বোর মডেল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Turkmen (আলোচনা | অবদান)
103.115.26.76-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে NahidSultanBot-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত
ট্যাগ: পুনর্বহাল
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
১৫ নং লাইন:
|সংখ্যা নং=9
}}</ref>
যে সকল কক্ষপথে ইলেকট্রন প্রদক্ষিনপ্রদক্ষিণ করতে পারে তাদের কে দেখানো হয়েছে ধূসর বৃত্ত দ্বারা;তাদের ব্যাসার্ধ এমন ভাবে বৃদ্ধি পায় যেন ''n''<sup>2</sup>, যেখানে ''n'' [[প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা]]। এখানে যে পরিবর্তন প্রদর্শিত হয়েছে তা [[বামার সিরিজ]] এর প্রথম রেখা উৎপন্ন করে এবং হাইড্রোজেনে এটি ৬৫৬ [[ন্যানোমিটার]] [[তরঙ্গদৈর্ঘ]] বিশিষ্ট ফোটন কনায় পরিণত হয় (লাল রং).]]</small>
 
'''পারমাণবিক পদার্থবিদ্যায়''' সর্বপ্রথম, নীলস বোর, ১৯১৩ সালে পরমাণুর “বোর মডেল” বা রাদারফোর্ড-বোর মডেল উপস্থাপন করেন। তিনি দেখান [[পরমাণু]] একটি ধনাত্বক আধানযুক্ত [[পারমা্ণবিক নিউক্লিয়াস|নিউক্লিয়াস]] এবং তাকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণরত [[ইলেকট্রন]] দ্বারা তৈরি ক্ষুদ্র কণিকা যেখানে ইলেকট্রনগুলো কতগুলি কক্ষপথে নিউক্লিয়াসের চারপাশে সৌরজগতের মতই ঘুর্নায়মান; কিন্তু [[মহাকর্ষ]] বলের পরিবর্তে এখানে ক্রিয়াশীল থাকে [[স্থিরবৈদ্যুতিক বল]]। ১৯০২ সালে [[কিউবিক পরমাণু|কিউবিক মডেল]], ১৯০৪ সালে [[প্লাম-পুডিং মডেল]] এবং [[স্যাটার্নিয়ান মডেল]] আর ১৯১১ সালে [[রাদারফোর্ড মডেল]] এর পরবর্তিতে ১৯১৩ সালে বোর তার এ মডেল উপস্থাপন করেন। রাদারফোর্ড মডেলের উন্নতি সাধনের মাধ্যমে এবং [[কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা]] সমন্বয়ে তিনি এ তত্ব দেন। পরবর্তিতে বোর মডেল বাতিল করা হলেও কোয়ান্টাম থিওরি টিকে থাকে।
 
এই মডেলের সার্থকতা হল এটি [[হাইড্রোজেন]] পরমাণুর [[বর্নালী]], [[রাইডবার্গ সুত্র]] দ্বারা প্রমানপ্রমাণ করতে সক্ষম হয়। রাইডবার্গ সুত্র পরিক্ষামুলকভাবে পরিচিত থাকলেও তাত্বিকভাবে এটি বোর মডেল প্রকাশের পুর্বে সফলতা অর্জন করে নি। বোর মডেল শুধুমাত্র রাইডবার্গ সুত্রের গঠনের-ই ব্যখ্যা করে না, বিভিন্ন ধ্রুবকের সাপেক্ষে এর পরিবর্তনের ও ব্যাখ্যা করে।
 
==উৎস==
 
বিংশ শতাব্দির প্রথমভাগে [[আর্নেস্ট রাদারফোর্ড]] এর পরীক্ষার মাধ্যমে এটি পরীক্ষিত যে [[পরমাণু]] মূলত ঋণাত্বক আধানযুক্ত ইলেক্ট্রন পরিবেষ্টিত ক্ষুদ্রাকার, ঘন, ধনাত্বক আধানযুক্ত একটি [[পারমাণবিক নিউক্লিয়াস|নিউক্লিয়াস]]।<ref name="bohr1">{{সাময়িকী উদ্ধৃতি | লেখক=Niels Bohr | শিরোনাম=On the Constitution of Atoms and Molecules, Part I | সাময়িকী=Philosophical Magazine | বছর=1913 | খণ্ড=26 | পাতাসমূহ=1–24 | ডিওআই= 10.1080/14786441308634955| ইউআরএল=http://web.ihep.su/dbserv/compas/src/bohr13/eng.pdf | সংখ্যা নং=151}}</ref> এ পরীক্ষিত উপাত্তের উপর ভিত্তি করে রাদারফোর্ড ১৯১১ সালে ইলেকট্রনের কক্ষপথে ঘুর্নায়মান পরমাণু মডেল উপস্থাপন করেন। তিনি এ মডেল কে সৌরজগতের সাথে তুলনা করেন, কিন্তু এ তুলনার কিছু ত্রুটি থেকে যায়। শাস্ত্রীয় বলবিজ্ঞানের সূত্রমতে ([[লার্মর সুত্র]]), নিউক্লিয়াসকে প্রদক্ষিনকালেপ্রদক্ষিণকালে ইলেকট্রন [[তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ]] করতে থাকবে আর ক্রমাগত শক্তি হারানোর কারণে ইলেকট্রন একটি সর্পিল পথে ১৬ পিকোসেকেন্ডে নিউক্লিয়াসে পতিত হবে।<ref>[http://www.physics.princeton.edu/~mcdonald/examples/orbitdecay.pdf Olsen and McDonald 2005]</ref> এটি একটি বিপ্লবী মডেল কারণ এটি দেখায় যে প্রত্যেক পরমাণুই পরিবর্তনশীল।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://www.ck12.org/flexbook/chapter/7512|শিরোনাম=CK12 – Chemistry Flexbook Second Edition – The Bohr Model of the Atom|প্রকাশক=|সংগ্রহের-তারিখ=30 September 2014}}</ref>
 
এছাড়া, যেহেতু সর্পিল পথে কেন্দ্রমুখী গমনের কারণে ভ্রমনের কক্ষপথ প্রতিনিয়ত ছোট হতে থাকে, বিকিরনের কম্পাঙ্ক প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকবে । অর্থাৎ এটি তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণের কম্পাঙ্কে পরিবর্তন আনে। ১৯ শতকের শেষভাগে [[ইলেকট্রিক ডিসচার্জ]] নিয়ে আরও গবেষনায় দেখা যায় যে পরমাণু একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের আলো বিকিরন করে (যা তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরন)।
 
এ সকল সমস্যার সমধানের জন্য ১৯১৩ সালে [[নীল্‌স বোর]] তার বোর-মডেল উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন যে, ইলেকট্রনের পরিভ্রমনের কতগুলো নির্দিষ্ট নিয়ম থাকবেঃ
# পরমাণুতে ইলেক্ট্রন নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিনপ্রদক্ষিণ করবে।
# নির্দিষ্ট কক্ষপথে অবস্থানকালে এরা স্থিতিশীল থাকবে, কোন বিকিরন করবে না। বোর এদেরকে "stationary orbits" বা নিশ্চল কক্ষপথ <ref>{{সাময়িকী উদ্ধৃতি | লেখক=Niels Bohr | শিরোনাম=On the Constitution of Atoms and Molecules, Part II Systems Containing Only a Single Nucleus | সাময়িকী=Philosophical Magazine | বছর=1913 | খণ্ড=26 | পাতাসমূহ=476–502 | ইউআরএল=http://web.ihep.su/dbserv/compas/src/bohr13b/eng.pdf | ডিওআই=10.1080/14786441308634993 | সংখ্যা নং=153}}</ref>)হিসেবে আখ্যায়িত করেন এসকল কক্ষপথের নিজস্ব শক্তি বর্তমান। এদেরকে শক্তিশেল বা [[শক্তিস্তর]] বলা হয়। এসকল শক্তিস্তরে পরিভ্রমনকালে ইলেকট্রন কোন প্রকার শক্তি অর্জন বা বিকিরন করে না। পরমাণুর বোর-মডেলের ভিত্তি মূলত, বিকিরন সম্পর্কিত প্ল্যাঙ্কের কোয়ান্টাম তত্ব।
# এক কক্ষপথ থেকে অন্য কক্ষপথে অবস্থান পরিবর্তনকালে ইলেকট্রন নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি অর্জন বা বিকিরন করে যা ওই দুই কক্ষপথের শক্তির পার্থক্য “v” এর সমান। [[প্ল্যাঙ্কের সম্পর্ক]] থেকে,
৪২ নং লাইন:
:<math>n \lambda = 2 \pi r.\,</math>
 
[[দে ব্রগলির তরঙ্গদৈর্ঘ|দে ব্রগলির তরঙ্গদৈর্ঘ্য]], ''λ'' = ''h''/''p'' কে পরিবর্তন করলে বোরের নীতি পাওয়া যায়। ১৯১৩ সালে বোর তার নীতি কে ততকালীন নিয়মের সাহায্যে প্রমানপ্রমাণ করলেও এর তরঙ্গের ব্যাপারে কোন ধারণা দেন নি। ১৯১৩ সালে ইলেকট্রন বা এরকম বস্তুর তরঙ্গধর্ম উত্থাপিত হয় নি।
 
১৯২৫ সালে [[কোয়ান্টাম বলবিদ্যা]] উপস্থাপিত হউ যেখানে কোয়ান্টাইজ্‌ড কক্ষপথে ইলেকট্রনের বিচরনের বোর-মডেল কে ইলেকট্রনের গতিপথের [[ম্যাট্রিক্স বলবিদ্যা|আরও সঠিক]] মডেলে রুপান্তর করা হয়। এই নতুন তত্ব উত্থাপন করেন [[ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ]]। আস্ট্রেলিয়ান পদার্থবিদ [[আরউইন শ্রুডিঙ্গার]] একই তত্বের [[শ্রুডিঙ্গার সমীকরন।|ভিন্ন রুপ]], তরঙ্গ তত্ব স্বাধীনভাবে এবং ভিন্ন যুক্তি দিয়ে উত্থাপন করেন। তিনি দে ব্রগলির পদার্থের তরঙ্গকে ব্যবহার করে একটি ত্রি-মাত্রিক সমীকরনের সমাধান খুজছিলেন যা [[হাইড্রোজেন-সম পরমাণু]]র নিউক্লিয়াসের ধনাত্বক আধানের প্রভাবে ঘুর্নায়মান ইলেকট্রন সমুহ কে ব্যখ্যা করে।
৪৮ নং লাইন:
==ইলেকট্রনের শক্তিস্তর==
[[File:Blausen 0342 ElectronEnergyLevels.png|thumb|চিত্রে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, লিথিয়াম, ও নিয়ন পরমাণুর শক্তিস্তর দেখানো হয়েছে]]
আলো থেকে অনেক কম গতিসম্পন্ন এবং পরস্পরকে প্রদক্ষিনরতপ্রদক্ষিণরত দুটি চার্জিত কনার ক্ষেত্রে বোর-মডেল প্রায় সঠিক ফলাফল দিতে পারে। শুধুমাত্র [[হাইড্রোজেন পরমাণু]]র মত একক-ইলেক্ট্রন বিশিষ্ট পরমাণু কিংবা একক আয়নযুক্ত [[হিলিয়াম]] বা দ্বিত্ব-আয়নযুক্ত [[লিথিয়াম]] ছাড়াও [[পসিট্রনিয়াম]] ও যেকোনো পরমাণুর [[রাইডবার্গ অবস্থা]]র ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য যেখানে একটি ইলেক্ট্রন অন্য যে কোন কিছুর থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। [[কে-লাইন (স্পেক্টোমেট্রি)|কে-লাইন]] হতে এক্স-রে রুপান্তরের গননায় একে ব্যবহার করা যায় যদি অন্যান্য ধারনাগুলো সংযোগ করা হয়(দেখুন, [[মোসলের নীতি]])। উচ্চ শক্তি পদার্থবিদ্যায় [[কোয়ার্ক|হেভি কোয়ার্ক]] [[মেসন]] এর ভর নির্নয়ে একে ব্যবহার করা যায়।
 
কক্ষপথের গননায় দুইটি অনুমানের প্রয়োজন।
৯৬ নং লাইন:
বোর নীতি ইলেকট্রনের ভরের পরিবর্তে এর [[হ্রাসকৃত ভর]] কে সঠিক ভাবে ব্যবহার করেঃ <math>m_\text{red} = \frac{m_\mathrm{e} m_\mathrm{p}}{m_\mathrm{e} + m_\mathrm{p}} = m_\mathrm{e} \frac{1}{1+m_\mathrm{e}/m_\mathrm{p}}</math>। এ সংখ্যাগুলো প্রায় সমান কারণ ইলেকট্রনের তুলনার প্রোটনের ভর প্রায় ১৮৩৬.১ গুন বেশি। এই ব্যাপারটি ঐতিহাসিক ভাবে গুত্বপূর্ন কারণ এটি রাদারফোর্ড কে বওর মডেলের গুরুত্ব বুঝতে সাহায্য করে। এটি ব্যখ্যা করে যে একক-আয়নিত হিলিয়ামের স্পেক্ট্রামে উৎপন্য রেখা হাইড্রোজেনের ৪ নং ফ্যাক্টরের স্পেক্ট্রামে উৎপন্য রেখা মুলত একই রকম।
 
পজিট্রনিয়ামের জন্যও সূত্রটি [[হ্রাসকৃত ভর]] ব্যবহার করে, কিন্তু এক্ষেত্রে এটি হয় ইলেকট্রনের ভরের দ্বি-গুন। এই ব্যাসার্ধের যেকোনো মানের জন্য ইলেকট্রন এবং পজিট্রন উভয়েই তাদের সাধারণ গতির অর্ধেক গতিতে তাদের সাধারণ ভরকেন্দ্রকে প্রদক্ষিনপ্রদক্ষিণ করতে থাকে। এ সময় গতিশক্তি থাকে সাধারন গতিশক্তির এক-চতুর্থাংশ। মোট গতিশক্তি হবে একটি ভারী নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘুর্নায়মান একটি ইলেকট্রনের গতিশক্তির অর্ধেক।
:<math> E_n = {R_\mathrm{E} \over 2 n^2 } </math> (পজিট্রনিয়াম)
 
১১৫ নং লাইন:
::<math>\frac{1}{\lambda}=R \left( \frac{1}{n_{f}^2} - \frac{1}{n_{i}^2} \right). \,</math>
 
এটি [[রাইডবার্গ সূত্র]] নামে পরিচিত, এবং রাইডবার্গ ধ্রুবক ''R'' হল [[সাধারন একক]] এ <math>R_\mathrm{E}/hc</math>, বা <math>R_\mathrm{E}/2\pi</math>। এই তত্ত্ব ১৯ শতকের [[স্পেক্ট্রোস্কোপি]] নিয়ে গবেষনারত বিজ্ঞানীদের কাছে পরিচিত ছিল, কিন্তু বোরের পূর্বে এর কোন তাত্ত্বিক ব্যখ্যা কিংবা R এর মান সংক্রান্ত কোন তাত্ত্বিক ধারণা কেউ দেন নি। বিভিন্ন স্পেক্ট্রাল রেখা যেমন [[লাইম্যান সিরিজ|লাইম্যান]] (<math>n_f = 1</math>), [[বামার সিরিজ|বামার]] (<math>n_f = 2</math>), [[পাশ্চেন সিরিজ|পাশ্চেন]] (<math>n_f = 3</math>) এর উপর পরীক্ষামূলক পর্যবেক্ষনের উপর ভিত্তি করে বোর সূত্র গঠিত হয়। তখনও পর্যন্ত অন্য রেখাগুলো পর্যবেক্ষন করা হয় নি বলে বোরের মডেল সাথে সাথে গ্রহনগ্রহণ করা হয়।
 
একের অধিক ইলেক্ট্রন সম্পন্ন পরমাণুর ক্ষেত্রে, রাইডবার্গ সূত্রের পরিবর্তন করা যায় "Z" এর স্থানে "Z − b" অথবা "n" এর স্থানে "n − b" বসিয়ে, যেখানে b একটি ধ্রুবক যা অন্তর্গত-শেল ও অন্যান্য ইলেকট্রনের প্রভাবে স্ক্রীনিং ইফেক্ট কে প্রদর্শন করে। বোর তার মডেল উপস্থাপনের পুর্বে এটি প্রায়োগিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল।