ধর্মের বিবর্তনীয় উৎস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা উচ্চতর মোবাইল সম্পাদনা
৩১ নং লাইন:
একজন থেকে অপরজনে প্রেরিত হয় ধর্মের ন্যায় এরূপ বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে ভাষার মত কিছু প্রতীক বিশিষ্ট ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়। [[Philip Lieberman|ফিলিপ লাইবারম্যানের]] মতে "মানব ধর্মের ভাবনা এবং নৈতিক চেতনা সম্পুর্ণভাবে ভাষাগত-বোধের উপর নির্ভরশীল।"<ref name="lieberman"/> এই পূর্বানুমান থেকে বিজ্ঞান লেখক [[Nicholas Wade|নিকোলাস ওয়াড]] উদ্ধৃতি দেন:
:"বিশ্বের সকল সমাজে দেখা যাওয়া আচার আচরণের একটি হলো ধর্মাচরণ; যা ৫০ হাজার বছর আগে আফ্রিকা থেকে মানুষ যখন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পরছিল, তার পূর্ব থেকে এখনো বিদ্যমান। যদিও ধর্মীয় প্রথায় নৃত্য এবং সুরের ব্যবহার লক্ষণীয় কিন্তু পবিত্র বাণীকে উদ্ধৃত করার জন্য ধর্মকে অনেক বেশি বাচনিক হতে হয়। যদি তাই হয়, তবে ধর্মের যে আধুনিক রূপ আমরা দেখি, ভাষার উদ্ভবের পূর্বে এ ধর্মের অস্তিত্ব থাকা কখনো সম্ভব না। বিভিন্ন অনুকল্প থেকে ধারণা করা হয়, মানুষ আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পরার পূর্বেই আধুনিক ভাষার রূপরেখা সংক্ষিপ্ত পরিসরে অর্জিত হয়ে গিয়েছিল। যদি ধর্ম আধুনিক সুষ্পষ্টভাবে উচ্চারিত ভাষার বিবর্তনের উপর নির্ভরশীল হয়, তবে ৫০ হাজার বছর পূর্বেই সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও আধুনিক ধর্মেরও উদ্ভব ঘটেছিল।"<ref name="wade">*"[[Nicholas Wade|Wade, Nicholas]] – ''Before The Dawn, Discovering the lost history of our ancestors''. Penguin Books, London, 2006. p. 8 p. 165" {{ISBN|1-59420-079-3}}</ref>
 
===নৈতিকতা এবং সংঘবদ্ধভাবে বসবাস===
{{Main|Evolution of morality|Morality#Evolution}}
 
[[Frans de Waal|ফ্রান্স ডি ওয়াল]] এবং বারবারা কিং উভয়ই মানব নৈতিকতাকে প্রাইমেট সামাজিকতার উন্নত রূপ বলে মনে করেন। অনেক সামাজিক প্রাণী যেমন প্রাইমেট, ডলফিন এবং তিমি অনেক বৈশিষ্ট্য দেখায় যেগুলোকে মাইকেল শারমার "নৈতিক অনুভূতির" পূর্বোক্ত অবস্থা হিসেবে অভিহিত করেছেন। শারমারের মতে, নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো একই সাথে মানুষ এবং অন্যান্য সামাজিক প্রাণী বিশেষ করে গ্রেট এপদের মধ্যে দেখা যায়:
 
{{quote|আসক্তি এবং বন্ধন (attachment and bonding), সহযোগিতা এবং পারস্পরিক সহায়তা, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া (direct and indirect reciprocity), পরার্থপরতা এবং পারষ্পরিক পরার্থপরতা, সংঘাতের সমাধান এবং শান্তিস্থাপন (conflict resolution and peacemaking), প্রতারণা এবং প্রতারণা সনাক্তকরণ, সমাজ নিয়ে সচেতনতা এবং অন্যেরা নিজের সম্পর্কে কি ভাবছে তা নিয়ে ভাবা, গোষ্ঠীর সামাজিক নিয়ম সংক্রান্ত সচেতনতা এবং সাড়াদান।<ref name="shermer">{{cite book
|title=The Science of Good and Evil
|isbn=978-0-8050-7520-5
|last=Shermer
|first=Michael
|chapterurl=https://books.google.com/books?id=eevvWAcMBaAC&printsec=frontcover#PPA32,M1
|chapter=Why are we moral:The evolutionary origins of morality
|authorlink=Michael Shermer
|year=2004
|publisher=Times Books
|location=New York
|title-link=The Science of Good and Evil
}}</ref>}}
 
ডি ওয়াল যুক্তি দেখান, সকল সামাজিক প্রাণীকে দলবদ্ধভাবে বসবাস করার উপযোগী হতে গিয়ে নিজের আচরণকে পরিবর্তন করতে হয়েছে এবং ব্যবহারকে সংযত করতে হয়েছে। নিজেদের স্বার্থপরতাকে সংবৃত করতে এবং সহযোগিতামূলক দল গঠন করতে গিয়ে প্রাইমেট সমাজেই প্রাক-নৈতিক অনুভূতির (নৈতিকতার পূর্ব অবস্থা) বিবর্তন ঘটেছে। যেকোনো সামাজিক প্রজাতিতে, সহযোগিতামূলক দলের সদস্য হলে দলের প্রত্যেক সদস্য এককভাবে সুবিধা পায়। উদাহরণস্বরূপ, দলের মধ্যে না থেকে কেও একা একা ঘুরে বেড়ালে বহিরাগত দ্বারা সে আক্রান্ত হতে পারে। দলের সদস্য হলে খাবার খুঁজে পাবার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। প্রাণীদের মধ্যে এটা স্পষ্টভাবে দেখা গিয়েছে যে, যদি তারা [[pack hunter|দলগতভাবে শিকার]] করে, তবে বড় এবং বিপজ্জনক শিকারকেও কাবু করে নিজেদের খাদ্যের সংস্থান করতে পারে।
 
শিম্পাঞ্জি ৫০ জনের  [[Fission-fusion society|সম্মিলন-বিভাজন দল]] (fission-fusion group) গঠন করে বাস করে। সম্মিলন-বিভাজন সমাজ বলতে সেই ধরনের সমাজ বোঝানো হয় যেখানে সদস্যগণ কোনকোন সময় ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয় (যেমন দিনে খাদ্য সংগ্রহ বা শিকার ধরার জন্য) এবং কখনও আবার ছোট ছোট দলগুলো একত্রে মিলিত হয় (যেমন রাতে ঘুমানোর সময়)। সম্ভবত, মানুষের প্রাথমিক পূর্বপুরুষগণ ঠিক একই আকারের ছোট আকারের দল গঠন করে বসবাস করত। বর্তমান শিকারি-সংগ্রাহক (hunter gatherer) সমাজগুলোর আকারের ভিত্তিতে বলা যায়, আমাদের নিকট অতীতের প্রস্তরযুগীয় [[hominid|হোমিনিডরাও]] কয়েক শত মানুষের দল গঠন করে বাস করত। মানব বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় সমাজের আকার বড় হতে থাকলে সামাজিক সংঘবদ্ধতা বজায় রাখার জন্য নতুন ধারার শাসন ব্যবস্থার প্রয়োজন দেখা যায়। ১০০ থেকে ২০০ জন মানুষের এই গোষ্ঠীতে সামাজিক নিয়ন্ত্রণ (social control), সংঘাত সমাধান (conflict resolution) এবং দলীয় সংহতি বজায় রাখার (group solidarity) জন্য সমাজে নৈতিকতার উদ্ভব হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ডঃ ডে ওয়ালের মতে, মানব নৈতিকতায় দুটো নতুন স্তর দেখা যায়; যা অন্যান্য প্রাইমেট সমাজে পরিলক্ষিত হয় না। মানুষ সমাজ নির্ধারিত নৈতিকতাকে অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে বাধ্য করার জন্য পুরস্কার এবং না করলে ফলস্বরূপ শাস্তির ব্যবস্থা করেছে। ব্যক্তির পুরস্কার অথবা শাস্তি পাওয়ার মাধ্যমে তার সামাজিক মর্যাদার নিয়ন্ত্রিত হয়। এছাড়াও মানুষ যুক্তি দিয়ে কিছু বিশ্লেষণ করা এবং বিচার ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছে; যা প্রাণীজগতের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।
 
মনস্তত্ত্ববিদ ম্যাট জে. রোজানো বিশদ গবেষণা করে বলেন যে, নৈতিকতার পরে এবং নৈতিকতার উপর ভিত্তি করেই ধর্মের উৎপত্তি হয়েছে। ধর্মে ঐশ্বরিক ব্যক্তিত্ব, আত্মা এবং স্রষ্টাকে প্রবেশ করানোর পরে মানুষ বুঝতে পারে, এই ধর্মের ভয় দেখিয়ে ব্যক্তিতে-ব্যক্তিতে স্বার্থপরতা রহিত করা যাবে এবং দলবদ্ধভাবে বাস করতে গেলে একে অপরের সাথে আন্তঃসহযোগিতা বৃদ্ধি করা যাবে। যা কোনো জীবের প্রতিযোগিতামুলক পৃথিবীতে টিকে থাকার জন্য খুবই জরুরী।<ref name="supernature">
{{cite journal
|last=Rossano
|first=Matt
|title=Supernaturalizing Social Life: Religion and the Evolution of Human Cooperation
|year=2007
|url=http://www2.selu.edu/Academics/Faculty/mrossano/recentpubs/Supernaturalizing.pdf}}
</ref> ধর্মের উৎপত্তি এবং সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে তার পরিবর্তন সমাজবদ্ধ মানুষের টিকে থাকার জন্য বাড়তি সুবিধা এনে দিয়েছিল।<ref>[https://www.nytimes.com/2007/03/20/science/20moral.html Nicholas Wade. ''Scientist Finds the Beginnings of Morality in Primate Behavior''. New York Times. March 20, 2007.]{{unreliable source?|date=September 2015}}</ref><ref>[http://eprints.gla.ac.uk/3723/01/rutherford3723.pdf Matthew Rutherford. ''The Evolution of Morality''. University of Glasgow. 2007. Retrieved June 6, 2008]</ref>
 
==ধর্মের বিবর্তনীয় উৎস==