আবদুল মান্নান সৈয়দ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
অনির্ভরযোগ্য উৎস বাতিল
InternetArchiveBot (আলোচনা | অবদান)
8টি উৎস উদ্ধার করা হল ও 7টি অকার্যকর হিসেবে চিহ্নিত করা হল। #IABot (v2.0beta10ehf1)
১৮ নং লাইন:
}}
 
'''আবদুল মান্নান সৈয়দ''' (জন্মসূত্রে নাম: সৈয়দ আবদুল মান্নান) ([[৩ আগস্ট]] [[১৯৪৩]] - [[৫ সেপ্টেম্বর]] [[২০১০]]) [[বাংলাদেশ|বাংলাদেশের]] একজন আধুনিক কবি, সাহিত্যিক, গবেষক ও সাহিত্য-সম্পাদক। কবিতা ছাড়াও তিনি গল্প, উপন্যাস, সমালোচনা, নাটক ইত্যাদি সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী।<ref name="ittefaq.com.bd">[http://ittefaq.com.bd/content/2010/09/17/news0329.htm "আবদুল মান্নান সৈয়দ সূর্য গড়েছেন নিজের ভিতর"]</ref> বিংশ শতাব্দীর ষাট দশক থেকে বাংলা সমালোচনা-সাহিত্যে তাঁর গবেষণাধর্মী অবদান ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। [[জীবনানন্দ দাশ|কবি জীবনানন্দ দাশ]] এবং [[কাজী নজরুল ইসলাম|কবি কাজী নজরুল ইসলামের]] ওপর তাঁর গবেষণা মৌলিক বলে বিবেচিত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক।<ref name="amardeshonline.com">[{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=কবি গবেষক আবদুল মান্নান সৈয়দ আর নেই |ইউআরএল=http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/09/06/42909 কবি|সংগ্রহের-তারিখ=৫ গবেষকডিসেম্বর আবদুল২০১৮ মান্নান|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20100911000915/http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/09/06/42909 সৈয়দ|আর্কাইভের-তারিখ=১১ আরসেপ্টেম্বর নেই]২০১০ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> বাংলাদেশের সাহিত্যমহলে তিনি 'মান্নান সৈয়দ' নামেই পরিচিত ছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম "পোয়েট ইন রেসিডেন্স"।<ref name="dailykalerkantho.com">[http://dailykalerkantho.com/new/?view=details&feature=yes&type=single&pub_no=284&cat_id=1&menu_id=81&news_type_id=1&index=2 হিমঘরে রাত্রিবাস কিংবা 'আমি আর একটু ঘুমাব...']</ref>
 
== জন্ম, শিক্ষা, জীবিকা ==
আবদুল মান্নান সৈয়দের জন্ম অবিভক্ত [[ভারত]] উপমহাদেশের [[পশ্চিম বঙ্গ|পশ্চিম বঙ্গে]] জালালপুর নামক গ্রামে [[১৯৪৩]] সালে।<ref>[{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=আমার কথা - আবদুল মান্নান সৈয়দ |ইউআরএল=http://www.dailynayadiganta.com/fullnews.asp?News_ID=233804&sec=22 আমার|সংগ্রহের-তারিখ=১৭ কথাসেপ্টেম্বর ২০১০ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20100917155433/http://www.dailynayadiganta.com/fullnews.asp?News_ID=233804&sec=22 আবদুল|আর্কাইভের-তারিখ=১৭ মান্নানসেপ্টেম্বর সৈয়দ]২০১০ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> সেটা ছিল দুর্ভিক্ষের কাল। [[১৯৫০]] সালে ভয়াবহ দাঙ্গা হয় পশ্চিম বঙ্গে। তখন তার পিতা পালিয়ে সপরিবার পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) চলে আসেন এবং ঢাকার গোপীবাগে বসবাস করতে শুরু করেন। তাঁর পিতা সৈয়দ এ. এম. বদরুদ্দোজা ছিলেন সরকারি চাকুরে। মাতা কাজী আনোয়ারা মজিদ। তাঁরা ছয় ভাই, চার বোন। তাঁর স্ত্রীর নাম সায়রা সৈয়দ রানু। একমাত্র কন্যার নাম জিনান সৈয়দ শম্পা।<ref name="dailykalerkantho.com"/><ref>''স্মৃতির নোটবুক'' - আবদুল মান্নান সৈয়দ, ২০০০। শিল্পতরু প্রকাশনী, ঢাকা। পৃষ্ঠা-৪৩-৪৭</ref>
তিনি [[১৯৫৮]] সালে [[ঢাকা|ঢাকার]] নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। [[ঢাকা কলেজ]] থেকে কলা বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন [[১৯৬০]] সালে। পরে [[ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]] বাংলা ভাষা ও সাহিত্য অধ্যয়ন করেন এবং [[১৯৬৩]] সালে স্নাতক এবং [[১৯৬৪]] সালে স্নাতকোত্তর লাভ করেন। সাহিত্যজীবনের প্রস্তুতিপর্ব সম্পর্কে তিনি বলেছেন, "আমার জীবনে লেটো পিরিয়ড আছে। নজরুলের মতো। পিরিয়ডটা হলো আমার ক্লাস সেভেন-এইট থেকে এমএ পাস পর্যন্ত। আমি বিরামহীন লেখালেখি করতাম আর ছবি আঁকতাম। কিন্তু আব্বা আমার লেখা প্রকাশিত হতে দিতেন না। ওই পিরিয়ডে আমি নিজেকে ক্রমাগত শিক্ষিত ও সংস্কৃত করার চেষ্টা করেছি। আমার কঠোর আব্বা, কলকাতা ইউনিভার্সিটিতে পড়েছেন ; চাচাও মেধাবী ছাত্র ; আমাকে পড়ালেখায় বাধ্য করেছেন যেন আমি এমএ পাস করি। এ জন্য ১৯৬৫ সালকে আমি ধরি আমার আত্মপ্রকাশের বছর"।<ref>[http://dailykalerkantho.com/new/?view=details&feature=yes&type=single&pub_no=274&cat_id=3&menu_id=81&news_type_id=1&index=1 জীবনানন্দ ঈশ্বরে নয়, মানুষের নৈতিকতায় বিশ্বাসী ছিলেন]</ref>
শিক্ষা-জীবন শেষে তিনি একটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে [[সিলেট|সিলেটের]] [[মুরারীচাঁদ কলেজ|এম সি কলেজে]] শিক্ষকতা শুরু করেন। তিনি অধ্যাপনা করেই জীবিকা নির্বাহ করেন।<ref>[http://immortalfame.blogspot.com/2010/09/blog-post_02.html আবদুল মান্নান সৈয়দ]</ref> কর্মজীবনে তিনি [[ফরিদপুর]] [[শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজ]], সিলেটের এম. সি. কলেজে, এবং ঢাকায় [[জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়|জগন্নাথ কলেজে]] অধ্যাপনা করেছেন। দায়িত্ব পালন করেছেন ডিসট্রিক্ট গেজেটিয়ারে।<ref name="202.79.16.19">[{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=অন্তিম শয়ানে কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ |ইউআরএল=http://202.79.16.19/index.php?option=com_content&task=view&id=10068&Itemid=1 অন্তিম|সংগ্রহের-তারিখ=৫ শয়ানেডিসেম্বর কবি২০১৮ আবদুল|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20100923165755/http://202.79.16.19/index.php?option=com_content&task=view&id=10068&Itemid=1 মান্নান|আর্কাইভের-তারিখ=২৩ সৈয়দসেপ্টেম্বর ২০১০ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ ]}}</ref> ঢাকার জগন্নাথ কলেজে দীর্ঘ কাল অধ্যাপনা করার পর ২০০২ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত মেয়াদের জন্য তিনি নজরুল ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালকের পদে দায়িত্ব পালন করেন।
 
== সাহিত্যচর্চা ==
তাঁকে বলা হয়েছে সব্যসাচী লেখক। বাংলা সাহিত্যের যে শাখায়ই তিনি চর্চা করেছেন, সাফল্য ও কীর্তি ধরা দিয়েছে অবলীলায়।<ref name="amardeshonline.com"/>
বলা হয়েছে এদেশে তাঁর মতো পরিশ্রমী লেখক নেই। যে কোন লেখার মধ্যেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন। প্রচণ্ড তোলপাড় করা শক্তি নিয়ে বাংলা সাহিত্যে আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি। বাংলা কবিতায় কবিতায় তিনি যুক্ত করেছিলেন পরাবাস্তববাদী দিগন্ত। তাঁর উদ্ভাবনী শক্তি ও ব্যঞ্জনা সৃষ্টি তাঁর ভাষাকে করে তুলেছে ব্যতিক্রমী। মহাসমর পরর্তীকালে দুই বাংলাতেই তাঁর মতো সাহিত্যসমালোচক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বিশ্বসাহিত্য সম্পর্কে ছিল তাঁর অগাধ ধারণা। সমসাময়িককালে তাঁর মতো বড় মাপের লেখক দেখা যায় না। কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও কবিতায় তাঁর সৃজনশীলতা অসাধারণ।<ref name="202.79.16.19"/> সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় প্রচৃর কাজ করলেও ভগ্নস্বাস্থ্য উপেক্ষা করে তিনি আরো কাজ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "মাইকেল সম্পর্কে, বঙ্কিমের উপন্যাস সম্পর্কে আমার লেখার ইচ্ছা আছে। ফররুখ আহমেদ একজন বিরাট লেখক। আমার একটা আক্ষেপ, এত বড় কবি জসীমউদ্দীন, তাঁর ওপর আমি কোনো কাজ করিনি। জীবনানন্দকে নিয়ে আমি যে কাজটা করেছি, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েও সে রকম কাজ করা আমার উচিত ছিল।"<ref name="banglanews24.org">[http://www.banglanews24.org/newlocation/bangla/detailsnews.php?nssl=a4b4a777d704346280fc18fc9ca1d6b1&nttl=201009067536 আবদুল মান্নান সৈয়দ: অতৃপ্ত ও অস্তিত্ববাদীর প্রস্থান]{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=ডিসেম্বর ২০১৮ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref> তাঁর আত্মজৈবনিক লেখার মধ্যে বিষাদের সুর পরিলক্ষিত হয়। যে তুলনারহিত সৃজনশক্তির স্বাক্ষর তিনি রেখে গেছেন তার মূল্য জীবদ্দশায় যথাযথভাবে স্বীকৃত হয়নি। স্বীয় বিশ্বাসে রাজনৈতিক ঔদার্যের কারণে তাঁকে প্রায়শ: রাষ্ট্রীয় উপেক্ষার শিকার হতে হয়েছে।
 
মান্নান সৈয়দ ছিলে বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম "পোয়েট ইন রেসিডেন্স"। তাঁকে স্কলার-ইন-রেসিডেন্স পদমর্যাদায় নিয়োগ করে জাতীয় কবি [[কাজী নজরুল ইসলাম|কাজী নজরুল ইসলামের]] সংগ্রামী জীবনকে গ্রথিত করে পূর্ণাঙ্গ নজরুলজীবনী রচনার দায়িত্ব দেয়া হয়।<ref name="dailykalerkantho.com"/>
 
=== কবিতা ===
বাংলা ভাষায় তিনি সেই একজন কবি যিনি ষাটের দশকে সমকালীন কাব্যরুচিকে বদলে দেয়ার অভিপ্রায়ে পরাবাস্তবতার শরণাপন্ন হয়েছিলেন। এভাবেই তিনি স্বীয় কবিকণ্ঠস্বরকে অনন্যসাধারণ করে উপস্থাপন করেছিলেন।<ref>[http://ittefaq.com.bd/content/2010/09/17/news0330.htm পরাবাস্তবাদ ও আবদুল মান্নান সৈয়দ]</ref> ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন [[ইত্তেফাক]] পত্রিকার সাহিত্যবিভাগে "সোনার হরিণ" শিরোনামে একটি কবিতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে বাংলা কবিতার জগতে তাঁর অন্নপ্রাশন হয়েছিল।<ref name="ittefaq.com.bd"/> ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে ''জন্মান্ধ কবিতাগুচ্ছ'' শিরোনামীয় কাব্যগ্রন্থের মধ্য দিয়ে বাংলা কবিতায় আবদুল মান্নান সৈয়দের অনির্বচনীয় আসনের শিলান্যাস হয়েছিল। জীবদ্দশায় তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ২১। ষাটের দশকের আধুনিকতাবাদী কবিদের মধ্যে আবদুল মান্নান সৈয়দ অন্যতম। তাঁর কাব্যশৈলীর বড় বৈশিষ্ট্য আধুনিকতা ও নন্দনতত্ত্বের বহুমাত্রিক প্রয়োগ। স্যুররিয়ালিস্ট বা পরাবাস্তবতার কবি হিসেবে তিনি খ্যাতিমান ছিলেন। বলা হয়েছে, "তিনি প্রচণ্ড তোলপাড় করা শক্তি নিয়ে বাংলা সাহিত্যে আবির্ভূত হয়েছিলেন। কবিতায় তিনি এনেছেন পরাবাস্তববাদী অনন্য বৈভব।"<ref name="ReferenceA">[{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=অন্তিম শয়ানে কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ |ইউআরএল=http://202.79.16.19/index.php?option=com_content&task=view&id=10068&Itemid=1 অন্তিম|সংগ্রহের-তারিখ=৫ শয়ানেডিসেম্বর কবি২০১৮ আবদুল|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20100923165755/http://202.79.16.19/index.php?option=com_content&task=view&id=10068&Itemid=1 মান্নান|আর্কাইভের-তারিখ=২৩ সৈয়দ]সেপ্টেম্বর ২০১০ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref>
নতুনতর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে গতানুগতিকতাকে তিনি বরাবরই চ্যালেঞ্জ করেছেন। নিজের রচনায় নিরন্তর তিনি নিরীক্ষা চালিয়েছেন। ফলত: প্রায় পাঁচ দশকের কবি জীবনে তিনি বহু বার বাঁকবদল করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, "কবিতায় আমি ভ্রাম্যমাণ। ফলে বছর পঞ্চাশ ধরে কবিতা যে লিখে গেছি, তার মধ্যে যে রূপান্তর তাকে আমি বাধা দিইনি। জোর করে কখনো কবিতা লিখিনি। আজো না। কবিতা আমি তখনই লিখি যখন কবিতা নিজে এসে আমার ওষ্ঠ চুম্বন করে।"<ref>[http://taiyabs.wordpress.com/2008/10/25/abdul-manan-syed/ কবিতা এবং আবদুল মান্নান সৈয়দ ]</ref> প্রতীক-পরাবাস্তব থেকে সহজ-সাধারন ধর্মীয় কবিতা; অক্ষরবৃত্ত-মাত্রাবৃত্ত থেকে সনেট ও টানাগদ্য - প্রায় সর্ববিধ আঙ্গিকে তিনি নিরীক্ষাধর্মীতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তবে সর্বদাই যে প্রণোদনা তাঁর কবিসত্তায় অন্তর্নিহিত ছিল তা' হলো ১৯৩০ দশকের কবিদের প্রভাব মুক্ত হয়ে বাংলা আধুনিক কবিতায় নতুন একটি দিগন্ত সৃষ্টি করা।<ref>[http://www.shomoy24.com/index.php/2009-10-11-12-28-57/24-2009-10-11-12-26-31/13974-2010-09-08-19-34-23 একজন শুদ্ধতম কবি - সাযযাদ কাদির]{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=ডিসেম্বর ২০১৮ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref> বহুলপ্রজ এই কবির কবিজীবনে সবচেয়ে ফলপ্রসূ সময় আশির দশক। এই কালপরিধিতে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ৬টি কাব্যগ্রন্থ। শৈলী ও বিষয়বস্তুর বৈচিত্রে এই কাব্যগ্রন্থগুলো ভাস্বর, বহুবর্ণিল। ''নির্বাচিত কবিতা'' (২০০১) শিরোনামীয় সংকলনগ্রন্থে তাঁর কবিসত্তার সামগ্রিক পরিচয় পাওয়া যায়।<ref>[http://www.banglanews24.org/newlocation/bangla/detailsnews.php?nssl=a4b4a777d704346280fc18fc9ca1d6b1&nttl=201009067536 আবদুল মান্নান সৈয়দ- অতৃপ্ত ও অস্তিত্ববাদীর প্রস্থান]{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=ডিসেম্বর ২০১৮ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref>
 
=== সাহিত্য-সমালোচনা ===
৪৩ নং লাইন:
 
==== নজরুল চর্চা ====
নজরুল চর্চ্চায় তিনি কবি [[মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ]] এবং প্রাবন্ধিক [[শাহাবুদ্দিন আহমদ|শাহাবুদ্দীন আহমদের]] গবেষণা দ্বারা অণুপ্রাণিত হয়েছিলেন।<ref>[http://www.dailynayadiganta.com/fullnews.asp?News_ID=233805&sec=22 আবদুল মান্নান সৈয়দ - কিছু কথা কিছু স্মৃতি]{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=ডিসেম্বর ২০১৮ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref> তাঁর ''নজরুল ইসলাম - কবি ও কবিতা'' একটি উল্লেখযোগ্য গবেষণাগ্রন্থ।
 
=== কথাসাহিত্য ===
সব্যসাচী লেখক মান্নান সৈয়দ কথাসাহিত্যেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে গেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থাবলী হলো ''সত্যের মত বদমাস'', ''চল যাই পরোক্ষে'' এবং ''মৃত্যুর অধিক লাল ক্ষুধা''। এর মধ্যে ''সত্যের মত বদমাশ'' প্রকাশিত হয় ১৯৬৮ খৃস্টাব্দে। অশ্লীতার অভিযোগে তৎকালীন সরকার কর্তৃক এ গ্রন্থটি নিষিদ্ধ হয়। তাঁর বহুল আলোচিত দুটি উপন্যাস হলো'' পরিপ্রেক্ষিতের দাসদাসী'', ''অ-তে অজগর''। তাঁর গল্প-উপন্যাসে মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ প্রাধ্যন্য পেয়েছে। বলা হয়েছে, "ষাটের গল্পকারদের মধ্যে আবদুল মান্নান সৈয়দ সবচেয়ে বেশি প্রাতিস্বিকতাবিলাসী শিল্পী। আত্মজৈবনিক অভিজ্ঞতার গল্পভাষ্য নির্মাণে তিনি সিদ্ধহস্ত। বিষয়াংশ এবং প্রকরণের অভিনবত্বে তাঁর গল্পসাহিত্য বিশিষ্টতার দাবিদার। তবে, প্রথম পর্বের গল্পে, কনটেন্ট ও ফর্মে, আরোপিত উপাদান গল্পের মূলস্রোতের সঙ্গে জৈবসমগ্রতায় একাত্ম হতে পারেনি। বিচ্ছিন্নতা ও নির্বেদের যন্ত্রণায় তাঁর অধিকাংশ নায়ক পীড়িত ও পর্যুদস্ত। প্রতীকী এবং পরাবাস্তববাদী পরিচর্যা আবদুল মান্নান সৈয়দের ছোটগল্পের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। প্রথম পর্বের গল্পের ভাষারীতিতে আরোপিত আধুনিকতা দ্বিতীয় পর্বে পরিত্যক্ত হয়েছে; ফলে, গল্পস্রোত হয়েছে অনেক বেশি সাবলীল ও স্বচ্ছন্দ।"<ref>[{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=বাংলাদেশের ছোটগল্প একটি আন্ত:জরিপ |ইউআরএল=http://www.kaliokalam.com/?p=690 বাংলাদেশের|সংগ্রহের-তারিখ=১৫ ছোটগল্পসেপ্টেম্বর একটি২০১০ আন্ত|আর্কাইভের-ইউআরএল=https:জরিপ]//web.archive.org/web/20110701021638/http://www.kaliokalam.com/?p=690 |আর্কাইভের-তারিখ=১ জুলাই ২০১১ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref>
 
=== নাটক ===
৬৩ নং লাইন:
 
== মৃত্যু ==
দীর্ঘদিন তিনি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। ২৭ আগষ্ট ২০১০ [[চ্যানেল আই]] নামক টেলিভিশনে আয়োজিত একটি আলোচনা অণুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। নিকটস্থ ঢাকা মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসা লাভ করেন তিনি।<ref>[http://www.banglanews24.org/newlocation/bangla/detailsnews.php?nssl=4eb0194ddf4d6c7a72dca4fd3149e92e&nttl=201009026574 টক শোতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ আবদুল মান্নান সৈয়দ]{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=ডিসেম্বর ২০১৮ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref> সেই থেকে বাসায়ই অবস্থান করছিলেন কবি। ৫ সেপ্টেম্বর ২০১০ ইফতারীর কিছু আগে ঘুমের ভিতর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। বাসার অদূরে ল্যাবএইড হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে ডাক্তাররা তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করে।<ref>[http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?id=135612&cid=2 আবদুল মান্নান সৈয়দ নেই]{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=ডিসেম্বর ২০১৮ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref><ref>[http://dailykalerkantho.com/index.php?view=details&type=gold&data=Islam&pub_no=277&menu_id=13&news_type_id=1&news_id=86824 অভিমান' নিয়েই চলে গেলেন কবি আবদুল মান্নান সৈয়দ ]</ref> তাঁর মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে সংরক্ষণ করা হয়। পরদিন ৬ আগস্ট তাঁর বাসস্থানের সন্নিকট গ্রীন রাড মসজিদে তাঁর প্রথম নামাজে [[জানাযা]] অণুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁর লাশ [[বাংলা একাডেমী|বাংলা একাডেমীতে]] নিয়ে যাওয়া হয় ; সেখানে নজরুল মঞ্চে রাখা হয় মরদেহ। এ সময় কবি-সাহিত্যিকসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করে। [[বাংলা একাডেমী]], [[নজরুল ইনস্টিটিউট]] ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও এ সময় শ্রদ্ধা জানানো হয়। বেলা পৌনে ১২টায় এখানে মরহুমের দ্বিতীয় জানাযা অণুষ্ঠিত হয়। বাংলা একাডেমীতে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে যান কবি [[সৈয়দ শামসুল হক]], [[আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ]], সৈয়দ আনোয়ারা হক, [[বেলাল চৌধুরী]], [[আসাদ চৌধুরী]], [[রবিউল হুসাইন]], [[হাসান হাফিজ]], [[হাবিবুল্লাহ সিরাজী]], [[রেজাউদ্দিন স্টালিন]], রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, ম. হামিদ, [[আবদুল হাই শিকদার]], জাতীয় কবির নাতনি [[খিলখিল কাজী]] প্রমুখ।<ref name="ReferenceA"/>] তৃতীয় এবং সর্বশেষ নামাজে জানাযা অণুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জোহরের নামাজের অব্যবহিত পরে। সেখান থেকে তাঁর লাশ আজিমপুর গোরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সমাধিস্থ করা হয়।<ref>[http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=135679 চিরনিদ্রায় শায়িত আবদুল মান্নান সৈয়দ]{{অকার্যকর সংযোগ|তারিখ=ডিসেম্বর ২০১৮ |bot=InternetArchiveBot |ঠিক করার প্রচেষ্টা=yes }}</ref>
বলা হয়েছে, তাঁর মৃত্যুতে সমকালীন বাংলা সাহিত্য এক অপূরণীয় শূন্যতায় নিমজ্জিত হলো এবং এমন একটি সংকট তৈরী হলো যা দীর্ঘকাল ধ'রে অণুভূত হবে।<ref name="amardeshonline.com"/>
 
== চারিত্র্য ==
জীবনানন্দকে তিনি বলেছিলেন "শুদ্ধতম কবি" ; কার্যত নিজ জীবনেও তিনি ছিলেন "শুদ্ধতার সাধক"।<ref>[http://archive.prothom-alo.com/detail/date/2010-09-07/news/92494 সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম]</ref> দীর্ঘ শালপ্রাংশু অবয়ব, কাঁধের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া কেশগুচ্ছ, সব মিলিয়ে তিনি ছিলেন রীতিমতো সুদর্শন সুপুরুষ। একদিকে তিনি পৌরুষদীপ্ত ও ব্যক্তিত্বময় ; অন্য দিকে সদালাপী, সদা হাস্যময়। অন্তরে ছিলেন তীব্র অভিমানী। কথার ফাঁকে কৌতুক করা ছিল তাঁর সুনিপুণ অভ্যাস। স্বভাবে বিজনবাসী হলেও তিনি ছিলেন আড্ডার ভক্ত তবে পড়াশুনা আর লেখালেখির ব্যাপারে এক মুহূর্ত ছাড় দেন নি। এ বিষয়ে তিনি সদা উন্নীদ্র, আমৃত্যু চঞ্চল। রাষ্ট্র ও সমাজ তার যথাযোগ্য মূল্যায়ন করতে পারেনি বলে একটি সূক্ষ্ণ অভিমান তাঁকে তাড়া ক'রে ফিরতো। দু'বার ''হার্ট এটাক'' তার জীবনী শক্তি অনেকখানি ক্ষয়ে ফেলেছিল। তাঁর অস্তিত্বে সেঁটে গিয়েছিল এক অনপনেয় বিষণ্ণতা। একটি কবিতায় তিনি মৃদু কণ্ঠে বলেছেন: "আনন্দ কাকে বলে—আজ আর মনে নেই আমার।"<ref>[{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম='একটি গ্রামের কথা' |ইউআরএল=http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/09/03/42373 'একটি|সংগ্রহের-তারিখ=১১ গ্রামেরসেপ্টেম্বর কথা']২০১০ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20120528081424/http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/09/03/42373 |আর্কাইভের-তারিখ=২৮ মে ২০১২ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> তবে মৃত্যুঅবধি তিনি ছিলেন একজন জীবিত মানুষ। তাই জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে জীবন দর্শনের পুনমূর্ল্যায়ন করে বলেছিলেন, "একটা বয়সে এসে বুঝতে পারছি, আমি চারপাশে তাকাইনি। দ্বিতীয়বার হৃদরোগের পরে, দীর্ঘকাল শয্যাশায়ী থেকে আমি আমার আশপাশে মানুষদের দেখলাম- আমার পাড়ার মানুষেরা, বাজারের লোকজন, খুব সাধারণ মানুষদের। বুঝতে পারছি, যাদের দিয়ে আমার জীবন চলছে, তাদের জন্য আমি কোনো কিছু করিনি।"<ref name="banglanews24.org"/> মান্নান সৈয়দ ছিলেন সাহিত্যের ঘোর লাগা মানুষ। তিনি আপাদমস্তক একজন কবি, সাহিত্যকর্মী।
 
== প্রকাশিত গ্রন্থাবলি ==
১৬৩ নং লাইন:
 
==বহিঃসংযোগ==
* [https://web.archive.org/web/20080915133634/http://arts.bdnews24.com/?page_id=254 আবদুল মান্নান সৈয়দের কিছু রচনা]
* [http://arts.bdnews24.com/?p=3055 আবদুল মান্নান সৈয়দের কিছু রচনা-২]
* [https://web.archive.org/web/20120528081424/http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/09/03/42373 কবিতা - একটি গ্রামের কথা]
 
{{বাংলাদেশী কবি}}