নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র

হাসপাতালের যে বিভাগে সঙ্কটাপন্ন রোগীদের নিবিড় চিকিৎসাসেবা ও পরিচর্যা প্রদান করা হয়

একটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ( ইন্টেন্সিভকেয়ার ইউনিট বা আই.সি.ইউ), যা আরো পরিচিত নিবিড় থেরাপি কেন্দ্র বা নিবিড় চিকিৎসা কেন্দ্র ( ইংরেজিতে → আই.টি.ইউ বা ইন্টেন্সিভ ট্রিটমেন্ট ইউনিট) অথবা সংকটাবস্থা  চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র ( ইংরেজিতে - সি.সি.ইউ বা ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট), হলো হাসপাতালের অথবা চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রের বিশেষ বিভাগ যা কিনা  নিবিড় চিকিৎসা সেবা এবং ঔষধাদী প্রদান করে থাকে।

নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র
নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে অবস্থানরত রোগীদের যান্ত্রিক শ্বাস-প্রশ্বাস প্রদানের প্রয়োজন হতে পারে যদি তারা স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস কার্যক্রম চালাতে অসমর্থ হয়।

একটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র সব ধরনের প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে থাকে সেই সব রোগীদেরকে যারা জীবনাশঙ্কাপূর্ন ব্যাধিতে আক্রান্ত অথবা আঘাতপ্রাপ্ত, যে অবস্থাগুলোতে প্রয়োজন তাৎক্ষণিক সেবা, জীবন রক্ষাকারী যন্ত্রসমুহের দ্বারা নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং রোগীর স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জীবনরক্ষাকারী ঔষধাদি । এই কেন্দ্রসমূহের কার্যক্রম নির্বাহ হয়ে থাকে অত্যন্ত উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক, সেবিকা এবং শ্বাসপ্রশ্বাস কার্যক্রম সম্পর্কে অভিজ্ঞ থেরাপিস্টদের দ্বারা যারা সংকটপূর্ন অবস্থায় সেবা দানের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রসমুহকে হাসপাতালের অন্যসব সাধারণ কক্ষগুলো হতে আলাদা করে চেনা যায় এদের উচ্চ কর্মচারী ও রোগীদের অনুপাত হতে এবং উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং চিকিৎসা উপকরণের প্রাপ্যতা দ্বারা যা কিনা অন্য কোথাও সাধারণত সহজলভ্য। সচরাচর যেসব রোগের চিকিৎসা নিবিড় পরিচর্যা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে তীব্র (অথবা প্রাপ্তবয়স্কদের) শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা বা শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ এবং ক্যান্সার কিংবা কোন রোগ শরীরে ছড়িয়ে পড়াসহ বেশকিছু জীবন-সংকটাপূর্ণ শারীরিক অবস্থা।

প্রয়োজনে রোগীকে সরাসরি নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে প্রেরণ করা হতে পারে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ হতেই, কিংবা হাসপাতালে কক্ষ বা ওয়ার্ড হতে যদি রোগীর অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে, অথবা একটি অপারেশন বা শল্যচিকিৎসার পর পরই যদি সেই শল্যচিকিৎসাটি বেশি জটিল অথবা বিপদজনক হয়ে থাকে এবং যদি রোগী শল্যচিকিৎসা বা অপারেশন পরবর্তী জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে [১]

ইতিহাস সম্পাদনা

১৮৫৪ সনে, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল ক্রিমিয়ার ক্রিমিয়ার যুদ্ধের উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা করেন, যেখানে প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গুরুতর আহত সৈনিকদেরকে জীবন সংশয় নেই এমন ভাবে আহত বা কম আহত যোদ্ধাদের থেকে আলাদা করা হতো।

সাম্প্রতিক সময় এর আগ পর্যন্ত, প্রচলিত ছিলো যে নাইটিঙ্গেল যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যুর হার ৪০% থেকে ২ % নামিয়ে এনেছিলেন। যদিও আসলে ব্যাপারটি তা ছিল না, যুদ্ধকালীন সময়ে তার অভিজ্ঞতা পরবর্তিতে হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ, যা কিনা নিবিড় পরিচর্যার একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান- এর গুরুত্ব আবিষ্কারের ভিত্তি রচনা করেছিল।

১৯৫০ সনে, অবেদনবিদ পিটার সাফার " আধুনিক জীবন রক্ষাকারী ব্যবস্থা "- এই ধারণাটি প্রবর্তন করেন, যেখানে রোগীদেরকে ঔষধ প্রদানের মাধ্যমে প্রশান্ত বা নিবারিত রাখা হবে এবং সঠিকভাবে রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সাফার কে একটি বিশেষায়িত ব্যবস্থা হিসেবে নিবিড় পরিচর্যা সেবা চর্চাকারি প্রথম চিকিৎসক হিসেবে মানা হয়।

পোলিও মহামারীর প্রতিক্রিয়ায় (যেখানে অনেক রোগীর অনবরত শ্বাসকার্য পরিচালনায় সহায়তা এবং নজরদারির প্রয়োজন ছিল ) বর্ন এগে ইবসেন ১৯৫৩ সনে কোপেনহেগেনে প্রথম নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন[২][৩]

যুক্তরাষ্ট্রে এই ধারণাটির প্রথম ব্যবহার শুরু হয় ১৯৫৫ সনে উইলিয়াম মজেনথালের হাত ধরে- একজন শল্যচিকিৎসক যিনি কিনা ডার্টমাউথ-হিচকক চিকিৎসা কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন[৪]। ১৯৬০ এর দশকে, হূদযন্ত্রের মাংসপেশীর কলাবিনষ্টি রোগের ( হার্টঅ্যাটাক বা হৃদযন্ত্রের আকস্মিক কোন গুরুতর সমস্যা) কারণে অসুস্থতা এবং মৃত্যুর একটি পূর্বাভাষ বা পূর্বসূত্র হিসেবে এরিদমিয়া বা হূদযন্ত্রের স্বাভাবিক ছন্দপতন রোগের গুরুত্ব উপলব্ধি করা হয় । ইহাই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে হৃদযন্ত্র নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করার প্রচলনের দিকে চালনা করে, বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাক বা হূদযন্ত্রের আকস্মিক কোন মারাত্মক সমস্যার পরে[৫]

কার্যনির্বাহী কর্মী সম্পাদনা

  • প্রায় গবেষণা মতেই, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রগুলোর কার্যনির্বাহী কর্মী নিয়োগদানের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সংগত কারণেই কোন ধরনের কর্মীদল ব্যবহার সবচাইতে ভালো এই ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট ধারণা এই নিবন্ধটি দেবেনা। এই ব্যাপারটি কিছুটা জটিল হয়েছে এই কারণে যে, একটি আদর্শ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের নির্বাহি কর্মীদল কেমন হবে তা নির্ভর করবে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে কেন্দ্রের বৈশিষ্ট্যর উপরে ভিত্তি করে।
  • নিবিড় পরিচর্যা প্রদানকারীকে প্রাথমিক চিকিৎসক হিসেবে নির্ধারণ করে একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড সম্পন্ন কার্যনির্বাহী বাহিনী দ্বারা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রগুলো পরিচালিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধ হলেও, এই ধারণাটির ব্যাপারে যথেষ্ট যুক্তি এবং প্রমাণ রয়েছে কিনা তার বিতর্কিত। যেমন, দিন রাত ২৪ ঘণ্টা নিবিড় পরিচর্যা কারির উপস্থিতি রোগীর স্বাস্থ্যের জন্যে সবচাইতে ভালো সবচাইতে ভালো ফলাফল প্রদান করে এমনটা কিন্তু দেখা যায়নি।
  • রোগী:সেবিকাদের অনুপাত হ্রাসের জন্য আরও বেশি সংখ্যক সেবিকা নিয়োগ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র গুলোতে আরো ভালো ফলাফল দেয় কিনা এই ব্যাপারে প্রাপ্ত তথ্য হতে কোন সম্যক ধারণা পাওয়া যায় না।
  • ক্রমবর্ধমানভাবে, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের উন্নয়নে অচিকিৎসক সেবাপ্রদানকারীরা উদ্ভাবনী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে, এবং অন্যান্য কর্মী বাহিনীর তুলনায় নার্স বা সেবিকা অথবা চিকিৎসা সহকারীদের দ্বারা সেবা প্রদান নিরাপদ এবং তুলনামূলকভাবে ভালো বলে প্রতীয়মান হয়।
  • নিবিড় পরিচর্যা সেবা প্রদান করতে সক্ষম নানা শ্রেণীর সেবা প্রদানকারীদের ঘাটতি এবং শিক্ষানবীশ চিকিৎসকদের ক্রমাগত হারে বাড়তে থাকা কর্মঘণ্টার একটি সংকটজনক পরিস্থিতির মধ্যে নিবিড় পরিচর্যা ও সেবা প্রদান কেন্দ্রের কার্যনির্বাহী কর্মীদল দলের গঠন ক্রমাগত পরিবর্তিত হতেই থাকবে। বাস্তব চাপের সাথে তাল মেলাতে অচিকিৎসক সেবাপ্রদানকারী, উদ্ভাবনী গঠনবৈশিষ্ট সম্পন্ন কর্মীবাহিনী, টেলিমেডিসিন বা দুরালাপী চিকিৎসাসেবা এবং অন্যান্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়তেই থাকবে।
  • যেহেতু শুধুমাত্র সংখ্যাগত কিছু পরিসংখ্যানই আমাদেরকে কোন ধরনের কার্যনির্বাহী দল কোন কোন ক্ষেত্রে অন্য দলের চাইতে ভাল সেটা জানাতে পারে, সেহেতু এই জটিল ব্যাপারটির ব্যাপারে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বিস্তারিত ধারণা পাওয়ার জন্য আরো অনেক ক্ষেত্রেই আরো বেশি গবেষণার প্রয়োজন আছে।

বিশেষায়িত ব্যবস্থা সম্পাদনা

 
বাগদাদ,ইরাকে একজন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র সেবিকা একটি শিশুকে সেবা প্রদান করছে.
 
নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের সেবক/সেবিকাবৃন্দ একটি কেন্দ্রীয় কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হতে রোগিদের পর্যবেক্ষণ করছেন। ইহা দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করে যদির রোগীর অবস্থা একটুঅ অবনতির দিকে যায় যদি সে মূহুর্তে কোন সেবিকা রোগীর পাশে না থাকে
 
নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (এন.আই.সি.ইউ) কর্মরত সেবিকাবৃন্দ

রোগীদের বিশেষ প্রয়োজন পূরণকরার জন্যে হাসপাতলগুলো বিশেষধরনের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র থাকতে পারে, বিশেষধরনের সেবা ও পরিচর্যাকেন্দ্র গুলোর ব্যাপারে নিম্নে উল্ল্যেখিত হলো:

  • নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ( এন.আই.সি.ইউ) : এই বিশেষায়িত কেন্দ্রটি সেই সব নবজাতকদের সেবা দিয়ে থাকে যারা জন্মের পড় এখনো হাসপাতাল ছেড়ে যায়নি। যেসব অবস্থার জন্যে এখানে সেবা দেয়া হয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে কিছু জন্মগত কিছু সমস্যা যেমন জন্মগত মধ্যচ্ছদা পর্দার অন্ত্রবৃদ্ধি ( ডায়াফ্রামেটিক হার্নিয়া) অথবা জন্মদানের সময় সৃষ্ট কোন জটিলতা।
  • শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ( পি.আই.সি.ইউ বা পেডিয়াট্রিক ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট) : এই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে শিশুরোগীরা সেবাপ্রাপ্ত হয়ে থাকে কিছু জীবনঘাতী অসুখের জন্যে যেমন অ্যাজমা বা শ্বাসতন্ত্রের অতীব সংবেদনাশীলতার জন্যে সৃষ্ট রোগাদি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডায়াবটিক কিটোএসিডোসিস বা ডায়াবেটিসের জন্যে শরীরে কিটোএসিড নামক পদার্থ বেড়ে যাওয়া, অথবা আঘাতজনিত কারণেসৃষ্ট স্নায়বিক কোন আঘাত। শল্যচিকিৎসার রোগীদেরকেও শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে পাঠানো হতে পারে অপারেশানের পরপরই যদি রোগীর অবস্থার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে অথবা যদি রোগীকে পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা থাকে, যেমন মেরুরজ্জুতে কোন ধরনের ঔষধ প্রবাহ হিসেবে প্রদান, শ্বাসতন্ত্রের কোন শল্যচিকিৎসা যেমন টনসিল সমূহ বা কোন গ্রন্থির বৃদ্ধি অপসারণ। কিছু কিছু চিকিৎসা কেন্দ্রে বিশেষায়িত শিশু নিবিড় হৃদপরিচর্যা কেন্দ্রও রয়েছে, রোগীদের জন্মগত হৃদযন্ত্রের সমস্যার চিকিৎসার জন্যে। হাসপাতালে এই কেন্দ্র সমূহ সাধারণত হৃৎপিণ্ড পুনস্থাপন এবং শল্যচিকিৎসা পরবর্তি বুকে তরল নির্গমন নল লাগানো রোগীদের সেবা প্রদান করে থাকে।
  • মানসিক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ( পি.আই.সি.ইউ বা সাইকিয়াট্রিক ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট)  : যেসম রোগীরা স্বেচ্ছায় নিজেরা নিজেদের কোন ক্ষতি করতে পারে সেসব রোগীকে উচ্চমাত্রায় পর্যবেক্ষণে রাখার জন্যে এখানে প্রেরণ করা হয়।
  • হৃদ পরিচর্যা কেন্দ্র ( সি.সি.ইউ বা করোনারি কেয়ার ইউনিট) : আরো পরিচিত নিবিড় হৃদ পরিচর্যা কেন্দ্র ( সি.আই.সি.ইউ. বা কার্ডিয়াক ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট) অথবা নিবিড় হৃদ-রক্তনালিকা পরিচর্যা কেন্দ্র ( সি.ভি.আই.সি.ইউ বা কার্ডিওভাস্কুলার ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট), এই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বিশেষত জন্মগত হৃদযন্ত্রের ত্রুটি বিশিষ্ট রোগীদের এবং প্রাণঘাতী হৃদযন্ত্রের সমস্যা যেমন হৃদপেশীর কলাবিনষ্টি রোগ ( মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশান) অথবা হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম বন্ধ বা ব্যাহত হয়েছে এমন রোগীদের কে সেবা প্রদান করে থাকে।
  • নিবিড় স্নায়ু পরিচর্যা কেন্দ্র ( নিউরো.আই.সি. ইউ বা নিউরোলজিকাল ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট)  : এখানে রোগীদের সেবা প্রদান করা হয় মস্তিষ্ক বা মস্তিষ্কের রক্তনালীর অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের টিউমার বা কলাবৃদ্ধি, স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে আঘাত জনিত কোন প্রাণহারী সমস্যা বা সন্যাস রোগ, র‍্যাটল স্নেক বা ঝুনঝিনি সাপের দংশনের কারণে সৃষ্ট স্নায়বিক প্রাণহারী অবস্থা এবং স্নায়ুতন্ত্রের শল্যচিকিৎসা যা কিনা বিশেষজ্ঞ এবং অভিজ্ঞ স্নায়ুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ করে থাকেন এরূপ অনেক স্নায়বিক শল্যচিকিৎসার মধ্য দিয়ে যাওয়া রোগীগণের অব্যাহত ভাবে স্নায়বিক পরিক্ষা নিরিক্ষার প্রয়োজন হয়। যেসব সেবিকাগণ এই কেন্দ্রগুলোতে কাজ করে থাকেন তাদের স্নায়ুতন্ত্রের সম্পর্কে অভিজ্ঞতা সনদ থাকতে হয়। যখনই রোগীগণ স্থিতিশীল পর্যায়ে আসেন এবং শ্বাস-প্রশ্বাস সহায়ক যন্ত্র খুলে নেয়া হয় তখন তাদের একটি স্নায়ু পরিচর্যা কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়।
  • নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ( আই.সি.ইউ বা ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট): এদের পাওয়া যায় আঘাতজনিত ক্ষত/অসুস্থতা যাতে তীব্র জটিলতার মোকাবিলা করার অভিজ্ঞতা সংবলিত জরুরী আঘাত বা অসুস্থতার জন্যে নিবেদিত পরিষেবা দলের প্রয়োজন পড়ে এমনসব আঘাত বা অসুখ শুশ্রূষা করতে সক্ষম হিসেবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত হাসপাতালগুলোতে। একটি আঘাত পরিষেবা বিশেষজ্ঞ দলের অন্তর্ভুক্ত একজন শল্যচিকিৎসক, সেবিকা, শ্বাসকার্যক্রম থেরাপিস্ট বা শ্বাসকার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা দানে অভিজ্ঞ চিকিৎসা প্রদানকারী এবং রশ্মিবিকিরণ বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ বা এক্সরশ্মির বিকিরণের মাধ্যে প্রাপ্ত আন্তদেহ চিত্র বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা।
  • অবেদন পরবর্তী সেবা কেন্দ্র ( পি.এ.সি.ইউ বা পোস্ট এনেস্থিসিয়া কেয়ার ইউনিট) : যা আরো পরিচিতো অপারেশন পরবর্তি আরোগ্য কেন্দ্র অথবা শুধু আরোগ্য কক্ষ, অবেদন পরবর্তি সেবাকেন্দ্র অপারেশন পরবর্তি তাৎক্ষণিক পর্যবেক্ষণ এবং শল্যচিকিৎসা এবং অবেদন প্রাপ্ত রোগীদের স্থিতিশীল করার কাজে নিয়োজিত থাকে। রোগীরা এইসব কেন্দ্রগুলোতে খুবই স্বল্প সময়ের জন্যে অবস্থান করে থাকে, এবং তাদের আবশ্যিক ভাবে কিছু নির্দিষ্ট শারীরিক অবস্থা অর্জন করতে হয় একজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সেবিকার তত্বাবধানে হাসপাতালের সাধারণ কক্ষে ফেরত যাওয়ার আগে। আরোগ্য কেন্দ্রগুলোতে রোগীর চাপ এবং শয্যা ব্যবস্থাপনার জন্যে, যদি কোনো রোগী আরোগ্যকেন্দ্রতে নির্দিষ্ট সময়ের বেশি অবস্থান করে ফেলে এবং তারা সাধারণ কক্ষে ফেরার জন্যে যথেষ্ট স্থিতিশীল না হয় তখন তারা একটি উচ্চনির্ভশীলতা কেন্দ্রে ( এইচ.ডি.ইউ. বা হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট) অথবা পোস্ট অপারেটিভ সংকটকালীন সেবা কেন্দ্রে ( পি.ও.সি.সি.ইউ বা পোস্ট অপারেটিভ ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট) স্থানান্তরিত হয় প্রগতিশীল বা প্রয়োজন অনুযায়ী ক্রমবর্ধনশীল সেবা প্রাপ্তির জন্যে।
  • উচ্চনির্ভরশীলতা কেন্দ্র ( এইচ.ডি.ইউ বা হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট) : যুক্তরাষ্ট এবং অন্য যে কোন স্থানে ( ইংরেজিতে স্টেপ ডাউন ইউনিট বা ধাপ অবনমন কেন্দ্র বা উত্তর আমেরিকায় প্রগ্রেসিভ কেয়ার ইউনিট বা প্রগতিশীল সেবা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত), প্রায় সমস্ত মান সম্পন্ন হাসপাতালেই একটি অবস্থান পরিবর্তন কালীন উচ্চ নির্ভরশীলতা কেন্দ্র ( এইচ.ডি.ইউ) বিদ্যমান রয়েছে সেইসব রোগীদের জন্যে যাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ,চিকিৎসা ও শুশ্রূষা যা কিনা সাধারণ হাসপাতাল কক্ষগুলোতে দেয়া সম্ভব নয়, কিন্তু যাদের অবস্থা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে পাঠানোর মতো এতোটাও সংকটাপন্ন নয়। এই কেন্দ্রগুলোকে ধাপ অবনমন কেন্দ্র এবং প্রগতিশীল নিবিড় আরোগ্য কেন্দ্র হিসেবেও উল্ল্যেখ করা হয় এবং এই কেন্দ্রগুলো ব্যবহৃত হয় রোগীর অবস্থা সাধারণ কক্ষে নেয়ার জন্যে যথেষ্ট স্থিতিশীল হওয়ার আগপর্যন্ত।

নিবিড় শল্যচিকিৎসা পরিচর্যা কেন্দ্র ( এস.আই.সি.ইউ বা সার্জিক্যাল ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট)  : যা আরো পরিচিত শল্যচিকিৎসা সংকটকালীন সেবা কেন্দ্র হিসবে, নিবিড় শল্যচিকিৎসা পরিচর্যা কেন্দ্র তুলনামূলক ভাবে বড়ো হাসপাতালগুলোর একটি বিশেষায়িত সেবা ব্যবস্থা যা কিনা শল্যচিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যায় সংকটা পূর্ন অবস্থা সংবলিত রোগিদের আবাসিক ব্যবস্থা সংবলিত সেবা ( ইংরেজিতে : ইনপেশেন্ট কেয়ার) প্রদান করে থাকে। অন্যান্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের সাথে এর ভিন্নতা হলো এখানে সেবা প্রদানের বিষয়টি পরিচালনা করেন সংকটকালীন সেবা প্রদানে প্রশিক্ষিত সার্জন বা শল্যচিকিৎসকগণ।

ভ্রাম্যমাণ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র সম্পাদনা

 
এন্টর্প, বেলজিয়াম বিশ্ব্বিদ্যালয় হাসপাতালের ভ্রাম্যমাণ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা এম.আই.সি.ইউ
  • ভ্রাম্যমাণ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (এম.আই.সি.ইউ)
  • ভ্রাম্যমাণ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ( এম.আই.সি.ইউ বা মোবাইল আ.সি.ইউ)

একটি বিশেষায়িত এম্বুলেন্স বা পরিগ্লান যান যার সাথে রয়েছে উপস্থিত স্থানে তাৎক্ষণিক ভাবে এবং রোগী পরিবহনের সময় উন্নত জীবন রক্ষাকারী সেবা প্রদান করতে সক্ষম সরঞ্জামাদি সংবলিত চিকিৎসা দল। এই ধরনের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ব্যবহৃত হয় সেইসব রোগীদের জন্যে যাদেরকে হাসপাতাল সমুহ হতে পরিবহন করা হয় এবং বাড়ি হতেও হাসপাতালে পরিবহন করা হয়। ব্রিটিশ-আমেরিকান গঠন অনুযায়ী হাসপাতাল পূর্ববর্তী সেবা প্রদানকারী ভ্রাম্যমাণ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রগুলোতে নিয়োজিত থাকে বৈদ্যুতিক শকের মাধ্যমে কিছু জরূরী অবস্থা মোকাবিলা করার জন্যে থেরাপিস্ট ( ইংরেজিতে ই.সি.টি প্র‍্যাকটিশনার বা ইলেকট্রোকনভালসিভ থেরাপি প্র‍্যাকটিশনার) অথবা উন্নত জীবন সহায়তা সেবা প্রদান কারি সহ- চিকিৎসা সেবা প্রদানকারীদের দ্বারা ( প্যারামেডিক) । ইউরোপীও গঠন অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ নিবিড় পরিচর্যা দল পরিচালিত হয়ে থাকে একজন সংকটকালীন সেবা প্রদানকারী সেবিকা অথবা একজন জরুরী চিকিৎসা সেবা চিকিৎসক এর দ্বারা।

সরঞ্জামাদী এবং ব্যবস্থাসমূহ সম্পাদনা

একটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের সাধারণ সরঞ্জামাদির মধ্যে আছে যান্ত্রিক শ্বাস-প্রশ্বাস পরিচালনাকারী যন্ত্র যা কিনা শ্বাসনালির মধ্য দিয়ে গমনকারী নল অথবা শ্বাসনালি ছিদ্রকরে প্রবেশকৃত নলের মাধ্যমে শ্বাসকার্য পরিচালনায় সহায়তা করে, হৃদযন্ত্রের সার্বক্ষণিক অবস্থা তদারক করতে হৃদযন্ত্র পর্যবেক্ষণ যন্ত্র, সার্বক্ষণিক শারীরিক কার্যক্রম তদারক করার যন্ত্র, আন্তশিরা নলের জালিকা,খাদ্যনল, নাসাপথে স্থাপিত খাদ্যনালীতে গমনকৃত খাদ্যনল (ন্যাসোগ্যাস্ট্রিক টিউব বা এন.জি টিউব) , তরল শোষণ পাম্প বা যন্ত্র, নিস্কাষণ এবং নির্গমণ নলসমূহ, সিরিঞ্জ বা চিকিৎসা পিচকিরি যন্ত্র এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রাথমিক কিছু অবস্থা মোকাবিলার জন্যে একটি সুবিশাল ঔষদের বিন্যাস। চিকিৎসার প্রয়োজনে উৎপন্ন কোমা ( জ্ঞান এবং বিভিন্ন পর্যায়ে অনুভব হ্রাসকৃত একটি অবস্থা), ব্যাথা নাশক, এবং ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যেমে রোগীকে প্রশান্ত বা ঘোরের মধ্যে রাখা নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে ব্যবহৃত কিছু ব্যবস্থা যা কিনা ব্যাথা হ্রাস এবং অপর কোন সংক্রমন প্রতিরোধ করার জন্যে প্রয়োজন পরে।

চিকিৎসা সেবার মান সম্পাদনা

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের সংখ্যা এবং যান্ত্রিকভাবে শ্বাস-প্রস্বাস পরিচালনাধীন রোগীদের মানসম্মত সেবাপ্রাপ্তির মধ্যে একটি সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়। রোগের তীব্রতা, জনতাত্ত্বিক ধ্রুবকসমুহের মান এবং বিভিন্ন ধরনের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রের বৈশিষ্ট ( কার্যনির্বাহী বাহিনী এবং নিবির পরিচর্যাকারীদেরও অন্তর্ভুক্ত করে) সমন্বয় করার পড় দেখা যায় যে, নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রের উচ্চ কর্মীহার উল্লেখযোগ্য ভাবে হাসপাতাল এবং নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে স্বল্প মৃত্যুহারের সাথে জড়িত। একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে সাধারণভাবে দেখতে পাওয়া ৪:১ অথবা ৫:১ এই অনুপাতের প্রেক্ষিতে, একটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের জন্যে প্রতি ২ জন রোগীর জন্যে ১ জন সেবিকা পরামর্শিত। এই হার দেশ হতে দেশে ভিন্ন যদিও উদাহরণ সরূপ : অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্যে প্রায় বেশিরভাগ নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র পরিচালনায় রোগীর সংখ্যার প্রেক্ষিতে কর্মী সংখ্যা থাকে ২:১ এই আনুপাতিক হারে ( উচ্চনির্ভরশীলতা সম্পন্ন রোগীদের জন্যে যাদের দরকার ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ অথবা সাধারণ হাসপাতাল যতখানি দিতে পারে তার চাইতেও তুলনামূলকভাবে বেশি নিবিড় সেবা ) অথবা ১:১ হারে সেইসব রোগীদের জন্যে যাদের সর্বোচ্চ নিবিড় পরিচর্যা সেবা এবং অত্যন্ত বেশি পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন যেমন উদাহরণ সরূপ, যান্ত্রিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চলমান একজন রোগী যিনিকিনা অবেদনিক এবং নিবারণ বা প্রশান্তকারি ঔষধাদি যেমন : প্রপোফল,মিডাজোলাম এবং অতিউচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাথা নাশক যেমন : মরফিন,ফেন্টানিল এবং/অথবা রেমিফেন্টানিল প্রাপ্ত হচ্ছে।

নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের জন্যে, আন্তর্যাতিক নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি রোগীকে সঠিক এবং আধুনিক চিকিৎসা বিধি ও চিকিৎসা যন্ত্রের দ্বাড়া চিত্তবিভ্রম বা বিকারের জন্যে প্রতিদিন পরিক্ষা করতে হবে। সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পন্থা হচ্ছে - নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রের জন্যে বিহ্বলতা বা হতবুদ্ধিতা পরিমাপক পদ্ধতি ( ইংরেজিতে সি.এ.এম-আই.সি.ইউ বা কনফিউশন এসেসমেন্ট ম্যাথড ফর আই.সি.ইউ) এবং নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের জন্যে হতবুদ্ধিতা নির্নয় নজরতালিকা ( ইংরেজিতে আই.সি.ডি.এস.সি বা ইন্টেন্সিভ কেয়ার ইউনিট ডেলিরিয়াম স্ক্রিনিং চেকলিস্ট)। এই পদ্ধতি এবং উপকরণমাধ্যমগুলো সাড়া বিশ্বের প্রায় ২০ টিরো বেশি ভাষায় অনুবাদিত হয়েছে এবং বিশ্বব্যাপি অনেক নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রগুলোতে ব্যবহৃত হচ্ছে।

পরিচালনা ব্যয় সম্পাদনা

মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে, প্রায় ২০% পর্যন্ত হাসপাতাল শয্যাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়; যুক্তরাজ্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রগুলো সর্বমোট হাসপাতাল শয্যার মাত্র ২%। এই ফারাকের কারণ হলো যুক্তরাজ্যে বেশিরভাগ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় কেবল মাত্র মারাত্নক ভাবে অসুস্থ হলেই।

নিবিড় পরিচর্যা একটি অত্যন্ত ব্যায়বহুল চিকিৎসা সেবা। যুক্তরাস্ট্রে হওয়া একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ব্যবহার করা হয়নি এমন হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ের ব্যয়ের তুলনায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ব্যবহার করা হয়েছে এমন হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ের ব্যয় প্রায় ২.৫ গুণ বেশি।

যুক্তরাজ্যে একটি গতাগতিক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে থাকার ব্যয় হচ্ছে :

  • £৮৩৮ ব্রিটিশ পাউন্ড শয্যা প্রতি এবং দিনপ্রতি- নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের জন্যে।
  • £১,৭০২ ব্রিটিশ পাউন্ড দিনপ্রতি এবং শয্যাপ্রতি - শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের জন্যে।
  • £ ১,৩২৮ ব্রিটিশ পাউন্ড শয্যা ও দিন প্রতি - একটি প্রাপ্ত বয়স্কদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের জন্যে।

কিছু হাসপাতালে টেলিকন্ফারেন্স বা দূরালাপণীসম্মেলন ব্যবস্থা রয়েছে যা কিনা একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রে ( হয় একই ভবনে, অথবা একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রে অবস্থিত যা কিনা বেশকিছু স্থানীয় হাসপাতালে সেবা প্রদান করছে , অথবা একটি শহরে অবস্থিত কেন্দ্র যা কিনা বেশ কিছু গ্রামীণ এলাকায় সেবা প্রদান করে ) অবস্থানকৃত ডাক্তার এবং সেবিকাদেরকে নির্দিষ্ট সেবা যেখানে প্রয়োজন সেই স্থানে উপস্থিত কর্মীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে এবং রোগীদের সাথেও কথা ব্লতে সাহায্য করে ( দূরালাপণী চিকিতসা সেবার একটি ধরন )। একে বিভিন্নভাবে নামকরণ করা হয়ে থাকে যেমনঃ ইআইসিইউ বা ভার্চুয়াল বা অবাস্তবদর্শন আইসিইউ বা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র এবং টেলি-আইসিইউ বা দূরালাপী নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। দূরবর্তী কর্মী সাধারণত অতীব প্রয়োজনীয় লক্ষনগুলো দেখতে পারেন সরাসরি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে , এবং টেলিইলেক্ট্রিক বা তারবৈদ্যুতিক স্বাস্থ্যনথি পত্রের মাধ্যমে যার তারা রোগীর চিকিতসা ইতিহাস সম্পর্কে একটি বিশদ ধারণা লাভ করে। এছাড়াও মাঝে মধ্যে দূরবর্তী কর্মীরা সম্মিলিত হয় এবং দায়িত্ব আদান-প্রদান করে। এই ব্যবস্থা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের জন্যে ফলপ্রসূ কেননা অবস্থার অবনতি হবার ঝুকিতে থাকা রোগীরদের ক্ষেত্রে সঠিক ব্যবস্থা অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা যাচাই করার জন্যে, অতীব গুরুত্তপূর্ন লক্ষণসমূহ দুর হতে প্রাপ্তির জন্যে যাতে এমন রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখা যায় যাকে একটি বৃহত্তর একটি চিকিতসা কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করার প্রয়োজন হতে পারে যদি রোগীর স্থিতিশীলতার লক্ষণীয় অবনতি ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Smith, S. E. (২০১৩-০৩-২৪)। Bronwyn Harris, সম্পাদক। "What is an ICU"wiseGEEK। Sparks, Nevada: Conjecture Corporation। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৬-১৫ 
  2. Reisner-Sénélar, L. (২০০৯), "Der dänische Anästhesist Björn Ibsen ein Pionier der Langzeitbeatmung über die oberen Luftwege", Doctoral Thesis (German ভাষায়), Frankfurt am Main, Germany: Johann Wolfgang Goethe University, ওসিএলসি 600186486, ১৬ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০১৯ . Translation of introduction available here [১].
  3. Reisner-Sénélar, L. (২০০৯)। "The Danish anaesthesiologist was a pioneer of long-term ventilation on the upper airways." (পিডিএফ) [অকার্যকর সংযোগ]
  4. Grossman, D.C. (Spring ২০০৪)। "Vital Signs: Remembering Dr. William Mosenthal: A simple idea from a special surgeon"Dartmouth Medicine28 (3)। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-১০ 
  5. "História da Terapia Intensiva" [Intensive Care History] (video in English linked to from website)Brazilian Society of Critical Care website। Produced by Tfran Ediçao de Imagens। Uploaded to YouTube by user: Thiago Francisco। ২০০৮-০৬-০৬।