বিধুভূষণ দে, ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী। তিনি বিখ্যাত অনুশীলন সমিতির মধ্যে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। স্বাধীনতার লক্ষ্যে তাঁর অবিচল অঙ্গীকার তাঁকে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে নিয়ে যায় যখন তিনি খুলনা ষড়যন্ত্র মামলায় জড়িয়ে পড়েন, যা তাঁর আত্মোৎসর্গের প্রমাণ।[১]

ব্রিটিশ রাজ তাকে ভয়ঙ্কর হুমকি হিসাবে বিবেচনা করেছিল, তবুও তার অদম্য মনোবল অটুট ছিল। ১৯০৯ থেকে ১৯২১ সাল পর্যন্ত এক ভয়াবহ অগ্নিপরীক্ষা সহ্য করে বিধুভূষণ ব্রিটিশ নিপীড়নের প্রতীক সেলুলার জেলের কঠোর বন্দিদশা সহ্য করেছিলেন। ক্ষমাহীন অবস্থা সত্ত্বেও জাতিকে মুক্ত করার জন্য তাঁর দৃঢ় সংকল্প কখনও টলেনি। তার স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ার পরে, তিনি গঠনমূলক প্রচেষ্টার দিকে তার শক্তি পুনর্নির্দেশ করেছিলেন।

বিধুভূষণ ডি.এম. গ্রন্থাগারের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, জ্ঞানের আশ্রয়স্থল এবং স্বাধীন ভারতের সন্ধানে ঐক্যবদ্ধ আত্মীয়দের জন্য একটি মিলনস্থল। এই দেয়ালের মধ্যেই কবি কাজী নজরুল ইসলামের আলোড়ন সৃষ্টিকারী পঙক্তি অনুরণিত হয়, গণমানুষের আবেগকে প্রজ্বলিত করে। বিধুভূসানের সমর্থন কেবল কথার বাইরে ছিল, তিনি কাজী নজরুল ইসলামকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন, যা স্বাধীনতার কণ্ঠস্বরকে লালন করার প্রতিশ্রুতির প্রমাণ। রাজনৈতিক অঙ্গনেও তার নিষ্ঠা প্রসারিত ছিল। তিনি নেতাজির ফরওয়ার্ড ব্লককে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করেছিলেন, কারণটির প্রতি তাঁর অবিচল আনুগত্য প্রদর্শন করেছিলেন। ১৯৪৬ সালে শ্যামবাজারের ফাইভ ক্রসিংয়ে একটি লরি দুর্ঘটনায় তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে।[২]

বিধুভূষণ দে ১৯৫১ সালের ৮ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ২৪, ১৪, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গণ, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ১৮৪।