কাজী নজরুল ইসলাম: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

[অপরীক্ষিত সংশোধন][অপরীক্ষিত সংশোধন]
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
InternetArchiveBot (আলোচনা | অবদান)
১টি উৎস উদ্ধার করা হল ও ০টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল।) #IABot (v2.0.1
ট্যাগ: ২০১৭ উৎস সম্পাদনা
৯৮ নং লাইন:
মক্তব, মসজিদ ও মাজারের কাজে নজরুল বেশি দিন ছিলেন না। বাল্য বয়সেই লোকশিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে একটি ''লেটো'' (বাংলার [[রাঢ়]] অঞ্চলের কবিতা, গান ও নৃত্যের মিশ্র আঙ্গিক চর্চার ভ্রাম্যমাণ নাট্যদল)<ref>''কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬)'' - রফিকুল ইসলাম; কলকাতার সাহিত্যম্‌ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ''নজরুল শ্রেষ্ঠ সংকলনে'' এই প্রবন্ধটি সংযুক্ত আছে।</ref> দলে যোগ দেন। তার চাচা কাজী বজলে করিম চুরুলিয়া অঞ্চলের লেটো দলের বিশিষ্ট উস্তাদ ছিলেন এবং আরবি, ফার্সি ও উর্দূ ভাষায় তার দখল ছিল। এছাড়া বজলে করিম মিশ্র ভাষায় গান রচনা করতেন। ধারণা করা হয়, বজলে করিমের প্রভাবেই নজরুল লেটো দলে যোগ দিয়েছিলেন। এছাড়া ঐ অঞ্চলের জনপ্রিয় লেটো কবি ''শেখ চকোর'' (গোদা কবি) এবং কবিয়া বাসুদেবের লেটো ও কবিগানের আসরে নজরুল নিয়মিত অংশ নিতেন। লেটো দলেই সাহিত্য চর্চা শুরু হয়। এই দলের সাথে তিনি বিভিন্ন স্থানে যেতেন, তাদের সাথে অভিনয় শিখতেন এবং তাদের নাটকের জন্য গান ও কবিতা লিখতেন। নিজ কর্ম এবং অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি [[বাংলা সাহিত্য|বাংলা]] এবং [[সংস্কৃত সাহিত্য]] অধ্যয়ন শুরু করেন। একইসাথে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অর্থাৎ [[পুরাণ|পুরাণসমূহ]] অধ্যয়ন করতে থাকেন। সেই অল্প বয়সেই তার নাট্যদলের জন্য বেশকিছু লোকসঙ্গীত রচনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে ''চাষার সঙ'', ''শকুনীবধ'', ''রাজা যুধিষ্ঠিরের সঙ'', ''দাতা কর্ণ'', ''আকবর বাদশাহ'', ''কবি কালিদাস'', ''বিদ্যাভূতুম'', ''রাজপুত্রের গান'', ''বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ'' এবং ''মেঘনাদ বধ''।<ref name="বাংলাপিডিয়া"/> একদিকে মসজিদ, মাজার ও মক্তব জীবন, অপর দিকে লেটো দলের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নজরুলের সাহিত্যিক জীবনের অনেক উপাদান সরবরাহ করেছে। নজরুল কালীদেবীকে নিয়ে প্রচুর শ্যামা সঙ্গীত ও রচনা করেন, নজরুল তার শেষ ভাষনে উল্লেখ্য করেন - “কেউ বলেন আমার বানী যবন কেউ বলেন কাফের। আমি বলি ও দুটোর কোনটাই না। আমি শুধু হিন্দু মুসলিমকে এক জায়গায় ধরে নিয়ে হ্যান্ডশেক করানোর চেষ্টা করেছি, গালাগালিকে গলাগলিতে পরিণত করার চেষ্টা করেছি।”
 
১৯১০ সালে নজরুল লেটো দল ছেড়ে ছাত্র জীবনে ফিরে আসেন। লেটো দলে তার প্রতিভায় সকলেই যে মুগ্ধ হয়েছিল তার প্রমাণ নজরুল লেটো ছেড়ে আসার পর তাকে নিয়ে অন্য শিষ্যদের রচিত গান: "''আমরা এই অধীন, হয়েছি ওস্তাদহীন / ভাবি তাই নিশিদিন, বিষাদ মনে / নামেতে নজরুল ইসলাম, কি দিব গুণের প্রমাণ''", এই নতুন ছাত্রজীবনে তার প্রথম স্কুল ছিল [[রানীগঞ্জরাণীগঞ্জ|রানীগঞ্জেররাণীগঞ্জের]] [[সিয়ারসোল রাজ উচ্চ বিদ্যালয়|সিয়ারসোল রাজ স্কুল]], এরপর ভর্তি হন [[মাথরুন উচ্চনবীনচন্দ্র বিদ্যালয়বিদ্যায়তন|মাথরুন উচ্চ ইংরেজি স্কুলে]] যা পরবর্তীতে [[মাথরুন নবীনচন্দ্র বিদ্যায়তন|নবীনচন্দ্র ইনস্টিটিউশন]] নামে পরিচিতি লাভ করে। মাথরুন স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন [[কুমুদরঞ্জন মল্লিক]] যিনি সেকালের বিখ্যাত কবি হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তার সান্নিধ্য নজরুলের অনুপ্রেরণার একটি উৎস। কুমুদরঞ্জন স্মৃতিচারণ করতে যেয়ে নজরুল সম্বন্ধে লিখেছেন,
{{cquote|ছোট সুন্দর ছনমনে ছেলেটি, আমি ক্লাশ পরিদর্শন করিতে গেলে সে আগেই প্রণাম করিত। আমি হাসিয়া তাহাকে আদর করিতাম। সে বড় লাজুক ছিল।
}}
যাহোক, আর্থিক সমস্যা তাকে বেশ দিন এখানে পড়াশোনা করতে দেয়নি। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর তাকে আবার কাজে ফিরে যেতে হয়। প্রথমে যোগ দেন [[বাসুদেব|বাসুদেবের]] কবিদলে। এর পর একজন খ্রিস্টান রেলওয়ে গার্ডের খানসামা এবং সবশেষে [[আসানসোল|আসানসোলের]] চা-রুটির দোকানে রুটি বানানোর কাজ নেন। এভাবে বেশ কষ্টের মাঝেই তার বাল্য জীবন অতিবাহিত হতে থাকে। এই দোকানে কাজ করার সময় আসানসোলের দারোগা রফিজউল্লাহ'র সাথে তার পরিচয় হয়। দোকানে একা একা বসে নজরুল যেসব কবিতা ও ছড়া রচনা করতেন তা দেখে রফিজউল্লাহ তার প্রতিভার পরিচয় পান। তিনিই নজরুলকে ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে [[ময়মনসিংহ জেলা|ময়মনসিংহ জেলার]] [[ত্রিশাল উপজেলা|ত্রিশালের]] [[ত্রিশাল সরকারি নজরুল একাডেমী|দরিরামপুর স্কুলে]] সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন। ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আবার রানীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজ স্কুলে ফিরে যান এবং সেখানে অষ্টম শ্রেণী থেকে পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯১৭ সাল পর্যন্ত এখানেই পড়াশোনা করেন। ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের শেষদিকে মাধ্যমিকের প্রিটেস্ট পরীক্ষার না দিয়ে তিনি সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন। এই স্কুলে অধ্যয়নকালে নজরুল এখানকার চারজন শিক্ষক দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। এরা হলেন [[উচ্চাঙ্গভারতীয় সঙ্গীতশাস্ত্রীয় সংগীত|উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের]] ''[[সতীশচন্দ্র কাঞ্জিলাল]]'', বিপ্লবী চেতনাবিশিষ্ট ''[[নিবারণচন্দ্র ঘটক]]'', [[ফার্সি সাহিত্য|ফার্সি সাহিত্যের]] ''হাফিজ নুরুন্নবী'' এবং সাহিত্য চর্চার ''নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়''।<ref name="বাংলাপিডিয়া"/>
 
== সৈনিক জীবন ==