আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের
বাংলা উইকিপিডিয়ায় স্বাগতম সম্পাদনা
সুপ্রিয় আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের! উইকিপিডিয়ায় আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করছি এ পরিবেশটি আপনার ভাল লাগবে এবং উইকিপিডিয়াকে সমৃদ্ধ করার কাজে আপনি সহায়তা করবেন। এখানে কিছু পৃষ্ঠা আছে যা আপনাকে উইকিপিডিয়া ব্যবহার এবং সমৃদ্ধ করার কাজে সাহায্য করবে:
কাজে নেমে পড়বার সহজ উপায় হলো নিচের যে-কোনো একটি পদ্ধতি অনুসরণ করা:
অনুগ্রহপূর্বক আলাপের পাতায় বার্তা রাখার পর সম্পাদনা সরঞ্জামদণ্ডের চিহ্নে ক্লিক করার মাধ্যমে অথবা চারটি টিল্ডা ( আশা করি আপনি বাংলা উইকিপিডিয়া সম্প্রদায়ের একজন হয়ে সম্পাদনা করে আনন্দ পাবেন! আবারও স্বাগতম এবং শুভেচ্ছা! বাংলা উইকিপিডিয়া অভ্যর্থনা কমিটি, ১৯:৪৫, ১২ আগস্ট ২০১৯ (ইউটিসি) |
দরবেশ অলি। সম্পাদনা
- দরবেশ_অলি।
আমার বউ একটা ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছে।এটা শুনে খুশির ঠেলায় অফিসের সব কাজ বাদ দিয়ে দুই কেজি মিষ্টি লইয়া হাসপাতালে চলে আসলাম। এসে দেখি আত্মীয় স্বজন সবাই মোটামুটি উপস্থিত।সবার মুখে এভারেস্ট জয়ের আনন্দ।কার পরে কে কোলে নিবে তা নিয়ে ধুম হৈ ছৈ। এখনো যেহেতু নাম রাখা হয়নি,তাই যার যার পছন্দের নাম ধরে তাকে আদর করে যাচ্ছে।লতিন,মতিন,পুতিন,যার মুখ দিয়ে যেটা আসছে তা বলে যাচ্ছে। এর মাঝে তার মা মানে আমার বউ সবার উদ্দেশ্য বলল ওকে এত গুলো নামে না ডেকে বরং "দরফন সাকিব" বলে ডাকতে পার। তার কথা শুনে সবাই যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল।সবার একটাই প্রশ্ন তাকে কেন এই নামে ডাকব।সাবার প্রশ্নের জবাবে আমার বউ বললঃ-এটা তার নাম হিসেবে সে দুনিয়ায় আসার পূর্বাভাস পাওয়ার আগে থেকে ঠিক করে রেখেছি।বউয়ের কথা শুনে আমার আম্মা মানে নব-মেহমানের দাদি বলে উঠলঃ- আমার একমাত্র নাতির নাম আমিই রাখব।সবাই তাকে "রশিদ আহমেদ" নামে ডাকবা।জানো,,এই নামটা আমি বটমূলে বসে কত দিন আগে থেকে আমার বড় নাতির জন্য ঠিক করে রেখেছি।২য় কোন কথা নয় এটাই হবে আমার নাতির নাম। এর মধ্যে আমি মা'কে থামিয়ে দিয়ে বললাম।মা বটমুলে বসে কেন আমার ছেলের নাম রাখবা? আমার কথায় মা হালকা লজ্জা পেয়ে বললঃ-আমার আর তুর বাবার দুই বছরের রিলেশন পুর্তির দিনে আমরা আমাদের নাতির নামটা ঠিক করছিলাম। মা'রকথা শুনে আমার শশুড়ি আম্মা বললঃ-না,আমার নাতির নাম "বেলাল হোছাইন " হবে।শশুড়ির কথার উত্তরে আমি বললামঃ-শশুড়ি আম্মা!!!আপনি আবার এই নামটা কখন ঠিক করেছেন? আমার কথায় শশুড়ি মানে নবজাতকের নানি লজ্জাভরা মুখে শাড়ির আচলটা টেনে বললঃ-তোমার শশুর আব্বা এই নামটা দিয়ে আমায় প্রপোজ করেছিল আর বলেছিল।। এইটুকু বলে শশুড়ি লজ্জায় থেমে গেল।আমি শশুড়িকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বললামঃ- বললেন না যে, আর কি বলছিল? জবাবে শশুড়ি আম্মা বললঃ-তোমার শশুর আব্বা বলছিল,তুমি(শশুড়ি)কি বেলাল হোছাইনের খেলার সাথী হবে? এই কথা বলাতে আমি তোমার শশুড় আব্বাকে এক চড় মেরে বলছিলামঃ-তোমার কি লজ্জা শরম নেই, ছিঃ তুমি আমাকে অন্য আরেক জনের সাথে...................ছিঃ।তখন তোমার শশুড় বলেছিলঃ-এটা আমাদের ১ম নাতির নাম। শশুড়ির প্রেম কাহিনী থামিয়ে দিয়ে আমার আদরের ছোট বোন মানে নব-মেহমানের ফুফি বললঃ-না,ওর নাম "শহনম মোঃ আফরান" হবে। এবার আমি হতাশ হয়ে বললামঃ- বুনু,তুই এটা আবার কখন ঠিক করলি?? আমার কথায় আদরের বোনটা খানিকটা লজ্জা পেয়ে উল্টো দিকে ফিরে বললঃ- এটা আমি ঠিক করিনি। তাহলে কে ঠিক করেছে?(আমি) এটা আমার ৪৭ তম বয়ফ্রেন্ডে ঠিক করছে।(বোন) বোনের কথা শুনে দেয়ালে হেলান দিয়ে কোন রকম বললামঃ-থামো,থামো।আমার ছেলের নাম কাউকে রাখতে হবেনা।আমার ছেলের নাম আমিই রাখব।তার নাম হবে "অর্জন মাহমুদ তাহের"। আমার কথা শুনে বউটা আমার চুখের জ্বল ছেড়ে দিয়ে বললঃ- তুমি আবার এই নামটা কখন ঠিক করলে? বউয়ের প্রশ্নের জবাবে আমি বললামঃ-এই তিন মাস আগে ঠিক করেছি। বউ চুখের পানিতে মুখের অবস্থা একাকার করে লম্বা বিলাপ ধরে বললঃ-ছিঃছিঃ কার সাথে,কিভাবে এই নামটা ঠিক করলা।আমি তোমাকে বিশ্বাস করেছিলাম,আর তুমি আমার বিশ্বাসকে এভাবে...............ছিঃ। আমি আর থাকবনা এখানে।আম্মু চল।আমি তোমাদের ওখানে চলে যাব।আমি লম্পটের সাথে থাকবনা।একমুহূর্তও না। আমি বউটাকে কোন রকম থামিয়ে দিয়ে বললামঃ-আগে শুনবা তো আমার কথা। কি বলবা হ্যাঁ(বউ) আমি বললামঃ-আামার বন্ধু নাইম আর আমি মিলেই নামটা ঠিক করছি। ফাইজলামি কর,তোমার বন্ধু নাইম কেন আমাদের ছেলের নাম রাখবে?(বউ) এবার আমি বউকে শান্ত গলায় বললামঃ-ঐ দিন বলেছিলাম না,নাইমের মেয়ের সাথে আমাদের ছেলের বিয়ে দিবো,তাই আমরা দু'বন্ধু মিলে নাইমের মেয়ের নাম " অর্জিতা মাহমুদা তাহেরা" আর আমার ছেলের নাম"অর্জন মাহমুদ তাহের" রাখছি। বাহ্,ডং কত তার বন্ধু নাইমের মেয়ে না ছেলে হয় এটার কোন বিশ্বাস নাই।তার আগে আগেই আমার ছেলের সাথে বিয়ে।যত্তসব!! (বউ) হুম,ডাক্তার বলছে মেয়ে হবে(আমি) মেয়ে হোক আর ছেলে হোক ওই বেড়ার মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়ে দিবো না।লুইচ্ছা একটা!! বউয়ের এমন কথায় আমি বললামঃ- তুমিই তে ঐদিন বন্ধু নাইমকে বলেছিলে ওদের সন্তানের সাথে আমাদের সন্তানের বিয়ে ............। এর মধ্যে বউয়ের ছোট বোন মানে আমার একমাত্র শালি আমার কথা থামিয়ে দিয়ে বললঃ-তোমাদের এত ঝগড়া করতে হবেনা।আমার ভাগিনার নাম আমি ঠিক করেই এসেছি। আমি মর্মাহত স্বরে বললামঃ- কি নাম ঠিক করছ শুনি?? শালি বললঃ- আমার ভাগিনার নাম হবে লিয়াকত আলী। তার কথা শুনে আমার মেজাজ গরম হয়ে গেল।কারণ,এই আদিম যুগের নাম গুলির এখন আর মার্কেট আছে নাকি।তবুও মেজাজটা ঠান্ডা রেখে বললামঃ- হুম, নামটা অনেক সুন্দর আমারও অনেক পছন্দ হয়ছে।কিন্তু কিভাবে ঠিক করলা শুনি এই পারফেক্ট নামটা?? শালি বললঃ- এইটা আমাদের দারোয়ান চাচার নাম।জানো দুলাভাই দারোয়ান চাচা মানুষটা অনেক ভালো।ওও আমাকে রিফাতের ব্যাপারে অনেক হেল্প করে। রিফাত নামটা শুনে আমি একটু শক খেয়ে বললামঃ- কিভাবে হেল্প করে??আর রিফাতটা কে??? শালি আমার খানিকটা লজ্জা পেয়ে বললঃ- রাত বিরাতের গেটের ব্যাপার স্যাপার, আপনি অবশ্যই ভাল বুজবেন।আর রিফাতটা আমাদের প্রতিবেশী, মানেপাশের বিল্ডিং এর। এবার আমি সবার উদ্দেশ্য বললামঃ-হুম,তাহলে সুমাইয়ার(আমার শালি) ঠিক করা নামটাই হবে,কি বল তোমরা?? আমার কথায় সবাই বিক্ষোভ মিছিলের স্লোগানের মত করে এটা নাকচ করে দিল।ওরা যার যার ঠিক করা নামটাই রাখতে চাই।তাদের ঠিক করা নাম নিয়ে এমন ভাষন দিচ্ছে যেন মনে হচ্ছে পুরো বাড়ি একটা কথা-যুদ্ধের ময়দান।আগুনের গোলার মত সবাই কথা ছুড়ে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে বড় ধরনের কিছু আশংকা করা যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আমি কিছু পথ না দেখে বললামঃ- তোমাদের সবার মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি?নাম রাখার এখনো এক সপ্তাহ বাকি আছে।এক সপ্তাহ পর দেখা যাবে কি নাম রাখা যাই।এটা নিয়ে এখন খেকে এত মাতামাতি করা লাগবে না। আগে নাম রাখার সু-দিনটা আসুক তারপর না হয় দেখা যাবে।এখন অন্তত চুপ করো তো প্লিজ।
পাঁচ দিন পর.......... এই পাঁচ দিনভাবতে ভাবতে পুরো মাথা যেন অচল হয়ে গেছে।এদিকে আত্মীয়তার শিকড়,আর এদিকে আদরের ছেলের নাম।নাম রাখতে পারব একটা, কিন্তু একজনেরটা রাখলে অন্যরা??? ভাবতেই যেন পুরো মাথা প্যাচ হয়ে যাচ্ছে।এসব ভাবতে ভাবতে আজকে সকালে হঠাৎ খেলে বসল এক দারুন আইডিয়া। হুম যে কয় জনের সিলেক্ট করা নামের প্রথম অক্ষর গুলো নিয়ে একটা নাম রাখব।আর এটাই হবে আমাদের ছেলের নাম। যে ভাবা সে কাজ।নব-মেহমানের মায়ের ঠিক করা "দরফন সাকিব " থেকে প্রথম অক্ষর "দ"।দাদির রাখা " রশিদ আহমেদ" থেকে "র"। নানির রাখা " বেলাল হোছাইন" থেকে "বে"। ফুফির রাখা " শহনব মোঃ আফরান"থেকে "শ"।আমার রাখা " অর্জন মাহমুদ তাহের" থেকে "অ"। এবং খালা মানের আমার শালির রাখা "লিয়াকত আলী" থেকে "লি" নিয়ে একটা নাম রাখলাম।যেটা সাজালে "দরবেশ অলি" হয়। হুম,আমার ছেলের নাম "দরবেশ অলি" ই ঠিক করলাম।
আজ আমার ছেলের বয়স ৭ দিন মানে আজই ছেলের নাম রাখার শুভ দিন।আগের মত সবাই যার যার ঠিক করা নাম রাখার ব্যাপারে বলে যাচ্ছে। আমি হাসতে হাসতে খুশি মনে তাদের কাছে গিয়ে বললাম।প্লিজ, স্টপ সাউন্ড" সুখবর 'সুখবর'সুখবর। নাম রাখা নিয়ে তোমাদের আর এত আর মাতামাতি করতে হবেনা।আমি এর পারফেক্ট একটা সমাধান বের করে ফেলছি। আমার কথা শুনে সবাই শক খেয়ে আমার মুখের পানে চেয়ে রইল।হইতো তারা ভাবছে আমি কি এমন সমাধান বের করলাম??? এবার আমি সবার ভাবনায় ছেদ ঘঠিয়ে বজ্রস্বরে বললাম,হ্যাঁ আমার ছেলের নাম হবে "দরবেশ অলি"। আমার কথায় সবাই একসঙ্গে বলে উঠলঃ- নামটা আবার কে রাখল? নাহ, এই নাম আমরা কিছুতেই রাখতে দেবনা। আমি বললামঃ- রাখা না রাখা পরে আসবে আগে ঠান্ডা মাথায় আমার কথাটাতো শুনবে।।। আমার কথায় সবাই ক্ষীণ-শান্ত হলো।সে সুযোগে আমি সবাইকে নাম রাখার ফর্মুলাসহ বুঝিয়ে দিলাম।এতে আমার দুর দুরান্ত বুদ্ধি দেখে সবাই আবাক হয়ে গেল।সর্বত্র নাম ওও ছড়িয়ে পড়ল। এর মধ্যে আমার ছেলের নাম যে "দরবেশ অলি" এটা চর্তুদিকে ছড়িয়ে পড়ল। হুম,ছড়িয়ে পড়ল বাবা হিসেবে।কোন সন্তানের বাবা না,দরবেশ বাবা।তেল,পানি,মুরগি,টাকা,মাংস সব কিছুতেই ভরে গেল পুরো বাড়ি,সাথে হক-মওলা ধ্বনিতো আছেই। হুম,এখন আমার ছেলে একটা বাবা, বাবা হো দরবেশ অলি। আসো সবাই বাবার কাছে চলি। হক-মওলা হক,
আবার বলি।
হক-মওলা হক। আসো সবাই বাবার কাছে চলি।
লেখকঃ-আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের (আলাপ) ০৯:০০, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ (ইউটিসি)
দরবেশ অলি। সম্পাদনা
- দরবেশ_অলি।
আমার বউ একটা ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছে।এটা শুনে খুশির ঠেলায় অফিসের সব কাজ বাদ দিয়ে দুই কেজি মিষ্টি লইয়া হাসপাতালে চলে আসলাম। এসে দেখি আত্মীয় স্বজন সবাই মোটামুটি উপস্থিত।সবার মুখে এভারেস্ট জয়ের আনন্দ।কার পরে কে কোলে নিবে তা নিয়ে ধুম হৈ ছৈ। এখনো যেহেতু নাম রাখা হয়নি,তাই যার যার পছন্দের নাম ধরে তাকে আদর করে যাচ্ছে।লতিন,মতিন,পুতিন,যার মুখ দিয়ে যেটা আসছে তা বলে যাচ্ছে। এর মাঝে তার মা মানে আমার বউ সবার উদ্দেশ্য বলল ওকে এত গুলো নামে না ডেকে বরং "দরফন সাকিব" বলে ডাকতে পার। তার কথা শুনে সবাই যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল।সবার একটাই প্রশ্ন তাকে কেন এই নামে ডাকব।সাবার প্রশ্নের জবাবে আমার বউ বললঃ-এটা তার নাম হিসেবে সে দুনিয়ায় আসার পূর্বাভাস পাওয়ার আগে থেকে ঠিক করে রেখেছি।বউয়ের কথা শুনে আমার আম্মা মানে নব-মেহমানের দাদি বলে উঠলঃ- আমার একমাত্র নাতির নাম আমিই রাখব।সবাই তাকে "রশিদ আহমেদ" নামে ডাকবা।জানো,,এই নামটা আমি বটমূলে বসে কত দিন আগে থেকে আমার বড় নাতির জন্য ঠিক করে রেখেছি।২য় কোন কথা নয় এটাই হবে আমার নাতির নাম। এর মধ্যে আমি মা'কে থামিয়ে দিয়ে বললাম।মা বটমুলে বসে কেন আমার ছেলের নাম রাখবা? আমার কথায় মা হালকা লজ্জা পেয়ে বললঃ-আমার আর তুর বাবার দুই বছরের রিলেশন পুর্তির দিনে আমরা আমাদের নাতির নামটা ঠিক করছিলাম। মা'রকথা শুনে আমার শশুড়ি আম্মা বললঃ-না,আমার নাতির নাম "বেলাল হোছাইন " হবে।শশুড়ির কথার উত্তরে আমি বললামঃ-শশুড়ি আম্মা!!!আপনি আবার এই নামটা কখন ঠিক করেছেন? আমার কথায় শশুড়ি মানে নবজাতকের নানি লজ্জাভরা মুখে শাড়ির আচলটা টেনে বললঃ-তোমার শশুর আব্বা এই নামটা দিয়ে আমায় প্রপোজ করেছিল আর বলেছিল।। এইটুকু বলে শশুড়ি লজ্জায় থেমে গেল।আমি শশুড়িকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বললামঃ- বললেন না যে, আর কি বলছিল? জবাবে শশুড়ি আম্মা বললঃ-তোমার শশুর আব্বা বলছিল,তুমি(শশুড়ি)কি বেলাল হোছাইনের খেলার সাথী হবে? এই কথা বলাতে আমি তোমার শশুড় আব্বাকে এক চড় মেরে বলছিলামঃ-তোমার কি লজ্জা শরম নেই, ছিঃ তুমি আমাকে অন্য আরেক জনের সাথে...................ছিঃ।তখন তোমার শশুড় বলেছিলঃ-এটা আমাদের ১ম নাতির নাম। শশুড়ির প্রেম কাহিনী থামিয়ে দিয়ে আমার আদরের ছোট বোন মানে নব-মেহমানের ফুফি বললঃ-না,ওর নাম "শহনম মোঃ আফরান" হবে। এবার আমি হতাশ হয়ে বললামঃ- বুনু,তুই এটা আবার কখন ঠিক করলি?? আমার কথায় আদরের বোনটা খানিকটা লজ্জা পেয়ে উল্টো দিকে ফিরে বললঃ- এটা আমি ঠিক করিনি। তাহলে কে ঠিক করেছে?(আমি) এটা আমার ৪৭ তম বয়ফ্রেন্ডে ঠিক করছে।(বোন) বোনের কথা শুনে দেয়ালে হেলান দিয়ে কোন রকম বললামঃ-থামো,থামো।আমার ছেলের নাম কাউকে রাখতে হবেনা।আমার ছেলের নাম আমিই রাখব।তার নাম হবে "অর্জন মাহমুদ তাহের"। আমার কথা শুনে বউটা আমার চুখের জ্বল ছেড়ে দিয়ে বললঃ- তুমি আবার এই নামটা কখন ঠিক করলে? বউয়ের প্রশ্নের জবাবে আমি বললামঃ-এই তিন মাস আগে ঠিক করেছি। বউ চুখের পানিতে মুখের অবস্থা একাকার করে লম্বা বিলাপ ধরে বললঃ-ছিঃছিঃ কার সাথে,কিভাবে এই নামটা ঠিক করলা।আমি তোমাকে বিশ্বাস করেছিলাম,আর তুমি আমার বিশ্বাসকে এভাবে...............ছিঃ। আমি আর থাকবনা এখানে।আম্মু চল।আমি তোমাদের ওখানে চলে যাব।আমি লম্পটের সাথে থাকবনা।একমুহূর্তও না। আমি বউটাকে কোন রকম থামিয়ে দিয়ে বললামঃ-আগে শুনবা তো আমার কথা। কি বলবা হ্যাঁ(বউ) আমি বললামঃ-আামার বন্ধু নাইম আর আমি মিলেই নামটা ঠিক করছি। ফাইজলামি কর,তোমার বন্ধু নাইম কেন আমাদের ছেলের নাম রাখবে?(বউ) এবার আমি বউকে শান্ত গলায় বললামঃ-ঐ দিন বলেছিলাম না,নাইমের মেয়ের সাথে আমাদের ছেলের বিয়ে দিবো,তাই আমরা দু'বন্ধু মিলে নাইমের মেয়ের নাম " অর্জিতা মাহমুদা তাহেরা" আর আমার ছেলের নাম"অর্জন মাহমুদ তাহের" রাখছি। বাহ্,ডং কত তার বন্ধু নাইমের মেয়ে না ছেলে হয় এটার কোন বিশ্বাস নাই।তার আগে আগেই আমার ছেলের সাথে বিয়ে।যত্তসব!! (বউ) হুম,ডাক্তার বলছে মেয়ে হবে(আমি) মেয়ে হোক আর ছেলে হোক ওই বেড়ার মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়ে দিবো না।লুইচ্ছা একটা!! বউয়ের এমন কথায় আমি বললামঃ- তুমিই তে ঐদিন বন্ধু নাইমকে বলেছিলে ওদের সন্তানের সাথে আমাদের সন্তানের বিয়ে ............। এর মধ্যে বউয়ের ছোট বোন মানে আমার একমাত্র শালি আমার কথা থামিয়ে দিয়ে বললঃ-তোমাদের এত ঝগড়া করতে হবেনা।আমার ভাগিনার নাম আমি ঠিক করেই এসেছি। আমি মর্মাহত স্বরে বললামঃ- কি নাম ঠিক করছ শুনি?? শালি বললঃ- আমার ভাগিনার নাম হবে লিয়াকত আলী। তার কথা শুনে আমার মেজাজ গরম হয়ে গেল।কারণ,এই আদিম যুগের নাম গুলির এখন আর মার্কেট আছে নাকি।তবুও মেজাজটা ঠান্ডা রেখে বললামঃ- হুম, নামটা অনেক সুন্দর আমারও অনেক পছন্দ হয়ছে।কিন্তু কিভাবে ঠিক করলা শুনি এই পারফেক্ট নামটা?? শালি বললঃ- এইটা আমাদের দারোয়ান চাচার নাম।জানো দুলাভাই দারোয়ান চাচা মানুষটা অনেক ভালো।ওও আমাকে রিফাতের ব্যাপারে অনেক হেল্প করে। রিফাত নামটা শুনে আমি একটু শক খেয়ে বললামঃ- কিভাবে হেল্প করে??আর রিফাতটা কে??? শালি আমার খানিকটা লজ্জা পেয়ে বললঃ- রাত বিরাতের গেটের ব্যাপার স্যাপার, আপনি অবশ্যই ভাল বুজবেন।আর রিফাতটা আমাদের প্রতিবেশী, মানেপাশের বিল্ডিং এর। এবার আমি সবার উদ্দেশ্য বললামঃ-হুম,তাহলে সুমাইয়ার(আমার শালি) ঠিক করা নামটাই হবে,কি বল তোমরা?? আমার কথায় সবাই বিক্ষোভ মিছিলের স্লোগানের মত করে এটা নাকচ করে দিল।ওরা যার যার ঠিক করা নামটাই রাখতে চাই।তাদের ঠিক করা নাম নিয়ে এমন ভাষন দিচ্ছে যেন মনে হচ্ছে পুরো বাড়ি একটা কথা-যুদ্ধের ময়দান।আগুনের গোলার মত সবাই কথা ছুড়ে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে বড় ধরনের কিছু আশংকা করা যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আমি কিছু পথ না দেখে বললামঃ- তোমাদের সবার মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি?নাম রাখার এখনো এক সপ্তাহ বাকি আছে।এক সপ্তাহ পর দেখা যাবে কি নাম রাখা যাই।এটা নিয়ে এখন খেকে এত মাতামাতি করা লাগবে না। আগে নাম রাখার সু-দিনটা আসুক তারপর না হয় দেখা যাবে।এখন অন্তত চুপ করো তো প্লিজ।
পাঁচ দিন পর.......... এই পাঁচ দিনভাবতে ভাবতে পুরো মাথা যেন অচল হয়ে গেছে।এদিকে আত্মীয়তার শিকড়,আর এদিকে আদরের ছেলের নাম।নাম রাখতে পারব একটা, কিন্তু একজনেরটা রাখলে অন্যরা??? ভাবতেই যেন পুরো মাথা প্যাচ হয়ে যাচ্ছে।এসব ভাবতে ভাবতে আজকে সকালে হঠাৎ খেলে বসল এক দারুন আইডিয়া। হুম যে কয় জনের সিলেক্ট করা নামের প্রথম অক্ষর গুলো নিয়ে একটা নাম রাখব।আর এটাই হবে আমাদের ছেলের নাম। যে ভাবা সে কাজ।নব-মেহমানের মায়ের ঠিক করা "দরফন সাকিব " থেকে প্রথম অক্ষর "দ"।দাদির রাখা " রশিদ আহমেদ" থেকে "র"। নানির রাখা " বেলাল হোছাইন" থেকে "বে"। ফুফির রাখা " শহনব মোঃ আফরান"থেকে "শ"।আমার রাখা " অর্জন মাহমুদ তাহের" থেকে "অ"। এবং খালা মানের আমার শালির রাখা "লিয়াকত আলী" থেকে "লি" নিয়ে একটা নাম রাখলাম।যেটা সাজালে "দরবেশ অলি" হয়। হুম,আমার ছেলের নাম "দরবেশ অলি" ই ঠিক করলাম।
আজ আমার ছেলের বয়স ৭ দিন মানে আজই ছেলের নাম রাখার শুভ দিন।আগের মত সবাই যার যার ঠিক করা নাম রাখার ব্যাপারে বলে যাচ্ছে। আমি হাসতে হাসতে খুশি মনে তাদের কাছে গিয়ে বললাম।প্লিজ, স্টপ সাউন্ড" সুখবর 'সুখবর'সুখবর। নাম রাখা নিয়ে তোমাদের আর এত আর মাতামাতি করতে হবেনা।আমি এর পারফেক্ট একটা সমাধান বের করে ফেলছি। আমার কথা শুনে সবাই শক খেয়ে আমার মুখের পানে চেয়ে রইল।হইতো তারা ভাবছে আমি কি এমন সমাধান বের করলাম??? এবার আমি সবার ভাবনায় ছেদ ঘঠিয়ে বজ্রস্বরে বললাম,হ্যাঁ আমার ছেলের নাম হবে "দরবেশ অলি"। আমার কথায় সবাই একসঙ্গে বলে উঠলঃ- নামটা আবার কে রাখল? নাহ, এই নাম আমরা কিছুতেই রাখতে দেবনা। আমি বললামঃ- রাখা না রাখা পরে আসবে আগে ঠান্ডা মাথায় আমার কথাটাতো শুনবে।।। আমার কথায় সবাই ক্ষীণ-শান্ত হলো।সে সুযোগে আমি সবাইকে নাম রাখার ফর্মুলাসহ বুঝিয়ে দিলাম।এতে আমার দুর দুরান্ত বুদ্ধি দেখে সবাই আবাক হয়ে গেল।সর্বত্র নাম ওও ছড়িয়ে পড়ল। এর মধ্যে আমার ছেলের নাম যে "দরবেশ অলি" এটা চর্তুদিকে ছড়িয়ে পড়ল। হুম,ছড়িয়ে পড়ল বাবা হিসেবে।কোন সন্তানের বাবা না,দরবেশ বাবা।তেল,পানি,মুরগি,টাকা,মাংস সব কিছুতেই ভরে গেল পুরো বাড়ি,সাথে হক-মওলা ধ্বনিতো আছেই। হুম,এখন আমার ছেলে একটা বাবা, বাবা হো দরবেশ অলি। আসো সবাই বাবার কাছে চলি। হক-মওলা হক,
আবার বলি।
হক-মওলা হক। আসো সবাই বাবার কাছে চলি।
লেখকঃ-আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের (আলাপ) ০৯:০১, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ (ইউটিসি)