নাইজেরিয়া: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
|||
৬৮ নং লাইন:
² The GDP estimate is as of 2006; the total and per capita ranks, however, are based on 2005 numbers.
}}
'''নাইজেরিয়া''' [[পশ্চিম আফ্রিকা]]র [[আটলান্টিক মহাসাগর|আটলান্টিক মহাসাগরীয়]] উপকূলে অবস্থিত একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। এর পূর্ণ সরকারী নাম '''নাইজেরিয়া যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র'''। এর পশ্চিম সীমান্তে [[বেনিন]], উত্তরে [[নাইজার]] বা নিজে, উত্তর-পূর্বে [[চাদ]], পূর্বে [[ক্যামেরুন]] এবং দক্ষিণে [[আটলান্টিক মহাসাগর]] তথা [[গিনি উপসাগর]]। এর আয়তন ৯,২৩,৭৬৮ বর্গকিলোমিটার (বাংলাদেশের আয়তনের প্রায় ৬ গুণ, ভারতের আয়তনের এক-চতুর্থাংশের কিছু কম ও পাকিস্তার আয়তনের প্রায় সমান); আয়তনের বিচারে এটি পশ্চিম আফ্রিকার বৃহত্তম রাষ্ট্র। ২০১৯ সালের প্রাক্কলন অনুযায়ী এখানে প্রায় ২০ কোটি ৬০ লক্ষ লোকের বাস। নাইজেরিয়া আফ্রিকার সর্বাধিক জনবহুল ও বিশ্বের ৭ম সর্বোচ্চ জনবহুল রাষ্ট্র। আফ্রিকা মহাদেশের প্রতি ৬ জনের ১ জনই নাইজেরীয়। দেশের কেন্দ্রভাগে পরিকল্পিতভাবে নির্মিত [[আবুজা]] নগরীটি নাইজেরিয়ার রাজধানী। তবে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে আটলান্টিক উপকূলের উপরে অবস্থিত [[লেগোস]] দেশটির বৃহত্তম নগরী (একটি [[অতিমহানগরী]]); [[কানো]], [[ইবাদান]], [[কাদুনা]], [[বেনিন নগরী]] ও [[পোর্ট হারকোর্ট]] অন্যান্য কয়েকটি প্রধান প্রধান নগরী। নাইজেরিয়া ৩৬টি অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্রীয় রাজধানী অঞ্চল নিয়ে গঠিত একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র যেখানে দ্বিকাক্ষিক আইনসভা আছে। রাষ্ট্রপতিশাসিত শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি একই সাথে রাষ্ট্র ও সরকারের প্রধান।
নাইজেরিয়াকে চারটি ভৌগোলিক অঞ্চলে ভাগ করা যায়। নাইজেরিয়ার সামুদ্রিক উপকূলীয় বেষ্টনী অঞ্চলটি উপহ্রদ ও জলাভূমিতে পূর্ণ ও প্রায় ১৫ কিলোমিটার প্রশস্ত; নাইজার ব-দ্বীপ এলাকাতে এর প্রশস্ততা আরও বেশি। এর উত্তরে আছে পাহাড়ি ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্য অঞ্চল। এরও উত্তরে দেশের অনেকগুলি উচ্চ মালভূমি আছে; এদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নাইজেরিয়ার জোস মালভূমি ও উত্তর-পূর্বের বিউ মালভূমিটি উল্লেখ্য। মালভূমির মধ্যবর্তী নিম্নভূমিগুলি মূলত কিছু প্রধান প্রধান নদীর অববাহিকা; নাইজার নদী ও বেনুয়ে নদী এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মালভূমিগুলি উত্তরে নেমে গিয়ে সাভানা তৃণভূমি ও অর্ধ-ঊষর সমভূমিতে পরিণত হয়েছে। দেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত বরাবর চাদ হ্রদ অবস্থিত। পূর্ব-মধ্য নাইজেরিয়াতে ক্যামেরুনের সাথে সীমান্তের কাছে আদামাওয়া মালভূমিতে নাইজেরিয়ার সর্বোচ্চ বিন্দু দিমলাং পর্বত অবস্থিত। নাইজেরিয়া জলবায়ু উষ্ণ; এখানে বর্ষাকাল ও শুষ্ক ঋতু আছে। দক্ষিণ নাইজেরিয়ার জলবায়ু প্রায় সারা বছরই গরম, আর্দ্র ও বৃষ্টিবহুল থাকে। উত্তরের অপেক্ষাকৃত শুষ্ক অঞ্চলটিতে উষ্ণ বর্ষা ঋতু আছে। মধ্যভাগের উচ্চভূমিগুলির (বিশেষ করে জোস মালভূমি) তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত শীতল।
উপকূলীয় অঞ্চলটিতে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের দেখা মেলে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমভাগে ক্রান্তীয় অতিবৃষ্টি অরণ্যগুলি অবস্থিত। দেশের মধ্যভাগে উচ্চ মালভূমিগুলিতে জঙ্গল ও বিস্তীর্ণ উন্মুক্ত সাভানা তৃণভূমি অবস্থিত। উত্তরের জলবায়ু অপেক্ষাকৃত শুষ্ক এবং এখানে ঘাস ও বিচ্ছিন্নভাবে গাছ জন্মে। নাইজেরিয়াতে একদা বহু অ্যান্টিলোপ হরিণ, জিরাফ, হায়েনা, সিংহ, চিতাবাঘ ও হাতির বাস ছিল। এছাড়া এখানে বিভিন্ন প্রজাতির বানর, গরিলা ও শিম্পাঞ্জি বাস করত। এদের সিংহভাগই বর্তমানে জাতীয় উদ্যানগুলিতে বাস করে। নাইজেরিয়ার অন্যান্য বন্য প্রাণীর মধ্যে সাপ, কুমির, জলহস্তী, উটপাখি, সারস, টিয়া ও তুকান পাখির দেখা মেলে।
নাইজেরিয়াতে ২৫০টিরও বেশি নৃগোষ্ঠীর বাস, যাদের প্রতিটির নিজস্ব সংস্কৃতি, রীতিনীতি ও ভাষা আছে। এদের মধ্যে উত্তরে হাউসা (২১%) ও ফুলানি (১১%), পশ্চিমের ইয়োরুবা (২১%) ও পূর্বের ইগবো (১৮%) চারটি বৃহত্তম জাতি; বাকী জাতিগুলি জনসংখ্যার ২৯% গঠন করেছে। রাষ্ট্রীয় সংহতি ও যোগাযোগের সুবিধার জন্য ইংরেজিকে সরকারী ভাষা করা হয়েছে, তবে স্থানীয় যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে হাউসা ভাষা সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। সব মিলিয়ে এখানে ৫০০টিরও বেশি ভাষা প্রচলিত। নাইজেরিয়ার অর্ধেক জনগণ মুসলমান, যারা দেশের উত্তরভাগে বাস করে ও প্রায় ৪০% খ্রিস্টান, যারা দেশের দক্ষিণাংশের অধিবাসী। এছাড়া ইগবো ও ইয়োরুবাসহ আরও কিছু জাতির মধ্যে ঐতিহ্যবাহী আদিবাসী আফ্রিকান ধর্মগুলিও প্রচলিত (১০%)। অনুসারীর সংখ্যানুযায়ী নাইজেরিয়া একই সাথে বিশ্বের ৫ম বৃহত্তম মুসলমান রাষ্ট্র ও ৬ষ্ঠ বৃহত্তম খ্রিস্টান রাষ্ট্র। নাইজেরিয়ার সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশের অর্ধেকেরও বেশি লোক গ্রামাঞ্চলে বাস করে। নৃ-বৈচিত্র্যের কারণে জাতীয় ঐক্য দুরূহ। উত্তর নাইজেরিয়ার মুসলমান প্রধান অঞ্চলটিতে ইসলামী শরিয়া আইন প্রবর্তনের চেষ্টা চলছে। এর পক্ষে বোকো হারাম (অর্থাৎ "বই হারাম") নামের একটি জঙ্গীবাদী দল বোমা বিস্ফোরণ, হত্যাকাণ্ড, অপহরণ, ইত্যাদির মত নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উত্তর নাইজেরিয়াতে একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। দক্ষিণ নাইজেরিয়াতে নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অপেক্ষাকৃত বেশি। সেখানেও নাইজার নদীর ব-দ্বীপে খনিজ তেল সমৃদ্ধ অঞ্চলের কিছু প্রতিবাদী গোষ্ঠী (মূলত ওগোনি জাতির লোক) তেল রপ্তানি করে প্রাপ্ত সম্পদের অংশ দরিদ্র জনগণকে দেবার জন্য দাবী করে আসছে। তেল বিক্রি করে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে নাইজার ব-দ্বীপ এলাকাতে তেল উত্তোলন ও পরিশোধনের ফলে সৃষ্ট পরিবেশগত সমস্যাগুলির সমাধান করার ব্যাপারেও স্থানীয় জনগণ দাবী করে চলেছে।
নাইজেরিয়াতে একটি উন্নয়নশীল মিশ্র অর্থনীতি ব্যবস্থা বিদ্যমান। অর্থনীতি মূলত খনিজ তেল (পেট্রোলিয়াম) উৎপাদন ও কৃষিনির্ভর। নাইজেরিয়ার দক্ষিণভাগে নাইজার নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চলে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের সমৃদ্ধ মজুদ আছে, যা আগামী বহু দশক ধরে ব্যবহার করা যাবে। চারটি বিশাল তেল পরিশোধনাগারের অধিকারী নাইজেরিয়া আফ্রিকার বৃহত্তম খনিজ তেল উৎপাদনকারী রাষ্ট্র। ১৯৫৬ সালে প্রথম খনিজ তেল উৎপাদিত হয়, এবং দুই দশকের মধ্যেই ১৯৭০-এর দশক থেকে পেট্রোলিয়াম উৎপাদন ও রপ্তানি দেশটির অর্থনীতির প্রধান খাতে পরিণত হয়; বর্তমানে দেশের রপ্তানির ৯৫%-ই খনিজ তেল। নাইজেরিয়ার খনিজ তেলে গন্ধকের পরিমাণ কম বলে এর মান উচ্চ, এটি বিমানের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কয়লা ও রাং বা টিন নামক ধাতুর মজুদও আছে এখানে। তেলের উপরে অতিনির্ভরশীলতা নাইজেরিয়ার অর্থনীতির জন্য বিপজ্জনক পরিণামও ডেকে এনেছে; যেমন ১৯৮০-র দশকে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে গেলে দেশটির অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন থেকে তেলের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে ও অন্যান্য পণ্য (বিশেষ করে কৃষিজাত দ্রব্যের) উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সাম্প্রতিক কালে নাইজেরিয়ার সর্বত্র বিপুল পরিমাণে রপ্তানিমুখী শস্য উৎপাদনের লক্ষ্যে বিশাল বিশাল কৃষিপণ্য বাগান বা প্ল্যান্টেশন সৃষ্টি করা হয়েছে। এই বাগানগুলিতে আধুনিক কৃষিযন্ত্র ব্যবহার করে শস্য বুনন, ফলন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্পন্ন করা হয়। এভাবে তুলা, কফি, চা, চিনি ও তৈলাক্ত পাম উৎপাদন করা হয়। পাম ফলের শাঁস থেকে যে তেল পাওয়া যায়, তা দিয়ে রান্নার পাশাপাশি মার্জারিন, সাবান, মোমবাতি ও রঙ প্রস্তুত করা যায়; নাইজেরিয়া বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম পাম তেল উৎপাদনকারী দেশ। এছাড়া নাইজেরিয়া আন্তর্জাতিক বাজারে কোকো বীজ (চকলেট উৎপাদনে ব্যবহৃত) ও প্রাকৃতিক রবার রপ্তানি করে। রপ্তানিমুখী কৃষিপণ্য বাগানের বাইরেও বহুসংখ্যক নাইজেরীয় কৃষক নিজস্ব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খামারে কাজ করে। তারা মাংস উৎপাদনের জন্য ছাগল, ভেড়া, শূকর ও গবাদি পশুপালন করে। এছাড়া তারা সনাতনি পদ্ধতি লাঙল, কোদাল, নিড়ানি, ইত্যাদি সরল উপকরণ দিয়ে জোয়ার, মিষ্টি আলু, কাসাভা নামের মূল, ভুট্টা, ধান ও অন্যান্য শস্যের আবাদ করে। ক্ষুদ্র কৃষকেরাও কোকো, তৈলাক্ত পাম, রবার ও চীনাবাদামের মতো অর্থকরী ফসলের চাষ করে থাকে। এছাড়া সামুদ্রিক মৎস্যশিকার ও কাঠকাটাও গুরুত্বপূর্ণ দুইটি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। শিল্পখাতের গুরুত্ব ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নাইজেরিয়ার কারখানাগুলিতে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, পোশাক, সিমেন্ট, রাসায়নিক দ্রব্য ও অন্যান্য পণ্য উৎপাদিত হয়। দেশের শ্রমশক্তির দুই-পঞ্চমাংশেরও বেশি সেবা, বাণিজ্য ও পরিবহন খাতে নিয়োজিত। নাইজেরিয়ার মুদ্রার নাম নাইরা (১ নাইরা = ১০০ কোবো)। ভারত ও চীনের পরে নাইজেরিয়াতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি তরুণ বাস করে; প্রায় ৯ কোটি নাইজেরীয় নাগরিকের বয়স ১৮ বছরের কম। খনিজ সম্পদ, তরুণ শ্রমশক্তি ও অফুরন্ত কৃষিভূমির দেশ নাইজেরিয়া ভবিষ্যতে আফ্রিকার সবচেয়ে সফল একটি অর্থনীতির অধিকারী হবার সম্ভাবনা রাখে। বর্তমানে নাইজেরিয়ার অর্থনীতির আকার আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে ১ম এবং বিশ্বে ২৪তম। ক্রয়ক্ষমতার সমতার মানদণ্ডে নাইজেরিয়ার বাৎসরিক স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন প্রায় ১ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার।
নাইজেরিয়া অঞ্চলটিতে বহু হাজার বছর ধরেই মানব বসতি ছিল। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দ থেকে ২০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দেশের কেন্দ্রীয় মালভূমিতে নোক সংস্কৃতির কেন্দ্র ছিল। এরপরে পশ্চিমে ইওরুবা, উত্তরে হাউসা ও ফুলানি এবং দক্ষিণ-পূর্বে ইগবো জাতির লোকেরা বসতি স্থাপন করে। ইউরোপীয় উপনিবেশিকীকরণের আগে এখানে অনেকগুলি সাম্রাজ্য ছিল, যেমন কানেম-বোর্নু, বেনিন ও ওইয়ো। হাউসা ও ফুলানি জাতির লোকেদের রাজ্যেরও উপস্থিতি ছিল এখানে। পর্তুগিজরা প্রথম ইউরোপীয় জাতি হিসেবে এখানে ১৫শ শতকে (১৮৭২ সালে) পদার্পণ করে। ১৭শ শতকে ব্রিটিশদের ক্রীতদাস জাহাজগুলি এখানে আগমন করে। অঞ্চলটি আফ্রিকার ক্রীতদাস বাণিজ্যের একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়। ক্রীতদাস ব্যবসায়ীরা লক্ষ লক্ষ নাইজেরীয় লোককে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে দাস হিসেবে বিক্রি করে দুই আমেরিকা মহাদেশে পাঠিয়ে দেয়। ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা ক্রীতদাস বাণিজ্য অবৈধ ঘোষণা করে। ১৮৬১ সাল নাগাদ এলাকাটি ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণের অধীনে চলে আসতে শুরু করে এবং বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে ব্রিটিশরা সমগ্র অঞ্চলটিকে আয়ত্তে নিয়ে ফেলে। ১৯১৪ সালে অঞ্চলের বিভিন্ন স্বতন্ত্র রাজ্যগুলিকে একত্রিত করে একটিমাত্র ব্রিটিশ উপনিবেশ ঘোষণা করা হয়। নাইজেরিয়া ১৯৬০ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৬৩ সালে এটি একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়, যার রাষ্ট্রপতি ছিলেন এননামদি আজিকিওয়ে। কিন্তু শীঘ্রই ক্ষমতার জন্য জাতিগত সংঘাত শুরু হয়ে যায় এবং সামরিক অভ্যুত্থান বা ক্যুয়ের প্রবণতা দেখা দেয়। ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সামরিক গোষ্ঠী দেশটিকে শাসন করে। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার ও দেশের পূর্বভাগের বিয়াফ্রা অঞ্চলের মধ্যে গৃহযুদ্ধ সংঘটিত হয়। প্রায় ১০ লক্ষ বিয়াফ্রান অধিবাসী খাদ্যাভাবে মৃত্যুবরণ করলে বিয়াফ্রা নাইজেরীয় সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করে। ১৯৯১ সালে দেশের রাজধানী লেগোস থেকে আবুজাতে স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯৯৫ সালে সামরিক সরকার কেন সারো-উইওয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলে নাইজেরিয়াকে আন্তর্জাতিক শাস্তির শিকার হতে হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯৯৯ সালে এসে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং আবার বেসামরিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ২১শ শতকে এসেও রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে দেশটি দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, বৈদেশিক ঋণের বোঝা, ধীর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সহিংস অপরাধের উচ্চহার এবং প্রশাসনিক পর্যায়ে ব্যাপক দুর্নীতিতে জর্জরিত।
বিরাট জনসংখ্যা ও অর্থনীতির কারণে নাইজেরিয়াকে প্রায়শই "আফ্রিকার দানব" নামে অভিহিত করা হয়।<ref>{{
<!-- [রচনা সংশোধনের জন্য লুকিয়ে রাখা হল]
|