সঠিকতা ও সূক্ষ্মতা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৫ নং লাইন:
D চিত্রে আঘাতগুলি অনেক জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে আছে তাই এর সুক্ষ্মতা কম, আর নিশানার কেন্দ্রে থেকে দূরে বামে অবস্থিত বলে এর সঠিকতাও কম।<br />
সুতরাং সঠিকতা ও সুক্ষ্মতা দুইটি স্বতন্ত্র ধারণা।]]
[[বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা]]তে ব্যবহৃত পরিমাপ ব্যবস্থার '''সঠিকতা''', '''নির্ভুলতা''', '''অভ্রান্ততা''' বা '''ভ্রমশূন্যতা''' বলতে কোনও রাশির পরিমাপকৃত মানগুলির সাথে রাশিটির প্রকৃত মান তথা বাস্তবিকভাবে সত্য মানের (কিংবা কোনও [[নির্দেশ মান|নির্দেশ মানে]]র) নৈকট্যকে বোঝায়।<ref name=metrology_terms>''[http://www.bipm.org/utils/common/documents/jcgm/JCGM_200_2008.pdf JCGM 200:2008 International vocabulary of metrology]'' — Basic and general concepts and associated terms (VIM)</ref> কোনও পরিমাপ ব্যবস্থার '''সুক্ষ্মতা''', '''স্পষ্টতা''', '''সুসামাঞ্জস্য''' বা '''সুসংহতি''' (কদাচিৎ '''যথার্থতা''' ও '''যথাযথতা'''-ও বলা হয়) বলতে অপরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে কোনও রাশিকে বারংবার পরিমাপ করে প্রাপ্ত মানগুলির একে অপরের সাপেক্ষে নৈকট্যকে বোঝায়। অর্থাৎ সুক্ষ্মতার ধারণাটি রাশির প্রকৃত সত্য মান নয়, বরং পৌনঃপুনিক পরিমাপে একই মান পুনরুৎপাদিত হচ্ছে কি না, অর্থাৎ পরিমাপের পৌনঃপুনিকতা ও পরিমাপকৃত মানের পুনরুৎপাদনযোগ্যতার ধারণাগুলির সাথে জড়িত।<ref name=metrology_terms /><ref name=Taylor>{{citeবই bookউদ্ধৃতি |titleশিরোনাম=An Introduction to Error Analysis: The Study of Uncertainties in Physical Measurements |firstপ্রথমাংশ= John Robert |lastশেষাংশ= Taylor |urlইউআরএল=https://books.google.com/books?id=giFQcZub80oC&pg=PA128 |pagesপাতাসমূহ=128–129 |isbnআইএসবিএন=0-935702-75-X |yearবছর=1999 |publisherপ্রকাশক=University Science Books}}</ref>
 
সাধারণভাবে সঠিকতা হল [[নিয়মানুগ ত্রুটি]]র একটি বর্ণনা ও [[পরিসংখ্যানিক পক্ষপাত]]দুষ্টতার বিপরীত একটি পরিমাপ। সঠিকতা কম হলে পরিমাপকৃত মান ও সত্য মানের (বা নির্দেশ মানের) মধ্যে বেশি পার্থক্য থাকে। অন্যদিকে সুক্ষ্মতা হল [[সমসম্ভব ত্রুটি]]র বর্ণনা ও পরিসংখ্যানিক [[ভেদ|ভেদের]] বিপরীত একটি পরিমাপ। বিজ্ঞান ও প্রকৌশলবিদ্যায় "সঠিকতা" ও "সুক্ষ্মতা" পরিভাষাগুলি বেশি ব্যবহৃত হয়, আর পরিসংখ্যান শাস্ত্রে "পক্ষপাত" ও "ভেদ" পরিভাষাগুলি বেশি ব্যবহৃত হয়।
 
আরও সহজ ভাষায় বললে একই রাশিকে বারংবার পরিমাপ করার পরে প্রাপ্ত উপাত্তগুলির গড় মান যদি রাশিটির প্রকৃত মান অর্থাৎ বাস্তবিকভাবে সত্য মানের অনেক কাছাকাছি হয়, তাহলে বলা হয় এই রাশিটির পরিমাপ অনেক সঠিক (বা নির্ভুল বা অভ্রান্ত বা ভ্রমশূন্য) হয়েছে। আর একই রাশিকে বারংবার পরিমাপ করে প্রাপ্ত মানগুলি যদি একে অপরের অনেক কাছাকাছি হয়, তাহলে বলা হয় যে রাশিটির পরিমাপ অনেক সুক্ষ্ম (বা সুসমঞ্জস বা সুসংহত) হয়েছে।
 
সঠিকতা ও সুক্ষ্মতার ধারণা দুইটি একে অপর থেকে স্বতন্ত্র, তাই একটি পরিমাপকৃত উপাত্তের সংগ্রহ বা সেট চার রকম হতে পারে: ১) সঠিক কিন্তু সুক্ষ্ম নয়, ২) সুক্ষ্ম কিন্তু সঠিক নয়, ৩) একাধারে সঠিক ও সুক্ষ্ম, এবং ৪) সঠিক বা সুক্ষ্ম কোনওটিই নয়। যেমন যদি কোনও পরিমাপকারী ব্যবস্থাতে নিয়মানুগ ত্রুটি থাকে তাহলে নমুনা সংখ্যা বৃদ্ধি করলে সুক্ষ্মতা বৃদ্ধি পায়, কিন্তু সঠিকতা বৃদ্ধি পায় না। এক্ষেত্রে পরিমাপকৃত মানগুলি আরও বেশি সুসামঞ্জস্যপূর্ণ হবে বা সুক্ষ্মতর পার্থক্যবিশিষ্ট হবে, কিন্তু ব্যবস্থাটির সঠিকতায় কোনও হেরফের হবে না। আবার নমুনা সংখ্যা না বাড়িয়ে যদি নিয়মানুগ ত্রুটিটিকে দূর করে দেওয়া যায়, তাহলে সঠিকতা বাড়বে কিন্তু সুক্ষ্মতার কোনও পরিবর্তন হবে না।
 
তবে সঠিকতা ও সুক্ষ্মতার এই সাধারণ সংজ্ঞার সাথে আন্তর্জাতিক আদর্শ নির্ধারণী সংস্থা আইএসও-র সংজ্ঞার পার্থক্য আছে। উপরে সংজ্ঞায়িত "সঠিকতা"-র জন্য তারা "সত্যতা" পরিভাষাটি ব্যবহার করে থাকে। আইএসও-এ মতে "সঠিকতা" হল নিয়মানুগ ত্রুটি ও সমসম্ভব ত্রুটি, এই উভয় ধরনের [[পরিমাপগত ত্রুটি]]-র (পর্যবেক্ষণগত ত্রুটির) সামষ্টিক প্রভাব বর্ণনাকারী একটি ধারণা। সুতরাং আইএসও-সংজ্ঞায়িত "সঠিকতা" উচ্চ হতে হলে "সত্যতা" ও সুক্ষ্মতা উভয়কেই উচ্চ হতে হয়।
 
==উদাহরণ==
ধরা যাক, কোনও ব্যক্তির প্রকৃত (বাস্তবিকভাবে সত্য) ওজন ৭০.০০ কিলোগ্রাম। এখন ব্যক্তিটি একটি ওজন মাপার যন্ত্র ''ক'' দিয়ে নিজের ওজন তিন বার মেপে ওজন পেলেন ৭০.২ কিলোগ্রাম, ৭০.৯ কিলোগ্রাম ও ৭০.১ কিলোগ্রাম, যে ওজনগুলির গড় মান (৭০.২ + ৭০.৯ + ৭০.১)/৩= ৭০.৪ কিলোগ্রাম, যার সাথে প্রকৃত ওজনের ব্যবধান ০.৪ কিলোগ্রাম। এখন ব্যক্তিটি দ্বিতীয় একটি ওজন মাপার যন্ত্র ''খ'' দিয়ে নিজের ওজন আবার তিন বার মেপে ওজন পেলেন ৭০.৭ কিলোগ্রাম, ৭০.৬ কিলোগ্রাম ও ৭০.৮ কিলোগ্রাম, যাদের গড় মান (৭০.৭ + ৭০.৬ + ৭০.৮)/৩= ৭০.৭ কিলোগ্রাম, যার সাথে প্রকৃত ওজনের ব্যবধান ০.৭ কিলোগ্রাম। সুতরাং এই উদাহরণে ''ক'' ওজন মাপার যন্ত্রটির সঠিকতা ''খ'' ওজন মাপার যন্ত্রটির তুলনায় বেশি।
 
এখন ''ক'' ওজন মাপার যন্ত্র দ্বারা পরিমাপকৃত ওজন তিনটির গড় (৭০.৪ কিলোগ্রাম) থেকে প্রতিটি স্বতন্ত্র ওজনের পরম বিচ্যুতি হল যথাক্রমে ০.২ কিলোগ্রাম, ০.৫ কিলোগ্রাম, ০.৩ কিলোগ্রাম; সুতরাং গড় ওজন থেকে ওজনগুলির গড় বিচ্যুতি হল (০.২+০.৫+০.৩)/৩= ০.৩৩ কিলোগ্রাম। আবার ''খ'' ওজন মাপার যন্ত্র দ্বারা পরিমাপকৃত মান তিনটির গড় (৭০.৭ কিলোগ্রাম) থেকে প্রতিটি ওজনের পরম বিচ্যুতি হল যথাক্রমে ০.০ কিলোগ্রাম, ০.১ কিলোগ্রাম, ০.১ কিলোগ্রাম; সুতরাং গড় ওজন থেকে ওজনগুলির গড় বিচ্যুতি হল (০.০ + ০.১ + ০.১)/৩= ০.০৬ কিলোগ্রাম। সুতরাং ''ক'' ওজন মাপার যন্ত্রের তুলনায় ''খ'' ওজন মাপার যন্ত্রটির মানগুলির গড় বিচ্যুতি অনেক কম (০.০৬ < ০.৩৩), অন্য ভাষায় ''খ'' ওজন মাপার যন্ত্রের পরিমাপকৃত ওজন তিনটি একে অপরের অনেক বেশি কাছাকাছি অবস্থিত, সুতরাং ''খ'' ওজন মাপার যন্ত্রের সুক্ষ্মতা ''ক'' ওজন মাপার যন্ত্রের তুলনায় বেশি।