আসফাকউল্লা খান: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১৪ নং লাইন:
}}
 
'''আসফাকউল্লা খান''' {{অডিও|Asfaqulla Khan.ogg|উচ্চারণ}} ([[অক্টোবর ২২|২২ অক্টোবর]], [[১৯০০]] - [[ডিসেম্বর ১৯|১৯ ডিসেম্বর]], [[১৯২৭]]) ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন বীর যোদ্ধা যিনি [[রামপ্রসাদ বিসমিল|রামপ্রসাদ বিসমিলের]] সাথে শহীদ হয়েছিলেন। তাদের উভয়কে একই দিনে আলাদা জেলে ফাঁসি দেয়া হয়।
 
আসফাকউল্লা খান ছিলেন বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভারতীয় [[মুসলিম]] যাকে ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ফাঁসি দেয়া হয়।<ref>* {{cite book |url=http://books.google.co.in/books?id=JsDNDeHkb8AC&pg=PA62&dq=Ram+Prasad+Bismil&hl=en&sa=X&ei=5IeYUZvDDsXZrQep-YHoAg&ved=0CDsQ6AEwAzgK#v=onepage&q=Ram%20Prasad%20Bismil&f=false|title=Great Muslims of undivided India |first= Nikhat
২০ নং লাইন:
 
==শৈশব==
আসফাকউল্লা ১৯০০ সালের ২২ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন [[উত্তরপ্রদেশ| উত্তর প্রদেশের]] শাহজাহানপুরে। তাঁর পিতা, শফিক উল্লা খান পাঠান পরিবারের মানুষ ছিলেন এবং তাঁর পরিবার সামরিক দিক দিয়ে বিখ্যাত ছিলো। তাঁর মায়ের দিক থেকে পরিবারটি ছিলো অধিক শিক্ষিত এবং অনেক আত্মীয় ব্রিটিশ ভারতের পুলিশ এবং প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর মা মাজহুর-উন-নিসা ছিলেন একজন ধার্মিক নারী। আশফাকউল্লা ছিলেন চার ভায়ের ভেতরে সবচেয়ে ছোট ছেলে। তাঁর বড় ভাই রিয়াসাত উল্লাহ খান ছিলেন পণ্ডিত [[রামপ্রসাদ বিসমিল|রামপ্রসাদ বিসমিলের]] সহপাঠী। যখন মইনপুর ষড়যন্ত্রে বিসমিলকে অভিযুক্ত করা হয়, রিয়াসাত তাঁর ছোট ভাই আশফাককে বিসমিলের উর্দু শায়ের কবিতার শক্তি ও সাহস সম্পর্কে বলেছিলেন। তারপর থেকেই আশফাক বিসমিলের সাথে তাঁর কবিতার দৃষ্টিভঙ্গির জন্য সাক্ষাতে আগ্রহী ছিলেন। [[১৯২০]] সালে, যখন বিসমিল শাহজাহানপুরে আসেন এবং ব্যবসায় নিজেকে যুক্ত করেন, আশফাক বহুবার বিসমিলের সাথে সাক্ষাতের চেষ্টা করেন কিন্তু বিসমিল কোনো মনোযোগ দেননি।
 
[[১৯২২]] সালে, যখন [[অসহযোগ আন্দোলন]] শুরু হয়, বিসমিল জনগণকে আন্দোলন সম্পর্কে বলার জন্য শাহজাহানপুরে সভা সংগঠিত করেন। আশফাক তাঁর সাথে জনসভায় সাক্ষাত করেন এবং নিজেকে তাঁর সহপাঠীর ছোটভাই হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বিসমিলকে আরো বলেন যে, তিনি 'ওয়ার্সি' এবং 'হযরত' ছদ্মনামে কবিতা লিখেন। বিসমিল ব্যক্তিগত যোগাযোগ করে শাহজাহানপুরে তাঁর কিছু কবিতার চরণ শোনেন এবং তারা ভালো বন্ধুতে পরিণত হন। আশফাক মাঝেমাঝেই কিছু লিখতেন এবং তা বিসমিলকে দেখাতেন, বিসমিল তা সংশোধন ও উন্নতি সাধন করতেন। এভাবেই দুই কবির এক উন্নতি ঘটে এবং এটি এতোই পরিচিতি পায় যে যারাই তাদের কবিতা কোনো কনফারেন্সে শুনতেন, তারাই উর্দু ভাষায় তাঁদের মুশায়েরা শুনে বিস্মিত হতেন।
 
==কাকোরি ট্রেন ডাকাতি==
বিপ্লবীরা বুঝেছিলেন যে অহিংসার নরম কথার মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা আসবে না এবং তাই তারা ভারতে বসবাসকারী ব্রিটিশদের ভেতরে ভীতির সঞ্চারের জন্য বোমা, রিভলভার এবং অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করতে চাইলেন। যদিও [[ব্রিটিশ রাজ]] অনেক বড় এবং খুব অল্প কয়েকজন ভারতে রাজনৈতিক বিভক্তি এবং প্রশিক্ষণবিহীন সেনাবাহিনীর জন্য ভারত জয় করেছিলো। কংগ্রেসের তথাকথিত নেতাদের দ্বারা অসহযোগ আন্দোলনের প্রত্যাহার সারা দেশের বিপ্লবীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলো। কিন্তু নতুন শুরু হওয়া বিপ্লবী আন্দোলনের প্রয়োজন থেকেই অর্থের দরকার ছিলো। একদিন শাহজাহানপুর থেকে [[লখনৌ]]তে ট্রেন ভ্রমণের সময় পণ্ডিত রামপ্রসাদ বিসমিল খেয়াল করলেন যে প্রত্যেক স্টেশন মাস্টার তার কেবিনে গার্ডের মাধ্যমে টাকার ব্যাগ আনছেন। সেই টাকার ব্যাগটি লখনৌ জংশনের সুপারেন্টেন্ডেন্টের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিসমিল সিদ্ধান্ত নিলেন সরকারি অর্থ লুট করার এবং সেই টাকা সেই সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার যারা প্রতিনিয়ত ভারতকে ৩০০ বছরের অধিককাল ধরে লুট করছে। এটির মাধ্যমে শুরু হলও [[কাকোরি বিপ্লব|কাকোরী ট্রেন ডাকাতি]]।
 
তাঁদের কার্যক্রম চালানো এবং অস্ত্রশস্ত্র কেনার উদ্দেশ্যে, বিপ্লবীরা [[আগস্ট ৮|৮ আগস্ট]], [[১৯২৫]] তারিখে শাহজাহানপুরে একটি সভায় বসেন। অনেক কথাবার্তার পর এটি সিদ্ধান্ত হয় যে তারা সরণপুর লখনৌ চলাচলকারী ৮-ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেন বহনকারী সরকারি কোষাগার লুট করবেন। ৯ আগস্ট ১৯২৫ তারিখে আসফাকউল্লা খান এবং অন্য আটজন বিসমিলের নেতৃত্বে ট্রেন লুট করেন। অন্যরা হলেন বারানসি থেকে [[রাজেন্দ্র লাহিড়ী]], বাংলা থেকে শচীন্দ্র নাথ বকসি, উন্নাও থেকে [[চন্দ্রশেখর আজাদ]], কলকাতা থেকে কেশব চক্রবর্তী, রাইবেরেলি থেকে বনওয়ারী লাল, ইটাওয়া থেকে মুকুন্দি লাল, বেনারস থেকে মন্মথ নাথ গুপ্ত এবং শাহজাহানপুর থেকে মুরারি লাল।
 
==ষড়যন্ত্র মামলা শুরু==
ব্রিটিশ সরকার বিপ্লবীদের সাহস দেখে আশ্চর্য হয়েছিলো। ভাইসরয় স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে নিয়োগ করে মামলাটি তদন্ত করবার জন্যে। এক মাসের মধ্যে সি.আই.ডি সূত্র বের করে ফেলে এবং প্রায় সব বিপ্লবীদের একরাতেই গ্রেপ্তার করার সিদ্ধান্ত নেয়। [[সেপ্টেম্বর ২৬|২৬ সেপ্টেম্বর]], [[১৯২৫]] তারিখ সকালবেলা পণ্ডিত রামপ্রসাদ বিসমিল এবং অন্যান্য বিপ্লবীদের পুলিস গ্রেপ্তার করে কিন্তু আসফাক ছিলেন একমাত্র ব্যক্তি যার খোঁজ পুলিস পায় না। আসফাক লুকিয়ে পড়েন এবং [[বারাণসী]] যাত্রা করেন, সেখান থেকে [[বিহার]] গমন করেন এবং সেখানে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিতে দশ মাস কাজ করেন। তিনি বিদেশ যেতে চেয়েছিলেন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে মূর্ত সহায়তার জন্য [[Lala Har Dayal|লালা হর দয়ালের]] সাথে সাক্ষাত করতে চেয়েছিলেন। তিনি কীভাবে দেশ ত্যাগ করবেন তা বের করতে দিল্লি যান, সেখানে তিনি তার একজন পাঠান বন্ধুর সহায়তা নেন এবং সেই বন্ধুটিই বিশ্বাসঘাতকতা করে পুলিসকে জানিয়ে দেয় এবং আসফাককে পুলিস গ্রেপ্তার করে।
 
তাসাদ্দুক হোসেন, তৎকালীন পুলিস সুপার বিসমিল এবং আসফাকের মধ্যে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ভূমিকা দেখাতে চেষ্টা করে। সে আরো "বিসমিলের" বিরুদ্ধে আসফাককে উত্তেজিত করতে চেষ্টা করে কিন্তু আসফাক ছিলেন দৃঢ়চেতা ভারতীয় যিনি এস.পি. তাসাদ্দুক হোসেনকে এই বলে বিস্মিত করে, "Khan Sahib!, I know Pandit Ram Prasad better than you, he is not such a person as you say but even if you are right then I am also quite sure that as a Hindu, he will be much better than [[British India]] to whom you are serving like a servant."<ref>[http://articles.timesofindia.indiatimes.com/2004-08-02/lucknow/27154421_1_kakori-rajendra-nath-lahiri-train] Times of India - "Daredevilry of sons of the soil"</ref>