বাংলা খেঁকশিয়াল
বাংলা খেঁকশিয়াল (বৈজ্ঞানিক নাম: Vulpes bengalensis) একপ্রজাতির খেঁকশিয়াল।একে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। বাংলায় একে হেড়ল নামে ডাকা হয়।কয়েক বছরে এদের সংখ্যা কমছে, তবে আশঙ্কাজনক হারে গিয়ে পৌঁছেনি। সেকারণে আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে।[১] বাংলাদেশের ১৯৭৪[২] ও ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-২ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[৩]
বাংলা খেঁকশিয়াল | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | Mammalia |
বর্গ: | মাংশাশী |
পরিবার: | Canidae |
গণ: | Vulpes |
প্রজাতি: | V. bengalensis |
দ্বিপদী নাম | |
Vulpes bengalensis (Shaw, 1800) | |
বিস্তৃতি | |
প্রতিশব্দ | |
Canis kokree |
দৈহিক গঠন
সম্পাদনাবাংলা খেঁকশিয়াল একটি মাঝারি আকৃতির স্তন্যপায়ী প্রাণী। এদের মাথাসহ দেহের দৈর্ঘ্য ৪৫-৬০ সেমি এবং লেজ ২৫-৩৫ সেমি। ওজন ১.৮-৩.২ কেজি। মাজল সরু এবং মাজলের উপরের অংশে লোমের ছোট পট্টি চোখে পড়ে।[৪] কান দেহের তুলনায় বড়। মাথা সরু। লেজ দেহের অর্ধেকেরও বেশি লম্বা। আঙুলের উপর ভর করে চলাফেরা করে। সামনের পায়ে আঙুল পাঁচটি ও পিছনে চারটি। ছেদন দন্ত তীক্ষ্নসূঁচালো ও পেষন দন্ত সুগঠিত। দন্ত সংকেত: কর্তন ৩/৩; ছেদন ১/১; অগ্রপেষন ৪/৪; পেষন ২/৩।[২]
বর্ণ
সম্পাদনামৌসুম ও বয়সভেদে বাংলা খেঁকশিয়ালের বর্ণের তারতম্য হয়ে থাকে। পিঠ সাদা ডোরাসহ লালচে-ধূসর। দেহের পাশ পিঠের তুলনায় বেশি ধূসর। দেহতল সাদাটে। বুকের নিচের অংশ ও তলপেট ফ্যাকাশে লালচে-হলুদ কিংবা হালকা পীত-সাদা। অবসারণীর দিকে লালচে ভাব বেশি। এর কাঁধে কোন আড়াআড়ি ফিতার মত দাগ থাকে না। পায়ের বাইরের অংশ উজ্জ্বল লালচে। চোখের সামনে মাজলের পাশে একটি করে কালো চিতি থাকে। কানের বাইরের অংশ ধূসর ও ভিতরের অংশ সাদাটে। ঋতু ও উপপ্রজাতি ভেদে পিঠের পিলেজের রঙে তারতম্য হতে পারে। তবে সাধারণত পিলেজ তামাটে-ধূসর। কানের কালচে-বাদামি পিলেজের প্রান্তদেশ কালো। বাংলা খেঁকশিয়ালের সবচেয়ে চোখে পড়ার মত অঙ্গটি হল এর বড় ঝাঁকড়া লেজ। লেজ ধূসর ও লেজের উপরিভাগ লালচে। লেজের আগা কালো।[২]
বিস্তৃতি
সম্পাদনাকেবল আর্দ্র বনাঞ্চল ও চরম শুষ্ক এলাকা ছাড়া ভারতীয় উপমহাদেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে এদের দেখা যায়। উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশে নেপালের তেরাই অঞ্চল থেকে ভারতের একেবারে দক্ষিণ পর্যন্ত এবং পশ্চিমে পাকিস্তানের সিন্ধু উপত্যকা থেকে পূর্বে বাংলাদেশ পর্যন্ত এদের বিস্তৃতি সীমাবদ্ধ।[১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ Vulpes bengalensis, The IUCN Red List of Threatened Species এ বাংলা খেঁকশিয়াল বিষয়ক পাতা।
- ↑ ক খ গ জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.), বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: স্তন্যপায়ী প্রাণী, খণ্ড: ২৭ (ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০০৯), পৃ. ১৪৪।
- ↑ বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৫১৩
- ↑ Johnsingh, A. and Jhala, Y. 2004. Vulpes bengalensis (Shaw, 1800). In: Canids: Foxes, Wolves, Jackles, and Dogs. Status Survey and Conservation Action Plan, 2004. pp. 219-222.