এভারেস্ট পর্বত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে; কোনো সমস্যা?
NahidSultanBot (আলোচনা | অবদান)
বট নিবন্ধ পরিষ্কার করেছে, কোন সমস্যা?
৩৫ নং লাইন:
পৃথিবীর এই উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ সব ধরণের পর্বতারোহীদের আকর্ষণ করে- একেবারেই নতুন পর্বতারোহী থেকে শুরু করে বহু অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পোড়-খাওয়া পর্বত-অভিযাত্রীরাও এতে সফল আরোহণের জন্যে পেশাদার পর্বত পথ-প্রদর্শকদের পেছনে দেদারসে টাকা খরচ করতে দ্বিধাবোধ করে না। যদিও এভারেস্টে আরোহণ পর্বতারোহণের কারিগরী দিক দিয়ে অতোটা কঠিন না হলেও (যেখানে [[আট-হাজারী পর্বতশৃঙ্গ|আট-হাজারী]] অন্যান্য পর্বতশৃঙ্গ যেমন [[কে২]] বা [[নাঙ্গা পর্বত|নাঙ্গা পর্বতে]] আরোহণ অনেক বেশি দুঃসাধ্য) [[উচ্চতা-পীড়া]], প্রতিকূল আবহাওয়া এবং বাতাস ইত্যাদি কারণে এ চূড়ায় আরোহণ বেশ বিপদজনক। ২০০৮ সালের শেষ পর্যন্ত ২,৭০০ জন পর্বতারোহী সর্বমোট ৪,১০২ বার এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করেছেন।<ref>[http://www.8000ers.com/cms/content/view/52/185/ Full list of all ascents of Everest up to and including 2008 (in pdf format)]</ref> পর্বতারোহীরা নেপালের [[পর্যটন]] আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস, কারণ এভারেষ্ট পর্বতশৃঙ্গ আরোহণে ইচ্ছুক প্রত্যেক পর্বতারোহীকে নেপাল সরকারের কাছ থেকে ২৫,০০০ [[মার্কিন ডলার]] মূল্যের একটি ব্যয়বহুল পারমিট সংগ্রহ করতে হয়।<ref>{{cite web |url=http://www.nationalgeographic.com/adventure/0305/expert_everest.html |title=National Geographic Adventure Magazine: Ask Adventure--Tips |publisher=[[National Geographic Society]]|year=2005|month=May|accessdate=2008-01-23}}</ref> এতে আরোহণ করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ২১০ জন পর্বতারোহী প্রাণ হারিয়েছেন, এর মধ্যে ৮ জন ১৯৯৬ সালে পর্বতের অত্যন্ত উঁচুতে ঝড়ের কবলে পড়ে প্রাণ হারান। বিশেষত [[ডেথ জোন]] এ আবহাওয়া এতোটাই প্রতিকূল যে বেশিরভাগ সময় হতভাগ্য পর্বতারোহীর মৃতদেহ সেখান থেকে উদ্ধার করা সম্ভবপর হয় না। এরকম কিছু দৃশ্য আদর্শ পর্বতারোহণ রুট থেকে লক্ষ্য করা যায়।<ref>{{cite web |url=http://www.education.theage.com.au/pagedetail.asp?intpageid=1652&strsection=students&intsectionid=0 |title= Ethics of Everest |author=Haywood, Ben|publishdate=2006-06-05|accessdate=2008-01-23 |work=The Age Education}}</ref>
[[চিত্র:MountEverestRelief.png|300px|thumb|right ]]
 
== সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া হিসেবে আবিষ্কার ==
[[চিত্র:Nepal-map-blank.png|300px|thumb|নেপাল-তিব্বত সীমান্তে অবস্থান]]
পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতসমূহের অবস্থান এবং পরিচয় শনাক্ত করার লক্ষ্যে ১৮০৮ সালে পরাধীন ভারতে ব্রিটিশরা [[বৃহৎ ত্রিকোণমিতিক জরিপ]] আরম্ভ করে। জরিপকাজে নিঁখুত পরিমাপের জন্যে ১১০০ পাউন্ড অজনের [[থিয়োডোলাইট]] ব্যবহৃত হয়। দক্ষিণ ভারত থেকে জরিপকাজ আরম্ভ করে জরুপকারী দল ক্রমাগত উত্তরদিকে সরতে থাকে এবং ১৮৩০ সালে তারা হিমালয়ের পাদদেশে পৌঁছায়। কিন্তু রাজনৈতিক এবং ঔপনিবেশিক আগ্রাসনের ভয়ে নেপাল সরকার ব্রিটিশদের তাদের দেশে প্রবেশাধিকার দেবার ব্যাপারে অনিচ্ছুক ছিল। জরিপ দলের নেপালে প্রবেশের সকল আবেদনই প্রত্যাখান করা হয়।
 
সব বাধা-বিপত্তি তুচ্ছ করে ব্রিটিশ জরিপকারী দল কাজ চালিয়ে যায় এবং ১৫০ মাইল (২৫০ কিমি)দূর পর্যন্ত অবস্থিত পর্যবেক্ষণ স্টেশন থেকে হিমালয়ের জরিপ কাজ সম্পন্ন করে। তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বছরের কেবল শেষ তিন মাস জরিপকাজ চলত।১৮৪৭ সালের শেষ দিকে [[ব্রিটিশ প্রধান জরিপকারক]] [[এন্ডু ওয়াহ]] হিমালয়ের পূর্ব দিকে অবস্থিত [[সবাজপুর]] স্টেশন থেকে বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন করেন। সে সময় বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া হিসেবে বিবেচিত হত [[কাঞ্চনজঙ্ঘা]]। ওয়াহ [[কাঞ্চনজঙ্ঘা|কাঞ্চনজঙ্ঘার]] ১৪০ মাইল (২৩০ কিমি) পূর্বে আরো উঁচু একটি পর্বত লক্ষ্য করেন। প্রায় একই সময়ে জন আর্মস্ট্রঙ নামে তার এক কর্মচারীও একটি ভিন্ন অবস্থান থেকে চূড়াটি লখ্য করেন এবং একে ''peak-b'' হিসেবে অভিহিত করেন। ওয়াহ পরবর্তীতে মন্তব্য করেন যে যদিও পর্যবেক্ষণ হতে বোঝা যাচ্ছিলো যে ''peak-b'' কাঞ্চনজঙ্ঘা অপেক্ষা উচ্চতর, তা সত্ত্বেও প্রমাণের জন্যে আরো নিকটতর স্থান হতে পর্যোবেক্ষণ প্রয়োজন ছিলো। ওয়াহ কাজটি এগিয়ে নেবার জন্যে তেরাইতে একজন কর্মকর্তাকে প্রেরণ করেন, কিন্তু মেঘের কারণে জরিপকাজ চালানো সম্ভবপর হয়ে ওঠে না।
৪৫ নং লাইন:
১৮৪৯ সালে ওয়াহ সেখানে [[জেমস নিকলসন|জেমস নিকলসনকে]] প্রেরণ করেন। নিকলসন ১১৮ মাইল দূরে অবস্থিত জিরল থেকে দুটি পর্যবেক্ষণ লিপিবদ্ধ করেন। অতঃপর নিকলসন আরো পূর্বে সরে যান এবং পাঁচটি বিভিন্ন স্থান হতে তিরিশেরও অধিক পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন করেন, যার মধ্যে নিকটতমটি ছিল এভারেস্টের ১০৮ মাইল (১৭৪ কিমি) দূর হতে নেয়া।
 
নিকলসন অতঃপর ভারতের গঙ্গা-তীরবর্তী শহর [[পাটনা|পাটনায়]] ফিরে যান এবং পর্যবেক্ষণ হতে প্রাপ্ত উপাত্ত সমূহ নিয়ে হিসাব-নিকাশ আরম্ভ করেন। তার খসড়া উপাত্ত হতে তিনি ''peak-b'' এর উচ্চতা নির্ণয় করেন ৩০,২০০ ফুট (৯,২০০ মিটার), কিন্তু এটি ছিল [[আলোর প্রতিসরণ]] জনিত ত্রুটি অগ্রাহ্য করে নির্ণীত উচ্চতা। তবুও এই খসড়া হিসাব থেকে তিনি বুঝতে পারলেন, peak-b এর উচ্চতা [[কাঞ্চনজঙ্ঘা]] হতে বেশি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে নিকলসন ওই সময়ে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন এবং তার হিসাব-নিকাশ অসমাপ্ত রেখেই দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হন। মাইকেল হেনেসি নামক ওয়াহর একজন সহকর্মী সে সময়ে নামবিহীন চূড়াগুলিকে [[রোমান সংখ্যা|রোমান সংখয়্যায়]] প্রকাশ করা আরম্ভ করেন এবং সেই রীতি অনুযায়ী peak-b এর নতুন নাম হয় peak-XV (চূড়া-১৫)। ১৮৫২ সালে বাঙ্গালি গণিতবিদ ও জরিপকারক [[রাধানাথ শিকদার]] দেরাদুনে অবস্থিত জরিপ সদর-দপ্তরে বসে হিসাব-নিকাশ করে এভারেস্টের সঠিক উচ্চতা আবিষ্কার করেন এবং একে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতচূড়া হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি এনে দেন।তিনি নিকলসনের তথ্যের ভিত্তিতে ত্রিকোণমিতিক পদ্ধতিতে এই হিসাব সম্পন্ন করেন।
 
== নামকরণ ==
৫১ নং লাইন:
 
<nowiki> ''আমার সম্মানিত পূর্বসূরি জরিপ প্রধান কর্ণেল স্যার জর্জ এভারেস্ট আমাকে প্রতিটি ভৌগোলিক উপাদান স্থানীয়ভাবে প্রচলিত নামকরণ করতে শিখিয়েছিলেন। কিন্তু এই পর্বতটি, যা কিনা খুব সম্ভবতঃ পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত- এর কোন স্থানীয় নাম আমরা খুঁজে পাইনি, আর কোন স্থানীয় নাম থেকে থাকলেও নেপালে প্রবেশের আগে তা আমাদের পক্ষে নিশ্চিতভাবে জানা সম্ভব নয়। এরমধ্যেই চূড়াটির নামকরণ করার সুযোগ এবং পাশাপাশি দায়িত্বও আমার কাঁধে বর্তেছে......এমন একটি নাম যা কিনা দেশ-বিদেশের ভূগোলবিদরা জানবে এবং পৃথিবীর সভ্য জাতির লোকদের মুখে মুখে ফিরবে।''</nowiki>
[[জর্জ এভারেস্ট]] ওয়াহের প্রস্তাবকৃত নামটির বিরোধিতা করেন এবং ১৮৫৭ সালে [[রয়েল জিওগ্রাফিক সোসাইটি|রয়েল জিওগ্রাফিক সোসাইটিকে]] বলেন এই নামটি হিন্দীতে লেখা সম্ভব নয় এবং [[ভারত|ভারতের]] স্থানীয়রা নামটি উচ্চারণ করতে পারবে না। তবে তার এই আপত্তি ধোপে টেকেনি - ১৮৬৫ সালে [[রয়েল জিওগ্রাফিক সোসাইটি]] আনুষ্ঠানিকভাবে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতচূড়ার নামকরণ করে [[মাউন্ট এভারেস্ট]]।এভারেস্ট।
 
== উচ্চতা পরিমাপ ==
৬১ নং লাইন:
== সফল অভিযানসমূহ ==
=== শুরুর দিককার অভিযানসমূহ ===
১৮৫৫ সালে [[আলপাইন ক্লাব|আলপাইন ক্লাবের]] প্রেসিডেন্ট [[ক্লিনটন টমাস ডেন্ট]] তার বই ''Above The Snow Line'' এ মন্তব্য করেন যে এভারেস্ট পর্বতে আরোহণ করা সম্ভব।
 
[[জর্জ ম্যালোরি]] তার ১৯২১ সালের অভিযানের সময় উত্তরদিক থেকে এভারেস্টে আরোহণ করার পথ আবিষ্কার করেন। ঐ অভিযানটি ছিলো মূলতঃ অনুসন্ধানমূলক অভিযান, চূড়ায় ওঠার মত প্রয়োজনীয় উপকরণ অভিযাত্রী দলটির ছিলো না। ম্যালোরির নেতৃত্বে (যিনি এই অভিযানের মাধ্যমে এভারেস্টের প্বার্শদেশে পা রাখা প্রথম ইউরোপিয়ানে পরিণত হন) দলটি উত্তরের গিরিখাতের ৭,০০৭ মি (২২,৯৮৯ ফুট) আরোহণ করে। সেখান থেকে চূড়ায় ওঠার জন্যে ম্যালোরি একটি সম্ভাব্য রুট পরিকল্পনা করেন, কিন্তু তার সহযাত্রীরা এরকম একটি দুঃসাহসিক অভিযানের জন্যে মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। তাই সেবার তিনি ফিরে যান।
 
ব্রিটিশরা [[১৯২১ সালের অভিযান|১৯২১ সালের অভিযানে]] হিমালয়ে প্রত্যাবর্তন করে। এতে [[জর্জ ফিনচ]] প্রথমবারের মত [[অক্সিজেন]] ব্যবহার করে পর্বতারোহণ করেন। তার আরোহণের গতি ছিলো বিস্ময়কর – ঘন্টায় প্রায় ৯৫০ ফুট (২৯০ মি)। তিনি ৮,৩২০ মিটার (২৭,৩০০ ফুট) ওপরে ওঠেন, যা ছিল সর্বপ্রথম কোনো মানুষের ৮,০০ মিটারের বেশি উচুতে আরোহণ। ম্যালোরি এবং কর্ণেল ফেলিক্স দ্বিতীয়বারের মতো ব্যর্থ অভিযান করেন। ম্যালোরির নেতৃত্বাধীন দলটি উত্তরের গিরিখাত বেয়ে নামতে গিয়ে ভূমিধ্বসের কবলে পড়ে এবং সাতজন কুলি নিহত হয়।
 
পরবর্তী অভিযান হয় ১৯২৪ এ। ম্যালোরি এবং ব্রুসের প্রাথমিক প্রচেষ্টা স্থগিত করতে হয় যখন খারাপ আবহাওয়ার কারণে ক্যাম্প VI নির্মাণ অসম্ভব হয়ে পড়ে। পরবর্তী প্রচেষ্টা চালান নর্টন এবং সমারভিল, তারা অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়াই অভিযানে নামেন এবং চমৎকার আবহাওয়ার সুবিধা পেয়ে নর্থ ফেস থেকে গ্রেট কুলোয়ির পর্যন্ত পরিভ্রমণ করেন। নর্টন ৮,৫৫৮ মিটার (২৮,০৭৭ ফুট ) পরিভ্রমণ করেন, যদিও যদিও শেষ এক ঘন্টায় তিনি মাত্র ১০০ ফুটের মতো উঠেছিলেন। ম্যালোরি শেষ চেষ্টা হিসেবে দ্রুত অক্সিজেন সরঞ্জাম যোগাড় করে এভারেস্টে অভিযানের আয়োজন করেন। এবার তিনি সঙ্গী হিসেবে নেন তরুণ [[এন্ড্রু আর্ভিং|এন্ড্রু আর্ভিংকে]]। ৮ জুন, ১৯২৪ তারিখে জর্জ ম্যালোরি ও এন্ড্রু আর্ভিং উত্তর গিরিখাত দিয়ে এভারেস্ট-চূড়া বিজয়ের মিশন শুরু করেন। এই অভিযান থেকে তাদের আর ফিরে আসা হয়নি। ১৯৯৯ [[ম্যালোরি ও আর্ভিং রিসার্চ এক্সপেডিশন]] নর্থ ফেসের নিচে, ক্যাম্প-VI এর পশ্চিমে একটি তুষার গহবর থেকে ম্যালোরির মৃতদেহ উদ্ধার করে। তারা দু’জন এভারেস্ট চূড়ায় ১৯৫৩ সালে [[এডমুন্ড হিলারি|হিলারি]] ও [[তেনজিং নোরগে|তেনজিংয়ের]] স্বীকৃত সর্বপ্রথম বিজয়ের আগে আরোহণ করতে পেরেছিলেন কিনা তা নিয়ে পর্বতারোহী সমাজে বহু বিতর্ক রয়েছে।
১০৮ নং লাইন:
* [http://www.everesthistory.com/everestsummits/summitsbyyear.htm Summits and deaths per year]
* [http://www.yetizone.com/Everest/Trek/Everest_Trek.shtml The Everest Trek guidebook]
 
 
{{অসম্পূর্ণ}}