পিথোরাগড় জেলা

উত্তরাখণ্ডের একটি জেলা

পিথোরাগড় এটি ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের পূর্বতম জেলা। এটি হিমালয়ের ৭,১১০ কিমি (২,৭৫০ মা) অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত এবং এবং একটি জনসংখ্যা ৪,৮০,০০০ (২০১১ হিসাবে)। সওর উপত্যকায় অবস্থিত পিথোরাগড় শহরটি, এর সদর দপ্তর। জেলাটি উত্তরাখণ্ড রাজ্যের কুমায়ুন বিভাগের মধ্যে। এর উত্তরে তিব্বত মালভূমি এবং নেপাল এর পূর্বে অবস্থিত। কালী নদীটি কালাপানী থেকে উৎপন্ন হয়েছে এবং দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে নেপালের সাথে পূর্ব সীমানা তৈরি করেছে। জেলাটি প্রশাসনিকভাবে ছয়টি তহশিলে বিভক্ত: মুন্সিয়ারি; ধরচুলা; দিদিহাট; বেরিনাগ; গঙ্গোলিঘাট; এবং পিথোরাগড়। নৈনী সায়নী বিমানবন্দরটি নিকটতম বিমানবন্দর, তবে এটির নিয়মিত নির্ধারিত বাণিজ্যিক যাত্রী পরিষেবা নেই। জেলায় যে খনিজ পদার্থগুলি পাওয়া যায় সেগুলি হল ম্যাগনেসিয়াম আকরিক, তামার আকরিক, চুনাপাথর এবং স্লেট

পিথোরাগড় জেলা
জেলা
গোরি নদী উপত্যকা
গোরি নদী উপত্যকা
ভারতের উত্তরাখণ্ডে অবস্থান
ভারতের উত্তরাখণ্ডে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ৩০°০০′ উত্তর ৮০°২০′ পূর্ব / ৩০.০০০° উত্তর ৮০.৩৩৩° পূর্ব / 30.000; 80.333
দেশ ভারত
রাজ্যউত্তরাখণ্ড
বিভাগকুমায়ুন
সদর দপ্তরপিথোরাগড়
আয়তন
 • মোট৭,১১০ বর্গকিমি (২,৭৫০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট৪,৮৪,৯৯৩
 • জনঘনত্ব৬৯/বর্গকিমি (১৮০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলআইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০)
টেলিফোন কোড৯১ ৫৯৬৪
যানবাহন নিবন্ধনইউকে-০৫
ওয়েবসাইটpithoragarh.nic.in

ব্যুৎপত্তিসম্পাদনা

কেউ কেউ বলে এই জেলার নামটি এসেছে চন্দ রাজবংশ থেকে রাজা পিথোরা চন্দের নাম থেকে, অনেকের মতে এটি এসেছে চৌহান রাজপুত পৃথ্বী রাজ চৌহানের নাম থাকে, যিনি সওর উপত্যকায় পিথোড়া গড় নামে একটি দুর্গ তৈরি করেছিলেন।

ইতিহাসসম্পাদনা

পাল রাজারা (কাত্যুরি রাজাদের একটি শাখা)সম্পাদনা

১৩৬৪ সালে, উকুর রাজওয়ারের (এখন নেপালে), রাজা ভরতপাল এই অঞ্চল জয় করার পর, ১৪শ শতাব্দীর বাকী সময় তিন প্রজন্মের পাল বংশধরেরা পিথোরাগড় শাসন করেছিলেন,এবং রাজত্বটি পিঠোরাগড় থেকে আসকোট পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

বাম রাজবংশসম্পাদনা

একটি তাম্রপত্র অনুসারে (খোদাই করা তামা বা পিতলের ফলক), ১৪২০ সালে পাল রাজবংশকে চন্দ রাজারা পরাজিত ও বিতাড়িত করে। বিজয় ব্রহ্ম (দোতির ব্রাহ্ম রাজবংশ) রাজা হিসাবে সাম্রাজ্যের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। জ্ঞান চন্দের মৃত্যুর পরে, ক্ষেত্র পালের নেতৃত্বে, পাল রাজার আবার এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করেন।

চন্দ রাজবংশসম্পাদনা

মনে করা হয় যে, ১৪৪৫ সালে পিথোরাগড়ের তৎকালীন শাসক জ্ঞান চন্দের পূর্বপুরুষ ভারতী চন্দের সময়, চন্দ বংশকে বিতাড়িত করে বাম রাজত্বের শুরু হয়। ১৬শ শতকে, চন্দ রাজবংশ আবার পিথোরাগড় শহর দখল করে নেয় এবং, ১৭৯০ সালে, পাহাড়ের ওপর একটি নতুন দুর্গ তৈরী করে, এখন সেখানে গার্লস ইন্টার কলেজ অবস্থিত। ১৯৬২ সালে চীন ভারত আক্রমণ করার পরে এই দুর্গটি ভারত সরকার ধ্বংস করে দেয়।[কেন?]

সর্ব্বোচ্চ স্থানে থাকার সময়ে চন্দ রাজত্বকে কুমায়ুনের অন্যতম প্রধান সাম্রাজ্য হিসাবে দেখা হয়। তাদের শাসনকাল সাংস্কৃতিক পুনরুত্থানের সময়ের সাথেও মিলে যায়। প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ করে এই সময়কালের সংস্কৃতি এবং শিল্প আকারগুলির বিকাশ দেখা গেছে।

তারা এগুলি তৈরিতে অবদান রাখে এবং তারা অত্যন্ত দয়ালু এবং উদ্যোগী ছিল এবং মূলত তারা নেপাল থেকে এসেছিল। নেপালে তারা রাজত্ব করত। তারা এখানে অনেকগুলি সামাজিক বিকাশমূলক কাজ করেছিল।

ভৌগোলিক অবস্থানসম্পাদনা

কৈলাস পর্বত - মানস সরোবর এই দুই হিন্দু তীর্থস্থান যাবার পথ, বৃহত্তর হিমালয় অঞ্চলে, কালাপানি অঞ্চল হয়ে লিপুলেখ পাস দিয়ে এই জেলা হয়েই যায়।

লিপুলেখ যাত্রাসম্পাদনা

কৈলাস - মানস যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই পথ। ধারচুলা থেকে সাত দিন ধরে হেঁটে সেখান থেকে চিন সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় একশো কিলোমিটার রাস্তা। অনেকটা চড়াই ভেঙে পাঙ্গু, তার পর থেকে শিরখা, বুঁধি, গুঞ্জি।

কালাপানি পৌঁছনোর আগের গুঞ্জি নামে এক ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম রয়েছে । সেখানে যাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা হয় । কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে সেখান থেকেই নীচে ধারচুলা হয়ে দিল্লি ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সামনে কালাপানিই ভারত-চিন সীমান্তের শেষ বড় চেকপোস্ট। আইটিবিপি-র বড় ক্যাম্প আছে। একটি ছোট নদী কালী নদীতে মিশেছে । শেষ বারের মতো পাসপোর্ট-ভিসা চেক হয় । ক্যামেরা থেকে রিলগুলো খুলে দিয়ে দিতে হয় , ওগুলো নিয়ে চিন-এ ঢোকা বারণ ।

অতঃপর কালাপানি হয়ে নাভিদাং-এ (ওম পর্বত ) । কালাপানি থেকে কয়েক ঘণ্টা হেঁটে বেশ কিছুটা উঁচুতে শেষ স্টপ নাভিদাং। যাওয়ার পথে ডান দিকে একটা পাহাড়ের গায়ের খাঁজে বরফ জমে ওঁ-কারের মতো আকৃতি নিয়েছে। তাই তার নাম ‘ওম্’ পর্বত। নাভিদাংয়ে ফাইবার গ্লাসের ছোট তাঁবুতে থাকার ব্যবস্থা । রাত তিনটেয় উঠে বেরোতে হয় কঠিন চড়াই পথ আর প্রবল শীত ঠেলে প্রায় সাড়ে তিন কিমি হেঁটে পৌঁছতে হয় এই যাত্রার সবচেয়ে কঠিন উচ্চতম পর্বে— লিপুলেখ পাস। [১]

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  • History of Kumaun by B D Pandey.
  • Across Peaks and Passes of Kumaun Himalayas by Harish Kapadia.

বহিঃসংযোগসম্পাদনা

টেমপ্লেট:Pithoragarh district টেমপ্লেট:Kumaon টেমপ্লেট:Districts of Uttarakhand