পূর্বাঞ্চলীয় রণাঙ্গন (প্রথম বিশ্বযুদ্ধ)

এটি এই পাতার একটি পুরনো সংস্করণ, যা NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান) কর্তৃক ১৭:৩৯, ১০ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে সম্পাদিত হয়েছিল (বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।)। উপস্থিত ঠিকানাটি (ইউআরএল) এই সংস্করণের একটি স্থায়ী লিঙ্ক, যা বর্তমান সংস্করণ থেকে ব্যাপকভাবে ভিন্ন হতে পারে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সর্ববৃহৎ রণাঙ্গন ছিল এর পূর্বাঞ্চলীয় রণাঙ্গন। যুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে এই রণাঙ্গন উত্তরে বাল্টিক সাগর থেকে দক্ষিণে কৃষ্ণসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এবং পূর্ব ইউরোপের অধিকাংশ তথা মধ্য ইউরোপের অংশবিশেষ ছিল এই রণাঙ্গনের অন্তর্গত। পূর্বাঞ্চলের এই যুদ্ধ সংঘটিত হয় একপক্ষে রুশ সাম্রাজ্য ও রুমানিয়া এবং অপরপক্ষে অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য, বুলগেরিয়া, জার্মান সাম্রাজ্য ও অটোমান (ওসমানীয়) সাম্রাজ্যের মধ্যে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, দীর্ঘ ভৌগোলিক বিস্তার এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও প্রথম মহাযুদ্ধের এই রণাঙ্গণের ইতিহাস এর পশ্চিম রণাঙ্গনের ইতিহাস অপেক্ষা স্বল্পচর্চিত।

পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধের সূচনা হয় রাশিয়ান ফৌজের পূর্ব প্রাশিয়া আক্রমণের সাথে সাথে। একই সঙ্গে রুশ বাহিনী উত্তরে ও দক্ষিণে যথাক্রমে জার্মান সাম্রাজ্যের পূর্ব প্রাশিয়া এবং অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের গ্যালিসিয়া প্রদেশে দ্বিমুখী আক্রমণ চালায়। উত্তরের আগ্রাসন জার্মানরা প্রতিহত করতে সক্ষম হলেও গ্যালিসিয়ার যুদ্ধে অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় বাহিনীর শোচনীয় পরাজয় ঘটে। এর ফলে জার্মানি বাধ্য হয় তার সামরিক শক্তির এক বিরাট অংশ পশ্চিম ইউরোপ থেকে পূর্বাঞ্চলীয় যুদ্ধক্ষেত্রে স্থানান্তর করতে। এর ফলে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে ধীরে ধীরে এবং ১৯১৫ সাল নাগাদ সম্মিলিত জার্মান ও অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান আগ্রাসনের সামনে রাশিয়া, পোল্যান্ড ও গ্যালিসিয়া থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জার নিকোলাস স্বয়ং সেনাবাহিনীর ভার নিজের হাতে তুলে নেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও পরিস্থিতির বিশেষ পরিবর্তন ঘটে না।

পরবর্তী বছর ১৯১৬ এই যুদ্ধের একটি অন্যতম ঘটনাবহুল সময়। এই বছর রাশিয়া রুশ-তুর্কি ফ্রন্টে বড়সড় সাফল্য অর্জন করে। অন্যদিকে রুশ জেনারেল ব্রুসিলভ পুনরায় গ্যালিসিয়া প্রদেশে সফল অভিযান চালান, যা ইতিহাসে ব্রুসিলভ অফেন্সিভ নামে বিখ্যাত। এছাড়াও নারাচ হ্রদ, বারানাভিচি (বর্তমান বেলারুশ এর অন্তর্গত) ইত্যাদি এলাকায় রাশিয়া কেন্দ্রীয় শক্তির ওপর বিরাট আক্রমণ চালায়। এই অভিযানগুলি সামরিক দিক দিয়ে সফল না হলেও তা পশ্চিম রণাঙ্গনে মিত্রশক্তির ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।

১৯১৬ সালের অপর উল্লেখযোগ্য ঘটনা রোমানিয়ার যুদ্ধে যোগদান। এবছর ই আগস্ট মাসে রোমানিয়ার সেনাবাহিনী ট্রানসিলভ্যানিয়া প্রদেশে আক্রমণ চালায়। যদিও রোমানিয়ার সাফল্য ছিল ক্ষণস্থায়ী, কারণ এর পরই দক্ষিণ দিক থেকে বুলগেরিয়ার আক্রমণ এবং জার্মান ও অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান প্রতিরোধ তথা পুনরাক্রমণে রোমানিয়া পর্যুদস্ত হয়।