বেনজীর ভুট্টো

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী
(বেনজির ভুট্টো থেকে পুনর্নির্দেশিত)

বেনজির ভুট্টো (২১ জুন, ১৯৫৩ - ২৭ ডিসেম্বর, ২০০৭) পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং একজন রাজনীতিবিদ। তিনি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর কন্যা এবং পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি এর স্ত্রী।

মোহতারমা
বেনজীর ভুট্টো
بينظير بُھٽو
২০০৬ সালে ভুট্টো
১১তম পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৮ অক্টোবর ১৯৯৩ – ৫ নভেম্বর ১৯৯৬
রাষ্ট্রপতিওয়াসিম সাজ্জাদ (অস্থায়ী)
ফারুক লাঘারি
পূর্বসূরীনওয়াজ শরীফ
মঈনউদ্দিন আহমদ কুরেশি (তত্ত্বাবধায়ক)
উত্তরসূরীমালিক মেরাজ খালিদ (তত্ত্বাবধায়ক)
নওয়াজ শরীফ
কাজের মেয়াদ
২ ডিসেম্বর ১৯৮৮ – ৬ আগস্ট ১৯৯০
রাষ্ট্রপতিগুলাম ইসহাক খান
পূর্বসূরীমুহাম্মদ খান জুনেজো
উত্তরসূরীগুলাম মোস্তফা জাটোই (তত্ত্বাবধায়ক)
নওয়াজ শরীফ
Other political offices
পাকিস্তানে বিরোধীদলীয় নেতা
কাজের মেয়াদ
১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ – ১২ অক্টোবর ১৯৯৯
পূর্বসূরীনওয়াজ শরীফ
উত্তরসূরীফজলুর রহমান
কাজের মেয়াদ
৬ নভেম্বর ১৯৯০ – ১৮ এপ্রিল ১৯৯৩
পূর্বসূরীখান আবদুল ওয়ালী খান
উত্তরসূরীনওয়াজ শরীফ
পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারপারসন
কাজের মেয়াদ
১২ নভেম্বর ১৯৮২ – ২৭ ডিসেম্বর ২০০৭
পূর্বসূরীনুসরাত ভুট্টো
উত্তরসূরীআসিফ আলি জারদারি
বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯৫৩-০৬-২১)২১ জুন ১৯৫৩
করাচি, ফেডারেল ক্যাপিটাল টেরিটরি, পাকিস্তান
মৃত্যু২৭ ডিসেম্বর ২০০৭(2007-12-27) (বয়স ৫৪)
রাওয়ালপিণ্ডি, পাঞ্জাব, পাকিস্তান
মৃত্যুর কারণহত্যাকাণ্ড
সমাধিস্থলভুট্টো পরিবার সমাধিসৌধ
জাতীয়তাপাকিস্তানি
রাজনৈতিক দলপাকিস্তান পিপলস পার্টি
দাম্পত্য সঙ্গীআসিফ আলি জারদারি (বি. ১৯৮৭)
সম্পর্ক
সন্তান
পিতামাতাজুলফিকার আলী ভুট্টো
নুসরাত ভুট্টো
শিক্ষা
স্বাক্ষর
ডাকনামবিউবি
লৌহমানবী

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

সম্পাদনা

১৯৫৩ সালের ২১ জুন এক অবস্থাপন্ন পরিবারে বেনজির ভুট্টোর জন্ম হয়। তার বাবা জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা। বেনজির ভুট্টো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতির ওপর পড়াশোনা করেন। শিক্ষা শেষে করে ১৯৭৭ সালে দেশে ফেরেন।

পারিবারিক জীবন

সম্পাদনা

বেনজির ভুট্টোর প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। ৩৭ বছর বয়সে অর্থাৎ ১৯৯০ সালে তার কন্যা বখতাওয়ার ভুট্টো জারদারিকে জন্ম দিয়েছিলেন। তিনি হচ্ছেন প্রথম সরকার প্রধান যিনি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় সন্তানের মা হন।[]

রাজনীতি

সম্পাদনা

১৯৭৭ সালে বেনজির দেশে ফেরেন। তার অল্পদিন পরই ক্ষমতা দখল করেন সেনা শাসক জিয়া উল হক১৯৭৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়া উল হক কর্তৃক তার পিতা ভুট্টোকে একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত করে ফাসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যার পর তিনি পাকিস্তানের রাজনীতিতে পা রাখেন। জিয়া সরকার তাকে বহুবার অন্তরীণ করেছিলেন। ১৯৮৪ সালে তিনি লন্ডন চলে যান ও ১৯৮৬ সালে দেশে ফেরত আসেন। সরকার বিরোধী আন্দোলনে বেনজীর ভুট্টো জনমত গঠন করেন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। আগস্ট ৬, ১৯৯০ সালে তিনি বরখাস্ত হন। ১৯৯৩ সালের নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেন ও দ্বিতীয়বারের মত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ৬ নভেম্বর তাকে পুনরায় বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তী ১৯৯৭ সালের নির্বাচনে তিনি হেরে যান। সুইজারল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ১৯৯৯ সালে বেনজির ও তার স্বামী আসিফ আলী জারদারিকে পাঁচ বছরের জেল ও ৮৬ লাখ ডলার জরিমানা করে পাকিস্তানের একটি আদালত। পরে উচ্চ আদালত এই রায়কে পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে রায় দেয়। আট বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটিয়ে ২০০৭ এর অক্টোবরে বেনজির পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করেন।

মৃত্যু

সম্পাদনা

২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডির এক নির্বাচনী সমাবেশ শেষে সভাস্থল ত্যাগ করার পর গাড়ীতে আরোহণের পর মুহূর্তে আত্মঘাতী হামলায় নিহত হন বেনজীর ভুট্টো।[] আত্মঘাতী হামলাকারী প্রথমে তার ঘাড়ে গুলি করে এবং পরবর্তীতে আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। বর্তমানের পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে র‌্যালি শেষে বেনজীর তার এসইউভিতে চড়ে গন্তব্যে যাত্রা করবেন এমন সময় তার গাড়িতে এক বা একাধিক আততায়ী গুলিবর্ষণ করে। যখন অন্য কেউ মনে করছিল বেনজীরকে গুলি করে মারার প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ সফল হয়নি তখন এসইউভি'র আশেপাশে কোথাও থেকে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঘাড়ে গুলি লাগার কারণে বেনজীরের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, যে আততায়ী গুলি করেছিল সে-ই নিরাপত্তা রক্ষীদের হাত থেকে বাঁচতে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

দলের নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, আততায়ী নিজের শরীরে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর পূর্বে বেনজীরের ঘাড়ে ও বুকে গুলি করেছে। বেনজীর রাওয়ালপিন্ডির লিয়াকত জাতীয় বাগ থেকে র‌্যালি শেষে ফিরার উদ্যোগ করছিলেন। স্থানীয় সময় ১৮:১৬ (জিএমটি ১৩:১৬)-তে রাওয়ালপিন্ডি জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে বেনজীরকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে ইতোমধ্যে দলের কর্মীসহ মোট ২২ জন নিহত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য এর দুই মাস আগেও একবার বেনজীর হত্যার ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়েছিল।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা