মার্কসবাদ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
তথ্যসূত্র যোগ/সংশোধন
ভাষায় অর্থনির্মলতা আনয়নের চেষ্টা (দুঃসাধ্য)
১ নং লাইন:
{{সাম্যবাদ}}
{{মার্কসবাদ}}
'''মার্কসবাদ''' ({{lang-en|Marxism}}) ঊনবিংশ শতাব্দীর দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং বিপ্লবী [[কার্ল মার্কস]] ও [[ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস|ফ্রিডরিখ এঙ্গেলসের]] তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক অনুশীলন ও সামাজিক তত্ত্ব। এই তত্ত্বে সামাজিক পরিবর্তনের দ্বান্দ্বিক ও [[ঐতিহাসিক বস্তুবাদ|ঐতিহাসিক বস্তুবাদী]] দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহার করেদৃষ্টিতে সামাজিক দ্বন্দ্ব ও শ্রেণি-সম্পর্ককে কেন্দ্রীভূতভিত্তি করে সমাজ বিশ্লেষণেবিশ্লেষণের বিশ্বদর্শন ও ব্যবহারের প্রক্রিয়া বয়ান করা বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গি।হয়েছে। মার্কসবাদী প্রক্রিয়াকে পদ্ধতিগত অর্থনৈতিক পরিবর্তনে শ্রেণিসংগ্রামের ভূমিকা এবং [[পুঁজিবাদ|পুঁজিবাদের]] বিকাশের সমালোচনা ও বিশ্লেষণে অর্থনৈতিক ও সামজিক-রাজনৈতিক জিজ্ঞাসা ও প্রয়োগে ব্যবহার করা হয়।
 
এটিপ্রয়োগিক বিবেচনায় মার্কসবাদ হচ্ছে মালিক শ্রেণির বাতথা বুর্জোয়া শ্রেণির শোষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন তথা মজুরি-দাসত্ব থেকে প্রলেতারিয়েতের বা শ্রমিক শ্রেণির মুক্তির মতবাদ। এটি হচ্ছে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও বৈপ্লবিক সাধনক্রিয়ার সামগ্রিক রূপ। উনিশঊনিশ শতকের জার্মান দর্শন, ইংরেজি অর্থশাস্ত্র এবং ফরাসি সমাজতন্ত্র রূপে মানবজাতির যা শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি তারমার্কসবাদ বৈধসে উত্তরাধিকারীসবের হলওবৈধ মার্কসবাদ।উত্তরাধিকার।<ref>এম. আর. চৌধুরী সম্পাদিত; ''আবশ্যকীয় শব্দ-পরিচয়'', প্রকাশক: হেলাল উদ্দীন, ঢাকা; এপ্রিল, ২০১২; পৃষ্ঠা-৪৯-৫০।</ref> । হেগেলের দর্শন, [[অ্যাডাম স্মিথ]], [[ডেভিড রিকার্ডো|ডেভিড রিকার্ডোর]] অর্থনীতি তত্ত্ব এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ফরাসি সমাজতন্ত্রের সমন্বয়ে তিনি সমাজের সমালোচনা করেন যেটাকে তিনি বৈজ্ঞানিক ও বিপ্লবী দাবি করেন। ''Capital: A Critique of Political Economy'' ([[ডাস কাপিটাল]]) বইয়ে তার চিন্তার সুসংগত বহিপ্রকাশ ঘটে।
 
==মার্কসবাদের অর্থমর্মার্থ==
মার্কসবাদ ঊনবিংশ শতাব্দীর দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং বিপ্লবী [[কার্ল মার্কস]] ও [[ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস|ফ্রিডরিখ এঙ্গেলসের]] কাজের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক অনুশীলন ও সামাজিক তত্ত্ব। হেগেলের দর্শন, [[অ্যাডাম স্মিথ]], [[ডেভিড রিকার্ডো|ডেভিড রিকার্ডোর]] অর্থনীতি তত্ত্ব এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ফরাসি সমাজতন্ত্রের সমন্বয়ে তিনি সমাজের সমালোচনা করেন যেটাকে তিনি বৈজ্ঞানিক ও বিপ্লবী দাবি করেন। ''Capital: A Critique of Political Economy'' ([[ডাস কাপিটাল]]) বইয়ে তার চিন্তার সুসংগত বহিপ্রকাশ ঘটে।
এমিল বার্ণসের মতে মার্কসবাদ হলো এই জগৎ, জীবন এবং তারই অংশ মানব সমাজ সম্পর্কে সাধারণ তত্ত্ব। এই তত্ত্ব মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতার বুনিয়াদের উপর প্রতিষ্ঠিত। যে সব অস্পষ্ট ধারণা এতদিন প্রচলিত ছিলো এবং এখনও আছে মার্কসীয় তত্ত্ব সে সবগুলির বিরোধী। মার্কসের তত্ত্ব তাঁর সমসাময়িক সমাজের ক্ষেত্রে, অর্থাৎ পুঁজিবাদী সমাজের ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হয়। মার্কসীয় রাজনীতি তত্ত্ব অর্থনীতি, ইতিহাস ও সামাজিক তত্ত্বের পটভূমিতেই বিবেচ্য। তত্ত্ব হিসেবে মার্কসবাদের কোনো শেষ সীমারেখা নেই; ইতিহাসের যত অগ্রগতি হয় এবং মানুষ অধিকতর পরিমাণে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে থাকে ততই মার্কসবাদ সমৃদ্ধ হতে থাকে।<ref name="ওদুদ">{{Cite book |author=মো. আবদুল ওদুদ |title=রাষ্ট্রদর্শন |publisher=মনন পাবলিকেশন |date=দ্বিতীয় সংস্করণ, এপ্রিল ২০১৪ |accessdate=নভেম্বর, ২০১৬ |location=ঢাকা |isbn=978-98-43300-90-4 |page=৪৮২ |quote=}}</ref>
 
==মার্কসবাদের অর্থ==
এমিল বার্ণসের মতে মার্কসবাদ হলো এই জগৎ, জীবন এবং তারই অংশ মানব সমাজ সম্পর্কে সাধারণ তত্ত্ব। এই তত্ত্ব মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতার বুনিয়াদের উপর প্রতিষ্ঠিত। যে সব অস্পষ্ট ধারণা এতদিন প্রচলিত ছিলো এবং এখনও আছে মার্কসীয় তত্ত্ব সে সবগুলির বিরোধী। মার্কসের তত্ত্ব তাঁর সমসাময়িক সমাজের ক্ষেত্রে, অর্থাৎ পুঁজিবাদী সমাজের ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হয়। মার্কসীয় রাজনীতি তত্ত্ব অর্থনীতি, ইতিহাস ও সামাজিক তত্ত্বের পটভূমিতেই বিবেচ্য। তত্ত্ব হিসেবে মার্কসবাদের কোনো শেষ সীমারেখা নেই; ইতিহাসের যত অগ্রগতি হয় এবং মানুষ অধিকতর পরিমাণে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে থাকে ততই মার্কসবাদ সমৃদ্ধ হতে থাকে।<ref name="ওদুদ">{{Cite book |author=মো. আবদুল ওদুদ |title=রাষ্ট্রদর্শন |publisher=মনন পাবলিকেশন |date=দ্বিতীয় সংস্করণ, এপ্রিল ২০১৪ |accessdate=নভেম্বর, ২০১৬ |location=ঢাকা |isbn=978-98-43300-90-4 |page=৪৮২ |quote=}}</ref>
 
==সার্বিক দেখা==
১৬ ⟶ ১৪ নং লাইন:
রাষ্ট্রিক অর্থনীতিতে মার্কসবাদের পূর্বসূরি হলেন ইংরেজ অর্থনীতিবিদ [[অ্যাডাম স্মিথ]] এবং [[ডেভিড রিকার্ডো]]। তাঁরা দেখান যে সমাজের সমস্ত সম্পদের মূল উৎস হলও শ্রম এবং তাতে করে বৈজ্ঞানিক অর্থনীতির ক্ষেত্র প্রস্তুত করেন। উনিশ শতকের মহান [[কল্পলৌকিক সমাজতন্ত্র|কল্পলৌকিক সমাজতন্ত্রী]] [[সাঁ সিমোঁ]] [[শার্ল ফুরিয়ে]] এবং [[রবার্ট ওয়েন]] [[পুঁজিবাদ|পুঁজিবাদী]] ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করেন এবং ভবিষ্যৎ সমাজের প্রধান প্রধান দিকের একটা ছবি দেন। তবে তা প্রতিষ্ঠার পথ দেখান কাল্পনিক পথে। জার্মান দর্শন, ব্রিটিশ অর্থনীতি এবং [[কল্পলৌকিক সমাজতন্ত্র]] রূপে মানবজাতির শ্রেষ্ঠ যা কিছু সৃষ্টি, তার বৈধ উত্তরাধিকারী হলও [[মার্কসবাদ]]। তবে [[কার্ল মার্কস|মার্কস]], [[ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস|এঙ্গেলস]] তাঁদের তাত্ত্বিক পূর্বসূরিদের ধারাবাহকই ছিলেন না, তাঁরা বিচার করে সেগুলি ঢেলে সাজিয়েছেন, গড়ে তুলেছেন নতুন মতবাদ। তাঁদের মতবাদে প্রকাশ পায় সবচেয়ে প্রগতিশীল ও বৈপ্লবিক শ্রেণী, [[প্রলেতারিয়েত|প্রলেতারিয়েতের]] মৌলিক স্বার্থ। মেহনতিদের সামাজিক মুক্তির ইতিহাসে তাঁরা সত্যিকারের এক বিপ্লব ঘটান।<ref name="মার্কসবাদ-লেনিনবাদ">ভ. বুজুয়েভ ও ভ. গরোদনভ, ''মার্কসবাদ-লেনিনবাদ'' [[প্রগতি প্রকাশন]], মস্কো, ১৯৮৮, পৃষ্ঠা-৩৬-৩৭।</ref>
 
==[[ভিত্তি এবং উপরিকাঠামো|ভিত্তি-উপরিকাঠামোর]] দ্বন্দ্ব==
মার্কসবাদের মতে উৎপাদন ব্যবস্থা বা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হলো ভিত্তি, আর ভিত্তির উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠা সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা হলো উপরিকাঠামো। মার্কসবাদী রাজনীতি অনুসারে, আগে ভিত্তি, পরে উপরিকাঠামো; আগে অর্থনীতি, পরে সংস্কৃতি। মানুষের জীবন চর্চার ক্ষেত্রে ভিত্তিটাই হলো প্রাথমিক বা মুখ্য উপাদান, আর উপরিকাঠামো হলো গৌণ বা কম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অবশ্য এখানে উল্লেখ্য যে, ভিত্তি-উপরিকাঠামোর সম্পর্কটা যান্ত্রিক নয়, পরন্তু দ্বান্দ্বিক। অর্থাৎ ভিত্তি উপরিকাঠামোকে গড়ে তোলে, আবার উপরিকাঠামোও ভিত্তির উপর ক্রিয়া করে_এরা পরস্পরকে যুগপৎ দ্বান্দ্বিকভাবে প্রভাবিত করে। মার্কসীয় রাজনীতি ভিত্তি-উপরিকাঠামোকে এইরূপ দ্বান্দ্বিক সম্পর্কের জায়গা থেকে দেখে থাকে।<ref>সুজিত সেন, মার্কসবাদ তাত্ত্বিক রূপরেখা, মিত্রম, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ জুন, ২০০৯, পৃষ্ঠা ১০, ISBN: 978-93-80036-007.</ref>