বড় বাঘডাশ

স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রজাতি

বড় বাঘডাশ[] বা বাঘডাসা বা বাড়খানডাস[] (ইংরেজি: Large Indian civet) (বৈজ্ঞানিক নাম:Viverra zibetha) হচ্ছে ভিভেরিডি পরিবারের ভিভেরা গণের একটি সবচেয়ে বড় আকারের গন্ধগোকুল জাতীয় প্রাণী।[]

বড় বাঘডাশ
Large Indian civet
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: Mammalia
বর্গ: মাংশাশী
পরিবার: Viverridae
উপপরিবার: Viverrinae
গণ: Viverra
প্রজাতি: V. zibetha
দ্বিপদী নাম
Viverra zibetha
Linnaeus, 1758
Large Indian civet range

বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের রক্ষিত বন্যপ্রাণীর তালিকার তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।[]

বর্ণনা

সম্পাদনা
 
বাঘডাশের মাথার খুলি

বড় বাঘডাশ আকারে সকল গন্ধগোকুলকে ছাড়িয়ে গেলেও গেছো ভাল্লুকের পরে এদের অবস্থান। এদের মাথা দীর্ঘ। কান বড় হলেও দুকানের অবস্থান কাছাকাছি নয়। এদের আকারে তারতম্য রয়েছে। এই প্রজাতির বাঘডাশের মাথাসহ দেহের দৈর্ঘ্যের পরিসর ৮০-৮৬ সেমি, লেজ ৩৩ সেমি এবং কাঁধ উচ্চতায় ৩৮ সেমি। এদের ওজনেও তারতম্য থাকে এবং ওজনের পরিসর ৫-১১ কেজি হয়ে থাকে।[]

বিস্তৃতি

সম্পাদনা
 
বড় বাঘডাশের জীবন্ত চিত্রটি ব্রায়ান হজসনের হাতে অঙ্কিত

মুখোশধারী গন্ধগোকুল বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মায়ানমার, নেপাল, ভুটান, চীন, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরইন্দোচীনে পাওয়া যায়।[][]

নেপালের হিমালয় পর্বতের ২,২৫০ (৭,৩৮০ ফুট) মিটার উচ্চতা পর্যন্ত বড় ভারতীয় বাঘডাশ প্রজাতির প্রাণীকে দেখা গিয়েছিল।[]

চীনে, ১৯৫০ সালের পর থেকে বনভূমি ধ্বংস, পশম বাণিজ্যের জন্য শিকার, এবং ঔষধ ও সুগন্ধি শিল্পে এর মৃগনাভির ব্যবহারের কারণে বন্য বৃহৎ ভারতীয় গন্ধগোকুলের সংখ্যা ৯৪-৯৯% কমে গেছে।[]১৯৯০-এর দশকে এটি মূলত চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশের উত্তর অংশে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ১৯৯৮ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে পরিচালিত জরিপে হাইনান দ্বীপে এই প্রজাতির কোনো প্রাণী আর দেখা যায়নি।[]

পরিবেশগত আচরণ

সম্পাদনা
 
অন্ধকার রাতে শিকারের অপেক্ষায় বড় বাঘডাশ

বড় বাঘডাশ একাকী এবং নিশাচর প্রাণী। এটি অধিকাংশ সময় মাটিতেই কাটায়। এরা সুযোগসন্ধানী শিকারি, বিভিন্ন ধরনের ছোট প্রাণী শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে।[]

থাইল্যান্ডে রেডিও ট্র্যাকিং করে দেখা গেছে, বড় বাঘডাশ ২.৭ থেকে ৮.৮ বর্গকিলোমিটার (১.০ থেকে ৩.৪ বর্গমাইল) এলাকা পর্যন্ত ঘুরে বেড়ায়।[]

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ

সম্পাদনা

হংকং-এ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী Viverra zibetha প্রজাতিটি সুরক্ষিত। যদিও ১৯৭০-এর দশকের পর থেকে হংকং-এ প্রাকৃতিক পরিবেশে এই প্রজাতির কোনো প্রাণী দেখা যায়নি। তাই বিজ্ঞানীরা মনে করেন, হংকং থেকে এই প্রজাতি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।[]

আরো দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Duckworth, J. W., Wozencraft, C., Wang Yin-xiang, Kanchanasaka, B., Long, B. (২০০৮)। "Viverra zibetha"বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2012.2প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন 
  2. বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জুলাই ১০, ২০১২, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পৃষ্ঠা-১১৮৪৯৬
  3. জিয়া উদ্দিন আহমেদ (সম্পা.), বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ: স্তন্যপায়ী, খণ্ড: ২৭ (ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ২০০৯), পৃ. ১৩২-১৩৩।
  4. Appel, A.; Werhahn, G.; Acharya, R.; Ghimirey, Y.; Adhikary, B. (২০১৩)। "Small carnivores in the Annapurna Conservation Area, Nepal" (পিডিএফ)Vertebrate Zoology63 (1): 111–121। 
  5. https://books.google.com/books/about/A_Guide_to_the_Mammals_of_China.html?id=ka-9f68nPT4C#v=onepage&q&f=false
  6. https://onlinelibrary.wiley.com/doi/10.1111/j.1365-2907.2010.00163.x
  7. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; iucn status 19 November 2021 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  8. Simcharoen, S. (1999). Home range size, habitat utilization and daily activities of Large Indian Civet (Viverra zibetha). Research and progress report year 1999, Wildlife Research Division, Department of National Parks, Wildlife and Plant Conservation, Bangkok.
  9. Shek, C. T. (2006). A Field Guide to the Terrestrial Mammals of Hong Kong. Friends of the Country Parks / Cosmos Books, Hong Kong. 403 pp. আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৮-২১১-৩৩১-২. Page 281