নভেরা আহমেদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Salim Khandoker (আলোচনা | অবদান)
→‎কাজের স্টাইল: বানান ঠিক করা হয়েছে
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল অ্যাপ সম্পাদনা
সম্পাদনা সারাংশ নেই
৫৩ নং লাইন:
নভেরার জন্ম বাংলাদেশের [[সুন্দরবন|সুন্দরবনে]] মার্চ ২৯, ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে ।<ref name="oxford">{{ওয়েব উদ্ধৃতি |url=http://www.oxfordreference.com/view/10.1093/acref/9780199923014.001.0001/acref-9780199923014-e-2715 |title=অক্সফোর্ড রেফারেন্স |website=oxfordreference.com |publisher=[[অক্সফোর্ড]] |accessdate=মে ০৮, ২০১৫}}</ref> চাচা নাম রাখেন নভেরা। [[ফার্সি]] শব্দ ‘নভেরা’র অর্থ নবাগত, নতুন জন্ম। কর্মসূত্রে তার বাবা সৈয়দ আহমেদ কর্মরত ছিলেন সুন্দরবন অঞ্চলে। তবে পৈতৃক নিবাস [[চট্টগ্রাম|চট্টগ্রামের]] আসকারদিঘির উত্তর পাড়। পরবর্তীতে তার বাবা চাকরিসূত্রে কিছুকাল [[কলকাতা|কলকাতায়]] অবস্থার করায় নভেরার শৈশব কেটেছে কলকাতা শহরে। বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেই তিনি নাচ, গান শেখার পাশাপাশি মাটি দিয়ে মূর্তি তৈরী (মডেলিং) করতেন।<ref name="নভেরা"/> তিনি কলকাতার [[লরেটা]] স্কুল থেকে প্রবেশিকা (ম্যাট্রিক) পাস করেন।<ref name="চলে গেলেন"/><ref name="প্যারিসে প্রদর্শনী"/><ref name="বিস্মৃত নভেরার"/>
 
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ শাসনাধীন [[ভারত বিভাগ|ভারত বিভাগের]] পর তারা [[পূর্ব পাকিস্তান|পূর্ব পাকিস্তানের]] (বর্তমান [[বাংলাদেশ]]) [[কুমিল্লা|কুমিল্লায়]] চলে আসেন। এ সময় নভেরা কুমিল্লার [[কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ|ভিক্টোরিয়া কলেজে]] ভর্তি হন। পিতার অবসরগ্রহণের পর তাদের পরিবার আদি নিবাস চট্টগ্রামে গিয়ে স্থায়ী বসবাস শুরু করে। এরপর [[চট্টগ্রাম কলেজ|চট্টগ্রাম কলেজে]] ভর্তি হন তিনি। পরবর্তী আইন শিক্ষার জন্য তাকে বাড়ি থেকে লন্ডনে পাঠানো হয় ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে। তবে শৈশব থেকেই নভেরার ইচ্ছা ছিল ভাস্কর্য করার; তাই তিনি সেখানে সিটি অ্যান্ড গিল্ডস্টোন কার্ভিং ক্লাসে যোগ দেন। পরবর্তীতে ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে ভর্তি হন [[ক্যাম্বারওয়েল কলেজ অব আর্টস|ক্যাম্বারওয়েল স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড ক্র্যাফটসে]] ন্যাশনাল ডিপ্লোমা ইন ডিজাইনের মডেলিং ও স্কাল্পচার কোর্সে। সেখান পাঁচ বছর মেয়াদের ডিপ্লোমা কোর্স করার পর ১৯৫৫ সালে তিনি ইতালির [[ফ্লোরেন্স]] ও [[ভেনিস|ভেনিসে]] ভাস্কর্য বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ শুরু করেন।<ref name="নভেরা"/><ref name="চলে গেলেন"/><ref name="প্যারিসে প্রদর্শনী"/><ref name="বিস্মৃত নভেরার"/><ref name="অবদান">{{সংবাদ উদ্ধৃতি |author= |date=৩ মার্চ ২০১৩ |title=নভেরা আহমেদ : বাংলাদেশের ভাস্কর্যে তার অবদান |url=http://online-dhaka.com/newsarchive/ni/12071/ |newspaper=online-dhaka.com |location=[[ঢাকা]] |accessdate=মে ০৮, ২০১৫}}</ref>
 
== কর্মজীবন ==
৬৫ নং লাইন:
সমসাময়িক পুরুষ শিল্পীরা ইউরোপীয় ইন্দ্রিয় সুখাবহ নারীদেহে একটি রোমান্টিক ইমেজ দেবার চেষ্ট করেন। এমনকি [[জয়নুল আবেদীন|জয়নুল]], [[কামরুল হাসান|কামরুলরা]] নারীকে মাতা, কন্যা, স্ত্রী এবং অনুভূতিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে দেখালেও নারীদের যথার্থ কর্মময় জীবন উহ্যই ছিল। নভেরা আহমেদ নারীকে দেখেছেন সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে, পুরুষ শিল্পীদের উপস্থাপনার বিপরীতে। তার কাজে নর-নারীর গ্রন্থনা একটি ঐক্য গঠন করে। তিনি ভাসা ভাসা সুন্দর আনন্দময়ী আদর্শ ফর্ম করার পরিবর্তে তার ফর্মগুলোকে সরল, অর্থপূর্ণ, স্বকীয়তায় সমৃদ্ধ করেছেন। উন্মোচন করেছেন সবধরণের বিচলিত, আবেগমথিত, সত্যিকারের নারীর রূপকে। ''দি লং ওয়েট'' কাজটি তারই নমুনা। তার মায়েরা সুন্দরী নয়, কিন্তু শক্তিময়ী, জোড়ালো ও সংগ্রামী। তারা মানবিকতার ধ্রুপদী প্রতীক।{{Cref2|খ}}
 
নভেরা তার শিল্পকর্মে একঘেয়েমি কাটাতে পরবর্তীতে কতগুলো কাজে ভিন্নমাত্রা সংযোজন করেছিলেন। যেমন: নগ্ন নারী মুর্তি, লম্বা গ্রীবা ও মাথার এনাটমিতে বাংলাদেশের ‘কন্যা-পুতুলের’ আঙ্গিকের পাশাপাশি হাত-পা-শরীরের অবস্থান স্থাপনের ক্ষেত্রে [[মদীয়ানির]] ফর্ম ও ড্রইভের সুষমা, স্তন ও শরীরের উপস্থাপনায় মহেঞ্জোদারোর ‘বালিকা-মূর্তির’ প্রাচ্য অভিলাষকে একত্রিত করেছেন। অন্যদিকে প্লাস্টার অব প্যারিসে নির্মিত দু’টি ভাস্কর্যে মুখমন্ডল বহুলাংশে বাস্তবধর্মী, সামান্য [[গান্ধারা শিল্পধারায়]] প্রভাবিত। সম্ভবত এই মস্তক দু’টি বুদ্ধের মস্তকের অনুকরণে অণুকৃতি।<ref name="অবদান"/>
 
নভেরার বেশকিছু ভাস্কর্যে আবহমান বাংলার লোকজ আঙ্গিকের আভাস পাওয়া যায়। তবে লোকজ ফর্মের সাথে সেখানে পাশ্চাত্য শিক্ষার সমন্বয়ও বর্তমান। লোকজ [[টেপা পুতুলের]] ফর্মকে সরলীকৃত করে তাকে দক্ষতার সাথে বিশেষায়িত করেছেন তিনি। এভাবে ঐতিহ্যের সাথে পাশ্চাত্য শিক্ষার স্বার্থক ভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা তার আধুনিক চিন্তার লক্ষণ। এক্ষেত্রে তার ভাস্কর্যগুলো আদলে তিনকোনা, চোখ ছিদ্র, লম্বা গ্রীবা অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য হিসেবে আসে।