বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত উৎসব

বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত উৎসব প্রতি বৎসর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। আবুল খায়ের লিটুর উদ্যোগে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এই সঙ্গীত উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সর্বভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ওস্তাদ গায়ক, বাজিয়ে ও নৃত্যশিল্পীরা এতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। দর্শক-শ্রোতার সংখ্য বিচারে এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের উৎসবে পরিণত হয়েছে। [১] কখনও কখনও একে বেঙ্গল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত উৎসব হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।[২]

বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত উৎসব
ধরনভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত
তারিখসমূহনভেম্বর/ডিসেম্বর
অবস্থান (সমূহ)ঢাকা, বাংলাদেশ
পৃষ্ঠপোষক(গণ)বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, আইটিসি সংগীত গবেষণা একাডেমি
ওয়েবসাইট
http://www.bengalfoundation.org/

ইতিহাস

সম্পাদনা

সর্বপ্রথম বাংলাদেশের খ্যাতিমান শিল্পবোদ্ধা আবুল খায়ের লিটুর উদ্যোগে ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এই সঙ্গীত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। তার প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল ফাউন্ডেশন এ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্যোক্তা। ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় শুরু হয়ে সারা রাত নৃত্য-গীত-যন্ত্রবাদন চলে। হাজার হাজার মানুষ এ উৎসব উপভোগ করতে সমবেত হয়। ২০১২ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত প্রতি বৎসর তিন রাত ব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করা হলেও ২০১৪ থেকে এ অনুষ্ঠান পাঁচ দিনে সম্প্রসারিত করা হয়েছে।

আয়োজনের নানা দিক

সম্পাদনা

এ উৎসবে অংশ নিয়ে যারা রাতভর সঙ্গীতাস্বাদনে আগ্রহী তাদের ইন্টারনেটের মাধ্যমে নাম নিবন্ধন করে প্রবেশ পত্র সংগ্রহ করতে হয়। দর্শকদের আর্মি স্টেডিয়ামে পৌঁছানোর জন্য ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থান থেকে বিশেষ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়। উৎসব স্থলে পানি ও খাদ্যের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়।

অংশগ্রহণকারীবৃন্দ

সম্পাদনা

২৭ নভেম্বর - ১ ডিসেম্বর ২০১৪ খ্রি. তৃতীয়বারের মতো বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনে রকে সহায়তা করে ভারতের আইটিসি সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমি। এতে অংশগ্রহণ করেন:[৩]

২০১৫-এর উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন তবলার কিংবদন্তি ওস্তাদ জাকির হোসেন। আরো অংশ গ্রহণ করবেন বাঁশিশিল্পী জয়াপ্রদা রামমূর্তী, কর্ণাটকি কণ্ঠশিল্পী পদ্মবিভূষণ ড. বালমুরালি কৃষ্ণ, তার সঙ্গে বাঁশিতে যুগলবন্দী বাজাবেন শিল্পী রনু মজুমদার, খেয়ালিয়া শুভা মুডগাল ও শ্রুতি সাদোলিকার এবং ধ্রুপদিয়া ওয়াসিফউদ্দিন ডাগর, এন রাজমের নেতৃত্বে অংশ নেন কর্ণাটকি ধারার তিন প্রজন্মের বেহালাশিল্পীবৃন্দ, সরস্বতী বীণা বাজিয়ে শোনান জয়ন্তী কুমারেশ, এস্রাজ বাজিয়ে শোনান শুভায়ু সেন মজুমদার। আরও অংশগ্রহণ করেন আলারমেল ভালি, পণেশ ও কুমারেশ রাজাগোপালন এবং মৃদঙ্গশিল্পী কারাইকুরি মানি। কুচিপুড়ি নৃত্য পরিবেশন করেন দম্পতি রাজা ও রাধা রেড্ডি। সঙ্গীত পরিবেশন করেন একই পরিবারের দুজন ভিন্ন মেজাজের শিল্পী উস্তাদ ইরশাদ খান ও উস্তাদ সুজাত খান। সুরবাহার বাজিয়ে শোনান ময়মনসিংহের গৌরীপুরের প্রবাদপ্রতিম সেতারিয়া ওস্তাদ বিলায়েৎ খাঁ সাহেবের ভ্রাতুষ্পুত্র ইমরাত খান। বাঁশি বাজিয়ে বাজিমাৎ করেন পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, সান্তুর বাজিয়ে দর্শকদের মন জয় করেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা। আরো অংশ গ্রহণ করেন অস্কার নমিনেশনপ্রাপ্ত বম্বে জয়শ্রী, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, পণ্ডিত সুরেশ তালওয়ালকার, পণ্ডিত উল্লাস কশলকার, পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার ও ওস্তাদ রাশিদ খান।

বাংলাদেশের মিনু বিল্লাহর পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন বাংলাদেশের ২২ জন নৃত্যশিল্পী। ড. অসিত রায়ের পরিচালনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের আটজন শিল্পী অংশ গ্রহণ করেন। ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় ৩০ জন নৃত্যশিল্পী মণিপুরি দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন। অনিমেষ বিজয় চৌধুরীর পরিচালনায় সিলেটের আটজন শিল্পী ধামার পরিবেশন করেন। সরোদশিল্পী ইউসুফ খান তার বাদনের মাধ্যমে দর্শক-শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার ২৬-১১-২০১৫ তারিখের প্রতিবেদন
  2. "২৪ নভেম্বর থেকে বেঙ্গল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত উৎসব"। ২৭ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  3. নভেম্বরে বেঙ্গল শাস্ত্রীয় সঙ্গীত উৎসব

আরও দেখুন

সম্পাদনা