বঙ্গবন্ধু উদ্যান

বাংলাদেশের উদ্যান

বঙ্গবন্ধু উদ্যান (যা বেলস পার্ক নামেও পরিচিত) বাংলাদেশের দক্ষিণের শহর বরিশালে অবস্থিত একটি নগর উদ্যান এবং বিনোদন এলাকা। এই উদ্যানটি বরিশালের সুন্দর এলাকাগুলির একটি, যাতে একটি খেলার মাঠ, হাঁটার পথ, হেলিপ্যাড, প্রচুর গাছ এবং পাশে একটি হ্রদ রয়েছে। বর্তমানে উদ্যানটির মালিকানা গণপূর্ত বিভাগের, তবে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন

বঙ্গবন্ধু উদ্যান
বেল'স পার্ক
মানচিত্র
ধরননগর উদ্যান
অবস্থানবান্দ রোড, বরিশাল, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২২°৪১′৩৪″ উত্তর ৯০°২২′০৮″ পূর্ব / ২২.৬৯২৭° উত্তর ৯০.৩৬৯০° পূর্ব / 22.6927; 90.3690
আয়তন৯.৪৭ একর (৩.৮৩ হেক্টর) (প্রায়)
প্রতিষ্ঠিত১৮৯৬; ১২৮ বছর আগে (1896)
অবস্থাসারা বছর খোলা

ইতিহাস

সম্পাদনা

১৮৯৬ সালে এনডি বিটসন বেল জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্বপালন কালে, বরিশালে বাংলার গভর্নর-লেফটেন্যান্ট স্যার আলেকজান্ডার ম্যাকেনজির সফরকে কেন্দ্র করে এই বিস্তৃর্ণ উদ্যান নির্মাণ করেন। [] সেই সময়, এটি সিভিল লাইন (আবাসিক এলাকা) এবং নদীর পার্শ্ববর্তী শহররক্ষা বাঁধ সড়ক, উভয়ের মধ্যবর্তী উন্মুক্ত স্থানে নির্মিত হয়েছিল। উদ্যানটির পাশেই কীর্তনখোলা নদীর অবস্থান ছিল এবং নদীর পানি যেন শহরে ঢুকতে না পারে সেই জন্য সারিবদ্ধভাবে ঝাউ আর বোতল পাম গাছ লাগানো হয় যেন মাটি ধুয়ে না যায়। রাস্তার পূর্ব পাশে বসার জন্য সিমেন্টের বেঞ্চ ছিলো। বরিশাল শহরের উন্নয়ন, মুসলিম শিক্ষা ও জনস্বাস্থ্যে বিটসন বেলের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ উদ্যানটির নাম তার নামানুসারে করা হয়।[]

উদ্যানটি কয়েক দশক ধরে বরিশাল শহরের প্রধান খেলার মাঠ ছিল এবং সমস্ত ক্রীড়া ও ক্রীড়াবিদদের কার্যক্রম এটিকে কেন্দ্র করে হত।[] এটি অনেক মহা জনসমাবেশের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়াসহ অন্য অনেক জাতীয় নেতা এসেছিলেন এবং মানুষের কাছে বক্তৃতা দিয়েছেন।[] এছাড়া এখানে বৃক্ষমেলা, বাণিজ্যমেলা, কুচকাওয়াজ সহ বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক এই উদ্যানের নাম ‘বঙ্গবন্ধু উদ্যান’ নামকরণ করা হয়।[] ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এখানে ভাষণ দিয়েছেন, তার আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে এখানে একটি ‘মুক্ত মঞ্চ’ ও ম্যুরাল তৈরি করা হয়।

২০১১ সালে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে এখানে আলোকসজ্জা ও সোন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হয়।

উদ্যানটি দৈর্ঘ্যে ৫৫০ ফুট ও প্রস্থে ৪৫০ ফুট। উদ্যানটি ঘিরে একটি হাঁটার পথ রয়েছে। উদ্যানের উত্তর পাশে একটি ছোট হ্রদ রয়েছে। উদ্যানের ভেতর বসার জন্য বেঞ্চ ও ছাতি রয়েছে। উদ্যান ও তার চারদিকে বিভিন্ন গাছপালা রয়েছে। এছাড়া উদ্যানের পাশে (সড়কের অপর পাশে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বড় ম্যুরাল রয়েছে।

চিত্রশালা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. জ্যাক, জেমস চার্লস (১৯১৮)। Bengal District Gadgeteer : Bakarganj (ইংরেজি ভাষায়)। কলকাতা: বেঙ্গল সেক্রেটারিয়েট বুক ডিপো। পৃষ্ঠা ১৩০। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  2. ঘোষ, সুশান্ত (২০ মে ২০১৪)। "বেলস পার্ক থেকে বঙ্গবন্ধু উদ্যান"amaderbarisal.com। ১৮ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  3. রাশিদ, হাবিবুর (১৯৮১)। Bangladesh District Gazetteer: BAKERGANJ (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। ঢাকা: বাংলাদেশ সরকার প্রেস। পৃষ্ঠা ৮০। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জনসভা মঞ্চ প্রস্তুত"কালের কণ্ঠ। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  5. "বেলস্ পার্ক থেকে বঙ্গবন্ধু উদ্যান | বরিশাল নগরীর ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী"দৈনিক জনকণ্ঠ। ১৩ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯