ভারতে নারী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Ritadip (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
→‎top: বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে। কোন সমস্য থাকল এর পরিচালককে জানান।
৩৪ নং লাইন:
ব্রিটিশ রাজত্বকালে রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, জ্যোতিরাও ফুলে এবং আরও অনেক সমাজ সংস্কারক নারীদের উন্নয়নের জন্য লড়াই করেছিলেন। কলকাতার হিন্দু কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং ইয়ং বেঙ্গল এর সদস্য পিয়ারী চরণ সরকার, ১৮৪৭ সালে কলকাতার শহরতলি বারাসতে ভারতের প্রথম অবৈতনিক বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন (পরবর্তীকালে বিদ্যালয়টি কালীকৃষ্ণ গার্লস হাই স্কুল নামে পরিচিতি লাভ করে)।
 
যদিও ব্রিটিশ রাজত্বকালে বহুক্ষেত্রেই ইংরেজদের কোনও ইতিবাচক অবদান ছিল না, তবে এর বিপরীত ঘটনাও আছে। ক্রিশ্চান ধর্মপ্রচারকের(missionary) স্ত্রী মার্থা মোল্ট মিয়েড এবং তার কন্যা এলিজা ক্যাল্ডওয়েল মোল্ট দক্ষিণ ভারতে মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাব্যবস্থার পথিকৃত্ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এই প্রচেষ্টা তত্কালীন প্রচলিত ধ্যানধারণার বিরোধী হওয়ায় প্রাথমিকভাবে স্থানীয় প্রতিরোধের মুখে পড়ে। রাজা রামমোহন রায়ের প্রচেষ্টায় ১৮২৯ সালে গভর্নর-জেনারেল উইলিয়াম ক্যভেণ্ডিশ-বেন্টিঙ্কের কার্যকালে সতীদাহ প্রথার বিলুপ্তি ঘটে। বিধবাদের অবস্থার উন্নয়নের জন্য ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আন্দোলনের ফলে ১৮৫৬ সালে বিধবা পুনর্বিবাহ আইন পাশ হয়। নারী মুক্তি আন্দোলনে পন্ডিত রমাবাঈ এর মতো অনেক মহিলা সমাজ সংস্কারকেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।
 
কর্ণাটকের স্থানীয় রাজশাসিত রাজ্য কিত্তুরের রানী, কিত্তুর চেন্নাম্মা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে সশস্ত্র বিপ্লবীদের নেতৃত্ব দেন। উপকূলবর্তী কর্ণাটকের রানী আব্বাক্কা, ইউরোপীয় সৈন্যদের, বিশেষত ১৬ শতকের পর্তুগিজ সৈন্যদের আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন। ঝাঁসির রানী লক্ষ্মী বাই ১৮৫৭ সালের ব্রিটিশ বিরোধী সিপাহী বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন। তিনি বর্তমানে জাতীয় নায়কের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিতা। অযোধ্যার যুগ্ম শাসক বেগম হযরত মহল, ছিলেন আর এক জন শাসক যিনি ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন। তিনি ব্রিটিশদের সঙ্গে সন্ধিস্থাপনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং পরে নেপালে আত্মগোপন করেন। ভোপালের বেগমরাও এই সময়ের উল্লেখযোগ্য মহিলা শাসক হিসেবে বিবেচিত হন। তাঁরা মার্শাল আর্টেও প্রশিক্ষিত ছিলেন।
৪৪ নং লাইন:
ভারতে নারীরা এখন শিক্ষা, ক্রীড়া, রাজনীতি, গণমাধ্যম, শিল্প ও সংস্কৃতি, সেবা খাত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রভৃতি ক্ষেত্রে পূর্ণরূপে অংশগ্রহণ করছেন।ইন্দিরা গান্ধী বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম সময়যাবত্ দায়িত্ব সামলানো নারী প্রধানমন্ত্রী, যিনি একটানা পনের বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
 
ভারতের সংবিধান সব ভারতীয় নারীকে সাম্য(ধারা ১৪), রাষ্ট্রের দ্বারা কোন বৈষম্যের মুখোমুখি না হওয়া(অনুচ্ছেদ ১৫(১)), সমান সুযোগলাভ(ধারা ১৬) এবং একই কাজের জন্য সমান বেতন(ধারা ৩৯(ডি) এবং ধারা 42) লাভের অধিকার দিয়েছে। এছাড়াও, সংবিধান নারী ও শিশুদের সুবিধার্থে রাজ্য কর্তৃক বিশেষ বিধান প্রণয়নকে মান্যতা দেয়, নারীর প্রতি অবমাননামূলক আচরণের বিরোধিতা করে(আর্টিকেল ৫১(এ)(ই)) এবং কাজকর্মের অনুকূল সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি করার ও মাতৃত্বকালীন সুযোগসুবিধা প্রাপ্তির ব্যবস্থা যাতে রাজ্য করতে পারে, সেই সংস্থান রাখে(ধারা ৪২)।
 
ভারতে নারীবাদী কর্মকান্ডের সক্রিয়তা ১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে গতি লাভ করে। জাতীয় স্তরের যে বিষয়গুলি প্রথম নারীবাদী সংগঠণগুলিকে সংঘবদ্ধ করে মথুরা ধর্ষণ মামলা তাদের মধ্যে একটি। ১৯৭৯-১৯৮০ সালে থানায় ভিতর মথুরা নামের একটি অল্পবয়সী মেয়েকে ধর্ষণে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীরা বেকসুর খালাস পাওয়ায় দেশব্যাপী বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়। জাতীয় প্রচার মাধ্যমগুলি দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রচারিত এইসমস্ত বিক্ষোভ সরকারকে প্রমাণ সংক্রান্ত আইন(Evidence Act), ফৌজদারী কার্যবিধি(Criminal Procedure Code) এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির(Indian Penal Code) সংশোধন করতে বাধ্য করে; এবং হেফাজতে থাকাকালীন ধর্ষণ(custodial rape) নামে একটি নতুন অপরাধ নথিবদ্ধ হয়। শিশুকন্যা হত্যা, লিঙ্গ বৈষম্য, নারী স্বাস্থ্য, নারী নিরাপত্তা এবং নারী শিক্ষার মতো বিষয়গুলি নিয়েও নারী আন্দোলনের কর্মীরা একতাবদ্ধ হন।