গ্রিন বুক (চলচ্চিত্র): সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Prodeep Roy (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৩৬ নং লাইন:
সময়টা ১৯৬২ সাল। ডন শার্লি নামের একজন আফ্রিকান-আমেরিকান ক্লাসিক ও জ্যাজ পিয়ানিস্ট পেশাগত কারণে লম্বা এক সফরে বের হবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিড ওয়েস্ট ও ডিপ সাউথে বিভিন্ন রাজ্যে আয়োজিত আট সপ্তাহব্যাপী একটি কনসার্ট ট্যুরে পিয়ানো বাজানোর জন্য তিনি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন।
 
সমস্যা হলো সেই সময় কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের সবখানে অবাদ বিচরণের ক্ষেত্রে কিছু বিধি নিষেধ ছিল এবং আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে সেটি ছিল আরো ভয়াবহ।
 
ডন শার্লিকে প্রায় দু’মাসব্যাপী রাস্তায় গাড়ি ভ্রমণের মধ্য দিয়ে সেই কনসার্টগুলোতে অংশগ্রহনঅংশগ্রহণ করতে হবে, এই কাজের জন্য তাই তিনি একজন দায়িত্ববান ও বিশ্বাসভাজন গাড়িচালকের সন্ধান করতে শুরু করেন।
 
অন্যদিকে,নিউ ইয়র্কের একটি নাইট ক্লাবে ফ্রাঙ্ক ভালেলঙ্গা নামের এক ইতিলিয়ান-আমেরিকান লোক কাজ করতেন, যদিও তিনি টনি লিপ নামেই সকলের কাছে বেশি পরিচিত ছিলেন। পুনঃসংস্কারের জন্য নাইট ক্লাবটি বন্ধ হয়ে যাওয়াতে তিনি কার্যত বেকার হয়ে যান এবং নতুন চাকরির খুঁজতে থাকেন। আর এভাবেই একদিন শার্লির বাসায় ড্রাইভার হিসেবে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে চলে যান টনি। পরিচয় পর্ব ও টনির অভিজ্ঞতা সম্পর্কে টুকটাক জানার পর শার্লি তাকে বললেন যে, তার আসলে শুধু একজন ড্রাইভার নয় তার বাকি কাজগুলো যেমনঃ জুতো পালিশ, কাপড় ইস্তি করে দিতে পারবে এমন একজন ব্যক্তি দরকার। শার্লির প্রস্তাবে টনি রাজি না হয়ে সোজা সাপটা তাকে বলে দেন যে, তিনি শুধু ড্রাইভারের দায়িত্ব পালন করতে রাজি আছেন; জুতো পালিশ, কাপড় ইস্তি তাকে দিয়ে হবে না। টনি জানতেন, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাংশের অঞ্চলগুলোতে ভ্রমণ করাটা কতটা ঝামেলাপূর্ণ ও পরিশ্রমের কাজ। তাই তিনি নির্ধারিত পারিশ্রমিক থেকে বেশি দাবি করে বসেন।
 
টনি মানুষ হিসেবে বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ ও সৎ তো ছিলেনই সেই সাথে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতো সাহস ও বুদ্ধিমত্তাও যে তার ছিল - সে কথা শার্লির কানে এসেছিল। তাই টনির ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ কাজ করছিল তার। তিনি টনিকে ড্রাইভার হিসেবে নিযুক্ত করেন।
 
আর এভাবেই তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থার গায়ে বড় বড় হরফে লেখা বর্ণবাদ ও পৃথকীকরণের মতো নির্মম বাস্তবতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা নির্মল বন্ধুত্বের ও দৃষ্টান্তমূলক মানবতাবাদের রূপরেখা ফুটিয়ে তোলার মধ্যদিয়ে সিনেমার গল্পটি নতুন এক বাঁক নেয়।
 
সিনেমাতে মূলত ডন শার্লি নামের এক পিয়ানো বাদক ও তার সহচর টনি সড়কপথের দীর্ঘকালীন ভ্রমণ ও ভ্রমণের সময় ঘটে যাওয়া নানা ছোট-বড় ঘটনা, বাধা-বিপত্তি, অতর্কিত ঝামেলা ও যে সমস্ত বাজে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
 
শার্লি ও টনি নিজেদের বিবেক-বুদ্ধি ও কৌশল প্রয়োগ করে তাদের ভ্রমণের সুন্দর একটা পরিসমাপ্তি টানেন। তবে যে উপাদানগুলো তাদের গল্পকে একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরার মতো পূর্ণতা দিয়েছিল, সেগুলো ছিল তাদের পারস্পরিক আস্থা, শ্রদ্ধাবোধ ও দায়িত্বশীলতা। সবথেকে বড় ব্যাপার হলো, তাদের দুজনের ব্যক্তিত্বে জেগে ওঠা মনুষ্যত্ববোধ। ভিন্ন শ্রেণী, পেশা, বর্ণ, জাতীয়তা ও রুচির দুজন মানুষ কিভাবে একে অপরের খুব ভালো বন্ধুতে পরিণত হলেন তা সিনেমাটিতে খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।
৫৬ নং লাইন:
শার্লি ও টনি যাত্রা শুরু করার পর সিনেমার গল্পটি যেন ভিন্ন এক ছন্দে প্রবাহিত হতে থাকে। একইসাথে অনেকটা পথ চলতে হলে দুজন মানুষের মধ্যে যে মতের মিল-অমিল,পরস্পরের আচরণের প্রতি সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি ও পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর আলাদা আলাদা উপায় আছে সেসব একে একে সিনেমার কাহিনীতে চিত্রায়িত করা হয়েছে। শার্লি নিপাট ভদ্রলোক, কখনো কোনো ঝগড়া-বিবাদ অথবা ঝামেলায় জড়াতে পছন্দ করতেন না এবং তিনি ছিলেন একজন সচেতন নাগরিক। অন্যদিকে টনি ছিলেন কথাবার্তায় পটু ও যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশকে মাথা ঠান্ডা রেখে হালকা করার ক্ষেত্রে পারদর্শী ব্যক্তি। তবে শার্লির মতো তার আচার-ব্যবহারে তেমন একটা নম্রভাব ছিল না। তাই প্রথমদিকে একে অপরের সাথে নানা ছোটখাট বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা বেঁধে যেত। পরে অবশ্য ধীরে ধীরে পথ চলতে চলতে তাদের মধ্যে বেশ ভালো একটা বোঝাপড়া গড়ে ওঠে।
 
শার্লি যেমন টনির কাছ থেকে জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলোকে উপভোগ করতে শিখেছিলেন, ঠিক তেমনি টনিও শার্লির কাছ থেকে অনেক নতুন গুণ রপ্ত করেছিলেন। টনির কাছ থেকে শার্লি বাইরের দুনিয়ার নিষ্ঠুরতার কথা জানতে পারেন, আর শার্লির কাছ থেকে টনি শেখেন গুছিয়ে নিজের মনের কথা প্রকাশের ভাষা।
 
সেই যাত্রাপথে শার্লি ও টনি একটি ব্যাপার খুব কাছ থেকে আবিষ্কার করেন। সেটা হচ্ছে, সমাজ ব্যবস্থার গোড়ামি। শার্লির মতো বিত্তশালী ও গুণী ব্যক্তিও শুধু কালো চামড়াধারী হওয়াতে সমাজের উচ্চপদস্থ মানুষের সাথে বসে খেতে পারবেন না এবং সাদা চামড়ার লোকজন দ্বারা প্রতি পদে পদে অপদস্থ হবার সম্ভাবনা তো আছেই। অনেক শিক্ষিত লোকও যেখানে বর্ণবাদী আচরণ করে থাকেন,সেখানে টনির মতো অল্প শিক্ষিত খেটে খাওয়া লোকের অন্তরে বর্ণবাদের ছিটেফোঁটাও ছিল না। সমাজের উঁচু স্তরের মানুষদের সাথে মেলামেশা করেও শার্লি টনির দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেন, টনিও নিজের ছোট দুনিয়ার সাথে শার্লির পরিচয় করিয়ে দেন।
 
সিনেমাটির সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হচ্ছে, অনেক হাস্যরস ও মজাদার ঘটনার মধ্য সমকামিতা, বর্ণবাদ ও পৃথকীকরণের মত তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়গুলো খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। দুজন ভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষের স্বার্থহীন বন্ধুত্বের সম্পর্ক খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
 
কনসার্ট শেষ করে ফেরার পথে টনি একটু অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। শার্লি তখন নিজে গাড়ি চালিয়ে টনিকে তার বাসায় পৌঁছে দেন। ক্রিস্টমাসের দিন শার্লি টনিকে চমকে দিয়ে তার বাসায় গিয়ে উপস্থিত হন। টনির স্ত্রী ডোলোরসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, "আপনার স্বামীকে আমার সাথে শেয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ"।  
 
==কুশীলব==
৮১ নং লাইন:
 
== নির্মাণ ==
সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এ সিনেমাটির চিত্রনাট্য মূলত বাস্তবের ডন শার্লি ও টনি লিপের সাক্ষাৎকার ও সে সময়ে টনির নিজের স্ত্রীর কাছে পাঠানো কিছু চিঠির ভিত্তিতে সাজানো হয়েছে। সিনেমার তিনজন চিত্রনাট্যকারের মধ্যে একজন তো ছিলেন খোদ টনি লিপের ছেলে নিক ভালেলঙ্গা। বাকি দুই চিত্রনাট্যকার হলেন পিটার ফ্যারেলি ও ব্রায়ান হেইস কারি। তাদের মধ্যে পিটার ফ্যারেলি সিনেমাটি পরিচালনার দায়িত্বেও ছিলেন।<br />
 
== মুক্তি ==
<br />
 
== সংবর্ধনা ==
<br />
 
== বিতর্ক ==