বিওএসি ফ্লাইট ৭৮৩ ১৯৫৩ সালের ২রা মে ভারতের কলকাতা থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই প্রচণ্ড ঝড়ের মুখোমুখি হয়ে মাঝ আকাশে ভেঙে পড়ে ও বিধ্বস্ত হয়। এটি একটি যাত্রীবাহী ডি হ্যাভিল্যান্ড কমেট বিমান ছিল, যা জি-এএলওয়াইভি হিসাবে নিবন্ধিত ছিল এবং ব্রিটিশ ওভারসিজ এয়ারওয়েজ কর্পোরেশন দ্বারা পরিচালিত হত। উড়োজাহাজে থাকা ৪৩ জন যাত্রী ও বিমান কর্মী সবাই নিহত হয়েছিল।[১]

বিওএসি ফ্লাইট ৭৮৩
জি-এএলওয়াইভি, দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিমান
দুর্ঘটনা
তারিখ২ মে ১৯৫৩ (1953-05-02)
সারমর্মগুরুতর টার্বুলেন্সে কাঠামোগত ব্যর্থতা
স্থানজাগলগড়ী, দমদম বিমানবন্দরের নিকটস্থ, কলকাতা, ভারত
২২°৪৭′১৯″ উত্তর ৮৮°০৪′৫৫″ পূর্ব / ২২.৭৮৮৫৭৭° উত্তর ৮৮.০৮২০৮১° পূর্ব / 22.788577; 88.082081
উড়োজাহাজ
বিমানের ধরনডি হ্যাভিল্যান্ড ডিএইচ.১০৬ কমেট
পরিচালনাকারীবিওএসি
নিবন্ধনজি-এএলওয়াইভি
ফ্লাইট শুরুকালাং বিমানবন্দর, সিঙ্গাপুর
প্রথম বিরতিদমদম বিমানবন্দর, কলকাতা, ভারত
দ্বিতীয় বিরতিসফদরজং বিমানবন্দর, ভারত
গন্তব্যলন্ডন, ইংল্যান্ড
মোট ব্যক্তি৪৩
যাত্রী৩৭
কর্মী
নিহত৪৩
উদ্ধার

দুর্ঘটনাটি ঘটার পর, কমেট বিমানের কাঠামোগত ব্যর্থতার সঙ্গে জড়িত আরও দুটি মারাত্মক দুর্ঘটনা এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ঘটেছিল হয়েছিল। দুর্ঘটনা দুটি হল বিওএসি ফ্লাইট ৭৮১দক্ষিণ আফ্রিকান এয়ারওয়েজ ফ্লাইট ২০১। ফলস্বরূপ, সম্পূর্ণ বিমান বহরটিকে গ্রাউন্ডেড করা হয়েছিল যতক্ষণ না এই ধরণের বিমানের বিস্তৃত পুনঃনকশা করা হয়েছিল, যার ফলে কমেট ২ সংস্করণের বিকাশ ঘটেছিল।[২]

উড়ানের ইতিহাস সম্পাদনা

উড়ান ৭৮৩ সিঙ্গাপুর থেকে শুরু হয়েছিল এবং লন্ডনে যাত্রা শেষ করার জন্য নির্ধারিত ছিল। কলকাতার দমদম বিমানবন্দরে (বর্তমানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) একটি নির্ধারিত যাত্রাবিরতির পর, বিমানটি ২রা মে স্থানীয় সময় ১৬ টা ২৯ মিনিটে (১০:৫৯ জিএমটি) দিল্লির দিকে যাত্রা শুরু করেছিল।[৩]

উদয়নের ছয় মিনিট পরে, যখন জেট বিমানটি ৭,৫০০ ফুট (২,৩০০ মি) উপরে উঠছিল, তখন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সাথে রেডিও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রায় একই সময়ে, বিমানটিকে কলকাতার উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ২৫ মাইল (৪০ কিমি) দূরে জাগলগড়ী গ্রামের কাছে প্রত্যক্ষদর্শীরা অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় মাটিতে নেমে আসতে দেখেছিল। সেই সময়ে উক্ত এলাকায় প্রচণ্ড বৃষ্টি ও বজ্রপাত হচ্ছিল।

জি-এএলওয়াইভি-এর ধ্বংসাবশেষ ৫ মাইল (৮ কিমি) বরাবর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পাওয়া গিয়েছিল, যার প্রধান অংশগুলিতে তখনও আগুন ছিল। কেউ জীবিত ছিল না।[৩]

ভুক্তভোগী সম্পাদনা

বিমানে থাকা ৪৩ জনের মধ্যে ৬ জন ক্রু সদস্য এবং ব্রিটিশ, মার্কিন, অস্ট্রেলীয়, বার্মিজ ও ফিলিপীয় জাতীয়তার ৩৭ জন যাত্রী ছিলেন।[৩] নিহতদের মধ্যে অস্ট্রেলীয় রাজনীতিবিদ ট্রেভর ওল্ডহ্যাম ও তার স্ত্রী ছিলেন।[৪]

তদন্ত সম্পাদনা

পরবর্তী তদন্তে দেখা গেছে যে, একটি ঝড়ের মুখোমুখি হওয়ার পরে, বিমানটি "বাতাসে কাঠামোগত ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছিল, যার ফলে আগুন লেগেছিল।" অতিরিক্ত চাপকে ব্যর্থতার সম্ভাব্য কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছিল, যার ফলে বজ্রঝড়ের মধ্যে প্রবল দমকা হাওয়া বা বজ্রঝড়ের মধ্য দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় পাইলটের অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ বা নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঘটনা ঘটেছিল।[৩][৫]

তদন্তকারীরা "কমেট বিমানের কাঠামোতে কোনো পরিবর্তন প্রয়োজন কিনা তা বিবেচনা করার" সুপারিশও করেছিলেন।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Lessons Learned From Civil Aviation Accidents"lessonslearned.faa.gov। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। ২০ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২৩ 
  2. Ranter, Harro। "ASN Aircraft accident de Havilland DH-106 Comet 1 G-ALYV Calcutta-Dum Dum Airport (CCU)"aviation-safety.netএভিয়েশন সেফটি নেটওয়ার্ক। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২৩ 
  3. Lokur, N.S. (২৬ মে ১৯৫৩)। Report of the Court Investigation on the Accident to COMET G-ALYV on 2nd May, 1953 (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। লন্ডন: হার মাজেস্টি'স স্টেশনারি অফিস। ২০১৫-০৪-১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২৩ 
  4. "Comet Jet Crash in "Tempest". 43 Killed: Four Australians"দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড। ৪ মে ১৯৫৩। পৃষ্ঠা ১। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মার্চ ২০২৩ – National Library of Australia-এর মাধ্যমে। 
  5. "The Comet Accident – Report from Calcutta"Flight and Aircraft Engineer। খণ্ড LXIII নং 2317। ১৯ জুন ১৯৫৩। পৃষ্ঠা 781। ১৫ নভেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা