সমন্বিত বর্তনী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Zaheen (আলোচনা | অবদান)
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৬ নং লাইন:
 
==সমন্বিত বর্তনী উদ্ভাবনের ইতিহাস==
১৯৪৭ সালে আমেরিকান টেলিফোন অ্যান্ড টেলিগ্রাফ কোম্পানির বেল ল্যাবরেটরিস পরীক্ষাগারে উইলিয়াম শকলি ও তাঁর সহযোগীদের উদ্ভাবিত ট্রানজিস্টর নামক যন্ত্রাংশ হচ্ছে সমন্বিত বর্তনীর আদি উৎস। শকলি ও তাঁর দল (জন বার্ডিন ও ওয়াল্টার ব্র্যাটেইন যার অন্যতম সদস্য ছিলেন) বের করেন যে সঠিক পরিস্থিতিতে ইলেকট্রনগুলি কিছু কেলাসের পৃষ্ঠতলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। এই প্রতিবন্ধকতাকে নিয়ন্ত্রণ করে কীভাবে কেলাসের ভেতর দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সে ব্যাপারে তারা জ্ঞান অর্জন করেন। এভাবে কেলাসের ভেতর দিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে তারা এমন একটি যন্ত্রাংশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হলেন, যা কিছু নির্দিষ্ট বৈদ্যুতিক কাজ সম্পাদন করতে পারত, যেমন সংকেত বা সিগনালের বৃহদীকরণ। এই কাজগুলি তার আগে ভ্যাকুয়াম টিউব তথা বায়ুশূন্য নলের মাধ্যমে সম্পাদন করা হত। তারা এই নতুন যন্ত্রাংশের নাম দিলেন ট্রানজিস্টর। ট্রানজিস্টর শব্দটি ছিল ট্রান্সফার (হস্তান্তর) এবং রেজিস্টর (রোধক) –এই দুই ইংরেজি শব্দের যোগফল। এভাবে কঠিন উপাদান-পদার্থ ব্যবহার করে ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ তৈরি করার যে বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রটি তৈরি হল, তার নাম দেওয়া হল কঠিন-অবস্থার ইলেকট্রনিকস। কঠিন-অবস্থার যন্ত্রাংশগুলি বায়ুশূন্য নল বা ভ্যাকুয়াম টিউবের তুলনায় অনেক দৃঢ়, সহজে ব্যবহারযোগ্য, বেশি নির্ভরযোগ্য, অনেক ক্ষুদ্রাকার ও অনেক কম ব্যয়বহুল ছিল। ট্রানজিস্টর তৈরির মূলনীতি ও একই উপাদান ব্যবহার করে প্রকৌশলীরা শীঘ্রই রোধক,ধারক ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ উদ্ভাবন করেন। এর ফলে ইলেকট্রনিক যন্ত্রগুলি এত ক্ষুদ্র হয়ে যায় যে সেগুলির মধ্যকার বিদঘুটে সংযোগস্থাপক তারগুলিই ছিল বর্তনীর সিংহভাগ আয়তন দখলকারী অংশ।
 
১৯৫৮ সালে টেক্সাস ইনসট্রুমেন্টসের জ্যাক কিলবি<ref name="TIJackBuilt">[http://www.ti.com/corp/docs/kilbyctr/jackbuilt.shtml ''The Chip that Jack Built''], (c. 2008), (HTML), Texas Instruments, Retrieved 29 May 2008.</ref> In his patent application of 6 February 1959,<ref>Jack S. Kilby, Miniaturized Electronic Circuits, United States Patent Office, US Patent 3,138,743, filed 6 February 1959, issued 23 June 1964.</ref><ref>{{citeবই bookউদ্ধৃতি| lastশেষাংশ = Winston| firstপ্রথমাংশ = Brian| titleশিরোনাম = Media Technology and Society: A History: From the Telegraph to the Internet| urlইউআরএল = https://books.google.com/?id=gfeCXlElJTwC&pg=PA221| yearবছর = 1998| publisherপ্রকাশক = Routledge| isbnআইএসবিএন = 978-0415142304| pageপাতা = 221 }}</ref> এবং ফেয়ারচাইল্ড সেমিকন্ডার কর্পোরেশনের রবার্ট নয়েস স্বাধীনভাবে নিজ নিজ উপায়ে এরূপ বর্তনীর আকার আরও ছোট করতে সক্ষম হন। তারা একই উপাদানের যন্ত্রাংশের উপরে খুবই সরু ধাতব পথ (অ্যালুমিনিয়াম বা তামার) বসাতে সক্ষম হন, যেগুলি তারের মত কাজ করে। এই কৌশলের সাহায্যে কঠিন উপাদানের একটিমাত্র খণ্ডের উপর একটি সম্পূর্ণ বর্তনীর সমস্ত উপাদানগুলি “সমন্বিত” করা সম্ভব হয়। এভাবে “সমন্বিত বর্তনী” উদ্ভাবিত হয়। সমন্বিত বর্তনীতে মটরদানার সমান এক চিলতে উপাদানের উপর লক্ষ লক্ষ, এমনকি কোটি কোটি ট্রানজিস্টর থাকতে পারে। যদি একই সংখ্যক বায়ুশূন্য নল দিয়ে বর্তনী তৈরি করতে হত, তাহলে সেটি বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত দুরূহ ও খরচসাপেক্ষ হত। সমন্বিত বর্তনী উদ্ভাবনের ফলে আধুনিক তথ্যকেন্দ্রিক যুগের বিভিন্ন প্রযুক্তি বাস্তবে রূপদান সম্ভব হয়।
 
১৯৫০-এর দশকের শেষ দিকে সমন্বিত বর্তনীগুলির আয়তন ছিল প্রায় ৩ বর্গমিলিমিটার এবং এগুলিতে প্রায় ১০টি ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ থাকত। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সমন্বিত বর্তনীগুলির কর্মসম্পাদন ক্ষমতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে এবং এই কাজগুলি সম্পাদন করার ব্যয় ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। ফলে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি নির্মাণশিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। একদিকে যেমন এগুলির কর্মসম্পাদন ক্ষমতা ও নির্ভরযোগ্যতা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে এগুলির আকার, জটিলতা ও শক্তির ব্যবহার বহুগুণে হ্রাস পেয়েছে। অতি বৃহৎ-মাপের সমন্বয় (VLSI, Very Large Scale Integration) কৌশল ব্যবহার করে সমন্বিত বর্তনীতে উপাদানগুলির ঘনত্ব বহুগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে।
 
==সমন্বিত বর্তনীর প্রয়োগ==
অতি বৃহৎ মাপের সমন্বিত বর্তনীর উদ্ভাবনের ফলে কম্পিউটার প্রযুক্তি বিশালভাবে লাভবান হয়েছে। একটি ছোট কম্পিউটারের যৌক্তিক (বা লজিক) ও গাণিতিক (বা অ্যারিথমেটিক) কাজগুলি বর্তমানে একটিমাত্র ভিএলএসআই (অর্থাৎ অতিবৃহৎ মাপের সমন্বয় ) চিপ ব্যবহার করে সম্পাদন করা যায়, যে বর্তনীটির নাম দেওয়া হয়েছে মাইক্রোপ্রসেসর (অর্থাৎ অণুপ্রক্রিয়াকারক)। আর সমগ্র যৌক্তিক, গাণিতিক ও স্মৃতি (মেমরি) সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডগুলি একটি মাত্র মুদ্রিত বর্তনী পাতের (প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড) উপরে ধারণ করা সম্ভব হয়েছে। এমনকি সমগ্র ব্যবস্থাটি একটি মাত্র চিলতে বা চিপের উপরেই বসানো সম্ভব। এরূপ একটি যন্ত্রকে “মাইক্রোকম্পিউটার” (অর্থাৎ “আণুবীক্ষণিক গণকযন্ত্র”) নাম দেওয়া হয়েছে। ইন্টেল কর্পোরেশন ১৯৭৪ সালে বিশ্বের সর্বপ্রথম ব্যবসাসফল সমন্বিত বর্তনী মাইক্রোপ্রসেসর চিপ বা চিলতেটি উদ্ভাবন করে, যাতে ৪৮০০টি ট্রানজিস্টর ছিল। ১৯৯৩ সালে এসে ইন্টেলের পেন্টিয়াম চিপে ৩২ লক্ষ ট্রানজিস্টর ছিল। ২০১৮ সালে এসে মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত সমন্বিত বর্তনীতে ট্রানজিস্টরের সংখ্যা ৫৩০ কোটিরও বেশি ছিল। আর একই সময়ে এ এম ডি কোম্পানির উদ্ভাবিত এপিক প্রসেসরের ট্রানজিস্টর সংখ্যা ছিল প্রায় ২০০০ কোটি।
 
কম্পিউটার প্রযুক্তির বাইরে ভোক্তামুখী ইলেকট্রনিকস ক্ষেত্রে সমন্বিত বর্তনীর বদৌলতে বহু নতুন নতুন পণ্য নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। এদের মধ্যে আছে ব্যক্তিগত গণকযন্ত্র বা ক্যালকুলেটর, কম্পিউটার, ডিজিটাল ঘড়ি ও ভিডিও গেম। বহু ইতিমধ্যে বিদ্যমান বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির উন্নয়ন ও এদের খরচ কমানোর ক্ষেত্রেও সমন্বিত বর্তনী বিশাল ভূমিকা রেখেছে, যেমন গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি, টেলিভিশন, টেলিফোন, বেতার এবং উচ্চ-মানের (হাই ফাই) শব্দ উৎপাদক যন্ত্র (স্পিকার, ইত্যাদি)। মোটরযান নির্মাণ শিল্পে এই বর্তনীগুলিকে মান পরীক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এই বর্তনীগুলি শিল্পকারখানা, ঔষধশিল্প, স্থল ও বিমান যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশ পর্যবেক্ষণ ও টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
৩৫ নং লাইন:
# পাতলা ঝিল্লী বা থিন ফিল্ম (Thin film) পদ্ধতি;
# স্থুল ঝিল্লী বা থিক ফিল্ম (Thick film) পদ্ধতি;
# সংকর বা হাইব্রিড (Hybrid) পদ্ধতি।
 
এদের মধ্যে প্রথম বা একখণ্ডীয় পদ্ধতিটিই বেশি প্রচলিত। এই পদ্ধতিতে সমন্বিত বর্তনী তৈরির পর্যায়ক্রমিক ধাপগুলো নিম্নরূপ।