বুওয়াইবের যুদ্ধ

মুসলিম ও পারসিকদের মধ্যকার সংঘটিত যুদ্ধ

ইতিহাসখ্যাত বুহাইব যুদ্ধ ছিল পারসিকদের বিপরীতে মুসলমানদের অভিযান। পূর্বে জিসিরের যুদ্ধে পারসিকদের বিজয়ের কারণে তাদের সাহস বেড়ে গিয়েছিল। আর পরাজিত মুসলমানরা তখন লজ্জিত হয়ে পেরেশান হয়ে পড়লেন। ওমর রাঃ তখন পারসিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য আরো দক্ষ একটি সেচ্ছাসেবক বাহিনী তৈরি করলেন। মুহুর্তের মধ্যে বাহিনী তৈরি হয়ে যায়।

বুহাইব যুদ্ধ
অবস্থান
ফুরাত নদীর তীরে বুহাইব নামক স্থানে, ইরাক
ফলাফল মুসলমানদের বিজয়
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
পারসিকদের সেনাপতি মিহরান মুসান্না বিন হারিসা রা.
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
১ লক্ষ নিহত মুসলমানদের অল্পসংখ্যক শহীদ হন

ওমর রাঃ তখন তাদেরকে মুসান্না বিন হারিসা রাঃ এর সাহায্যে পাঠিয়ে দেন। এদিকে আরবের অন্যতম গোত্র বাজিলা গোত্রের সরদার আব্দুল্লাহ বাজালি রাঃ নিজের গোত্রের বাহিনী নিয়ে ইরাকে পৌছে যান। পারস্যের সেনাপ্রধান রুস্তম মুসলমানদের এমন প্রস্তুতির কথা শুনে ভাবলো, এবারও সেতু যুদ্ধের মতো তারা জয়লাভ করবে। তাই সে সেনাপতি মিহরানের অধীনে একদল সেনা দিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করে।

ফুরাত নদীর তীরে বুহাইব নামক স্থানে তারা একত্রিত হয়। মুসান্না বিন হারিসা রাঃ এবার আর নিজ থেকে নদী পার হন নি। পারসিকদেরকে বললেন, নদী পার হয়ে আসতে। পারসিকরা তখন বিজয়ের নেশায় নদী পার হয়ে আসে। এরপর মুসলমানদের সাথে পারসিকদের যুদ্ধ বেঁধে যায়। দুপক্ষই তুমুলভাবে যুদ্ধ করছিল। মুসলমানদের নিকট এবং পারসিকদের নিকট এটি ছিল অস্ত্বিত্বের লড়াইয়ের মতো।

যুদ্ধের ফলাফল সম্পাদনা

বুহাইবের যুদ্ধে পারসিকদের সেনাপতি মিহরান মারা যায়। ফলে পারসিকরা মনোবল হারিয়ে ফেলে। অপরদিকে মুসলমানদের ডান ও বাম বাহু পারসিকদের উপর জোড়ালো আক্রমণ করে তাদেরকে পিছু হটিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত পারসিকদের নদী অতিক্রম করা ব্যতিত আর কোনো রাস্তা ছিল না। তারা নদী পার হওয়ার আগেই মুসলমানদের একটি দল গিয়ে সাঁকোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ফলে পারসিকরা দিগবিদিক পলায়ন করতে থাকে। এই যুদ্ধে মুসলমানদের বিষয় অর্জন হয়। পারসিকদের প্রায় ১ লক্ষ সৈন্য নিহত হয় এই যুদ্ধে।[১]


তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. রেহান, ইসমাইল (ফেব্রুয়ারী ২০২১)। মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস, খন্ড ৩। মাইমুন, মুজাহিদুল ইসলাম কর্তৃক অনূদিত। ইসলামী টাওয়ার, বাংলাবাজার, ঢাকা: মাকতাবাতুল ইত্তিহাদ।