প্রেমাংশু বসু

ভারতীয় অভিনেতা

প্রেমাংশু বসু (১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯২৫ - ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০০০) ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্র ও নাট্যজগতের বিশিষ্ট অভিনেতা।[১] সর্বক্ষণের নাট্যকর্মী তিনি কলকাতার শ্রীমঞ্চ নাট্যসংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।[২]

প্রেমাংশু বসু
জন্ম(১৯২৫-০৯-১৭)১৭ সেপ্টেম্বর ১৯২৫
পাইকপাড়া কলকাতা ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ভারত)
মৃত্যু২৯ ফেব্রুয়ারি ২০০০(2000-02-29) (বয়স ৭৪)
পেশামঞ্চাভিনেতা
কর্মজীবন১৯৩১-২০০০
পিতা-মাতানারায়ণচন্দ্র বসু (পিতা)

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

প্রেমাংশু বসুর জন্ম ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার পাইকপাড়ায়। পিতা নারায়ণচন্দ্র বসু। ছাত্রাবস্থায় ষোল বৎসর বয়সে "কেদার রায়" নাটকে প্রথম মঞ্চে আসেন। ম্যাট্রিক পাশ করার পর তিনি চার বছর এক ইলেকট্রিক কোম্পানিতে কাজ করেন।

কর্মজীবন সম্পাদনা

তারপর থেকে তিনি সারাজীবন সর্বক্ষণের নাট্যকর্মী হয়ে যান। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৩ নভেম্বর তিনি 'শ্রীমঞ্চ' নামে এক নাট্যসংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমদিকে যাদের সঙ্গে পান, তারা ছিলেন কালিপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, মনুজচন্দ্র সর্বাধিকারি। পরবর্তীতে সংস্থায় যারা অভিনয় করেন তাদের মধ্যে অন্যতম শিল্পীরা ছিলেন গীতা দে, মমতা চট্টোপাধ্যায়, কেতকী দত্ত। সংস্থায় তার সহযোগী ছিলেন গণেশ মুখোপাধ্যায়। 'শ্রীমঞ্চ' নাট্যসংস্থা থেকে তিনি যে সমস্ত নাটক প্রযোজনা করেন সেগুলি হল, 'যাযাবর', 'শেষের কবিতা', 'পাণ্ডব গৌরব', 'করিওলেনাস', 'মালিনী ও অরূরতন', 'আকাশবিহঙ্গী', নূরজাহান', 'য্যায়সা কা ত্যায়সা' ইত্যাদি। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি পেশাদার হিসাবে স্টার থিয়েটারে যোগ দেন এবং একাধিক্রমে একুশ বৎসর যুক্ত থাকেন। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে 'প্রজাপতি' নাটকে অভিনয়ের সূত্রে স্বল্পকাল মিনার্ভা থিয়েটারে এবং শেষে বিশ্বরূপায় কাজ করেন। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দ হতে প্রায় আট বৎসর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের 'রাজকুমার' নাটকে অভিনয়ের জন্য 'কাশী বিশ্বনাথ মঞ্চ'-এ কাটিয়ে আবার বিশ্বরূপায় ফিরে আসেন। এখানে তারই নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হয়- 'স্বরলিপি' ও 'সূর্যমুখী'। রঙ্গালয়ের বাইরে আমন্ত্রিত অভিনয়ের তিনি নাট্যাচার্য শিশিরকুমারের সঙ্গে "আলমগীর" নাটকে অভিনয় করেন। পেশাদার মঞ্চে তার অভিনীত নাটকগুলি হল-

  • শ্যামলী
  • পরিণীতা
  • শ্রীকান্ত-রাজলক্ষ্মী
  • দাবি
  • জনপদবধূ
  • জয়জয়ন্তী
  • রামধাক্কা

প্রেমাংশু বসু কিছু বাংলা চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন।[৩]সেগুলি হল -

  • কেরানীর জীবন (১৯৫৩)
  • চাঁপাডাঙার বৌ (১৯৫৪)
  • উপহার (১৯৫৫) শ্যামলাল-এর চরিত্রে
  • শাপমোচন (১৯৫৫)
  • কুহক (১৯৬০)
  • পূরবী
  • প্রিয়তমা
  • নায়ক (১৯৬৬)ছবিতে বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়ন লিডার বীরেশের চরিত্রে
  • বিন্দুর ছেলে (১৯৭৩)

১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে আরো অনেকের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি তাকে সংবর্ধিত করে।

মৃত্যু সম্পাদনা

বাংলা নাট্যমঞ্চের নিরলস কর্মী প্রেমাংশু বসু ২০০০ খ্রিস্টাব্দের ২৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় প্রয়াত হন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

টেমপ্লেট:সুত্র তালিকা

  1. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ২৩৯-২৪০, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. "Premangshu Bose (ইংরাজীতে)"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০২-২৯ 
  3. "প্রেমাংশু বসু নায়ক না হলেও বাংলাছবি ও নাটকের দর্শকেরা তাঁকে একনামে চেনেন"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০১