শঙ্কর সেনগুপ্ত
জন্ম১৯৩৩
কেওড়া গ্রাম বরিশাল বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৫ অক্টোবর ১৯৮৯
কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ ভারত
পেশালোকসংস্কৃতি গবেষক ও লেখক
ভাষাবাংলা
জাতীয়তাভারতীয়
উল্লেখযোগ্য পুরস্কাররবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৭১)
দাম্পত্যসঙ্গীগীতা সেনগুপ্ত

শঙ্কর সেনগুপ্ত (১৯৩৩ - ১৫ অক্টোবর ১৯৮৯) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি লোকসংস্কৃতি গবেষক ও লেখক। [১]

শঙ্কর সেনগুপ্ত ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের তৎকালীন বরিশাল জেলার অন্তর্গত কেওড়া গ্রাম জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সুরেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত ছিলেন ইংরাজী ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক মাতা সতীরানি ছিলেন গৃহকর্ত্রী। শঙ্কর তের বৎসর বয়সেই প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কিন্তু পরের বৎসরেই দেশডাগের কারণে চলে আসেন কলকাতায়। প্রথমদিকে কিছুদিন চার ভাই ও বোনদের নিয়ে শিয়ালদহ স্টেশনেই কাটান। শেষে পড়াশোনার পাশাপাশি ছাপাখানার কাজ করতে থাকেন। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে সাংবাদিকতার কাজে যোগ দেন। 'শনিবারের চিঠি', 'কেশরী', 'দৈনিক রাজদূত', 'জন্মভূমি' প্রভৃতি পত্রপত্রিকায় কাজ করেন। এদের সূত্রেই তিনি সুনীলকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সান্নিধ্যে আসেন এবং ভারতীয় লোকসংস্কৃতির প্রতি আকৃষ্ট হন। গভীর পড়াশোনা আর তথ্যানুসন্ধানে ব্যস্ত হয়ে বাংলা ও ইংরাজীতে লেখালেখি শুরু করেন। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দেই তিনি লোকসংস্কৃতির উপর আন্তর্জাতিক মানের মাসিক পত্রিকা - ফোকলোর প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে তিনি 'ইন্ডিয়ান ফোকলোর সোসাইটি'-র প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক ছিলেন।[২] দীর্ঘ তিরিশ বৎসর ধরে ভারতের ইতিহাস, ধর্ম দর্শন, সাহিত্য, লোকসংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করেন। লোকসংস্কৃতির উপর তার ইংরাজীতে লেখা প্রথম বই,ফোকলোরিস্ট অফ বেঙ্গল প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে। ইউরোপ ও এশিয়ার ফোকলোর সম্মেলনে তিনি ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি লোকসংস্কৃতির উপর তেইশটি গ্রন্থের সম্পাদনা এবং ঊনিশ টি মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ রচনা করেন। তার রচিত ও সম্পাদিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল—

রচিত গ্রন্থসমূহ—
  • বিবলিওগ্রাফি অফ ইন্ডিয়ান ফোকলোর অ্যান্ড রিলেটেড সাবজেক্টস্ (১৯৬৬)
  • এ সার্ভে অফ ফোকলোর স্টাডি ইন বেঙ্গল (১৯৬৭)
  • বাঙালী জীবনে বিবাহ (১৯৬৭)
  • বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি (১৯৭২)
  • ফোকলোর অ্যান্ড ফোক-লাইফ ইন ইন্ডিয়া (১৯৭৪)
  • ফোকলোর অফ বেঙ্গল
  • পাদরি লঙ বাঙলা সাহিত্য ও বাঙালী জীবন (১৯৮০), ইন্ডিয়ান পাবলিকশন, কলকাতা
সম্পাদিত গ্রন্থসমূহ—
  • ইন্ডিয়ান ওয়ার অফ ইন্ডিপেন্ডেস (১৯৫৭)
  • রেইন ইন ইন্ডিয়ান অ্যান্ড লাইফ লোর (১৯৬৩)
  • স্টাডিজ ইন ইন্ডিয়ান ফোক-কালচার (১৯৬৪)
  • ফোকলোর রিসার্চ ইন ইন্ডিয়া (১৯৬৪)
  • ট্রিসিম্বল ওয়ারশিপ ইন ইন্ডিয়া (১৯৬০)
  • বিবিধ প্রসঙ্গ (১৯৬৫)
  • এ গাইড টু ফিল্ড স্টাডি (১৯৬৬)
  • উইমেন ইন ইন্ডিয়ান ফোকলোর (১৯৬৯)
  • নীলদর্পণ অর দি ইন্ডিগো প্ল্যান্টিং মিরর (১৯৭৩)
  • দি পটস্ অ্যান্ড দি পুটুয়াজ অব বেঙ্গল (১৯৭৩)
  • ক্যালকাটা অ্যান্ড ইটস্ নেইবারহুড (১৯৭৪)

সম্মাননা

সম্পাদনা
  • ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সাম্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।
  • ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার এ স্টাডি অফ উওমেন অফ বেঙ্গল গ্রন্থটির জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান করে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ৩৬৭,৩৬৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. সেনগুপ্ত, শঙ্কর (১৯৮০)। পাদরী লঙ বাঙলা সাহিত্য ও বাঙালী জীবন। ইন্ডিয়ান পাবলিকেশন, কলিকাতা। পৃষ্ঠা মুখবন্ধ।