বার্মায় ব্রিটিশ শাসন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
+
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৭৬ নং লাইন:
১৮২৪ থেকে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বর্মায় ব্রিটিশ শাসন কায়েম ছিল৷ [[ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধসমূহ|ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধের]] পর থেকে প্রাথমিকভাবে বর্মার কিছু অংশ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হলেও ধীরে ধীরে বর্মার দেশীয় রাজ্যগুলি [[ব্রিটিশ ভারতের প্রেসিডেন্সি ও প্রদেশ সমূহ|ব্রিটিশ ভারতের প্রদেশগুলির]] একটি হয়ে ওঠে৷ পরে ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে সম্পূর্ণ বর্মা ব্রিটিশ [[উপনিবেশ]]ভুক্ত হয় এবং ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে তা পূর্ণ স্বাধীনতা পায়। ব্রিটিশ শাসনকালে এই অঞ্চলটি "ব্রিটিশ বর্মা" নামে পরিচিত ছিলো। [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]] ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে [[প্রথম ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধ|প্রথম ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধে]] জয়লাভ করে বর্মা রাজ্যক্ষেত্রের একাধিক অঞ্চল যেমন, [[রাখাইন রাজ্য|আরাকান রাজ্য]] (রাখাইন প্রদেশ) এবং [[টেনাসেরিম বিভাগ]] ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করে নেয়৷ ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে [[দ্বিতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধ|দ্বিতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধে]] ব্রিটিশ বাহিনী দক্ষিণ বর্মার পেগু বা পেগুইয়োমা এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চল দখল করে এবং সেখানে একটি মুখ্য কমিশনার নিয়োগ করেন৷ ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে " ব্রিটিশ বর্মা"কে "[[ব্রিটিশ ভারত]]"-এর অন্তর্ভুক্ত করে একটি অভিন্ন একক হিসাবে শাসন পরিচালনা শুরু হয়৷<ref name=igi-iv-p29>{{Harvnb|Imperial Gazetteer of India vol. IV|1908|p=29}}</ref>
 
১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধ|তৃতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধে জয়লাভ করে ব্রিটিশ বাহিনী [[উচ্চ ময়ানমার|উত্তর বর্মার]] বিস্তীর্ণ অঞ্চলের দখল নিলে সমগ্র বর্মাই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে৷ উত্তর বর্মাকেও "[[ব্রিটিশ ভারত|ব্রাটিশ ভারতের]]" অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং "বর্মা প্রদেশ" নামে একটি বৃৃহৎ প্রদেশ গঠন করা হয়৷ ব্রিটিশ শাসনকালে প্রদেশটির গুরুত্ব বৃৃদ্ধি পেলে এবং সুশাসনের লক্ষ্যে প্রদেশটিতে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে একজন প্রশাসনিক লেফ্টেন্যান্ট নিয়োগ করা হয়৷<ref name=igi-iv-p29/> বর্মা অফিস গঠন করে [[মিয়ানমার|বর্মা]]কে "সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ইন্ডিয়া অ্যান্ড বর্মা"র অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে বর্মাকে ব্রিটিশ ভারত থেকে পৃৃথক ঘোষনা করা অবধি এই প্রশাসনিক নিয়ম লাগু থাকে৷ পরে [[দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ]] চলাকালীন একাধিক ব্রিটিশ ঔপনিবেশের সাথে বর্মাতে [[বর্মায় জাপানের অধিগ্রহণ|জাপানের অধিগ্রহণ]] হলে সেখানে ব্রিটিশ শাসন বিপর্যস্ত হয়৷ পরে তা আবার আবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হলে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা জানুয়ারী বর্মা পূর্ণ স্বাধীনতা পায়৷
 
বর্মা যেহেতু অধিকাংশ সময়ে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বদলে স্কটিশবাসী তথা [[জেমস জর্জ স্কট|স্যার জেমস স্কটের]] তত্ত্বাবধানে এবং ইরাবতী ফ্লোটিলা কোম্পানির অধীনে শাসিত হতো এবং অন্যান্য স্কটিশ প্রশাসনের প্রভাবই বেশি থাকতো তাই ঐতিহাসিকরা বর্মাকে "স্কটিশ উপনিবেশ" বলতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন৷
৮৩ নং লাইন:
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বর্মা ছিলো ভারত এবং চিন|চিনের মধ্যবর্তী কম কষ্টসাধ্য ও সহজে অতিক্রম্য বাণিজ্য পথ সরাসরি বর্মার ওপর দিয়ে যেতো, যা বর্মাকে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ঐশ্বর্যশালী করে তোলে৷ এছাড়াও স্বয়ং সম্পূর্ণ চাষাবাদের প্রাচুর্য অঞ্চলটিকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করেছিলো৷ পূর্বে ভারতীয় পণ্যব্যবসায়ীরা সমুদ্র উপকুল বরাবর বা নদীপথ (বিশেষত [[ইরাবতী নদী, মিয়ানমার|ইরাবতী নদী]]) ধরে বাণিজ্য করতেন৷ এই অঞ্চলগুলিতে প্রচুর সংখ্যাক জাতিতে বর্মীরা বাস করতেন ফলে সেখানে ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির গভীর ছাপ পড়ে, যা আজও স্পষ্ট৷ বর্মা বা ব্রহ্মদেশই ছিলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ যারা ভারতে প্রবর্তিত [[বৌদ্ধধর্ম]]কে আপন করে নেয়, যা পরবর্তীতে ব্রহ্মদেশের দাপ্তরিক ও সংখ্যাগুরু পৃৃষ্ঠপোষিত ধর্মে পরিণত হয়৷
 
ব্রিটিশদের বর্মা বিজয় এবং উপনিবেশ স্থাপনের পূর্বে শাসনরত [[কোনবাউং রাজবংশ]] সেখানে দৃৃঢ়সংলগ্ন কেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থা স্থাপন করতে সক্ষম হয়৷ রাজা মূখ্য কার্যনির্বাহকের ভূমিকা পালন করতেন যার সিদ্ধান্তই সকলক্ষেত্রে অন্তিম ও সর্বজনগ্রাহ্য বলে ধরা হতো৷ তবে তিনি প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক বিষয়ে আদেশ দিতে পারলেও নতুন আইন বলবৎ করতে অপারক ছিলেন৷ দেশটিতে তিন ধরণেরধরনের আইন কোড চলতো, সেগুলি হলো, "রাজথট", "দম্মাথট" এবং "হ্লুত্তউ"৷ কেন্দ্রীয় সরকার তিনটি শাখায় বিভক্ত ছিলো যথা; রাজকোষসম্বন্ধীয়, সম্পাদন-শাস্তিমূলক এবং বিচারবিভাগীয়৷ তথ্যপ্রমাণ অনুসারে হ্লুত্তউ আইনের ভারপ্রাপ্ত সর্বেসর্বা ছিলেন রাজা নিজেই এবং রাজার একাধিপত্য দমন করার জন্য যতক্ষণ না কোনো স্থানে বা কোনো বিষয়ে হ্লুত্তউ আইন বলবৎ হচ্ছে ততক্ষণ সেই স্থানের অধিবাসীবৃৃন্দ রাজার হুকুম মানতে বাধ্য নয়৷ দেশটি একাধিক ক্ষুদ্র প্রদেশে বিভক্ত ছিলো যা রাজার হ্লুত্তউ আইনের অধীনে প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব দ্বারা নিয়োগ করা হতো৷ আবার আলাদা আলাদাভাবে গ্রামাঞ্চলগুলিতে রাজা বা ঐ প্রদেশের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তির নির্বাচিত শিরোমণি পরিবারের যোগ্য সদস্য দ্বারা শাসিত হতো৷<ref name="Encyclopædia Britannica">Encyclopædia Britannica</ref>
 
==বর্মায় ব্রিটিশের আগমন==
[[File:Battle of rangoon.jpg|thumb|left|১৮২৪ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে [[ইয়াঙ্গুন|রেঙ্গুন]] নৌবন্দরে ব্রিটিশ নৌবাহিনীর প্রবেশ]]
 
[[কোনবাউং রাজবংশ|কোনবাউং রাজবংশের]] শাসকরা [[ব্রিটিশ ভারত|ব্রিটিশ ভারতের]] অধীনস্ত [[চট্টগ্রাম]] নৌবন্দর বেষ্টন করে আসাম রাজ্য পর্যন্ত [[রাখাইন রাজ্য|আরাকান]] রাজ্যের সীমানা প্রসারিত করতে চাইলে বর্মার রাজবংশ ও [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]]র মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে৷ ১৭৮৪ থেকে ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্রে বর্মী সেন্যবাহিনীর হাত থেকে [[আরাকান সাম্রাজ্য]] বেদখল হওয়ার পর ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে তারা আবার তা পুণর্দখল করার চেষ্টা করে ও সীমান্ত অতিক্রম করে৷ এটিই ছিলো ১৮২৪ থেকে ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ঘটে যাওয়া [[প্রথম ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধ]]র অন্যতম প্রধান কারণ৷ ব্রিটিশরা এসময় [[ইয়াঙ্গুন|রেঙ্গুন]] পর্যন্ত একটি বৃৃহৎ সমুদ্রচালিত অভিযান চালালে ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বিনাযুদ্ধে তারা রেঙ্গুন দখল করে৷ [[মান্দালয়|মান্দালয়ের]] নিকট [[আভা]](ইনোয়া)-এর দক্ষিণে অবস্থিত [[দনুব্যু]] অঞ্চলে বর্মী সেনাধ্যক্ষ [[মহা বন্ধুল]] নিহত হন ও তার সেনাবাহিনী নিকেষ করা হয়৷ বর্মা আসাম সহ উত্তর দিকের প্রদেশগুলি ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয়৷<ref name="World Book Encyclopedia">World Book Encyclopedia</ref> ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে [[ইয়াণ্ডাবু সন্ধি]]র মাধ্যমে ব্রিটিশ ভারতে দীর্ঘতর, বিপুল অর্থক্ষয়ী এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রথম ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে৷ সরকারী হিসাবে পনেরো হাজার ইউরোপীয় এবং ভারতীয় সৈন্য সহ অগণিত বর্মী সৈন্য ও সাধারণের মৃৃত্যু হয় এবং উভয়পক্ষেরই বহু মানুষ আহত হয়৷<ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি | titleশিরোনাম=The Making of Modern Burma | pagesপাতাসমূহ=18| authorলেখক=Thant Myint-U|yearবছর=2001|publisherপ্রকাশক=Cambridge University Press |isbnআইএসবিএন=0-521-79914-7}}</ref> হিসাব মতো ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীর সেনাছাউনি বাবদ খরচ হয় ৫ মলিয়ন পাউন্ড এবং সর্বমোট খরচ ১৩ মিলিয়ন পাউন্ড, যার বর্তমান মূল্য ২০০৬ খ্রিস্টাব্দের বাজারদরে প্রায় ১৮.৫ এবং ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷<ref name=rlf-113>{{citeবই bookউদ্ধৃতি | titleশিরোনাম=The River of Lost Footsteps—Histories of Burma | pagesপাতাসমূহ=113, 125–127| authorলেখক=Thant Myint-U|yearবছর=2006|publisherপ্রকাশক=Farrar, Straus and Giroux |isbnআইএসবিএন=978-0-374-16342-6}}</ref> এই বিপুল পরিমান অর্থক্ষয় ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দ অবধি ব্রিটিশ ভারতে অর্থনীতিকে চরম সঙ্কটাপন্ন করে৷<ref name=webster>{{citeবই bookউদ্ধৃতি | titleশিরোনাম=Gentlemen Capitalists: British Imperialism in South East Asia, 1770–1890 | firstপ্রথমাংশ=Anthony|lastশেষাংশ= Webster | publisherপ্রকাশক=I.B.Tauris | yearবছর=1998 | pagesপাতাসমূহ=142–145 | isbnআইএসবিএন=978-1-86064-171-8}}</ref>
 
১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশরা [[সিঙ্গাপুর]] এবং [[কলকাতা]]র নোবন্দরের মধ্যবর্তী দক্ষিণ বর্মার [[সেগুন]] বন দাবী করে৷ বর্মীরা তৎক্ষনাৎ ব্রিটিশ গুপ্তচরকে বর্মা থেকে সরিয়ে নেওয়া পাল্টা দাবী তোলেন৷ ফলে দীর্ঘ ২৫ বছর শান্তিচুক্তির পরে ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধ শুরু হয়৷ ব্রিটিশরা যুদ্ধশেষে জয়লাভ করে এবং দক্ষিণ বর্মার একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করে এবং দাবীকৃত সেগুনবন, তেল এবং [[উচ্চ মিয়ানমার|উত্তর বর্মার]] অমূল্যসম্পদ লাভ করে৷
 
রাজা মিন্দন মিন এই আধিপত্য এবং ঔপনিবেশিকতা আটকানোর ও প্রশাসনিক পুণর্বিন্যাসের যথাসাধ্য চেষ্টা করেন৷ তিনি প্রশাসনিক সংস্কার করে বর্মাকে বিদেশী আকর্ষনের জন্য আরো সুগ্রাহী করে তোলেন৷ কিন্তু ব্রিটিশরা সুকৌশলে তৃতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধের সূচনা করে, যা ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে ঘটে এবং দুসপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়৷ [[ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি]] তাদের আক্রমনের পিছনে যুক্তি দেখান যে, বর্মার শেষ স্বাধীন রাজা থিবৌ মিন একজন অত্যাচারী রাজা ছিলেন এবং ষড়যন্ত্র করে তার দেশে ফ্রান্সের প্রভাব বৃৃদ্ধি করতে চাইছেন৷ ব্রিটিশ সৈন্যদল ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে নভেম্বর [[মান্দালয়|মান্দালয়ে]] প্রবেশ করে৷ এভাবে তিনটি যুদ্ধের পর এক এক করে ব্রিটিশ বাহিনী সমগ্র বর্মার ওপর নিজ অধিপত্য কায়েম করতে সফল হয়৷ এরপরে ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারী বর্মা ব্রিটিশ ভারতের একটি প্রদেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে৷<ref name="Encyclopædia Britannica"/>
 
ব্রিটিশরা উত্তর বর্মার বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিজের উপনিবেশের অন্তর্ভুক্ত করে এবং পুরো বর্মাকে "ব্রিটিশ বর্মা" নামে একটি প্রদেশ হিসাবে "[[ব্রিটিশ ভারত]]"-এর আওতায় আনে৷ ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে ফেব্রুয়ারী মাসে উত্তর ও দক্ষিণ বর্মাকে একত্রিত করে একটি বৃৃহত্তর প্রদেশে পরিণত করা হয়৷<ref name=DIB>{{citeবই bookউদ্ধৃতি|titleশিরোনাম=Dictionary of Indian Biography|urlইউআরএল=https://books.google.com/books?id=Y8AKI2nqPBQC|publisherপ্রকাশক=Ardent Media|yearবছর=1906|idআইডি=GGKEY:BDL52T227UN|pageপাতা=82}}</ref>
 
[[File:British forces arrival mandalay1885.jpg|thumb|left|চিত্রগ্রাহক উইলগবাই ওয়ালেসের তোলা [[তৃতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধ|তৃতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধের]] শেষে ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দের ২৮শে নভেম্বরে ব্রিটিশ বাহিনির মান্দালয়ে আগমন]]
১০৬ নং লাইন:
ঐতিহ্যশালী বর্মী সমাজ রাজবংশ এবং স্বধর্মীয় শাসনতন্ত্র এবং স্বশাসন বিনষ্ট হওয়ার পরে বহুলাংশে রদবদল করে৷ স্থানীয় বর্মী এবং বহিরাগত ইউরোপীয়দের আন্তর্বিবাহে ইউরেশীয় (মিশ্র পরিচয়)|ইউরেশীয় সম্প্রদায়ের উৎপত্তি ঘটে, যারা ইঙ্গ-বর্মী নামে পরিচিত৷ এরাই পরবর্তীকালে বর্মার বৃৃহত্তর জাতিতে পরিণত হয়, তারা ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যে ব্রিটিশ ও স্থানীয় বর্মী মধ্যবর্তী স্থান পায়৷
 
ব্রিটিশ বাহিনী সমগ্র বর্মার ওপর আধিপত্য বিস্তার করলেও তারা চিনের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে [[চিন]]কে রাজত্ব দেওয়া চালিয়ে যায় কিন্তু বিশেষ কারণে তারা চিনের সম্মুখে তাদের পুরানো পদমর্যাদা হারায়৷<ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি|urlইউআরএল=https://books.google.com/?id=WKRFAAAAIAAJ&pg=PA99&dq=recent+visit+of+li+hung+chang+to+our+shores#v=onepage&q=burma%20was%20a%20tributary%20state%20of%20china%20british%20forward%20tribute%20peking&f=false|titleশিরোনাম=China and her mysteries|authorলেখক=Alfred Stead|yearবছর=1901|publisherপ্রকাশক=Hood, Douglas, & Howard|editionসংস্করণ=|locationঅবস্থান=LONDON|pageপাতা=100|isbnআইএসবিএন=|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=19 February 2011}}(Original from the University of California)</ref> ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের বর্মা সম্মেলনে চিন এবং ব্রিটিশ উভয়পক্ষ এটা স্থির করে যে উত্তর বর্মায় চিন ব্রিটিশ আধিপত্য মেনে নেবে এবং এর পরিবর্তে ব্রিটিশ আগামী দশ বছরের জন্য সমগ্র বর্মা থেকে সা যাবতীয় রাজস্ব [[বেজিং]]কে দান করবে৷<ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি|urlইউআরএল=https://books.google.com/?id=v2NCAAAAIAAJ&pg=PA5&dq=tribute+china#v=onepage&q=tribute%20china&f=false|titleশিরোনাম=China's intercourse with Korea from the XVth century to 1895|authorলেখক=William Woodville Rockhill|yearবছর=1905|publisherপ্রকাশক=Luzac & Co.|editionসংস্করণ=|locationঅবস্থান=LONDON|pageপাতা=5|isbnআইএসবিএন=|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=19 February 2011}}(Colonial period Korea ; WWC-5)(Original from the University of California)</ref>
 
===প্রশাসন===
১৫৬ নং লাইন:
১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশদের কার্যালয়ে নিযুক্ত একজন প্রত্যক্ষদর্শী করনিকের বৃৃষ্টিতে বর্মী লোকেদের জীবনশৈলী এবং তাদের কঠোর শ্রম ও বৈদেশিক বিপননের সাথে খাপ খাইয়ের নেওয়ার বিবরণ নিম্নরূপ -
 
<blockquote>“Foreign landlordism and the operations of foreign moneylenders had led to increasing exportation of a considerable proportion of the country’s resources and to the progressive impoverishment of the agriculturist and of the country as a whole…. The peasant had grown factually poorer and unemployment had increased….The collapse of the Burmese social system led to a decay of the social conscience which, in the circumstances of poverty and unemployment caused a great increase in crime.”<ref>{{Citeসাময়িকী journalউদ্ধৃতি |jstor = 20067745|titleশিরোনাম = The Withdrawal of the Last British Residency from Upper Burma in 1879|journalসাময়িকী = Journal of Southeast Asian History|volumeখণ্ড = 10|issueসংখ্যা নং = 2|pagesপাতাসমূহ = 253–278|last1শেষাংশ১ = Chew|first1প্রথমাংশ১ = Ernest|yearবছর = 1969|doiডিওআই = 10.1017/S0217781100004403}}</ref>
(অনুবাদ - বিদেশী ভূস্বামী নিয়োগ এবং কুসীদজীবিদের কার্যকলাপে দেশীয় উৎসগুলির ব্যপকহারে রপ্তানিকরণ চলে যা সামগ্রিকভাবে প্রগতিশীল দেশটি কৃৃষক সম্প্রদায়ের দারিদ্রতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়৷ কৃৃষকরা দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হতে থাকে এবং বেকারত্ব বাড়তে থাকে৷ বর্মী সমাজের তাচ্ছিল্যতায় সামাজিক নীতিগুলির অধঃপতন হয়৷ এমতাবস্থিয় দারিদ্র ও বেকারত্ব দেশের অপরাধ হার বাড়িয়ে দেয়।)
</blockquote>
১৬২ নং লাইন:
==জাতীয়তাবাদী আন্দোলন==
[[File:Yangon Rangoon and Environ map 1911.jpg|thumb|300px|১৯১১ খ্রিস্টাব্দে রেঙ্গুন ও তৎসংলগ্ন মানচিত্র]]
শতাব্দী ঘোরার সাথে সাথে [[ইয়ং ম্যান খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন|ইয়ং ম্যান খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের]] আদলে বৌদ্ধদের মধ্যেও [[ইয়ং ম্যান বৌদ্ধ অ্যাসোসিয়েশন (বর্মা)|ইয়ং ম্যান বৌদ্ধ অ্যাসোসিয়েশন]] তৈরী হয়, যাদের ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে নতুন আন্দোলন গঠন করতে দেখা যায়৷ তারা পরবর্তীকালে [[জেনারেল কাউন্সিল অব বর্মী অ্যাসোসিয়েশন]]-এর সাথে সংযোজিত হয়৷ সংগঠন দুটি "উন্থানু আথিন"-এর সাথে যুক্ত হয়ে মুল বর্মার গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ে৷<ref name="ms">{{citeবই bookউদ্ধৃতি|authorলেখক=Martin Smith|yearবছর=1991|titleশিরোনাম=Burma – Insurgency and the Politics of Ethnicity|publisherপ্রকাশক=Zed Books|locationঅবস্থান=London and New Jersey|pagesপাতাসমূহ=49, 91, 50, 53, 54, 56, 57, 58–59, 60, 61, 60, 66, 65, 68, 69, 77, 78, 64, 70, 103, 92, 120, 176, 168–169, 177, 178, 180, 186, 195–197, 193, 202, 204, 199, 200, 270, 269, 275–276, 292–3, 318–320, 25, 24, 1, 4–16, 365, 375–377, 414}}</ref> ১৯০০ থেকে ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে [[উ ধম্মলোকা]] নামে এক আইরিশ বৌদ্ধ ব্যাক্তি সরাসরি জনসমক্ষে খ্রিস্টধর্ম এবং সাম্রাজ্যবাদী ক্ষমতার ওপর প্রশ্ন করে এবং সমর্থকদের সাথে দুবার রাজদ্রোহ ঘোষনাঘোষণা করে৷
 
বিংশ শতাব্দীর শরুর দিকে বর্মী নেতাদের একটি নতুন প্রজন্মের উত্থান হয়৷ তাদের মধ্যে যারা শিক্ষিত পরিবার থেকে আসতো তারা লন্ডনে আইনবিষয়ক উচ্চশিক্ষা লাভ করতে যেত কারণ তারা মনে করেছিলো তাদের এই অভাজ্ঞতা তাদের স্বজাতীয় বর্মীদের বর্তমান অবস্থান উন্নতি ও পুণর্গঠনে সাহায্য করবে৷ সাংবিধানিক উন্নয়ন এবং ১৯২০ এর শুরুর দিকে তার পুণর্গঠনের ফলে আইনসভাতে ব্রিটিশ একাধিপত্য কমে আসে এবং ভারতে যুক্ত থেকেও বর্মাতে আংশিক স্বায়ত্ত্বশাসন প্রতিষ্ঠা পায়৷ বেসামরিক চাকুরীতে জাতিতে বর্মী নিয়োগ বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টায় চাপ সৃষ্টি করা হয়৷ অনেকে মনে করেন পরিবর্তনের হার প্রয়োজনীয়তার তুলনায় কম হলেও এই চাপ সৃষ্টি ও সামান্য কর্মসংস্থান বৃদ্ধিও বেশ কার্যকর ছিলো৷
১৭৫ নং লাইন:
[[File:Royallake dalhousiepark rangoon1895.jpg|thumb|300px|১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে ফিলিপ অ্যাডলফ কিলারের তোলা রেঙ্গুনের ডালহৌসী পার্কের রয়্যাল লেক|সংযোগ=Special:FilePath/Royallake_dalhousiepark_rangoon1895.jpg]]
 
ব্রিটিশরা ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে [[ব্রিটিশ ভারত]] ভেঙে বর্মা প্রদেশটিকে পৃৃথক রাষ্ট্র ঘোষনাঘোষণা করে<ref>[http://www.time.com/time/magazine/article/0,9171,788006,00.html Sword For Pen], ''TIME Magazine'', 12 April 1937</ref> এবং তাদের এই উপনিবেশকে পূর্ণ নির্বাচন সমাবেশের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন সংবিধান রচনা করে৷ এর সাথে তারা প্রশাসনিকসহ বিভিন্ন পদে স্থানীয় বর্মীদের নিয়োগ করা শুরু করে৷ কিন্তু কিছু বর্মীর মতে এই বিভাজন নীতির ফলে ভারতীয় কোনো উন্নয়ন বা পুণর্গঠনে বর্মা চিরকালের জন্য বঞ্চিত হবে কারণ ভারতের লোকবল ছিলো বর্মার চেয়ে অনেক বেশি৷ [[বা মাও]] বর্মার প্রথম প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হন কিন্তু ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে উ সও তাকে এই পদ থেকে অব্যহতি দিতে বাধ্য করে৷ ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হলেও জাপানের সাথে মিত্রতার কথা আঁচ করতে পেরে ব্রাটিশ সরকার ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ১৯ শে জানুয়ারী তাকে গ্রেপ্তার করলে তিনি প্রধানমন্ত্রীত্ব হারান৷
 
কেন্দ্রীয় বর্মার তৈলক্ষেত্রগুলি থেকে একাধিকবার ধর্মঘট-আন্দোলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচী চলতে থাকে, এরকমই ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে ঘটে যাওয়া একটি আন্দোলন বর্মা জুড়ে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে৷ [[ইয়াঙ্গুন|রেঙ্গুনে]] জনসাধারণের সমর্থনে ছাত্র সংগঠনের পিকেটিন এবং বয়কট কর্মসূচী চলতে থাকে৷ ব্রিটিশ শাসনদণ্ড এই আন্দোলনের জন্য ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদী সরকারকে দোষী সাব্যস্ত করলে তাদের সেনাবাহিনী রেঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ে ধরপাকড় শুরু করে ও "আং কিয়ৌ" নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মৃত্যু হয়৷ মান্দালয়ে পুলিশবাহিনীবিদ্রোহীদের জনসমাবেশে এলোপাথারি গুলি ছুঁড়লে ১৭ জন বৌদ্ধসন্যাসীর ঘটনস্থলেই মৃত্যু হয়৷ এর পর থেকে এই রক্তক্ষয়ী আন্দোলন মিয়ানমারের বর্মীপঞ্জিতে "১৩০০র বিপ্লব" বা স্থানীয় ভাষায় হ্তাউং থৌন ইয়াব্যেই আয়ৈদবোন" নামে পরাচিত৷<ref name="ms"/> এবং ২০ শে ডিসেম্বর দিনটিতে এই আন্দোলনের প্রথম শহিদকে স্মরণ করে [[বো আং কিয়ৌ দিবস]]<ref>{{citeওয়েব webউদ্ধৃতি|urlইউআরএল=http://www.burmalibrary.org/reg.burma/archives/199912/msg00642.html|titleশিরোনাম=The Statement on the Commemoration of Bo Aung Kyaw|publisherপ্রকাশক=All Burma Students League|dateতারিখ=19 December 1999|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=23 October 2006}}</ref>
 
==দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন==
{{Mainমূল নিবন্ধ|বর্মায় জাপানের অধিগ্রহণ}}
[[File:The_British_Army_in_Burma_1944_SE2911.jpg|thumb|right|১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে বর্মায় ব্রিটিশবাহিনীর অবস্থান]]
[[জাপান সাম্রাজ্য|জাপান]] ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে বর্মা আক্রমণ করে এবং ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে রাজধানী [[ইয়াঙ্গুন|রেঙ্গুনে]] সরাসরি এই ঘোষনাঘোষণা করা হয়৷ জাপান কখনোই সম্পূর্ণ ব্রিটিশ বর্মার ওপর নিজের আধিপত্য কায়েম করতে পারেনি, যদিও জাপানের কার্যকলাপ সন্দেহজনক ও বেশ অনুপ্রবেশপ্রবণ ছিলো৷ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্যান্য উপনিবেশগুলির ক্ষেত্রে জাপানের এই নীতির লক্ষ্য করা যায় না৷ ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশরা বর্মায় [[ব্রিটিশ ভারতীয় সেনা]] নামালে তারা জাপানি অনুপ্রবেশ সরিয়ে বর্মায় আবার নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়৷
 
==জাপানের আত্মসমর্পণ ও আং সানের গুপ্তহত্যা==
জাপানের আত্মসমর্পণ বর্মায় সামরিক প্রশাসনের জন্ম দেয়৷ জাপানকে সাহায্য করা এবং ব্রিটিশ বিরোধীতার জন্য ব্রিটিশ প্রশাসন [[অং সান|আং সান]] এবং বি.আই.এ. এর অন্যান্য সদস্যদের খুঁজতে তৎপর হয়৷<ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি | titleশিরোনাম=The Political Theory of Tyranny in Singapore and Burma | publisherপ্রকাশক=Routledge | authorলেখক=Stephen Mccarthy | yearবছর=2006 | pageপাতা=153| isbnআইএসবিএন=0-415-70186-4}}</ref> [[লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন]] আং সানের জনপ্রিয়তার কথা স্বীকার করে বুঝতে পারেন যে তাকে ধরতে ব্রিটিশদের বেশ বেগ পতে হতে পারে৷ <ref name="ms"/> যুদ্ধ সমাপ্তি ঘটলে কর্নেল [[রেজিনাল্ড ডোরম্যান-স্মিথ]] বর্মা থেকে ফেরৎ যান৷ পুণঃপ্রতিষ্ঠিত সরকার একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠান সম্পাদন করে, যা রাষ্ট্রের বাস্তবিক পুণর্বিন্যাসকে তুলে ধরে এবং তাদের পরিকল্পিত স্বাধীনতা দেওয়ার আলোচনা কিছুটা পিছিয়ে দেয়৷ এ.এফ.পি.অফ.এল রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রব্যাপী সরকার বিরোধীতা শুরু করে৷ সংগঠনটিতে বর্মা কমিউনিস্ট পার্টি এবং আং সানের মধ্যে সামাজিক পরিকল্পনাগত মতবিরোধ দেখা যায়৷ ফলস্বরূপ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে "থান টুন" সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যহতি দেন এবং ঐ বছর অক্টোবর মাসর মধ্যে সংগঠনটি থেকে বর্মার কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরা বেরিয়ে আসে৷<ref name="ms"/>
 
ডোরম্যান-স্মিথ কে বদলি করে মেজর জেনারেল স্যার হুবার্ট রান্সকে নতুন গভর্নর হিসাবে বর্মায় আনা হয়৷ তার বর্মায় আসার কিছু দিনের মধ্যেই রেঙ্গুনে সৈন্যবাহিনী কর্মবিরতি ঘোষনাঘোষণা করে৷ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে এই ধর্মঘট শুরু হয় এবং পুলিশবাহিনী থেকে সরকারী কর্মচারীরাও এই ধর্মঘট সমর্থন করলে এটি সাধারণ ধর্মঘটের রূপ নেয়৷ রান্স আং সানের সাথে দেখা করেন এবং পরিস্থিতি পূর্বাবস্থিয় ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হন৷ তিনি আং সানকে তার সংগঠনের সদস্যসহ সরকারী কার্যনির্বাহী পরিষদে যোগ দেওয়া জন্য মানিয়ে নেন৷<ref name="ms"/> বিশ্বাসযোগ্য পরিচালনায় নতুন কার্যনিরাবাহী পরিষদের সুনাম পায় দেশজুড়ে জনচর্চিত হতে থাকে৷ এই পরিচালনার ফলে বর্মার স্বাধীনতা বিষয়টি আলোচ্য হিসাবে ব্রিটিশ কাউন্সিলে উঠে আসে এবং ২৭শে জানুয়ারী ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে উভয়ের মধ্যে [[ক্লিমেন্ট এট্‌লি]] চুক্তি সফলভাবে সাক্ষর হয়৷<ref name="ms"/>
 
বর্মার কম্যিউনিস্ট দলের বামপন্থী সদস্যরা এবং এ.এফ.পি.এফ.এল এর রক্ষণশিল সদস্যরা এই চুক্তির কিছু দাবী মেনে নিতে পারেনি ফলে সদস্য কর্তৃৃত্ব দ্বারা বামপন্থীরা সদস্যরা দুর্ব্যবহার পায় ও রক্ষণশীলরা সদস্যরা এর বিপক্ষে কথা বলে৷ আং সান ভাষাগত সংখ্যালঘুদের সমর্থন জোগাড় করে একটি একত্রিত অখণ্ড বর্মা গঠনের লক্ষ্যে ১২ই ফেব্রুয়ারী পাংলং সম্মেলন|পাংলং সম্মেলনে একটি চুক্তিপত্র পেশ করতে সক্ষম হন এবং দিনটি বর্মায় "ঐক্যের দিবস" নামে পরিচিতি পায়৷<ref name="ms"/><ref>{{citeওয়েব webউদ্ধৃতি|urlইউআরএল=http://www.ibiblio.org/obl/docs/panglong_agreement.htm| titleশিরোনাম=The Panglong Agreement, 1947|publisherপ্রকাশক=Online Burma/Myanmar Library}}</ref> চুক্তি সাক্ষরের অল্প সময়ের মধ্যেই আরাকান প্রদেশে এক অভিজ্ঞ সন্যাসী উ শেইন্দার নেতৃৃত্বে বিদ্রোহ ঘোষিত হয়, যা সমগ্র জেলাটিতে ছড়িয়ে পড়ে৷<ref name="ms"/> এইসময়ে এ.এফ.পি.এফ.এল - এতে আং সান এবং সমাজবাদীদের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে৷ এর প্রভাবে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে এপ্রিল মাসে বিধানসর্ভা নির্বাচনের ফল ঘোষনাঘোষণা হলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে নিরঙ্কুশভাবে আং সানের দল বিজয়ী ঘোষত হয়৷<ref name="ms"/>
 
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৯শে জুলাই বর্মাতে ঘটে যাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা দেশজুড়ে স্তব্ধতা সৃষ্টি করে৷ এক রক্ষণশীল প্রাকযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী "উ সাও" নেতা আং সানের গুপ্তহত্যার পরিকল্পনা করে৷ আলোচনা সভায় একত্রিত হয়ে "উ সাও", তার মন্ত্রীসভার বিশ্বস্ত সদস্যগণ এবং বর্তমান [[গণতন্ত্রের জন্য জাতীয় লীগ|গণতন্ত্রের জন্য জাতীয় লীগের]] জনক এবং তার জ্যেষ্ঠভ্রাতা "শেইন উইন" এবং তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা "বা উইন" এই গুপ্তহত্যার ছক কষেন৷<ref name="ms"/><ref>{{citeওয়েব webউদ্ধৃতি|urlইউআরএল=http://www.irrawaddy.org/database/1997/vol5.4.5/aungsan.html|titleশিরোনাম=Who Killed Aung San? – an interview with Gen. Kyaw Zaw|dateতারিখ=August 1997|workকর্ম=The Irrawaddy|accessdateসংগ্রহের-তারিখ=30 October 2006 |archiveurlআর্কাইভের-ইউআরএল = https://web.archive.org/web/20060819090402/http://www.irrawaddy.org/database/1997/vol5.4.5/aungsan.html |archivedateআর্কাইভের-তারিখ = 19 August 2006}}</ref> এরপর থেকে বর্মাতে ১৯ শে জুলাই দিনটিকে জাতীয় বর্মী শহিদ দিবস হিসাবে পালন করা হয়৷ সমাজবাদী দলের দলনেতা "থাকিন নু" এরপরে নতুন মন্ত্রীসভা গঠন করে এবং ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা জুলাই মন্ত্রীত্ব পদে আসিন হয়ে [[বর্মা স্বাধীনতা অধিনিয়ম, ১৯৪৭]]-এর বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে থাকেন৷ বর্মা একটি পূর্ণ স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে সায় দেয় এবং স্বাধীনতার পরে ব্রিটিশ অধিরাজ্য হয়ে থাকতে নাকচ করে৷ এটি ছিলো [[ভারত]] এবং [[পাকিস্তান|পাকিস্তানের]] যুগ্ম স্বাধীনতা সিদ্ধান্তের পারভাব কারণ তারা উভয়ই স্বশাসিত অধিরাজ্য এবং পূর্ণ স্বাধীনতাকে বেছে নিয়েছিলো৷ শুধু তাই নয় উভয় দেশের স্বাধীনতার প্রভাবে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ থেকেই বর্মাতে ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতাকামী মনোভাব বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছিলো৷<ref name="ms"/>
 
==তথ্যসূত্র==