বদ্রীদাস গোয়েঙ্কা

রায় বাহাদুর স্যার বদ্রীদাস গোয়েঙ্কা সিআইই (২৯ জুলাই ১৮৮৩ - ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩) ছিলেন একজন ভারতীয় শিল্পপতি এবং পুঁজিপতি ব্যবসায়ী, যিনি ১৯৩৩ থেকে ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইম্পেরিয়াল ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান এবং ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক গঠনের পরে প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন।


বদ্রীদাস গোয়েঙ্কা
জন্ম(১৮৮৩-০৭-২৯)২৯ জুলাই ১৮৮৩
মৃত্যু২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩(1973-02-26) (বয়স ৮৯)
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তনপ্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা
দাম্পত্য সঙ্গীমনোরমা দেবী
পুরস্কাররায় বাহাদুর (১৯২৫)
সি আই ই (১৯২৮)
নাইট ব্যাচেলর (১৯৩৪)

জন্ম ও শিক্ষা জীবন

সম্পাদনা

বদ্রীদাস গোয়েঙ্কা ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জুলাই এক মাড়োয়ারি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা রামচন্দ্র গোয়েঙ্কার আদি নিবাস ছিল রাজপুতানার অধুনা রাজস্থানের ঝুনুঝুনু জেলার ডন্ডলডে (পূর্বের শিবগড়ে)। বদ্রীদাসের অগ্রজ হরিরাম গোয়েঙ্কা এবং অনুজ ছিলেন ঘনশ্যাম দাস গোয়েঙ্কা। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বদরীদাস কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক হন। মাড়োয়ারি সম্প্রদায়ের মধ্যে তিনিই প্রথম স্নাতক ছিলেন। কলেজে বদ্রীদাসের পদার্থবিদ্যা এবং রসায়ন শাস্ত্রে বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে মনোরমাকে বিবাহ করেন । [১]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

বদরীদাস স্নাতক হওয়ার পর পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন এবং ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে মাড়োয়ারি সমিতির সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতের ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল মাড়োয়ারিদের জন্য সংরক্ষিত আসনে জিডি বিড়লার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বদ্রীদাসকে মনোনীত করে। এর ফলে উভয়ের মধ্যে আপোষহীন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা দেয়। শেষপর্যন্ত ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে গোয়েঙ্কা ভাইসরয়ের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে বদ্রীদাস ভারতের আর্থিক পরিস্থিতি তদন্তকারী 'হিলটন-ইয়ং কমিশন'-এর সদস্য হন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে, তিনি ইম্পেরিয়াল ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার একজন পরিচালক নিযুক্ত হন এবং ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম ভারতীয় চেয়ারম্যান পদে আসীন হন। তিনি ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দেও দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীকালে, ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে জাতীয়করণের পর যখন যখন ইম্পেরিয়াল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তথা ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক হয়ে যায় তিনি সেসময় থেকে ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রথম চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

পরবর্তী জীবন

সম্পাদনা

বদ্রীদাস ১৯৪০-এর দশকের গোড়ার দিকে তার পুরানো প্রতিপক্ষ জিডি বিড়লার সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বিডলার ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে (এফআইসিসিআই তথা ফিকি) যোগ দেন। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে বদ্রীদাস সংস্থাটির সভাপতি হন। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে পঞ্চাশের মন্বন্তরের সময় দু'জনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ ব্যবস্থা প্রদানে একত্রে কাজ করেন। ফিকি-এর সভাপতি হিসাবে তাঁর মেয়াদ শেষ হলে, বদ্রীদাস সমস্ত ব্যবসায়িক ও স্বেচ্ছাসেবী সমিতি থেকে অবসর নেন।

পরবর্তীতে, বদ্রীদাস তার ব্যবসার সমস্ত দায়িত্ব পুত্র কেশব প্রসাদ গোয়েঙ্কার উপর ন্যস্ত করেন। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ফেব্রুয়ারি বদ্রীদাস পরলোক গমন করেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Reed, Stanley (১৯৫০)। The Indian And Pakistan Year Book And Who's Who 1950Bennett Coleman and Co. Ltd.। পৃষ্ঠা 679। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮