বলয়গ্রাস বিশিষ্ট লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী রচিত একটি উপন্যাস। প্রকাশকাল ১৯৪৯ সাল (বাংলা ১৩৫৬ সন)। প্রকাশক মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড। একটি আজন্ম-অবহেলিত শিশুকন্যার শৈশব থেকে যৌবনে উত্তরণই এই উপন্যাসের উপজীব্য। লেখিকার চতুর্থ প্রকাশিত বয়স্কপাঠ্য উপন্যাস এটি। বলয়গ্রাস নামেই অনূদিত হয়েছে হিন্দিতে। বাংলাতে চলচ্চিত্রায়িতও হয়েছে। পরে সংকলিত হয় আশাপূর্ণা দেবী রচনাবলী প্রথম খণ্ডেও।

আখ্যানভাগ সম্পাদনা

বলয়গ্রাস উপন্যাসটির কাহিনি আবর্তিত হচ্ছে টুনি নামের একটি শিশুকন্যাকে কেন্দ্র করে। ধনী বিধবা মহালক্ষ্মীর একমাত্র কন্যা মণিমালার কুমারীকালের মেয়ে সে। সেই অপবাদ ঢাকতে মহালক্ষ্মী তাকে নিজের বিধবা ‘ভাইঝি’ তরুবালার কন্যা পরিচয়ে আশ্রয় দেন। কিন্তু যত বড়ো হয় টুনি, মায়ের চেহারা আদলটি তার চেহারাতেও ফুটে ওঠে। সেটা ঢাকতে না পেরে মহালক্ষ্মী আরও বিব্রত হতে থাকেন। এদিকে অবহেলায় অতিষ্ঠ হয়ে বালিকা টুনি একদিন গৃহত্যাগ করে। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের পর তার ঠাঁই হয় বিভাবতী দেবীর অনাথ আশ্রমে। ততদিনে সে যুবতী। ঘটনাচক্রে এই আশ্রমের আর্থিক সাহায্যদাতা জ্যোতিপ্রকাশ, টুনির জন্মদাতা। টুনির গৃহত্যাগের অব্যবহিত পরেই তিনি ফিরে এসেছিলেন পূর্বকৃত অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য। মহালক্ষ্মীর নির্দেশ অমান্য করেই মণিমালা তাকে বিবাহ করেন। কিন্তু টুনির অন্তর্ধান তাদের সুখের বিবাহিত জীবনে একটি বিরাট কালো ছায়া হয়ে দাঁড়ায়। শেষে একদিন অনাথ আশ্রমে টুনিকে দেখে চিনতে পারেন মণিমালা। কিন্তু অপমানাহতা, আজন্ম-লাঞ্ছিতা টুনি তাকে চিনতে পেরেও চিনতে অস্বীকার করে। উপন্যাস শেষ হয় তার রূঢ় প্রত্যাখানে - “বারবার বলছি আমি লীলা।... টুনি কে? টুনিকে চিনি না আমি।”

সমালোচনা সম্পাদনা

অধ্যাপক পবিত্র সরকার এই উপন্যাসটি সম্পর্কে লিখেছেন,

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. ভূমিকা : পবিত্র সরকার, আশাপূর্ণা দেবী রচনাবলী, প্রথম খণ্ড, মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ২০০০, পৃষ্ঠা xxii-xxiii

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  • আশাপূর্ণা দেবী রচনাবলী, প্রথম খণ্ড, মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ২০০০।
  • জীবনী গ্রন্থমালা ৪৬ : আশাপূর্ণা দেবী, উপাসনা ঘোষ, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি, কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ২০০৪।