হৈসল সাহিত্য: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
৪৯ নং লাইন:
[[File:Old-Kannada inscription at Arasikere Ishwara temple.jpg|thumb|upright|প্রাচীন কন্নড় হৈসল অভিলেখ, [[ঈশ্বর মন্দির, অরসিকেরে|ঈশ্বর মন্দির]], [[অরসিকেরে]], [[কর্ণাটক]], ১২২০ খ্রিস্টাব্দ]]
হরিহরের ভ্রাতুষ্পুত্র তথা আশ্রিত নাট্যকার-কবি [[হাম্পি|হাম্পির]] [[রাঘবাঙ্ক]] ''হরিশ্চন্দ্র কাব্য''-এ (১২০০ খ্রিস্টাব্দ) প্রথম কন্নড় সাহিত্যে ‘শটপদী’ ছন্দটি প্রতিষ্ঠা করেন। রাঘবাঙ্কের রচনাশৈলীটিকে তুলনা করা হত দশম শতাব্দীর কবি [[রন্ন (কন্নড় কবি)|রন্নের]] রচনাশৈলীর সঙ্গে।<ref name="kavichakra" /><ref name="hari" /> এল. এস. শেষগিরি রাও বলেছেন, মনে করা হয় যে অন্য কোনও ভাষায় পৌরাণিক রাজা হরিশ্চন্দ্রের কাহিনিটিকে এই ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। প্রথা ও অনুপ্রেরণা দুই দিক দিয়েই গ্রন্থটি মৌলিক, যা পূর্ণ বিকশিত করেছে ‘শতপদী’ ছন্দের সম্ভাবনাগুলিকে।<ref name="nativemetre2" /><ref name="task">শিব প্রকাশ (১৯৯৭), পৃ. ২০৭</ref> এই গ্রন্থে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য শোকগাথা রয়েছে, যেমন সর্পদংশনে পুত্র লোহিতাশ্বের মৃত্যুতে চন্দ্রমতীর বিলাপ।<ref name="valour12">সাহিত্য অকাদেমি (১৯৮৮), পৃ. ১১৪৯</ref> কিন্তু এই গ্রন্থ রাঘবাঙ্ককে খ্যাতি এনে দিলেও, এই গ্রন্থের জন্যই তিনি গুরু হরিহর কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হন। রাঘবাঙ্কের অপর একটি সুবিদিত গ্রন্থ হল শৈব ধ্যানধারণা-সংক্রান্ত ''সিদ্ধরাম চরিত্র'' (বা ''সিদ্ধরাম পুরাণ'')। দ্বাদশ শতাব্দীর বীরশৈব সন্ত সোন্নলিগের সিদ্ধরামের এই বিশেষ প্রশস্তিগাথাটি তিনি রচনা করেছিলেন গুরুকে সন্তুষ্ট করতে।<ref name="nativemetre2"/> রাঘবাঙ্কের আরেকটি সুপরিচিত গ্রন্থ হল ''সোমনাথ চরিত্র''। পুলিগেরের সন্ত সোময়্যের (বা অদইয়হ্) জীবন, এক জৈন বালিকার হস্তের সন্তের অপমান এবং তারপর প্রতিশোধ গ্রহণের উপাখ্যানকে কেন্দ্র করে রচিত এই গ্রন্থটি একটি প্রচারণামূলক গ্রন্থ। আবার ''বীরেশ্বর চরিত'' গ্রন্থে তিনি শৈব যোদ্ধা বীরভদ্রের অন্ধ ক্রোধের নাটকীয় কাহিনি বর্ণনা করেছিলেন। রাঘবাঙ্কের অপর দুই ধ্রুপদি গ্রন্থ ''হরিহরমহত্ব'' (হাম্পির হরীশ্বরের জীবনবৃত্তান্ত) ও ''শরভ চরিত্র'' অধুনা বিলুপ্ত বলে ধরে নেওয়া হয়।<ref name="hari" /><ref name="task"/>
 
১২০৯ খ্রিস্টাব্দে জৈন পণ্ডিত, মন্ত্রী, মন্দির-নির্মাতা ও সেনাধ্যক্ষ [[জন্ন]] রচনা করেন ''যশোধর চরিতে''। এটি জন্নের লেখা ধ্রুপদি গ্রন্থগুলির অন্যতম। ''যশোধর চরিতে'' গ্রন্থে তিনি ৩১০টি শ্লোকে মর্ষকাম, [[জন্মান্তর|আত্মার রূপান্তর]], কামনাবাসনার তির্যক গতি ও মানুষের আচরণীয় সাবধানমূলক নীতিকথা লিপিবদ্ধ করেন। গ্রন্থটি বদীরাজের একই নামের ধ্রুপদি সংস্কৃত গ্রন্থ কর্তৃক অনুপ্রাণিত হলেও মৌলিক ব্যাখ্যা, চিত্রকল্প ও শৈলীর জন্য প্রসিদ্ধি অর্জন করে।<ref name="image">সাহিত্য অকাদেমি (১৯৯২), পৃ. ৪৬২৯</ref> একটি কাহিনিতে কবি এক ব্যক্তির তার বন্ধুপত্নীর প্রতি মোহের কথা লিপিবদ্ধ করেন। বন্ধুকে হত্যা করে তার স্ত্রীকে অপহরণ করলে শোকে দুঃখে সেই রমণীর মৃত্যু ঘটে। তখন অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে বন্ধুহন্তা ব্যক্তিটি সেই নারীর চিতায় আত্মবিসর্জন দেন।<ref name="nativemetre2"/><ref name="builder">রাইস ই. পি. (১৯২১), পৃ. ৪৩–৪৪</ref> আসক্তির কাহিনি চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে যখন জন্ন রানি অমৃতমতীর অষ্টাবক্র নামে এক কুদর্শন [[মাহুত|মাহুতের]] প্রতি আকর্ষণের বিবরণ দেন। এই মাহুত রানিকে লাথি ও চাবুক মেরে যৌনসুখ প্রদান করত। আধুনিক গবেষকদের কাছে এই কাহিনিটি অত্যন্ত কৌতুহলোদ্দীপক।<ref name="pique">শিব প্রকাশ (১৯৯৭), পৃ. ২০৪</ref> এই গ্রন্থের জন্যই পৃষ্ঠপোষক রাজা দ্বিতীয় বীর বল্লালের থেকে জন্ন ‘কবিচক্রবর্তী’ (‘কবিদের সম্রাট’) উপাধি অর্জন করেন।<ref name="kavichakra"/> জন্নের অপর এক ধ্রুপদি সাহিত্যকীর্তি ''অনন্তনাথ পুরাণ'' (১২৩০ খ্রিস্টাব্দ) হল চতুর্থ তীর্থংকর অনন্তনাথের জীবনবৃত্তান্ত।<ref name="anantha">সাহিত্য অকাদেমি (১৯৮৭), পৃ. ৬২০</ref><ref name="caution">নাগরাজ (২০০৩), পৃ. ৩৭৭</ref>
 
===ব্যাকরণ সংহতকরণ===