প্রেম পূজারী (হিন্দি: प्रेम पुजारी; অর্থ "ভালোবাসার উপাসক") হচ্ছে ১৯৭০ সালের একটি হিন্দি চলচ্চিত্র যেটি অভিনেতা দেব আনন্দ তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান 'নবকেতন ফিল্মস' এর জন্য রচনা, পরিচালনা এবং প্রযোজনা করেন। চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেন দেব আনন্দ, ওয়াহিদা রেহমান, শত্রুঘ্ন সিনহা, প্রেম চোপড়া, মদন পুরী এবং তখনকার সময়ে একেবারেই অপরিচিত অভিনেতা অমরেশ পুরী। চলচ্চিত্রটিতে অনেক জনপ্রিয় গান রয়েছে; সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন শচীন দেব বর্মণ[১] গানের গীতিকার ছিলেন গোপালদাস নীরাজ। তিনিও শচীন দেব বর্মণের সঙ্গে গানগুলো জনপ্রিয় হওয়ার কৃতিত্ব বহন করেন এবং অভিনেতা দেব আনন্দ আর ওয়াহিদা রেহমান দ্বারা চিত্রায়নও গানগুলোর সফলতা আনতে ভূমিকা রেখেছিলো (যদিও, চলচ্চিত্রটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়েছিলো)। এই চলচ্চিত্রের তিনটি গান চিরসবুজ হয়ে রয়েছে; কিশোর কুমার এবং লতা মঙ্গেশকর এর গাওয়া 'শোখিয়োঁ মেঁ ঘোলা জায়ে', লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া 'রাঙ্গীলা রে তেরে রাং মেঁ' এবং কিশোর কুমারের গাওয়া 'ফুলোঁ কে রাং ছে'।

প্রেম পূজারী
পরিচালকদেব আনন্দ
প্রযোজকদেব আনন্দ
রচয়িতাদেব আনন্দ
শ্রেষ্ঠাংশেদেব আনন্দ
ওয়াহিদা রেহমান
শত্রুঘ্ন সিনহা
অশোক কুমার
মদন পুরী
সুরকারশচীন দেব বর্মণ
নীরাজ (গীতিকার)
চিত্রগ্রাহকফলি মিস্ত্রী
সম্পাদকবাবু শেখ
মুক্তি
  • ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭০ (1970-02-06)
দেশভারত
ভাষাহিন্দি

কাহিনীখণ্ড সম্পাদনা

সেনা লেফটেন্যান্ট রামদেব বকশী (দেব আনন্দ) হচ্ছেন একজন শান্ত প্রকৃতির মানুষ যিনি প্রকৃতি পছন্দ করেন। তার পিতা যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য তাকে ভারত-চীন সীমান্তে যুদ্ধের জন্য পাঠান। এখানে রামদেব বন্দুক উঠিয়ে হামলা করতে অস্বীকৃতি জানান। তার পরে সামরিক আদালতে বিচার হয়। পরে তিনি চীনাদের দ্বারা ধৃত হন এবং অত্যাচারিত হন, কিন্তু যখন একজন সুন্দরী চীনা মেয়ে তাকে চীনের হয়ে ভারতের গুপ্তচরবৃত্তি করতে বলে রামদেব রাজী হয়, কিন্তু সে ঐসব পরিকল্পনা ভেস্তে দেয় এবং ভারতের জন্য সে কোনো ক্ষতিকারক কাজে জড়ায় না। পরে ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। যুদ্ধে রামদেব যোগ দেন খেমকারান সেক্টরের একটি ভারতীয় গ্রামের ঝোপে লুকিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেন এবং হত্যা করে দেখান যে তিনি কেমন মানুষ।

অভিনয়ে সম্পাদনা

লোকেশন সম্পাদনা

চলচ্চিত্রটির একটা বড় অংশ সুইজারল্যান্ডে চিত্রায়িত হয়েছিলো এবং একটি গানের দৃশ্যে বিখ্যাত 'গ্রিমসেল হোটেল' দেখানো হয়েছিলো। কিছু অংশ শুটিং হয়েছিলো ভারতের বিহারের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র রাজগীরের কাছে। এখানে অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহাকে দেখে অনেক মানুষ ভিড় করেছিলো এবং চলচ্চিত্রটিতে তার চরিত্রে অভিনয় করে কিছুটা দেখাতে বলেছিলো, শত্রুঘ্ন দেখিয়েছিলেন। চলচ্চিত্রটির আরেকটি অংশ মহারাষ্ট্র প্রদেশের আহমেদ নগর জেলার শির্দির কাছে অস্তগাওতে হয়েছিলো।

সঙ্গীত সম্পাদনা

প্রেম পূজারীর সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন শচীন দেব বর্মণ, আর গীতিকার ছিলেন গোপালদাস নীরাজ.[২] চলচ্চিত্রটির বেশ কয়েকটি গান জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো, কিশোর কুমারের গাওয়া 'ফুলোঁ কে রাং ছে', লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া 'রাঙ্গীলা রে তেরে রাং মেঁ' যেটি ছিলো লোকসঙ্গীত এবং আধুনিক সঙ্গীতের মিশ্রণ, কিশোর আর লতার গাওয়া 'শোখিয়োঁ মেঁ ঘোলা জায়ে','তাকাত ভাতান কি হাম ছে হি হে' (দেশপ্রেমমূলক গান), এবং বর্মণের কণ্ঠে গাওয়া 'প্রেম কে পূজারী হাম হে'। 'বলিউড মেলোডিজঃ এ হিস্ট্রি অব দ্যা হিন্দি ফিল্ম সং' বইয়ের লেখক আনন্দরমণ বলেনঃ দেব আনন্দ বলেছিলেন যে, 'রাঙ্গীলা রে' গানটি তার নবকেতন ফিল্মসের বানানো চলচ্চিত্রগুলোর গানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রিয়।[৩]

নং গানের শিরোনাম গায়ক/গায়িকা দৈর্ঘ্য
"রাঙ্গীলা রে তেরে রাং মেঁ" লতা মঙ্গেশকর ০৬ঃ১৫
"শোখিয়োঁ মেঁ ঘোলা জায়ে" কিশোর কুমার, লতা মঙ্গেশকর ০৫ঃ০৫
"ফুলোঁ কে রাং ছে" কিশোর কুমার ০৪ঃ৫৭
"তাকাত ভাতান কি হামছে হে" মোহাম্মদ রফি, মান্না দে ০৭ঃ২৩
"প্রেম কে পূজারী হাম হে" শচীন দেব বর্মণ ০৪ঃ১৮
"ইয়ারোঁ নিলাম কারো ছুছতি" কিশোর কুমার, ভূপেন্দ্র সিং ০৪ঃ১৮
"দুঙ্গি তেনু রেশমী রুমাল" লতা মঙ্গেশকর ০৪ঃ০৩
"ফুলোঁ কে রাং ছে (পুনঃস্মরণ)" কিশোর কুমার ০৪ঃ৫৫
"শোখিয়োঁ মেঁ ঘোলা জায়ে (পুনঃস্মরণ)" কিশোর কুমার, লতা মঙ্গেশকর ০৫ঃ১১

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Khagesh Dev Burman (৭ মে ২০১৩)। S. D Burman The World of His Music। Rupa Publications। পৃষ্ঠা 141–। আইএসবিএন 978-81-291-3042-6। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ 
  2. "Prem Pujari"hindigeetmala.net। Hindi Geetmala। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ 
  3. Ganesh Anantharaman (জানুয়ারি ২০০৮)। Bollywood Melodies: A History of the Hindi Film Song। Penguin Books India। পৃষ্ঠা 88–। আইএসবিএন 978-0-14-306340-7। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা