"নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু" শিরোনামকে এখানে পুনর্নির্দেশ করা হয়েছে। অন্য ব্যবহারের জন্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (দ্ব্যর্থতা নিরসন) দেখুন। ‘নেতাজি’ নামের অন্য ব্যবহারের জন্য নেতাজি (দ্ব্যর্থতা নিরসন) দেখুন। সুভাষচন্দ্র বসু এই শব্দ সম্পর্কেউচ্চারণ (সাহায্য·তথ্য) (২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ - ?) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র যিনি এই সংগ্রামে নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি নেতাজি নামে সমধিক পরিচিত। ২০২১ সালে ভারত সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার জন্মবার্ষিকীকে জাতীয় পরাক্রম দিবস বলে ঘোষণা করেন। সুভাষচন্দ্র পরপর দুইবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু গান্ধীর সঙ্গে আদর্শগত সংঘাত, কংগ্রেসের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতির প্রকাশ্য সমালোচনা[টীকা ১][১১] এবং বিরুদ্ধ-মত প্রকাশ করার জন্য তাকে পদত্যাগ করতে হয়। সুভাষচন্দ্র মনে করতেন, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর অহিংসা এবং সত্যাগ্রহের নীতি ভারতের স্বাধীনতা লাভের জন্য যথেষ্ট নয়। এই কারণে তিনি সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নিয়েছিলেন। সুভাষচন্দ্র ফরওয়ার্ড ব্লক নামক একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন এবং[১২] ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের সত্বর ও পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানাতে থাকেন। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে এগারো বার কারারুদ্ধ করে। তার বিখ্যাত উক্তি "তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো।" দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘোষিত হওয়ার পরেও তার মতাদর্শের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি; বরং এই যুদ্ধকে ব্রিটিশদের দুর্বলতাকে সুবিধা আদায়ের একটি সুযোগ হিসেবে দেখেন। যুদ্ধের সূচনালগ্নে তিনি লুকিয়ে ভারত ত্যাগ করে সোভিয়েত ইউনিয়ন, জার্মানি ও জাপান ভ্রমণ করেন ভারতে ব্রিটিশদের আক্রমণ করার জন্য সহযোগিতা লাভের উদ্দেশ্যে। জাপানিদের সহযোগিতায় তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজ পুনর্গঠন করেন এবং পরে তিনি নেতৃত্ব প্রদান করেন। এই বাহিনীর সৈনিকেরা ছিলেন মূলত ভারতীয় যুদ্ধবন্দি এবং ব্রিটিশ মালয়, সিঙ্গাপুরসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে কর্মরত মজুর। জাপানের আর্থিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক সহায়তায় তিনি নির্বাসিত আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠা করেন এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের নেতৃত্বদান করে ব্রিটিশ মিত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে ইম্ফল ও ব্রহ্মদেশে (বর্তমান মায়ানমার) যুদ্ধ পরিচালনা করেন। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নাৎসি ও অন্যান্য যুদ্ধবাদী শক্তিগুলির সঙ্গে মিত্রতা স্থাপনের জন্য কোনো কোনো ঐতিহাসিক ও রাজনীতিবিদ সুভাষচন্দ্রের সমালোচনা করেছেন; এমনকি কেউ কেউ তাকে নাৎসি মতাদর্শের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন বলে অভিযুক্ত করেছেন। তবে ভারতে অন্যান্যরা তার ইস্তাহারকে রিয়েলপোলিটিক (নৈতিক বা আদর্শভিত্তিক রাজনীতির বদলে ব্যবহারিক রাজনীতি)-এর নিদর্শন বলে উল্লেখ করে তার পথপ্রদর্শক সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবাদর্শের প্রতি সহানুভূতি পোষণ করেছেন। উল্লেখ্য, কংগ্রেস কমিটি যেখানে ভারতের অধিরাজ্য মর্যাদা বা ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাসের পক্ষে মত প্রদান করে, সেখানে সুভাষচন্দ্রই প্রথম ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে মত দেন। জওহরলাল নেহরুসহ অন্যান্য যুবনেতারা তাকে সমর্থন করেন। শেষ পর্যন্ত জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক লাহোর অধিবেশনে কংগ্রেস পূর্ণ স্বরাজ মতবাদ গ্রহণে বাধ্য হয়। ভগৎ সিংয়ের ফাঁসি ও তার জীবন রক্ষায় কংগ্রেস নেতাদের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ[টীকা ২] সুভাষচন্দ্র গান্ধী-আরউইন চুক্তি বিরোধী আন্দোলন[টীকা ৩] শুরু করেন। তাকে কারারুদ্ধ করে ভারত থেকে নির্বাসিত করা হয়। নিষেধাজ্ঞা ভেঙে তিনি ভারতে ফিরে এলে আবার তাকে কারারুদ্ধ করা হয়।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু Subhas Chandra Bose NRB.jpg ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান[ঘ] কাজের মেয়াদ ৪ জুলাই ১৯৪৩ – ১৮ অগাস্ট ১৯৪৫ পূর্বসূরী মোহন সিং উত্তরসূরী দপ্তরের বিলুপ্তি সভাপতি

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কাজের মেয়াদ ১৮ জানুয়ারি ১৯৩৮ – ২৯ এপ্রিল ১৯৩৯ পূর্বসূরী জওহরলাল নেহরু উত্তরসূরী রাজেন্দ্র প্রসাদ

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ফরোয়ার্ড ব্লকের সভাপতি কাজের মেয়াদ ২২ জুন ১৯৩৯ – ১৬ জানুয়ারি ১৯৪১ পূর্বসূরী দপ্তর গঠন

৫ম কলকাতার মেয়র কাজের মেয়াদ ২২ অগাস্ট ১৯৩০ – ১৫ এপ্রিল ১৯৩১ পূর্বসূরী যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত উত্তরসূরী বিধানচন্দ্র রায়

ব্যক্তিগত বিবরণ জন্ম সুভাষচন্দ্র বসু ২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ কটক, ওড়িশা বিভাগ, বেঙ্গল প্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত (অধুনা কটক, ওড়িশা রাজ্য, ভারত) মৃত্যু অমীমাংসিত (তবে, ১৫ অগাস্ট ১৯৪৫, ভারত সরকার কর্তৃক স্বীকৃত) নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারতীয় জাতীয়তা ভারতীয় রাজনৈতিক দল ফরওয়ার্ড ব্লক অন্যান্য রাজনৈতিক দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দাম্পত্য সঙ্গী বা সহচর,[৪] এমিলি শেঙ্কল (সুভাষচন্দ্র বসু দ্বারা প্রকাশ্যে অস্বীকৃত, কোনও অনুষ্ঠান বা সাক্ষী ছাড়াই ১৯৩৭ সালে গোপনে বিবাহ।[৫]) সন্তান অনিতা বসু পাফ মাতা প্রভাবতী দত্ত পিতা জানকীনাথ বসু আত্মীয়স্বজন বসু পরিবার বাসস্থান ৩৮/২ এলগিন রোড, (অধুনা লালা লাজপত রাই সরণি), কলকাতা শিক্ষা ব্যাপটিস্ট মিশন'স প্রোটেস্ট্যান্ট ইউরোপীয় স্কুল, কটক, ১৯০২–০৯[৬] র‍্যাভেনশো কলেজিয়েট স্কুল, কটক, ১৯০৯–১২[৭] প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা, ১৯১২–১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯১৬[ঙ][চ] স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা, ২০ জুলাই ১৯১৭–১৯১৯ ফিটজউইলিয়াম হল, নন-কলেজিয়েট স্টুডেন্টস বোর্ড, কেমব্রিজ, ১৯১৯-২২।[১০][ছ] প্রাক্তন শিক্ষার্থী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (বি.এ., দর্শন, ১৯১৯) কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় (বি.এ. মানসিক ও নৈতিক বিজ্ঞান ত্রিপোস, ১৯২১[১০]) যে জন্য পরিচিত ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী আজাদ হিন্দ ফৌজের সংগঠক ও সর্বাধিনায়ক।