শ্রীকৃষ্ণকীর্তন: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
১৪ নং লাইন:
 
গ্রন্থপ্রকাশের প্রায় ১১ বছর পর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকায় রমেশ বসু সম্ভবত ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের নামকরণকেন্দ্রিক বিতর্কের সূত্রপাত ঘটান। এরপর বাংলা সাহিত্যের সারস্বত সমাজে এ-নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক উপস্থিত হয়। যাঁরা ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামকরণের বিরোধী ছিলেন, তাঁদের যুক্তি ছিল দ্বিমুখী। প্রথমত, ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ একটি আদিরসাত্মক অশ্লীল কাব্য – এতে শ্রী বা কীর্তন কোনওটিই উপস্থিত নেই। দ্বিতীয়ত, পুথির সঙ্গে যে চিরকূটটি পাওয়া যায়, তাতে ‘শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ব্ব’ বলে একটি কথা লিখিত আছে। অনেকে মনে করেন গ্রন্থের মূল নাম ‘শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ’। প্রথম যুক্তিটি আধুনিক কাব্যবিচারের দৃষ্টিতে খুবই দুর্বল; কিন্তু আধুনিক গবেষকগণ দ্বিতীয় দাবিটি প্রসঙ্গেও যথেষ্ট সন্দিহান। <ref>''বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত'', প্রথম খণ্ড, অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, মডার্ণ বুক এজেন্সী প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ২০০৬, পৃ. ২২৯</ref> <ref>''শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বড়ু চণ্ডীদাস বিরচিত'', ডঃ মিহির চৌধুরী কামিল্যা সম্পাদিত, শিলালিপি, কলকাতা, ২০০৫ (দ্বিতীয় প্রকাশ), প্রবেশক, পৃষ্ঠা ১১</ref> এই কারণে অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাব করেছেন, {{cquote|যতদিন শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের যথার্থ নাম আবিষ্কৃত না হচ্ছে ততদিন সম্পাদক বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ প্রদত্ত এই নামটিই স্বীকার করতে হবে।<ref>''বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত'', প্রথম খণ্ড, অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, মডার্ণ বুক এজেন্সী প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ২০০৬, পৃ. ২২৯</ref>}}
 
==কবি==
{{main|বড়ুচণ্ডীদাস}}
 
‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যের রচয়িতা বড়ুচণ্ডীদাস। যদিও তাঁর আত্মপরিচয় বা জীবনকথা জাতীয় কিছু পাওয়া যায় না বলে তাঁর প্রকৃত পরিচয় কিছুটা ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। কাব্যে তাঁর তিনটি ভণিতা পাওয়া যায় – ‘বড়ুচণ্ডীদাস’, ‘চণ্ডীদাস’ ও ‘আনন্ত বড়ুচণ্ডীদাস’। এর মধ্যে ‘বড়ুচণ্ডীদাস’ ভণিতা মিলেছে ২৯৮টি স্থানে ও ‘চণ্ডীদাস’ ভণিতা মিলেছে ১০৭ বার।<ref>শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বড়ুচণ্ডীদাস বিরচিত, ডঃ মিহির চৌধুরী কামিল্যা, শিলালিপি, শিলালিপি, কলকাতা, ২০০৫ (২য় প্রকাশ), প্রবেশক পৃষ্ঠা ৪</ref> ৭টি পদে ব্যবহৃত ‘আনন্ত’ শব্দটি প্রক্ষিপ্ত বলেই মনে করা হয়। <ref>শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বড়ুচণ্ডীদাস বিরচিত, ডঃ মিহির চৌধুরী কামিল্যা, শিলালিপি, শিলালিপি, কলকাতা, ২০০৫ (২য় প্রকাশ), প্রবেশক পৃষ্ঠা ৪</ref> ডঃ মিহির চৌধুরী কামিল্যা মনে করেন, চণ্ডীদাস তাঁর নাম এবং বড়ু প্রকৃতপক্ষে তাঁর কৌলিক উপাধি বাঁড়ুজ্যে বা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অপভ্রংশ। <ref>শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বড়ুচণ্ডীদাস বিরচিত, ডঃ মিহির চৌধুরী কামিল্যা, শিলালিপি, শিলালিপি, কলকাতা, ২০০৫ (২য় প্রকাশ), প্রবেশক পৃষ্ঠা ৪</ref> কবি চৈতন্যপূর্ববর্তীকালের মানুষ। সম্ভবত পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে তিনি জীবিত ছিলেন। বাংলা সাহিত্যে চণ্ডীদাস সমস্যা এবং পদাবলির চণ্ডীদাসকে নিয়ে বাঁকুড়া ও [[বীরভূম জেলা|বীরভূমের]] মধ্যে যত বিবাদই বিদ্যমান থাকুক না কেন, ডঃ মিহির চৌধুরী কামিল্যা ভাষাতাত্ত্বিক তথ্যপ্রমাণের সাহায্যে প্রমাণ করেছেন, ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ রচয়িতা বড়ুচণ্ডীদাস বাঁকুড়া জেলার [[বাঁকুড়া সদর মহকুমা|সদর মহকুমাস্থ]] ছাতনার অধিবাসী ছিলেন। <ref>শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বড়ুচণ্ডীদাস বিরচিত, ডঃ মিহির চৌধুরী কামিল্যা, শিলালিপি, শিলালিপি, কলকাতা, ২০০৫ (২য় প্রকাশ), প্রবেশক পৃষ্ঠা ৫</ref> <ref>প্রবন্ধ বাঁকুড়ার উপভাষা ও শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, বাঁকুড়ার উপভাষা, ডঃ মিহির চৌধুরী কামিল্যা, হরষিৎ মিশন, কলকাতা, ১৯৭২</ref> বড়ুচণ্ডীদাস বাসলী দেবীর উপাসক ছিলেন। এই বাসলী দেবী প্রকৃতপক্ষে শক্তিদেবী [[কালী|কালীর]] অপর নাম।
 
==তথ্যসূত্র==