বিশ্ব বই দিবস
বিশ্ব বই দিবস বা বিশ্ব গ্রন্থ দিবস বা বিশ্ব পুস্তক দিবস (এছাড়া বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস, বা বইয়ের আন্তর্জাতিক দিবস নামেও পরিচিত) হল পড়া, প্রকাশনা এবং কপিরাইট প্রচারের জন্য জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন (ইউনেস্কো) দ্বারা আয়োজিত একটি বার্ষিক দিবস। ২৩ এপ্রিল ১৯৯৫ সালে ইউনেস্কো প্রথমবারের মত বিশ্ব বই দিবস উপযাপন করে।[১] এরপর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর ২৩ এপ্রিল বিশ্ব বই দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। একটি সম্পর্কিত দিবস যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ডে মার্চ মাসে পালন করা হয়। বিশ্ব বই এবং কপিরাইট দিবস উপলক্ষে, ইউনেস্কো বই শিল্পের প্রধান সেক্টর থেকে নির্বাচিত উপদেষ্টা কমিটির সাথে, এক বছরের একটি জন্য ওয়ার্ল্ড বুক ক্যাপিটাল নির্বাচন করে। প্রতিটি মনোনীত ওয়ার্ল্ড বুক ক্যাপিটাল শহর বই পাঠ,বইয়ের প্রচার এবং প্রচারের জন্য বছরব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে । ২০২৪ সালে স্ত্রাসবুরকে ওয়ার্ল্ড বুক ক্যাপিটাল হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে।[২]
বিশ্ব বই দিবস | |
---|---|
আনুষ্ঠানিক নাম | জাতীয় বিশ্ব বই দিবস |
পালনকারী | জাতিসংঘের সকল সদস্যরাষ্ট্র |
ধরন | আন্তর্জাতিক |
তারিখ | ২৩ এপ্রিল |
পরবর্তী আয়োজন | ২৩ এপ্রিল ২০২৫ |
সংঘটন | বার্ষিক |
তারিখ বাছাই
সম্পাদনাদিবসের মূল ধারণাটি আসে ভ্যালেন্সীয় লেখক ভিসেন্ত ক্লাভেল আন্দ্রেসের কাছ থেকে। তিনি তাঁর প্রিয় লেখক মিগেল দে থের্ভান্তেসকে সম্মান জানানোর একটি উপায় হিসাবে ধারণাটি দেন। ১৯২৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাজা আলফনসো ত্রয়োদশ স্পেন জুড়ে স্পেনীয় বই দিবস পালনের জন্য একটি রাজকীয় ফরমান জারি করেন। পরে সমগ্র স্পেনে দিবসটি পালন করা শুরু হয়। প্রথমে ৭ অক্টোবর থের্ভান্তেসের জন্মদিনে দিবসটি পালন শুরু হয়, পরে তা তাঁর মৃত্যুদিন ২৩ এপ্রিলে স্থানান্তর করা হয়।
১৯৯৫ সালে ইউনেস্কো সিদ্ধান্ত নেয় যে, বিশ্ব বই এবং কপিরাইট দিবস উদযাপিত হবে ২৩ এপ্রিল, যেহেতু দিনটি ইংরেজ উইলিয়াম শেক্সপিয়ার, পেরুভীয় ইনকা গার্তিলাসো দে লা ভেগা, এবং স্পেনীয় মিগেল দে থের্ভান্তেসসহ আরো বিশিষ্ট লেখকের জন্ম বা মৃত্যুবার্ষিকী।[৩] (ঐতিহাসিক ঘটনাক্রমে, শেক্সপীয়ার ও থের্ভান্তেস একই তারিখে মারা যান — ২৩ এপ্রিল ১৬১৬ — কিন্তু একই দিনে নয়, যেহেতু সেই সময় স্পেনে গ্রেগরীয় পঞ্জিকা ব্যবহার করা হত এবং ইংল্যান্ডে জুলীয় পঞ্জিকা ব্যবহার করা হত; শেক্সপীয়ার প্রকৃতপক্ষে থের্ভান্তেসের মৃত্যুর ১০ দিন পরে মারা যান, গ্রেগরীয় পঞ্জিকায় যা ৩ মে)।
বিভিন্ন দেশে বিশ্ব বই দিবস
সম্পাদনাকাতালোনিয়া
সম্পাদনাস্পেনের কাতালোনিয়াতে, সেন্ট জর্জ দিবস (দিয়াদা দে সান্ত জর্দি, এই ঐতিহাসিক অঞ্চলের সন্ত অনুগ্রাহক) ১৪৩৬ সাল থেকে পালন করা হচ্ছে এবং এতে প্রিয়জন এবং সম্মানিত ব্যক্তিদের মধ্যে উপহার বিনিময়ের প্রথা জড়িত রয়েছে। কাতালোনিয়াতে সেন্ট জর্জ দিবসটি প্রিয়জনকে বই এবং গোলাপ প্রদানের মাধ্যমে উদ্যাপন করা হয় এবং এটি কাতালোনীয়দের তাদের অনুগ্রাহক সন্তদের প্রতি সম্মান এবং সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের একটি সুযোগ।
সুইডেন
সম্পাদনাসুইডেনের দিনটি বার্ডসবোকড্যাগেন Världsbokdagen ("বিশ্ব বই দিবস") নামে পরিচিত। সাধারণভাবে এটি ২৩ এপ্রিল উদ্যাপন করা হয়, তবে এটি ইস্টারের সাথে সংঘর্ষ এড়াতে ২০০০ এবং ২০১১ সালে তা ১৩ এপ্রিলে নেয়া হয়েছিল।
যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ড
সম্পাদনাযুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ডে, বিশ্ব বই দিবসটি হল মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত একটি দাতব্য অনুষ্ঠান, যা বার্ষিকভাবে প্রথম বৃহস্পতিবারে অনুষ্ঠিত হয় এবং এ উপলক্ষে বইয়ের বিশেষ সংস্করণ প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ
সম্পাদনাবাংলাদেশে বই দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোতে র্যালি, পাঠাভ্যাসের গুরুত্ববিষয়ক আলোচনা, দেয়ালপত্রিকা প্রকাশ ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
„আধুনিক বুক মুদ্রণ“, বার্লিনার ওয়াকের চতুর্থ ভাস্কর্য (ছয় থেকে)। উন্মোচন: ২১ এপ্রিল ২০০৬
-
২০১২ সালের বিশ্ব বই দিবসে তিউনিশিয়ার শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বই পড়ছে
-
ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কিতে বইমেলা, বিশ্ব বই দিবস ২০১১
-
২০১৩ সালে পোলান্ডের লডযে "৫-মিনিটের পড়া" প্রচার অভিযান
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "বিশ্ব বই দিবস আজ : কীভাবে এলো দিনটি?"। কালের কণ্ঠ। ২৩ এপ্রিল ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৯।
- ↑ https://www.unesco.org/en/articles/unesco-names-strasbourg-world-book-capital-2024
- ↑ "World Book and Copyright Day, 23 April"। www.un.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৯।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- জাতীয় বিশ্ব বই দিবস, জাতিসংঘ (ইংরেজি)