পুলিনবিহারী দাস: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
→‎কর্মজীবন: রচনাশৈলী
২৫ নং লাইন:
ঢাকার পূর্বতন ডিসট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট বাসিল কপ্লেস্টন অ্যালেনকে সরানোর এক জবরদস্ত পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। ১৯০৭ সালের ২৩শে ডিসেম্বর অ্যালেন যখন ইংল্যান্ডে ফেরার উদ্দেশে গোয়ালন্দ স্টেশনে পৌঁছলেন ,তখন তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হলে তিনি একটুর জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন। এর <ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=ঢাকা|শেষাংশ=বাসিল কপ্লেস্টোন আলেন|প্রকাশক=দ্য পাইওনিয়ার প্রেস|ইউআরএল=http://www.archive.org/details/daccaallen00alle|পাতা=53}}</ref> কিছু দিন পরেই চারশত জন দাঙ্গাবাজ মুসলিম হিন্দু বিরোধী ধ্বনি দিতে দিতে পুলিন বিহারীর বাড়িতে আক্রমণ করলে তিনি মাত্র কয়েকজন সঙ্গীদের নিয়ে সাহসিকতার সাথে ঐ দাঙ্গাবাজদের মোকাবিলা করেন।
১৯০৮এর১৯০৮-এর গোড়ার দিকে পুলিন বিহারী দাশ বাহ্রা ডাকাতি সংগঠিত করেন। দিনের আলোতে [[ঢাকা]] জেলার অধীনস্থ [[নবাবগঞ্জ উপজেলা (ঢাকা)|নবাবগঞ্জ থানার]] অন্তর্গত বরার জমিদার বাড়িতে একদল বিপ্লবীদের সাথে নিয়ে এক রোমাঞ্চকর ডাকাতি করেন এবং সেই লুণ্ঠিত অর্থ অস্ত্রশস্ত্র, গোলা বারুদ কেনার কাজে ব্যয়িত করেন।
সেই বছরেই ওনাকে ভূপেশ চন্দ্র নাগ, শ্যাম সুন্দর চক্রবর্তী, কৃষ্ণ কুমার মিত্র, সুবোধ মল্লিক, অশ্বিনী দত্ত সহযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এবং [[মন্টোগোমারি]] কারাগারে নিক্ষিপ্ত করা হয় কিন্তু শত অত্যাচার, শত নিষ্পেষণ তার বিপ্লবী সত্তাকে অবদমিত করে রাখতে পারেনি। ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে জেলের অন্ধকার কুঠুরি থেকে বেরিয়ে আসার পর আবার তার বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড শুরু হয়। এই সময়েই অনুশীলন সমিতির ঢাকা দল [[কলকাতা]] শাখাটিকে পরিচালনা করতে থাকে। যদিও প্রমথনাথ মিত্রের মৃত্যুর পর এই দুটি দল পৃথক হয়ে যায়।
 
===আন্দামান জেল===
১৯১০ সালের জুলাই মাসে ৪৬জন বিপ্লবী সহযোগে পুলিন বিহারী দাশকে ঢাকা ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আরও ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিচারে পুলীনবাবুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া এবং [[সেলুলার জেল]]এ স্থানান্তর করা হয় যেখানে হেমচন্দ্র দাস, [[বারীন্দ্রকুমার ঘোষ]], [[বিনায়ক সাভারকর]]এর মত বিখ্যাত বিপ্লবীদের সান্নিধ্যে তিনি আসেন। তিনি এবং [[ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী]] উভয়েই ছিলেন অনুশীলন সমিতির প্রথম যুগের নেতা যারা সেলুলার জেলে বন্দি ছিলেন।
১৯১৮ সালে পুলিনের সাজা কিছুটা কমে এবং তাকে বাড়িতে নজরবন্দী করে রাখা হয় এবং ১৯১৯ সালে তাকে পুরিপুরিভাবে মুক্তি দেওয়া হয় এবং মুক্তি পাওয়ার পর সমিতির কাজে আত্মনিয়োগ করার চেষ্টা করেন কিন্তু তখন তার সেই সংগঠনকে সরকার নিষিদ্ধ করার ফলে তার সদস্যরা এখানে ওখানে ছড়িয়ে পড়েন। এরপর [[নাগপুর]] ও পরে [[কলকাতা]]য় কংগ্রেস অধিবেশনে অবশিষ্ট বিপ্লবীরা [[মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী]]র আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন কিন্তু পুলিন বিহারী দাশ কখনও মোহনদাসের আদর্শের সাথে আপোস করতে চাননি এবং তাকে তার নেতা বলে মানতে পারেননি। সেই সময় তার সমিতির নিষিদ্ধকরণ হওয়ার ফলে ১৯২০ সালে ভারত সেবক সঙ্ঘ নামে আর একটি দল গঠন করেন। এরপর ব্যারিস্টার এস.আর.দাসের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘হক কথা’ এবং ‘স্বরাজ’ নামে দুটি সাময়িক পত্রিকা প্রকাশ করেন এবং সেখানে গান্ধীর অহিংস আন্দোলনের সমালোচনা করেন। সমিতির কাজ গোপনে চললেও সমিতির সাথে তার বিরোধ এরপর প্রকাশ্যে চলে আসে। এরপর সমিতির সাথে তিনি সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন এবং ভারত সেবক সঙ্ঘকে ভেঙ্গে দিয়ে ১৯২২ সালে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর নেন। ১৯২৮ সালে কলকাতার মেছুয়া বাজারে বঙ্গীয় ব্যয়াম সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। এটা ছিল শারীরিক প্রশিক্ষণের একটি কেন্দ্র এবং কার্যত: একটি আখড়া যেখানে যুবকদের লাঠি চালনা, তলোয়ার চালনা ও কুস্তি শেখানো হত।
 
== শেষ জীবন ==
তিনি বিবাহিত ছিলেন এবং তার তিন পুত্র এবং দুই কন্যা ছিল। পরবর্তীকালে এক যোগীর সংস্পর্শে আসেন এবং তার মধ্যে ত্যাগের বাসনা জাগ্রত হয়। এরপর ১৯৪৯ সালের ১৭ই অগাস্ট ৭২ বৎসর বয়সে তার এই সুদীর্ঘ কর্মবহুল জীবনে ছেদ পরে। ১৯২৮ সালে থেকে ২০০৫ পর্যন্ত পুলীন বাবুর দ্বিতীয় পুত্র সৌরেন্দ্রর তত্ত্বাবধানে সেই বঙ্গীয় ব্যয়াম সমিতি সাফল্যের সাথে পরিচালিত হয়েছিল। বর্তমানে ওনার নাতিদ্বয় বিশ্বরঞ্জন ও মনীশরঞ্জন পুলীন বিহারি দাসের আদর্শকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারের কাছে সাহায্যপ্রার্থী হয়েছেন। সেই সময়ে [[স্বামী সত্যানন্দ গিরি]] এবং তার বন্ধুগণ তার বাড়ির কাছেই একটি স্থানে মিলিত হতেন এবং সৎসঙ্গ করতেন<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=A Collection of Biographies of 4 Kriya Yoga Gurus by Swami Satyananda Giri|শেষাংশ=যোগা নিকেতন|প্রকাশক=iUniverse|ইউআরএল=http://books.google.co.in/books?id=nJcFB8iarboC|আইএসবিএন=978-0-595-38675-8|পাতা=188}}</ref>।