বানৌজা কপোতাক্ষ

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ

বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ (সংক্ষেপেঃ বানৌজা) কপোতাক্ষ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আইল্যান্ড-শ্রেণীর একটি উপকূলীয় টহল জাহাজ। জাহাজটি গভীর সমুদ্র এবং উপকূলীয় অঞ্চলে টহল প্রদান, উদ্ধার ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, জলদস্যূতা দমন, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম।[১][২][৩][৪]

ইতিহাস
বাংলাদেশ
নাম: বানৌজা কপোতাক্ষ
নির্মাতা: হাল, রাসেল অ্যান্ড কোম্পানি, অ্যাবেরডিন
ইয়ার্ড নম্বর: ৯৭৩
নির্মাণের সময়: ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৬
অভিষেক: ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৬
অর্জন: ৩১ অক্টোবর, ২০০২
কমিশন লাভ: ৩ অক্টোবর, ২০০৪
মাতৃ বন্দর: খুলনা
শনাক্তকরণ: পি৯১২
অবস্থা: সক্রিয়
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: আইল্যান্ড-শ্রেণীর টহল জাহাজ
ওজন: ১,২৬০ টন
দৈর্ঘ্য: ৫৯.৫ মিটার (১৯৫ ফু)
প্রস্থ: ১১ মিটার (৩৬ ফু)
গভীরতা: ৪.৫ মিটার (১৫ ফু)
প্রচালনশক্তি:
  • ২ × রাস্টন ১২আরকেসি ৫,৬৪০ (৪,২১০ কিলোওয়াট) এইচপি ডিজেল ইঞ্জিন
  • ১ × শ্যাফট
গতিবেগ: ১৬.৫ নট (৩০.৬ কিমি/ঘ; ১৯.০ মা/ঘ)
সীমা: ৭,০০০ নটিক্যাল মাইল (৮,১০০ মা; ১৩,০০০ কিমি), ১২ নট (২২ কিমি/ঘ) গতিতে
লোকবল: ৩৯ জন (৫ জন কর্মকর্তা)
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
  • সার্ফেস সার্চ এন্ড নেভিগেশন: কেলভিন হিউগস টাইপ ১০০৬ (রাডার) আই-ব্যান্ড
  • কম্ব্যাট ডাটা সিস্টেম: রাকাল সিএএনই ডিইএ-১ অ্যাকশন ডাটা অটোমেশন
রণসজ্জা:
  • ১ × বোফোর্স ৪০মিমি/৬০ এমকে-৩ কামান
  • ২ × এফএন ৭.৬মিমি স্বয়ংক্রিয় মেশিনগান
  • ইএসএম: অরেঞ্জ কোরপ; ইন্টারসেপ্ট (প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা)

ইতিহাস সম্পাদনা

বানৌজা কপোতাক্ষ জাহাজটি সমুদ্রগামী ট্রলার এফপিভি জুরা (১৯৭৩) এবং এফপিভি ওয়েস্ট্রা (১৯৭৪) জাহাজদ্বয়ের নকশার উপর ভিত্তি করে হল, রাসেল অ্যান্ড কোম্পানি দ্বারা নির্মিত হয়। ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৫ সালে জাহাজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৬ সালে জাহাজটি পানিতে ভাসানো হয়। পরবর্তীতে জাহাজটি এইচএমএস শেটল্যান্ড (পি২৯৮) নামে ৬ অক্টোবর, ১৯৭৯ সালে ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে।

৩১ অক্টোবর, ২০০২ সালে বানৌজা কপোতাক্ষ জাহাজটিকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সংগ্রহ করে এবং জাহাজটি ৪ মে, ২০০৪ সালে নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করে। বর্তমানে জাহাজটি কমোডর কমান্ডিং খুলনা এর কমান্ডের অধীনে মোতায়েন রয়েছে।

২৯ এপ্রিল, ২০০৯ সালে বানৌজা কপোতাক্ষ জাহাজটি বাংলাদেশের গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলে রাজকীয় নৌবাহিনী সাথে দ্বিপাক্ষিক সামুদ্রিক মহড়া সমুদ্র তরঙ্গ এ অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও জাহাজটি ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে অনুষ্ঠিত দ্বিবার্ষিক বহুপাক্ষিক মহড়া অনুশীলন মিলান এ অংশগ্রহণ করে।[৫][৬]

বৈশিষ্ট্য ও যান্ত্রিক কাঠামো সম্পাদনা

বানৌজা কপোতাক্ষ জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৫৯.৫ মিটার (১৯৫ ফু), প্রস্থ ১১ মিটার (৩৬ ফু) এবং গভীরতা ৪.৫ মিটার (১৫ ফু)। এটি স্বাভাবিক অবস্থায় ওজন ১,০০০ টন (৯৮০ লং টন) এবং পূর্ণ অবস্থায় ১,২৮০ টন (১,২৬০ লং টন)। জাহাজটিতে রয়েছে ২টি ৫,৬৪০ অশ্বশক্তি (৪,২১০ কিওয়াট) ক্ষমতা সম্পন্ন রাস্টন ১২আরকেসি ডিজেল ইঞ্জিন। তার ফলে জাহাজটি সর্বোচ্চ ১৬.৫ নট (৩০.৬ কিমি/ঘ; ১৯.০ মা/ঘ) গতিতে চলতে সক্ষম। এছাড়াও জাহাজটি ১২ নট (২২ কিমি/ঘ; ১৪ মা/ঘ) গতিতে ৭,০০০ নটিক্যাল মাইল (৮,১০০ মা; ১৩,০০০ কিমি) সমুদ্র এলাকা জুড়ে টহল কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম।

রণসজ্জা সম্পাদনা

বানৌজা কপোতাক্ষ জাহাজটির উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং গভীর সমুদ্রে অভিযান পরিচালনায় এর সক্ষমতা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ, চোরাচালান রোধ এবং জলদস্যূতা দমনে জাহাজটিতে রয়েছে:

  • ১টি বোফোর্স ৪০ মিমি কামান;
  • ২টি ৭.৬ মিমি স্বয়ংক্রিয় মেশিনগান।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Sailing under a different flag – former Royal Navy vessels serving with other navies | Navy Lookout"www.navylookout.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৪-০৫। ২০২২-০৫-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-১৭ 
  2. "Navy Ship... OPV - Patrolling..."। ১৭ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০২৩ 
  3. "UNROCA (United Nations Register of Conventional Arms)"www.unroca.org। ২০২১-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৮ 
  4. "মোংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে (বানৌজা) কপোতাক্ষ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। | By মোংলা ভয়েস 24 | Facebook"www.facebook.com। ২০২৩-০৭-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-০১ 
  5. "Shomudro Torongo in the Ganges Delta by Royal Navy and Bangladesh Navy"। Marinebuzz.com। ২০০৯-০৫-২১। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-০১ 
  6. "Indian Navy Hosts Milan 2010"। Marinebuzz.com। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-০১