বিষ্ণু বসু

ভারতীয় নাট্যকার

ড.বিষ্ণু বসু বা বিষ্ণুপ্রসাদ বসু (১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩ – ২৯ অক্টোবর ১৯৯৯) ছিলেন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি নাট্যসমালোচক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার ও গল্পকার। [১]

বিষ্ণু বসু
বিষ্ণুপ্রসাদ বসু
জন্ম(১৯৩৩-০৯-০১)১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৩
মৃত্যু২৯ অক্টোবর ১৯৯৯(1999-10-29) (বয়স ৬৬)
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাঅধ্যাপনা, নাট্যকার
দাম্পত্য সঙ্গীনীতিকা বসু
সন্তানব্রাত্য বসু

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

বিষ্ণু বসুর জন্ম ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের ১ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। পিতা সুকুমার বসু। দেশভাগের পর ছিন্নমূল হয়ে ভারতে চলে আসেন। স্কুল পরবর্তী শিক্ষা কলকাতায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাশ করেন এবং পিএইচডি ডিগ্রিও লাভ করেন।

কর্মজীবন সম্পাদনা

করণিক বৃত্তি দিয়ে কর্মজীবন শুরু করে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পরে মেদিনীপুর কলেজলালবাবা কলেজে অধ্যাপনা এবং শেষে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যবিভাগের অধ্যাপক হন। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন এবং ছয়ের দশকে নাটকে অভিনয়ও করেছেন। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দ হতে ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি কলকাতার আড়িয়াদহ-দক্ষিণেশ্বরের 'ভাগনাস' (ভারতীয় গণনাট্য সংঘ থেকে বেরিয়ে আসা নাট্যগোষ্ঠী)-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। [২]তার রচিত প্রথম নাটক– 'প্রৌঢ়প্রহর' প্রকাশিত হয় ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে। তার একটি সংকলন গ্রন্থে গ্রথিত হয়েছে পাঁচটি একাঙ্ক নাটক –'থিয়েটারের মেয়ে', 'কোরাস গার্ল', 'শান্তিরক্ষক', 'সংকট', 'মুনাফা ও খাঁচার পাখি'। শেষোক্ত নাটিকা দুটি বিদেশি নাটকের ছায়া অবলম্বনে রচনা করেন। ইংরেজি নাটক 'টুয়েলভ অ্যাংরি মেন' অবলম্বনে লেখেন 'মান্যবর ভুল করছেন'। নাট্যবিষয়ে লেখা তার উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থগুলি হল—

  • বাবু থিয়েটার
  • রবীন্দ্রনাথের থিয়েটার
  • রাজনীতি নাটকে
  • রাজনীতি থিয়েটারে
  • থিয়েটারের ভাবনা
  • থিয়েটার বনাম থিয়েটার

বিষ্ণু বসু ছোটদের জন্য লিখেছেন ছড়া ও গল্প। বিষ্ণু বসু গণনাট্য পত্রিকা ও পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন এবং আকাদেমি আয়োজিত বিভিন্ন কর্মশিবিরের প্রশিক্ষণ হিসাবে যুক্ত ছিলেন।[১]১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি কর্তৃক প্রবীণ নাট্যকার হিসাবে সংবর্ধিত হন।[২]

নাট্যকার অধ্যাপক বিষ্ণু বসু চিত্রশিল্পী নীতিকা বসুকে বিবাহ করেন। [৩]তাদের পুত্র সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার প্রাপ্ত খ্যাতনামা নাট্যকার ও নাট্য পরিচালক ব্রাত্য বসু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী। বিষ্ণু বসু ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৯ অক্টোবর কলকাতায় প্রয়াত হন। তার স্ত্রী নীতিকা বসু ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। [১]তাদের স্মৃতিতে কলকাতার কালিন্দী ব্রাত্যজন স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করে থাকে।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ২৬৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. বসু, বিষ্ণু। রবীন্দ্রনাথের থিয়েটার। কলকাতা ৯: কানন প্রকাশনী। পৃষ্ঠা লেখক পরিচিতি। 
  3. "রঙ্গভূমি - বিষ্ণু বসু ও নীতিকা বসু স্মারক বক্তৃতা"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২০