বনশ্রী সেনগুপ্ত

ভারতীয় গায়িকা

বনশ্রী সেনগুপ্ত (আনু. ১৯৪৬ – ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭) ছিলেন একজন প্রবাদপ্রতিম ভারতীয় বাঙালি গায়িকা।[১][২][৩][৪] তিনি ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গীতমঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন।[১] তিনি বাংলা, হিন্দি, ভোজপুরি, ওড়িয়া ও অসমীয়া চলচ্চিত্রেও গান গেয়েছেন।[৫][৬]

বনশ্রী সেনগুপ্ত
জন্মনামবনশ্রী রায়
জন্মআনু. ১৯৪৬
চুঁচুড়া, হুগলি, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)
মৃত্যু১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ (বয়স ৭১)
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
পেশাগায়িকা
কার্যকাল১৯৬৬ – ২০১৭

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

বনশ্রী সেনগুপ্ত আনুমানিক ১৯৪৬ সালে হুগলির চুঁচুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।[২][১][৩][৪] তার পিতা শৈলেন্দ্রনাথ রায় ছিলেন একজন উচ্চাঙ্গ-সঙ্গীতশিল্পী।[২][৪][৫] শান্তি সেনগুপ্তকে বিয়ে করার পর বনশ্রী সেনগুপ্ত কলকাতায় চলে আসেন।[২][৫]

সঙ্গীতজীবন সম্পাদনা

বনশ্রী সেনগুপ্ত তার প্রথম জীবনে পিতা উচ্চাঙ্গ-সঙ্গীতশিল্পী শৈলেন্দ্রনাথ রায়ের কাছেই সঙ্গীতশিক্ষা শুরু করেন।[১][২][৫] পরবর্তীকালে বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ সুধীন দাশগুপ্তের কাছে দীর্ঘ ২০ বছর তালিম নেন।[১][৫][৬] তিনি সুধীন দাশগুপ্ত, প্রবীর মজুুমদার, নীতা সেন, সাগরুদ্দিন খান, সন্তোষ সেনগুপ্ত, দীনেন্দ্র চৌধুরী প্রমুখ সুুরকারদের সঙ্গে কাজ করেছেন।[১]

বনশ্রী সেনগুপ্ত ১৯৬৬ সালে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন।[৭] তার অসংখ্য গান ও অ্যালবাম রয়েছে।[২][৬] ষাট ও সত্তরের দশকে তিনি বহু হিট গান উপহার দিয়েছেন।[৩] এছাড়া তিনি বাংলা, হিন্দি, ভোজপুরি, উড়িয়া ও অহমিয়া চলচ্চিত্রশিল্পে কন্ঠশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। এরূপ চলচ্চিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ছুুুটি (১৯৬৭), নিমন্ত্রণ (১৯৭১), বিন্দুর ছেলে (১৯৭৩), প্রান্তরেখা (১৯৭৪), রো ভরা বসন্ত (১৯৭৪), দুুুুলহন বোহি জো পিয়া মন ভায়ে (১৯৭৭), সানাই (১৯৭৭), এক যে ছিল দেশ (১৯৭৭), ন্যায় অন্যায় (১৯৮১), আলোয় ফেরা (১৯৮৫), বিদ্রোহী (১৯৮৭), অঞ্জলি (১৯৮৮), ছন্দনীড় (১৯৮৯), পথ ও প্রাসাদ (১৯৯১), নটী বিনোদিনী (১৯৯৪), বড় বউ (১৯৯৭) ইত্যাদি।[৬][৮] তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য ও বিখ্যাত গানের মধ্যে রয়েছে: “আজ বিকেলের ডাকে তোমার চিঠি পেলাম”, ”আমার অঙ্গে জ্বলে রংমশাল”, “ছি ছি ছি এ কী কাণ্ড করেছি”, “দূর আকাশে তোমার সুর”, “আমার আঁধার ঘরের প্রদীপ”, “সুন্দর বনে সুন্দরী গাছ”, “খুশিয়া হি খুশিয়া” ইত্যাদি।[১][৬][৭] এছাড়া, তিনি আকাশবাণীদূূরদর্শনেও সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে কাজ করেন।[৬]

পুরস্কার সম্পাদনা

বনশ্রী সেনগুপ্ত তার সঙ্গীতকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ উত্তম কুমার পুরস্কার, মাদার তেরেসা পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কার, বিএফজেএ পুরস্কার, প্রমথেশ বড়ুয়া পুরস্কার ইত্যাদি অর্জন করেন।[১][৬]

মৃত্যু সম্পাদনা

বনশ্রী সেনগুপ্ত ২০১৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি একাত্তর বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।[১][২][৩] তার ফুুুসফুসে সংক্রমণের পাশাপাশি হৃদযন্ত্র, যকৃত ও বৃক্কেও সমস্যা ছিল।[২][৬] কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।[১][৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Banashree Sengupta passes away"এবেলা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২০ 
  2. "প্রয়াত বনশ্রী সেনগুপ্ত"আনন্দবাজার পত্রিকা। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২০ 
  3. "প্রয়াত স্বর্ণযুগের গায়িকা বনশ্রী সেনগুপ্ত"ওয়ান ইন্ডিয়া। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২০ 
  4. "বিকেলের ডাকে আর আসবে না চিঠি, প্রয়াত স্বর্ণযুগের সঙ্গীতশিল্পী বনশ্রী সেনগুপ্ত"জি২৪ ঘণ্টা। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২০ 
  5. "Singer Banasree Sengupta dies"দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (ইংরেজি ভাষায়)। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২০ 
  6. ফটোনিউজ২৪। "বনশ্রী সেনগুপ্ত আর নেই"। ২৯ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০২০ 
  7. "Eminent Bengali singer Banashree Sengupta passes away" (ইংরেজি ভাষায়)। হিন্দুস্তান টাইমস। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। 
  8. "Banasree Sengupta"আইএমডিবি (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০২০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা