যে উইকিপিডিয়া কোনও ওয়েব হোস্টিং পরিষেবা নয়দ্রুত অপসারণ মানদণ্ডের অধীনে এ জাতীয় পাতাগুলি যে কোনও সময় মুছে ফেলা হতে পারে।

আপনি যদি মনে করেন যে এই কারণে এই পাতাটি অপসারণ করা উচিত নয়, তবে এই অপসারণে আপত্তি জানাতে নিবন্ধটিতে গিয়ে "দ্রুত অপসারণে আপত্তি জানান" লেখার উপর ক্লিক করুন ও সেখানে কারণ ব্যাখ্যা করুন কেন নিবন্ধটি দ্রুত অপসারণ করা উচিত নয়। মনে রাখবেন, কোন নিবন্ধে দ্রুত অপসারণ ট্যাগ করা হলে এবং যদি নিবন্ধটি দ্রুত অপসারণের বিচারাধারার সাথে মিলে যায় তবে কোনও দেরি না করে নিবন্ধটি অপসারণ করা হয়। অনুগ্রহপূর্বক আপনার নিজের তৈরি করা নিবন্ধ থেকে এই বিজ্ঞপ্তিটি সরিয়ে ফেলবেন না, তবে আমরা আপনাকে নিবন্ধটি সম্প্রসারণ করতে উৎসাহিত করছি। আরও মনে রাখবেন যে, নিবন্ধের বিষয় অবশ্যই উল্লেখযোগ্য হতে হবে এবং নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্যসূত্রগুলো যাচাইযোগ্য হওয়া উচিত। Aishik Rehman (আলাপ) ০০:০০, ৭ মার্চ ২০২৩ (ইউটিসি)উত্তর দিন