খালিদ বিন ওয়ালিদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
link addition
ট্যাগ: দৃশ্যমান সম্পাদনা মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
119.30.38.228-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Prodipto Delwar-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
১৯ নং লাইন:
}}
{{Campaignbox Campaigns of Khalid ibn Walid}}
'''আবু সুলাইমান খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ ইবনে আল-মুগিরা আল-মাখজুমি''' ({{lang-ar|أبو سليمان خالد بن الوليد بن المغيرة المخزومي}}&lrm;; ৫৮৫–৬৪২) ছিলেন [[মুহাম্মাদ]] (সা.) এর একজন সাহাবি। তিনি তার উপাধি '''সাইফুল্লাহ আল-মাসলুল''' ({{lang-ar|سيف الله المسلول}}) দ্বারাও পরিচিত। [[মুহাম্মাদ]] ইসলাম(সা.) গ্রহনেরএবং পূর্বেতার উত্তরসূরি খলিফা [[বদরেরআবু যুদ্ধবকর]] ও [[উমর|উমরের]] অধীনে সামরিক নেতৃত্বদান এবং নিজস্ব রণকৌশলের জন্য তিনি খ্যাত।<ref name="Britannica">[http://www.britannica.com/eb/article-9045249 Khalid ibn al-Walid], Encyclopædia Britannica Online. Retrieved. 17 October 2006.</ref> [[উহুদেররাশিদুন সেনাবাহিনী|খিলাফতের সেনাবাহিনীর]] নেতৃত্বে থাকাবস্থায় খালিদ একশটিরও বেশি যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছেন। এসকল যুদ্ধ [[বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য]], [[সাসানীয় সাম্রাজ্য]], তাদের মিত্র এবং অন্যান্য আরব গোত্রসমূহের বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়েছে। তার কৌশলগত অর্জনের মধ্যে রয়েছে [[খন্দকেররিদ্দার যুদ্ধ|খন্দকেররিদ্দার যুদ্ধেযুদ্ধের]] মুসলিমদেরসময় বিরুদ্ধে[[আরব যুদ্ধউপদ্বীপ|আরব করেছিলেন।উপদ্বীপকে]] খালিদঐক্যবদ্ধকরণ বিনএবং ওয়ালিদ৬৩২ থেকে ৬৩৬ সালের মধ্যে [[মক্কামুসলিমদের পারস্য বিজয়|মক্কাপার্সিয়ান বিজয়েরমেসোপটেমিয়া]] আগেইএবং ইসলাম[[মুসলিমদের গ্রহনসিরিয়া|রোমান করেছিলেন।সিরিয়া]] তিনিবিজয়। মুসলিমদের[[ইয়ামামার পক্ষেযুদ্ধ|ইয়ামামা]], [[মুতারউলাইসের যুদ্ধ|উলাইস]], এবং[[ফিরাজের মক্কাযুদ্ধ|ফিরাজে]] বিজয়েতার অংশগ্রহণফলাফল করেছিলেন।নির্ধারণী খালিদবিজয় তাঁদেরএবং মধ্যে[[ওয়ালাজার অন্যতমযুদ্ধ|ওয়ালাজা]] যারা [[হুনাইনেরইয়ারমুকের যুদ্ধ|হুনাইনের যুদ্ধেইয়ারমুকে]] যুদ্ধক্ষেত্রতার ছেড়েকৌশলগত পালিয়েসাফল্যের গিয়েছিলেন।জন্যও তাকে স্মরণ করা হয়।<ref name="akram496">{{Harvnb|Akram|2004|p=496}}</ref>
 
[[মক্কা|মক্কার]] [[কুরাইশ]] বংশের [[বনু মাখজুম]] গোত্রে খালিদ বিন ওয়ালিদের জন্ম হয়। [[উহুদের যুদ্ধ|উহুদের যুদ্ধে]] মুসলিমদের বিরুদ্ধে মক্কার জয়ে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। [[হুদাইবিয়ার সন্ধি|হুদাইবিয়ার সন্ধির]] পর তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং মদিনায় হিজরত করেন। [[মুতার যুদ্ধ]]সহ বেশ কিছু যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। রোমানদের বিপক্ষে এটি মুসলিমদের প্রথম লড়াই ছিল। এই যুদ্ধের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে খালিদের নয়টি তলোয়ার ভেঙে গিয়েছিল। যুদ্ধে সেনাপতি [[জায়িদ ইবনে হারেসা]], [[জাফর ইবনে আবি তালিব]] ও [[আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা]] ক্রমান্বয়ে নিহত হওয়ার পর খালিদ সেনাপতি হিসেবে ভার নিয়েছিলেন। মুহাম্মাদ এর মৃত্যুর পর বিদ্রোহী ও ইসলামত্যাগী আরবদের বিরুদ্ধে [[রিদ্দার যুদ্ধ|রিদ্দার যুদ্ধে]] তিনি মুসলিমদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাসানীয় আরব মিত্ররাজ্য [[আল-হিরা]] তিনি জয় করেছিলেন। [[ইরাক]] (মেসোপটেমিয়া) জয়ের সময় তিনি [[সাসানীয় সেনাবাহিনী|সাসানীয় পার্সিয়ান বাহিনীকে]] পরাজিত করেছেন। পরে [[রোমান সিরিয়া]] এবং বাইজেন্টাইনদের আরব মিত্ররাজ্য গাসানিদের জয় করার জন্য তাকে পশ্চিম রণাঙ্গনে পাঠানো হয়।
খালিদ সম্বন্ধে সবচেয়ে প্রচলিত যে তথ্য পাওয়া যায় সেটা হলো, রাসুলুল্লাহ্ ( সা. ) এর একজন প্রিয় সাহাবী - [[মালিক ইবনে নুয়ায়রাহ|মালিক বিন নুবাইরা ( রা.) এর]] সঙ্গে শত্রুতা। মালিক বিন নুবাইরা, তাঁর উপজাতি এবং [[বনু তামিম|বনু তামীম]] গোত্র মুসলিম হওয়া সত্তেও খালিদ তাঁদেরকে দাস হিসেবে গ্রহন করেন৷ তিনি মালিক বিন নুবাইরা এবং তাঁর গোত্রের সদস্যদের হত্যার আদেশ জারি করেন এবং অতঃপর মালিক বিন নুবাইরার স্ত্রীকে সে রাতে ধর্ষণ করেন।
 
[[উমর]] খলিফা হওয়ার পর খালিদকে সেনাপতির পদ থেকে অপসারণ করেন। তবে এরপরও খালিদ [[আরব-বাইজেন্টাইন যুদ্ধ|আরব-বাইজেন্টাইন যুদ্ধের]] প্রথম পর্যায়ে একজন কার্যকর নেতা হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন।<ref name="Britannica"/> তার নেতৃত্বে মুসলিমরা ৬৩৪ সালে [[দামেস্ক]] জয় করে। ৬৩৬ সালে [[ইয়ারমুকের যুদ্ধ|ইয়ারমুকের যুদ্ধে]] মুসলিমরা গুরুত্বপূর্ণ বিজয় অর্জন করে।<ref name="Britannica"/> এর ফলে [[বৃহত্তর সিরিয়া|বিলাদ আল-শাম]] ([[লেভান্ট]]) জয়ের পথ উন্মুক্ত হয়ে যায়।
খালিদ বিন ওয়ালিদ গোপনে [[আলী|ইমাম আলী ইবনে আবু তালিবের বিরুদ্ধে]] শত্রুতায় লিপ্ত হয়েছিলেন যার কারণে তাঁর ওপর একাধিক অভিযোগ আরোপিত হয়। [http://en.mobile.wikishia.net/view/Khalid_b._al-Walid]
৬৩৮ সালে খালিদ তার সামরিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পান।
 
মূল যুদ্ধ, ক্ষুদ্র খণ্ডযুদ্ধ, একক দ্বন্দ্বযুদ্ধসহ একশটিরও বেশি যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদ লড়াই করেছেন বলে জানা যায়। আজীবন তিনি অপরাজেয় যোদ্ধা ছিলেন। একারণে তাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সেনাপতিদের অন্যতম বলা হয়।<ref name="Akram 2004 499">{{Harvnb|Akram|2004|p=499}}</ref>
 
 
<br />
 
==প্রারম্ভিক জীবন==
১৪৩ ⟶ ১৪২ নং লাইন:
এমেসা অধিকার করার পর মুসলিমরা উত্তর সিরিয়া অধিকারের জন্য যাত্রা করে। ইতিমধ্যে, হেরাক্লিয়াস এন্টিওকে একটি বৃহদাকার সেনাদল গঠন করেছিলেন। উত্তর সিরিয়ার রোমান বন্দীদের কাছ থেকে খালিদ এই খবর পান। পূর্ব অভিজ্ঞতার কারণে হেরাক্লিয়াস মুসলিমদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত লড়াইয়ে নামতে ইচ্ছুক ছিলেন না। তিনি মুসলিম সেনাদলগুলিকে পরস্পর থেকে পৃথক করে ফেলে ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা করেন। ৬৩৬ সালের জুনে পুনরাধিকারের জন্য পাঁচটি বৃহদাকার সেনাদল বিভিন্ন দিক থেকে সিরিয়ার দিকে প্রেরণ করা হয়।<ref>{{Harvnb|Akram|2004|p=409}}</ref> খালিদ হেরাক্লিয়াসের পরিকল্পনা আন্দাজ করতে পারেন। যুদ্ধসভায় তিনি আবু উবাইদাকে সব মুসলিম সেনাদল এক স্থানে জমায়েত করার প্রস্তাব দেন যাতে বাইজেন্টাইনদের সাথে চূড়ান্তভাবে লড়াই করা সম্ভব হয়।<ref>{{Harvnb|Gil|1997|p=45}}</ref> খালিদের পরামর্শক্রমে আবু উবাইদা সিরিয়ার সকল মুসলিম সেনাদলকে বিজিত অঞ্চল ত্যাগ করে জাবিয়ায় একত্রিত হওয়ার নির্দেশ দেন।<ref>{{Harvnb|Weston|2008|p=50}}</ref> এর ফলে হেরাক্লিয়াসের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তিনি মুসলিমদের সাথে খোলা ময়দানে যুদ্ধে যাওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন না কারণ এর ফলে মুসলিমদের হালকা অশ্বারোহী বাহিনী বাইজেন্টাইনদের ভারি এবং কম দ্রুততাসম্পন্ন অশ্বারোহী বাহিনীর উপর আধিপত্য স্থাপন করার সম্ভাবনা ছিল। খালিদের পরামর্শ অনুযায়ী আবু উবাইদা মুসলিম বাহিনীকে জাবিয়া থেকে [[ইয়ারমুক নদী|ইয়ারমুক নদীর]] সমতল ভূমিতে একত্রিত হওয়ার নির্দেশ দেন। এই স্থান পশুখাদ্য ও পানির সরবরাহ ভালো ছিল এবং এখানে অশ্বারোহীদেরকে অধিক কার্যকারিতার সাথে ব্যবহার করা সম্ভব ছিল।<ref>{{Harvnb|Nicolle|1994|p=63}}</ref> যুদ্ধসভায় আবু উবাইদা মুসলিম বাহিনীর সর্বোচ্চ নেতৃত্ব খালিদের হাতে তুলে দেন। খালিদ যুদ্ধের মাঠ পর্যায়ে নেতৃত্ব দেন এবং বাইজেন্টাইনদের পরাজিত করায় মূল পরিকল্পনাকারীর ভূমিকা রাখেন।<ref>{{Harvnb|Walton|2003|p=29}}</ref>
 
১৫ আগস্ট ইয়ারমুকের যুদ্ধ শুরু হয় এবং ছয়দিন ধরে চলে। যুদ্ধে বাইজেন্টাইন পক্ষ পরাজিত হয়। ইয়ারমুকের যুদ্ধ ইতিহাসের অন্যতম ফলাফল নির্ধারণকারী যুদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত।<ref name="Walton30">{{Harvnb|Walton|2003|p=30}}</ref> পরাজয়ের মাত্রার কারণে বাইজেন্টাইনদের বিপর্যয় সামলে উঠতে সময় লেগেছিল। তখন পর্যন্ত সিরিয়ায় সংঘটিত যুদ্ধসমূহের মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই যুদ্ধে বিজয় ছিল মূলত খালিদ বিন ওয়ালিদের কৌশলগত নৈপুণ্য।<ref name="akram496">{{Harvnb|Akram|2004|p=496}}</ref>
 
===জেরুজালেম জয়===
২১৮ ⟶ ২১৭ নং লাইন:
[[File:Mohammad adil-Campaigns of Khalid.PNG|thumb|220px|alt=map detailing sites of khalid's campaigns|মানচিত্রে প্রদর্শিত খালিদ বিন ওয়ালিদের অভিযানের স্থান]]
 
পুরো সামরিক জীবনে মূল যুদ্ধ, ছোট খণ্ডযুদ্ধ, একক দ্বন্দ্বযুদ্ধ মিলিয়ে খালিদ প্রায় ১০০টি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানা যায়।<ref name="Akram 2004 499">{{Harvnb|Akram|2004|p=499}}</ref> আজীবন অপরাজিত যোদ্ধা হওয়ায় তাকে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম সেনাপতিদের অন্যতম বিবেচনা করা হয়।<ref name="Akram 2004 499">{{Harvnb|Akram|2004|p=499}}</ref>
 
খালিদ প্রথম যুগের অনেক মুসলিম সামরিক বিধির প্রণেতা ছিলেন।<ref name="Pratt82">{{Harvnb|Pratt|2000|p=82}}</ref> প্রথম যুগে [[মুসলিম বিজয়|মুসলিম অভিযানের]] সময় তিনি মুসলিমদের ব্যবহৃত প্রায় সব প্রধান কৌশলের পথপ্রদর্শক ছিলেন। আরব বেদুইন যোদ্ধাদের ব্যক্তিগত দক্ষতাকে বৃহদাকারে কাজে লাগানো তার অন্যতম প্রধান অর্জন ছিল। তিনি [[মুবারিজুন]] নামক ইউনিট গঠন করেছিলেন। এই ইউনিটের সদস্যরা উচ্চপ্রশিক্ষিত ছিল। প্রতিপক্ষের প্রধান যোদ্ধাদের সাথে লড়াইয়ে তাদেরকে খালিদ সফলভাবে ব্যবহার করেছিলেন যাতে শত্রুর মনোবল ভেঙে যায়। [[আজনাদয়ানের যুদ্ধ]] এই প্রকার মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ের একটি উত্তম দৃষ্টান্ত। খালিদের পূর্ব পর্যন্ত আরবরা মূলত ক্ষুদ্র সংঘর্ষে অংশ নিত কিন্তু তাদের এই ক্ষুদ্র সংঘর্ষের কৌশলগুলিকে তিনি বৃহদাকারে কাজে লাগান। তিনি তার বাহিনীকে শত্রুর সামনে নিয়ে আসতেন এবং সম্পূর্ণ যুদ্ধ বিভিন্ন ইউনিটের মধ্যে ক্ষুদ্র সংঘর্ষে পরিণত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন। প্রতিপক্ষের ইউনিটগুলি বিক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়ার পর তিনি তার অশ্বারোহীদের সহায়তায় প্রতিপক্ষের পার্শ্বভাগ থেকে [[হাতুড়ি ও নেহাই]] কৌশলে আক্রমণ পরিচালনা করতেন।<ref name="Pratt83"/>