শাফায়াত জামিল: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্যায় এর পরিচালককে জানান।
৩৫ নং লাইন:
 
== কর্মজীবন ==
শাফায়াত জামিল [[১৯৬৪]] সালে [[পাকিস্তান]] সেনাবাহিনীর [[ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট|ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে]] সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশনপ্রাপ্ত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি চতুর্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। <ref>{{বই উদ্ধৃতি |titleশিরোনাম= একাত্তরের বীরযোদ্ধা (খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা), প্রথম খন্ড|lastশেষাংশ= |firstপ্রথমাংশ= |authorlinkলেখক-সংযোগ= |coauthors= |yearবছর=২০১২ |publisherপ্রকাশক= প্রথমা প্রকাশন |locationঅবস্থান= |isbnআইএসবিএন= 978-984-33-3888-4|pageপাতা= ১৩০|pagesপাতাসমূহ= |accessdateসংগ্রহের-তারিখ= |urlইউআরএল=}}</ref> এই রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল [[কুমিল্লা জেলা|কুমিল্লা]] সেনানিবাসে। সম্ভাব্য [[ভারত|ভারতীয়]] আগ্রাসনের কথা বলে [[পাকিস্তান|পাকিস্তানি]] সেনারা এই রেজিমেন্টের দুটি কোম্পানিকে [[১৯৭১]] সালের [[মার্চ ১|১ মার্চ]] [[ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা|ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়]] পাঠায়। একটি কোম্পানির নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। [[মার্চ ২৬|২৬ মার্চ]] পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের সংবাদ পেয়ে তিনি তাঁর ও অপর কোম্পানির সবাইকে নিয়ে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। প্রতিরোধপর্বে আশুগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া-গঙ্গাসাগর এলাকায় যুদ্ধ করেন। এরপর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মতিনগরে যান। তাঁকে তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি দেওয়ানগঞ্জ, সিলেটের ছাতকসহ আরও কয়েক স্থানে যুদ্ধ করেন।<ref>{{বই উদ্ধৃতি |titleশিরোনাম= একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা (খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রন্থ)|lastশেষাংশ= |firstপ্রথমাংশ= |authorlinkলেখক-সংযোগ= |coauthors= |yearবছর=জুন ২০১২ |publisherপ্রকাশক= জনতা ব্যাংক লিমিটেড |locationঅবস্থান= |isbnআইএসবিএন= 978-984-33-5144-9|pageপাতা= ১১৩|pagesপাতাসমূহ= |accessdateসংগ্রহের-তারিখ= |urlইউআরএল=}}</ref>
 
== মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা ==
[[১৯৭১]] সালের মার্চ মাসে জামিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে মেজর পদে উন্নীত হন এবং [[মার্চ ২৭|২৭ মার্চ]] পূর্ব পাকিস্তান/বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার খবর জানতে পেরে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী অন্যান্য বাঙালী অফিসার এবং ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের (ডাকনাম বেবি টাইগার্স) সেনাদের সাথে সেনাবাহিনী ছেড়ে চলে আসেন। [[অক্টোবর ১০|১০ অক্টোবর]] হটাৎ সিলেট সেক্টরে বদলি হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সেক্টর-১১ এর অধিনে বাংলাদেশ ফোর্সের (BDF) অফিসার হিসেবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন। জুন মাসে তিনি সেক্টর ১১ এর অধিনে ৩য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ পান, এই সেক্টরের সেক্টর কামান্ডার ছিলেন মেজর [[জিয়াউর রহমান]], পরবর্তীতে তিনি [[জেড ফোর্স (বাংলাদেশ)|জেড ফোর্স]] ব্রিগেড গঠন করেছিলেন। ৩য় [[ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট]] ছোট এবং বড় আকারের গেরিলা অভিযানের অংশ নিয়েছিলো। এছাড়াও জিয়া জামিলকে তেল ঢাকা এলাকা মুক্ত এবং নিরাপদ রাখার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। লেফট্যানেন্ট নুরুন্নবী এবং আনোয়ার মেজর জামিলকে এই এলাকার প্রথমিক প্রশাসনিক কার্যকলাপে সহায়তা করেছিলেন। ২৭ আগস্ট প্রথম ডাকঘর এবং দুটি সাব পোস্টঅফিসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জিয়ার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তিনি। ১১ অক্টোবর ১৯৭১ মেজর শাফায়াত জামিলের নেতৃত্বে ৩য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সিলেটের ছাতকের যুদ্ধেঅংশ নেয়। যদিও ছাতক অপারেশন ব্যর্থ তবুও ৩য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ৩৬৪জন পাকিস্তানি সৈন্যকে হত্যা করে। <ref>{{বই উদ্ধৃতি |titleশিরোনাম= বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ (দলিলপত্র: নবম খন্ড)|lastশেষাংশ= |firstপ্রথমাংশ= |authorlinkলেখক-সংযোগ= |coauthors= |yearবছর=১৯৮৪ |publisherপ্রকাশক= তথ্য মন্ত্রনালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার |locationঅবস্থান= |isbnআইএসবিএন= |pageপাতা= ১৭৭|pagesপাতাসমূহ= |accessdateসংগ্রহের-তারিখ= |urlইউআরএল=}}</ref>
 
[[১৯৭১]] সালের [[নভেম্বর ২৬|২৬ নভেম্বর]] ভারতীয় সেনাবাহিনীর [[গোর্খা]] রেজিমেন্টের তিনটি কোম্পানি [[সিলেট জেলা|সিলেটের]] রাধানগরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অবস্থানে আক্রমণ করে। কিন্তু তাদের সেই আক্রমণ ব্যর্থ হয়। পাকিস্তানিদের পাল্টা আক্রমণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয় তখন। এরপর মিত্রবাহিনীর জেনারেল গিল নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর ৩ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক শাফায়াত জামিলের ওপর দায়িত্ব দিয়ে সিলেটের রাধানগর এলাকার ছোটখেল মুক্ত করান। শাফায়াত জামিল সিদ্ধান্ত নেন, তিনি নিজেই ওই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেবেন। প্রথাগত সামরিক যুদ্ধে এক কোম্পানি বা তার কম সেনা থাকলে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক সাধারণত যুদ্ধের ময়দানে না গেলেও তিনি তাঁর সিদ্ধান্তে অটল থাকলেন। যোদ্ধা হিসেবে গোর্খাদের সুনাম পৃথিবীব্যাপী। [[ভারত|ভারতীয়]] সেনাবাহিনীর গোর্খা রেজিমেন্ট যা পারেনি, সে কাজটি বাঙালি মুক্তিযোদ্ধারা [[১৯৭১]] সালে সম্ভব করেন। অকৃত্রিম দেশপ্রেম, মমত্ব ও দেশকে শত্রুমুক্ত করার দৃঢ় সংকল্প আর শাফায়াত জামিলের অদম্য ও অটল মনোভাব সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী যোদ্ধায় রূপান্তর করেছিল। [[নভেম্বর ২৭|২৭ নভেম্বর]] গভীর রাতে শুরু হয় সেই ঐতিহাসিক অভিযান। ধানখেতের মধ্য দিয়ে প্রায় ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা এগিয়ে চললেন পাকিস্তানি সেনাদের অবস্থানের দিকে। সবার সামনে ছিলেন শাফায়াত জামিল ও কোম্পানি অধিনায়ক এস আই নূরুন্নবী খান। পাকিস্তানি সেনাদের অবস্থানের কাছাকাছি গিয়ে তিনি অগ্রসর হলেন বাঁ দিক থেকে এবং এস আই নূরুন্নবী ডান দিক দিয়ে। ক্ষিপ্রতার সঙ্গে গুলি করতে করতে তাঁরা পাকিস্তানি সেনাদের বিভিন্ন বাংকারের দিকে এগিয়ে চললেন। কয়েকটি বাংকারে হাতাহাতি যুদ্ধ হলো। মুক্তিযোদ্ধারা তখন অজেয়, অপ্রতিরোধ্য। প্রচণ্ড আক্রমণের তীব্রতায় কিছুক্ষণের মধ্যেই পাকিস্তানি সেনারা সেখান থেকে পালিয়ে গেল। মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যেই ছোটখেল মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে চলে এল। নিহত হলো অসংখ্য পাকিস্তানি সেনা। আশপাশে চলছিল বিক্ষিপ্ত গোলাগুলি। চারদিকে মৃত পাকিস্তানি সেনাদের লাশ, অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। ভোরের আলোয় শাফায়াত জামিল তদারক করছেন অবস্থান সুদৃঢ় করার কাজ। এমন সময় তাঁর ডান কোমরে গুলি লাগে। ছিটকে পড়েন তিনি, গুরুতর আহত হন। সহযোদ্ধারা তাঁকে ফিল্ড হাসপাতালে পাঠান।