বৃদ্ধাশ্রম হ‌লো মূলত বৃদ্ধ নারী-পুরু‌ষের আবাসস্থল। "বৃদ্ধাশ্রম‌কে অ‌নেক সময় ইং‌রে‌জি‌তে "ওল্ড পিপল'স হোম"[১] বা 'অল্ড এজ হোম'[২] বলা হয়, য‌দিও "বৃদ্ধ‌দের বাসস্থান" বোঝা‌নো হয়। এ‌টি হ‌চ্ছে বয়স্ক‌দের আবাসন ব‌্যবস্থা। সাধারণত সেখা‌নে থাকা প্রত্যেককে বা প্রত্যেক দম্পতি এক‌টি ক‌রে ঘর বা রুম স‌্যুট পায়। ভবন‌টি‌র ম‌ধ্যেই তা‌দের জন‌্য অ‌তি‌রিক্ত ব‌্যবস্থাপনা প্রদান করা হয়, যার ম‌ধ্যে খাবার, এক‌ত্রিত হওয়া, চিত্ত‌বি‌নোদন এবং কিছু প্রকা‌রের স্্বাস্থ্য ও অসুস্থতাজ‌নিত সেবা প্রদান।[৩] বৃদ্ধাশ্রমে থাকার স্থান ভাড়ার ভি‌ত্তি‌তে পাওয়া যায় অথবা অ‌্যাপার্টমেন্ট‌ে‌র ম‌তো, কন্ডো‌মিয়া‌মের ম‌তো একই ভি‌ত্তি‌তে সেখা‌নে তা চিরস্থায়ীভা‌বে ক্রয় করা যায়।[৪]

ইসরাই‌য়ে‌লের এক‌টি বৃদ্ধাশ্রম.

বৃদ্ধাশ্রম এবং না‌র্সিং হ‌ো‌মের ম‌ধ্যে পার্থক‌্য মূলত মূলত প্রদত্ত চি‌কিৎসা সেবার মা‌নের ক্ষে‌ত্রে।বেৃদ্ধাশ্রম থে‌কে ব‌্যা‌তিক্রম, অবসরপ্রাপ্ত সম্প্রদায়ে‌ বসবাসের সাধারণত পৃথক এবং স্বতন্ত্র বা‌ড়ি থা‌কে।

বাংলাদেশে বৃদ্ধাশ্রমসম্পাদনা

চিকিৎসা বিজ্ঞানের বি‌ভিন্ন উন্নতির ফলে মানু‌ষের গড় আয়ু বৃ‌দ্ধি পাওয়ায় সমগ্র বিশ্ব‌ে বৃদ্ধ‌দের সংখ‌্যা বৃ‌দ্ধি পে‌য়ে‌ছে। তাই, এ শতা‌ব্দি‌কে কেউ কেউ বার্ধক্যের ব‌লেও অ‌ভি‌হিত ক‌রে‌ছেন। বাংলা‌দে‌শও এর ব‌্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রবীণ ব‌িদ্ধ সাধারণত পরিবারে বাস করে‌ন এবং তাদের ভরণপোষণ, চিকিংসা ইত্যাদির দা‌য়িত্ব সন্তান গ্রহণ ক‌রে। কিন্তু সামাজিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের কার‌ণে বর্তমা‌নে যৌথ পরিবার ভাঙ্গে যা‌চ্ছে, যার ফ‌লে বৃদ্ধরা তাদের সব থে‌কে গুরুত্বপূর্ণ অধিকার তথা আশ্রয় এবং বাসস্থনের অ‌ধিকার অ‌নি‌শ্চিত হ‌য়ে পড়‌ছে। একটি জরিপে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের শতকরা ৮৮ শতাংশ বৃ‌দ্ধের এক বা একা‌ধিক সন্তান বাইরে থাকে। অর্থাৎ, তা‌দের সাথে তা‌দের পিতামাতার যোগাযোগ খুব তেমন একটা নেই। এর ফ‌লে বৃদ্ধরা আর্থ-সামাজিক সমস্যায় ভূগ‌তে পা‌রেন। শতকরা ২০ জন, দ‌রিদ্র প্রবীন‌দের শতকরা ৩৭ জন একাকী থাকেন অথবা স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গে থাকে।

বর্তমান সরকার কর্তৃক প্রবীণদের জন্য বয়স্ক ভাতা চালু করা হ‌য়েছে এবং এ‌টির আওতায় ১৭ লাখ দরিদ্র প্রবীণ সাহায্য প্রদান করা হ‌চ্ছে। এছাড়া, সরকার কর্তৃক সহায় সম্বলহীন প্রবীণদের জন্য ৬টি বিভাগে ৬টি বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠিত হ‌য়ে‌ছে এবং বেসরকারি পর্যায়ে বৃদ্ধাশ্রম চালু করার উদ্যোগও গৃহীত হয়েছে। ঢাকা এবং অন্যান্য শহরে বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কিছু বৃদ্ধাশ্রম প্রতি‌ষ্ঠিত হ‌য়ে‌ছে কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে প্রবীনরা থা‌কে না।

এমতাবস্থায় থেকে তাদের সাহায‌্য করতে হলে দেশে যথেষ্ট সংখ্যক প্রয়োজন। বাংলাদেশের প্রবীন‌দের জন‌্য বৃদ্ধাশ্রম সংখ্যা চাহিদার অনুপাতে বেশ কম। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ঢাকার আগারগাঁওয়ে একটি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণ করা হয়। ফরিদপুরে 'অরুণিমা' নামক আরেক‌টি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণ করা হয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে বেশ ক‌য়েবক‌টি বিদ‌্যাশ্রম র‌য়েছে, যার এক‌টি গাজীপুরে অব‌স্থিত। এছাড়াও বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বেশ ক‌য়েক‌টি বৃদ্ধাশ্রম নি‌র্মিত হ‌য়ে‌ছে।

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ‌্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "old people's home - Definition and pronunciation | Oxford Advanced Learners Dictionary at OxfordLearnersDictionaries.com"। Oald8.oxfordlearnersdictionaries.com। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১২, ২০১৩ 
  2. "old people's home - Definition from Longman English Dictionary Online"। Ldoceonline.com। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১২, ২০১৩ 
  3. Castle, N. G.; Ferguson, J. C. (২০১০)। "What Is Nursing Home Quality and How Is It Measured?"The Gerontologist50 (4): 426–442। ডিওআই:10.1093/geront/gnq052পিএমআইডি 20631035পিএমসি 2915498  
  4. "What is a Retirement Home?"। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা