বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) হচ্ছে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা যেটি মূলত বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্টকৃত সন্দেহজনক লেনদেন প্রতিবেদন (এসটিআর), নগদ লেনদেনের প্রতিবেদন (সিটিআর), মানি লন্ডারিং (এমএল) এবং সন্ত্রাসের অর্থায়ন (টিএফ) সম্পর্কিত তথ্য বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকট প্রদান করে। সংস্থাটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ, সন্ত্রাসের অর্থায়ন প্রতিরোধ এবং গণধ্বংসের অস্ত্র বিস্তার প্রতিরোধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।[১] বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সর্বশেষ প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মো. মাসুদ বিশ্বাস।[২]
সরকারী সংস্থা রূপরেখা | |
---|---|
গঠিত | জুন ২০০২ |
যার এখতিয়ারভুক্ত | বাংলাদেশ সরকার |
সদর দপ্তর | মতিঝিল, ঢাকা |
মূল সরকারী সংস্থা | বাংলাদেশ ব্যাংক |
ওয়েবসাইট | bfiu.org.bd |
ইতিহাস
সম্পাদনাবাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ২০০২ সালের জুনে বাংলাদেশ ব্যাংকের এর অধিনে 'এন্টি মানি লন্ডারিং ডিপার্টমেন্ট বা এএমএল' নামে গঠিত হয়। এন্টি মানি লন্ডারিং ডিপার্টমেন্ট এর কাজের অধিকতর স্বাধীনতা এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১২ সালে একটি আইন পাশ করা হয় যেটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ নামে পরিচিত।[৩] উক্ত আইনের ২৪ ধারা মোতাবেক এন্টি মানি লন্ডারিং ডিপার্টমেন্ট এর নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট রাখা হয়।[৪]
লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম
সম্পাদনা- একটি কার্যকরী ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা;
- বাংলাদেশে কার্যকর মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও সন্ত্রাসের অর্থায়ন মোকাবেলার শাসন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা;
- উন্নত প্রযুক্তি গ্রহণ এবং শক্তিশালী প্রতিবেদন পরিবেশ নিশ্চিত করতে তথ্য প্রযুক্তির ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিকাশে সহায়তা করা;
- মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও সন্ত্রাসের অর্থায়ন রোধে তথ্যের অবিচ্ছিন্ন প্রবাহ নিশ্চিত করতে এর সাথে সম্পৃক্ত সকল পক্ষসমূহের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা;
- বিশ্বব্যাপী মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও সন্ত্রাসের অর্থায়ন প্রতিরোধ উদ্যোগে সক্রিয় ভূমিকা পালন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিশ্চিতকরণ;
- মানি লন্ডারিং, সন্ত্রাসী অর্থায়ন এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের অস্ত্রপচারের অর্থায়ন এর নতুন নতুন কৌশল চিহ্নিতকরণ ও মোকাবেলা করার জন্য কার্যকরী পন্থা অবলম্বন করা; এবং
- দেশ জুড়ে মানি লন্ডারিং এবং সন্ত্রাসী অর্থায়ন সম্পর্কিত সচেতনতা সৃষ্টি করা।
রিপোর্টিং এজেন্সিস বা প্রতিবেদনকারী সংস্থাসমূহ
সম্পাদনা- ব্যাংক
- আর্থিক প্রতিষ্ঠান
- বিমা কোম্পানি
- মানি এক্সচেঞ্জ
- স্টক ডিলার এবং স্টক ব্রোকার
- পোর্টফোলিও ম্যানেজার এবং মার্চেন্ট ব্যাংকার
- অলাভজনক সংস্থা
- বেসরকারি প্রতিষ্ঠান
- সমবায় সমিতি
- রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার
- আইনজীবী, নোটারি, অন্য আইনি পেশাদার এবং হিসাবরক্ষক
- অর্থ প্রেরণ বা হস্তান্তরের সাথে জড়িত যে কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান এবং
- অন্য যেকোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান যেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে।
পরিচালনা
সম্পাদনাবাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এর প্রধান হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর পদমর্যাদার কর্মকর্তা। প্রধান কর্মকর্তার অধীনে একজন নির্বাহী পরিচালক এবং নির্বাহী পরিচালকের অধীনে দুইজন পরিচালক। পরিচালকের অধীনে আটজন অতিরিক্ত পরিচালক। অতিরিক্ত পরিচালকগণ প্রশাসন, নীতি, বিশ্লেষণ, পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান, অভিযোগ তদারকি ও তথ্য বিনিময় উইংসমূহ তত্ত্বাবধায়ন করেন।[৫]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "BFIU"। www.bb.org.bd। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "বিএফআইইউর নতুন প্রধান মাসুদ বিশ্বাস"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০২২।
- ↑ "মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২"। bdlaws.minlaw.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "২৪। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (BFIU) প্রতিষ্ঠা"। bdlaws.minlaw.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "Open pdf file"। www.bb.org.bd। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৯।